স্বপ্ন
থোকা থোকা শিমে স্বপ্ন বুনছেন লালমনিরহাটের চাষিরা
লালমনিরহাট কালীগঞ্জে উপজেলার উঁচু ভূমিতে কৃষকরা অন্যান্য সবজির পাশাপাশি চাষ করেছেন শিম। থোকা থোকা রঙিন ফুলে সেজেছে শিমের খেত। আর শীতের মৃদু বাতাসে শিম ফুলের সঙ্গে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
বৃহস্পতিবার (১৯ডিসেম্বর) দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় মাঠে মাঠে শিম ফুলের সমারোহ।আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে শিমের।
থোকা থোকা শিমে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা। অল্প জমি আর স্বল্প পুঁজিতে শিম চাষে অনেক চাষি ভাগ্য বদল করছেন।
চাষিরা জানান, আষাঢ় মাসের শেষ দিকে সারিবদ্ধভাবে গর্ত খুঁড়ে কিছু গোবর সার প্রয়োগ করে শিমের বীজ বপন করতে হয়। এরপর কিছুদিন সার, সেচ ও কীটনাশক দিয়ে পরিচর্যা করলে চারাগুলো বড় হয়।
এরপর মাচাং বানিয়ে দিলে মাত্র আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যেই বিক্রি করার মতো হয়ে যায় শিম। স্বল্প পুঁজিতে শিম চাষ করে লালমনিরহাটের অনেকেই নিজেদের ভাগ্য বদল করতে সক্ষম হয়েছেন।
শুধু সবজি হিসেবে নয়, বীজ হিসেবেও শিম চাষাবাদ করেন জেলার চাষিরা। বীজ হিসেবেও বাজারে বেশ কদর শিমের। বীজ করতে বিভিন্ন কোম্পানি চাষিদের নির্বাচন করে তাদের পরামর্শ দেয়। পরে উৎপাদিত বীজ সেই কোম্পানি চাষিদের কাছ থেকে কিনে সংরক্ষণ করে পরে বাজারজাত করে। তবে বীজের জন্য করা খেতের শিম সবজির জন্য বিক্রি করা হয় না। এটিতে একটু যত্ন ও খরচ বেশি বলে দামও বেশি পান চাষিরা। সব মিলে শিম বিক্রি করে অনেক চাষির ভাগ্য বদলে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী গ্রামের চাষি আবুল বাসার এক-তৃতীয়াংশ ফসল দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে নিজের ২৫ শতাংশ জমিতে প্রতি বছর শিমসহ নানান জাতের সবজি চাষাবাদ করেন। শিমে কম খরচে অধিক লাভ। তাই এ বছরও ২৫ শতাংশ জমিতে শিম চাষাবাদ করেছেন তিনি। এতে তার খরচ পড়েছে মাত্র ১৩ হাজার টাকা। তার খেতে প্রতি সপ্তাহে ৬ থেকে ৮ মণ শিম উঠছে। এটি চলবে আরও দুই মাস। তবে দিন যত যাবে উৎপাদন তত বাড়লেও কমে যাবে দাম। বর্তমান বাজারে শিমের চাহিদা ভালো থাকায় দামও ভালো পাচ্ছেন তিনি। খেতেই প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: গদখালীতে শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা চাষিদের
চাষি বাদল মিয়া বলেন, ‘অল্প জমিতে স্বল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা অর্জন করতে শিম চাষের বিকল্প নেই। মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৩০ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করে প্রতি সপ্তাহে ৭ মণ শিম বিক্রি করছি। উৎপাদন খরচ উঠেছে। এখন শুধু মাঝে মধ্যে স্প্রে করতে হবে আর শিম উঠায়ে বাজারে বিক্রি করা। রোগবালাই না হলে এমন করে আরও প্রায় দেড় থেকে দুই মাস শিম আসবে। গত বছর এ জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়েছে। এ বছর দাম ভালো থাকায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।’
চলবলা গ্রামের চাষি আসাদুল্লাহ বলেন, ‘সম্বল বলতে মাত্র ২০ শতাংশ জমি। যেখানে অন্য ফসলের সঙ্গে শীত মৌসুমে কয়েক বছর ধরে শিম চাষ করছি। গত বছরও ৬০ হাজার টাকা আয় করেছি শিম বিক্রি করে।’
তিনি জানান, শীতকালে শিমের বেশ চাহিদা থাকে তাই বাজারে এর দামও থাকে বেশি। বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই। পাইকারেরা খেত থেকে শিম কিনে নেয় ন্যায্য মূল্যে। অল্প জমিতে বেশি মুনাফা পেতে শিম চাষের বিকল্প নেই বলেও দাবি তার।
কালীগঞ্জ উপজেলার সোনারহাট এলাকার চাষি সামাদ মিয়া জানান, উঁচু জমিতে ধান চাষ করে তেমন মুনাফা না আসায় চাষাবাদ ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। হঠাৎ এক আত্মীয়ের পরামর্শে ২ বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে শিমের চাষ করে বেশ লাভবান হন তিনি। সেই থেকে শিম চাষে আগ্রহ বাড়ে তার। চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০শতাংশ জমিতে শিমের চাষ করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় করেছেন। উৎপাদন খরচ উঠে গিয়ে লাভের অংশে পড়েছেন তিনি। আবহাওয়া আর বাজার অনুকূলে থাকলে এক লাখ টাকা আয় করার আশা করছেন তিনি।
শিম চাষ করে সেই টাকায় সংসার চালিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মেটানোর পরেও প্রতি বছর জমি বন্ধক নিচ্ছেন তিনি। অভাবকে বিদায় দিয়েছেন। তার অনুকরণে ওই গ্রামের অনেক চাষি এখন বাণিজ্যিকভাবে শিম চাষ শুরু করেছেন।
চলবলা ইউনিয়নের উপসহকারী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের পরামর্শে শীতকালীন শিমের আবাদ করে এবার কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি জানান, শিম প্রোটিনসমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বিচিও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। তাই দেশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শিম চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলেও আশা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কমলা চাষে পরিশ্রম-খরচ দুটোই কম: নওগাঁর উদ্যোক্তা শফিকুল
১ দিন আগে
‘শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে দেখাই প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন হলো সব শিক্ষার্থী নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। তিনি দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এতে সেলফ সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন সাধন হবে।’
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আমিনুল বলেন, ‘একসময় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে ভালোদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা ছিল। শুধু মেধাবীরাই ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পেত। কম মেধাবীরা পেছনে পড়ে থাকত। কম মেধাবীদের পেছনে রাখা যাবে না, তাদেরও উঠিয়ে আনতে হবে। লটারি সিস্টেম চালু হওয়াতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন সমন্বয়ের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এতে ভালো ও মন্দের সমন্বয় হবে বলে মনে করি।’
আরও পড়ুন: দেশকে উন্নত ও শক্তিশালী করতে আমরা বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জানা গেছে, কম মেধাবীদের উঠিয়ে আনার জন্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন। তারা কম মেধাবীদের উঠিয়ে আনার জন্য উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। কম মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে মনোযোগ ও স্কুলমুখী করার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। এতে বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষাঙ্গনে বিশাল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে যেসব ছোট ছোট শিশুরা অধ্যয়ন করে তাদের অদম্য ক্রিয়েটিভিটি থাকে। তাদের এই ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শিশুদের এই ক্রিয়েটিভিটির মূল্যায়ন করে না। প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করার উদ্দেশ্যে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। যার কারণে তারা শুধু প্রশ্ন মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়। এতে তাদের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ও পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের শ্রদ্ধা
‘আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষকদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। মূল্যবোধ পরিবার থেকে তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, অনেক শিশুদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি হয় না। এক্ষেত্রে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভূমিকা নিতে হবে। কারণ শিশুরা স্কুল ও মাদ্রাসায়ই বেশি সময় কাটায়।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাকে মানসম্মত, যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা ব্যবস্থায় বরাদ্দ অনেক বেশি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। তিনি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
৫ দিন আগে
তিস্তার বালুচরেই দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা
লালমনিরহাটে কয়েক দফা বন্যার পর তিস্তার পানি নেমে গেলে জেগে ওঠা বালুচরে ভুট্টার বীজ বুনতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার বালুচরে ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্য ফসলের বীজ বুনতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। কোথাও দেখা গেছে ভুট্টার চারা গজিয়েছে। পোকামাকড়ের হাত থেকে ভুট্টার গাছ বাঁচাতে অনেকে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন।
লালমনিরহাটে ব্যাপক ফলনের কারণে জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে ভুট্টা। পাঁচটি উপজেলাজুড়ে সবুজ পাতায় স্বপ্ন বুনছেন ভুট্টা চাষিরা।
তবে বর্তমানে ভুট্টার বীজ ও সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষিরা। এ বছর প্রতি কেজি বীজের দাম ৪৫০-৫০০ টাকা বেড়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার রবি মৌসুমে ৩২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরদিকে জেলার ৩টি উপজেলায় চর উন্নয়ন প্রকল্প চালু হয়েছে। এতে প্রতি ব্যাচে ৩০ জন করে ১৬টি ব্যাচে কৃষকদের প্রযুক্তি কলাকৌশলে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল ও পোকার আক্রমণ না থাকলে কৃষকেরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
তিস্তা চরের কৃষক সাবেদ আলী বলেন, কয়েক বছর ধরে ভুট্টা চাষ করে বেঁচে আছি। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
৩ সপ্তাহ আগে
পলিথিন নিষিদ্ধের পক্ষে ক্রেতারা, বিকল্প নিয়ে শঙ্কা
পলিথিন ব্যাগের ওপর সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন জানিয়েছেন সুপারমার্কেটের গ্রাহকরা। তবে এর বিকল্প হিসেবে যেসব শপিং ব্যাগ ব্যবহার করতে হয় সেগুলোর জন্য তাদের ব্যয় বেড়েছে বলে জানালেন ক্রেতারা।
তারা মনে করেন, সুপারমার্কেটগুলোতে ছোট পণ্যের জন্য স্বল্পমূল্যের পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ বা বিনামূল্যের শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা উচিত।
সুপারমার্কেটের কর্মীরাও জানান, তাদের বেশিরভাগ ভোক্তা পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করার পদক্ষেপকে প্রশংসা করেছেন। তবে স্বল্পসংখ্যক ক্রেতা শপিং ব্যাগের জন্য বাড়তি অর্থ দেওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, দেশে পর্যায়ক্রমে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে ১ অক্টোবর থেকে সুপার শপগুলোতে 'নো মোর পলিথিন ব্যাগ' নীতিমালা চালু করেছে সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞা চালুর পর দিন ২ অক্টোবর শেওড়াপাড়ায় স্বপ্নের আউটলেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের বিভিন্ন দামে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ দিচ্ছেন তারা।
সেখানে কেনাকাটা করতে আসা শাহিনা সুলতানা বলেন, 'সুপারমার্কেটে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি কিন্তু নন-পলিথিন ব্যাগের দাম কিছুটা বেশি, যে কারণে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’
বেসরকারি সংস্থা আরটিএম ইন্টারন্যাশনালের কর্মরত শাহিনা মনে করেন, সুপারমার্কেটগুলোতে ছোট পণ্যের জন্য স্বল্পমূল্যের শপিং ব্যাগ বা বিনামূল্যে শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা উচিত, না হলে ক্রেতারা মুদি দোকান থেকেই কেনাকাটা করবে।
আউটলেটে আসা আরেক ক্রেতা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পীযূষ চন্দ্র শীল বলেন, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা সঠিক সিদ্ধান্ত। পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে আমরা এটাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
স্বপ্ন আউটলেটের ব্যবস্থাপক শাওন ইসলাম জানান, তারা ৬ টাকা থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দামে শপিং ব্যাগগুলো দিচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্রেতা স্বেচ্ছায় পরিবেশবান্ধব ব্যাগ কিনলেও কেউ কেউ বলছেন, শপিং ব্যাগের জন্য বাড়তি অর্থ দিতে রাজি নন তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘আউটলেটে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের নীতিমালা বাস্তবায়নের পর আমরা বড় ধরনের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি না। এখন আমাদের গ্রাহকদের ছোট একটি অংশকে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ কেনার ব্যাপারে রাজি করাতে হবে।’
চাল, মাছ ও ডালসহ বেশকিছু পণ্যের সঙ্গে তারা বিনামূল্যে কাগজের ব্যাগ সরবরাহ করেন বলে জানান শাওন ইসলাম।
শেওড়াপাড়ার আগোরার আউটলেটে কেনাকাটা করতে আসা সাদাত রাসেল বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় পলিথিন ব্যাগ ২০-২৫ বছর আগেই নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল।
এই বেসরকারি চাকরিজীবী আরও বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা শপিং ব্যাগের জন্য অর্থ দিতে রাজি। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের নন-ডিসপোজেবল পলিথিন ও প্লাস্টিক পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া এসব জিনিস স্বাস্থ্যসম্মত নয়।’
আগোরা আউটলেটের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন জীবন বলেন, টাকা দিয়ে শপিং ব্যাগ কেনায় অভ্যস্ত হতে ক্রেতাদের আরও সময় লাগবে। সবক্ষেত্রে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগের মূল্য পরিশোধে জনগণের মধ্যে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে উঠবে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, ১ অক্টোবর থেকে দেশের সব সুপারশপে পলিথিন ও পলি-প্রোপিলিন শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
পরে গত মঙ্গলবার পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, দেশে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে সরকার পলিথিনের উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে।
আগামী ১ নভেম্বর থেকে দেশের সব কাঁচাবাজারে দেশব্যাপী পলিথিনবিরোধী অভিযান শুরু হবে।
২ মাস আগে
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ যথেষ্ট এগিয়েছে। তাই বাংলাদেশ রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া যেমন বলেছিলেন আমাদের নারীরা যাতে স্বাবলম্বী হতে পারে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে- সেজন্য আমরা সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি (রোকেয়া) বলেছিলেন, যেদিন নারীরা জজ-ব্যারিস্টার হবেন সেদিনই তার স্বপ্ন পূরণ হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট এগিয়েছি।’
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিশিষ্ট ৫ নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখনো একজন নারীকে সরকার প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করতে পারেনি। আজ পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশেও একজন নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি।
রোকেয়ার স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেই আমরা তার প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ করতে পেরেছি।’
বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সমাজ, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য ৫ জন নারীকে বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জ সফরে নির্বাচনী আচরণবিধি রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী
পদক গ্রহীতা ৫ জন হলেন- নারী শিক্ষার জন্য বগুড়ার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা একরাম (মরণোত্তর); নারী অধিকারের জন্য রংপুরের প্রখ্যাত প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আক্তার; নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য নেত্রকোণার কামরুন্নেসা আশরাফ দিনা (মরণোত্তর); পল্লী উন্নয়নের জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের রণিতা বালা এবং লক্ষ্মীপুরের নিশাত মজুমদার (পর্বতারোহী)।
অনুষ্ঠানে পদক গ্রহীতাদের পক্ষ থেকে নিশাত মজুমদার তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর
১ বছর আগে
আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ হলো জুনায়েদের
নিরাপত্তাকর্মীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানের আসন পর্যন্ত যেতে পারলেও আকাশ থেকে পাখির চোখে পৃথিবী দেখার সুযোগ হয়নি শিশু জুনায়েদের। অবশেষ জুনায়েদ ঢাকা থেকে বিমানে উড়ে কক্সবাজারে এসেছে। এতে আকাশে উড়ার স্বপ্ন পূরণ হলো জুনায়েদের । শুধু তাই নয় কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয়েছে। আর এই সুযোগ করে দিয়েছে ওয়ালটন গ্রুপ।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে একটি ফ্লাইটে ঢাকা আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় জুনায়েদ মোল্লা। এরপর কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে রাখা হয় তাকে।
জুনায়েদ গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্লার ছেলে।
জুনায়েদ বলে, ‘নিরাপত্তা পেরিয়ে বিমানে উঠতে পারলেও বিমানে চড়ার স্বপ্নটি থেকে গেল। অবশেষে আমার সেই স্বপ্নটি পূরণ করেছে ওয়ালটন। তারা ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বিমানে করে নিয়ে আসল। আমার খুবই ভালো লেগেছে। এজন্য আমি ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
জুনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, ‘আমার ভাতিজার কারণে আমিও জীবনে প্রথম বিমানে চড়তে পারলাম। ওয়ালটন আমাদের ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসল। আমার ভাতিজা জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণ হলো সেটা ছাড়াও যে নিরাপত্তাকর্মীদের চাকরি চলে গেল, তাদের চাকরি যেন তারা ফিরে পায়। সরকারের কাছে এই আবেদন জানাই।’
১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ওঠে পড়েছিল শিশু জুনায়েদ। পাসপোর্ট কিংবা বোর্ডিং পাস ছাড়াই ১৪টি নিরাপত্তা স্তর ফাঁকি দিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে প্রায় ঘণ্টা খানেক বসে থাকে জুনায়েদ। কেবিন ক্রু তাকে সিটে বসতে দিলেও পরে তার কাছে ভিসা-পাসপোর্ট পাওয়া না গেলে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি তাকে বিমান থেকে নামিয়ে পুলিশের জিম্মায় দেয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে বিমানে শিশু: ১০ কর্মকর্তা বরখাস্ত
১ বছর আগে
স্বপ্নতে আলু, পেঁয়াজ ও চিনিতে বিশেষ ছাড়
ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রামের গ্রাহকদের জন্য আলু, দেশি পেঁয়াজ, চিনিতে বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে সুপারশপ স্বপ্ন। ১১ ও ১২ জুলাই এই দুই দিন পণ্য বিক্রির ঘোষণা নিয়ে এলে।
ঢাকা ও কুমিল্লার গ্রাহকদের জন্য থাকছে প্রতি কেজি আলু ৪৪ টাকায় (খোলা বাজারে যা ৪৮ টাকা প্রতি কেজিতে), বিশেষ ছাড়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৬ টাকায় (যা খোলা বাজারে ৭০-৭৫ টাকা প্রতি কেজিতে), চিনি (খোলা) স্বপ্নতে প্রতি কেজি বিক্রি হবে ১৩৬ টাকায় (বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়)।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে এক কোটি নিম্ন-আয়ের পরিবারের কাছে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি শুরু আজ
অন্যদিকে চট্টগ্রাম আউটলেটের জন্য প্রতি কেজি আলু ৪৭ টাকায় (খোলা বাজারে যা ৫০ টাকা প্রতি কেজিতে), বিশেষ ছাড়ে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৭ টাকায় (যা খোলা বাজারে ৬০ টাকা প্রতি কেজিতে), চিনি (খোলা) প্রতি কেজি বিক্রি হবে ১৩৬ টাকায় (বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়)।
সবশেষ সিলেটের স্বপ্ন গ্রাহকদের জন্য থাকছে বিশেষ ছাড়। প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকায় (খোলা বাজারে যা ৪২ টাকা প্রতি কেজিতে), বিশেষ ছাড়ে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৭ টাকায় (যা খোলা বাজারে ৪৯-৫০ টাকায় প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে)।
আরও পড়ুন: রমজানকে সামনে রেখে টিসিবির ৫টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু
১ কোটি পরিবারের জন্য বৃহস্পতিবার থেকে পণ্য বিক্রি শুরু টিসিবির
১ বছর আগে
শৈবাল: সুন্দরবন উপকূলে স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষকদের
সামুদ্রিক শৈবাল বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাব্যতা যাছাই চলছে। সফলতাও পেয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এতে নতুন আয়ের পথ সৃষ্টি হয়েছে সুন্দরবন উপকূলে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সংলগ্ন খুলনার কয়রায় ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সামুদ্রিক শৈবাল চাষের সম্ভাব্যতা যাচাই করে সফলতা পায় সরকারের কৃষির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি।
বর্তমানে সামুদ্রিক শৈবালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। ফলে সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় চাষ সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে পারলে নতুন আয়ের দুয়ার খুলবে।
শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালীর মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রায় দু’বছর আগে প্রশিক্ষণ দেয়ার পরে বীজ দিয়েছিল। এখানে আমরা ৩০ জন চাষ করি। তেমন কোন কষ্ট নেই। মাঝেমধ্যে রশিতে আবর্জনা বাধলে ছাড়িয়ে দিতে হয়। দুই রকম বীজ দিয়েছিল। এর মধ্যে বারি ১ খুব ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, শৈবাল কাঁচা অবস্থায় আমাদের কাছ থেকে স্যারেরা প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে কিনে নেয়। আমি এ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার শৈবাল বিক্রি করেছি। বড় আকারে চাষ করতে পারলে তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই বেশ আয় যোগ করা যাবে।
আরও পড়ুন: শাবি অধ্যাপকের উদ্ভাবন: স্থলজ পরিবেশে হবে সামুদ্রিক শৈবাল
খুলনার কয়রা উপজেলার টেপাখালী গ্রামের বাসন্তী মুন্ডার বলেন, নোনা পানির মাছের ঘেরের মধ্যে রশি টানিয়ে শৈবালের বীজ বেঁধে রেখে দেই। এই শৈবাল পানি থেকে সরাসরি পুষ্টি নিয়ে বাড়ে। এদের কোনো মূল, কাণ্ড, পাতা, ফুল বা ফল হয় না। এটা দেখতে সেমাইয়ের মত।
তিনি বলেন, সরেজমিন কৃষি গবেষণা বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি বীজসহ যাবতীয় উপকরণের ব্যবস্থা করেছে।
একই উপজেলার ছয় নং কয়রা গ্রামের গোলাম মোস্তফাও মৎস্য ঘেরের মধ্যেও একইভাবে শৈবাল চাষ করছেন।
তিনি বলেন, পানির এক ফুট নিচ দিয়ে শক্ত রশি টানটান করে টানানো হয়েছে, বাঁশের সঙ্গে রশি বাঁধা রয়েছে। সেই রশিতে ১৫ সেন্টিমিটার পরপর শৈবালের বীজ বেঁধে দেয়া হয়। কোনো পরিচর্যা ছাড়াই বড় হয়। পরে আমাদের কাছ থেকে স্যারেরা নিয়ে যাচ্ছে। শুনেছি এগুলো অনেক কাজে লাগে, মানুষেও খায়।
পরীক্ষামূলক সামুদ্রিক শৈবাল চাষ চলছে সুন্দরবন উপকূলীয় শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জের পালবাড়িওতে। সুন্দরবন উপকূলের প্রায় শতাধিক চাষির ঘেরের নোনাপানির নিচে রশিতে দুলছে নতুন স্বপ্ন।
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, কয়রার (এমএলটি সাইট) সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, কৃষকদের উৎপাদন ভালো হচ্ছে। যা উৎপাদন হচ্ছে সেটা শুকিয়ে রেখে দেয়া হচ্ছে। বাজারজাতের ব্যবস্থা করতে পারলে কৃষকরা আরও আগ্রহী হবে এবং লাভবান হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবেষ দাস (উবনবংয উধং) বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ল্যাবরেটরির আওতায় স্বল্প পরিসরে একটি গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এখনও ফলাফল পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক শৈবাল মানুষের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি গুড়া করে হারবাল পণ্য হিসেবে মানুষ ব্যবহার করতে পারে। প্রসাধনী তৈরিতেও এটির গুরুত্ব রয়েছে। এছাড়া কৃষিক্ষেত্রে এটির ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। শুকিয়ে পাউডার হিসেবে মাটিতে ব্যবহার করলে মাটির পুষ্টি ধারণ ও পানি শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, লবণাক্ততার প্রভাব কমাবে।
এছাড়া ক্ষতিকর ব্যাকটোরিয়া যেগুলো ফসলে রোগ সৃষ্টি করে সেটা নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে।
আরও পড়ুন: রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান
১ বছর আগে
ভোলায় সরিষা আবাদে লাভের স্বপ্ন দেখছে কৃষক
কৃষি কাজ করেই চলে মো. তাজুল ইসলামের সংসার। তিনি এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। তার দিগন্তজোড়া সরিষাখেতে দুলছে থোকায় থোকায় সরিষা। আর কিছুদিন পরই খেতের সরিষা ঘরে তুলবেন তিনি।
কৃষি বিভাগ থেকে সরকারিভাবে দুই কেজি বীজ পেয়েছেন এবং আরও দুই কেজি কিনে এ বছর দেড় একর জমিতে অগ্রহায়ণ মাসে সরিষা আবাদ করেন।
আরও পড়ুন: সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
এতে তার প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন। তার আশা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। এমন প্রত্যাশার কথাই জানিয়েছেন ভোলা সদর উপজেলার হাজির হাট বুড়ি মসজিদ সংলগ্ন এলাকার কৃষক মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, গত বছর সরিষা আবাদ করে খুব অল্প সময়ে তার ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। তাই এ বছর আবারও সরিষার আবাদ করেছেন। আগামী বছর তিনি আশা করছেন দুই একর জমিতে আবাদ করবেন। তার মতো এলাকার আবদুল খালেকসহ বহু কৃষক সরিষার আবাদ করেছেন। কাঁচা সরিষা ফুলের মন জুড়ানো দৃশ্যে যেমন হাসি ফুটেছিল কৃষকের মুখে, তেমনি ভালো ফলন আসায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা এখন সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষি বিভাগের মতে, ভোলা জেলার সাত উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এ বছর জেলায় সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করতে ১০ হাজার দুইশ’কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মৌসুমে ভোলা জেলায় পাঁচ হাজার আট শত হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। আর উৎপাদন হয়েছিল আট হাজার ১২০ মেট্রিকটন।
লাভজনক ফসল হওয়ায় এ বছর প্রায় ২৮ হাজার কৃষক সরিষা আবাদ করেছে। এ বছর সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ হাজার আটশ’হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৬৭ হেক্টর জমিতে।
কৃষকরা জানায়, ভোলা জেলায় সাধারণত বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৬, বারি-১৭, বারি-১৮, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-৪ জাতের আবাদ বেশি করা হয়।
আমন ও বোরো ধানের মাঝামাঝি সময়ে চাষ হওয়া সরিষা জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। সরিষার পাতা থেকে সৃষ্ট জৈব সার ধানের পুষ্টি জোগান দেয়। বীজ রোপণের পর থেকে সর্বোচ্চ ৮০-৯০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে সরিষার বাম্পার ফলন
প্রথম দিকে আগাছা পরিষ্কারের কাজ ছাড়া তেমন পরিশ্রমও হয় না সরিষা চাষে। তাই স্বল্প সময়ে চাষ সম্ভব বলে অনেক চাষিই সরিষায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ভোলার পূর্ব ইলিশার গুপ্ত মুন্সি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পারভেজ মিজি তার সরিষা খেতে শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তিনি জানান, তিনি গত ৮/১০ বছর ধরে সরিষা আবাদ করছেন। এ বছর ৬ গন্ডা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। পাঁচ মণ সরিষা হয়েছে। তিনি ১৮ হাজার টাকায় বিক্রিও করেছেন। তার ১০/১২ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
১ বছর আগে
শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখান না,স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন: পার্বত্যমন্ত্রী
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পার্বত্য তিন জেলায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরিকল্পনা বিভাগে আরও এক হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তা অনুমোদিত হলে পার্বত্য অঞ্চলের অধিকাংশ বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।
শুক্রবার রাঙ্গামাটি জেলার সদর উপজেলাধীন বালুখালী ইউনিয়নের মরিশ্যা বিল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দুর্গম এলাকার ৬৩৯ সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার হোম প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে,যার প্রমাণ দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে। সবকিছুই দৃশ্যমান। আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করে পার্বত্য তিন জেলায় উন্নয়নের ধারাকে গতিশীল রাখার জন্য সকলের সহযোগিতা চান পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুল আলম চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় বসবাসরত ৪০ হাজার অনগ্রসর দরিদ্র পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ ৬৩৯ পরিবারের ঘরে সৌর বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যাবে। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কাপ্তাই উপজেলাধীন দুর্গম ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ১১৫টি পরিবার সোলার প্যানেলের আলো ভোগ করা শুরু করেছে। পার্বত্য অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা যাতে আলো,বাতাস পায় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর জন্য কাউকে কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না।
তিনি এলাকাবাসী ও উপকারভোগীদের উদ্দেশে বলেন, যদি কেউ সোলার প্যানেল নিতে টাকা পয়সা চায়, তাহলে তাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিবেন না হয়,আমাকে সরাসরি ফোন দিবেন।
পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, প্রথম পর্যায়ে বিদ্যুতের আলো বঞ্চিত ১১ হাজার পরিবারকে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ ও স্থাপন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩১ হাজার সোলার হোম প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৯ হাজার সোলার হোম সিস্টেম চলতি বছরের মধ্যে বিতরণ ও স্থাপন কাজ শেষ হবে।
মন্ত্রী বলেন, এই সোলার প্যানেল সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অন্তত ২০ বছর পর্যন্ত প্রত্যেকটি পরিবার বিনামূল্যে বিদ্যুতের আলো,ফ্যান ও মোবাইল চার্জারের সুবিধা পাবেন।
তিনি আরও বলেন,উপকারভোগীদের সোলার প্যানেলের ব্যবহারবিধি ভালোভাবে জানার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী প্রত্যেক উপকারভোগীকে নগদ আরও ৬৫০ টাকা করে দেয়া হবে বলে জানান পার্বত্য মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে দুই বছর লাগতে পারে: বীর বাহাদুর উশৈ সিং
মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং এমপি পার্বত্য শান্তি চুক্তির ইস্যু টেনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো একটি গুলি খরচ না করে, হানাহানি না ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের বিরাজমান সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক ইস্যুতে সমাধান করেছেন।
তিনি বলেন,অতীতের ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনামল, ২৩ বছরের পাকিস্তানের শাসনামল এবং বাংলাদেশের ৫১ বছরের শাসনামলে কোনো সরকারই মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে নাই। সেইসময়ে বয়স্ক মানুষ, বিধবা ও প্রতিবন্ধী সবই ছিল কিন্তু কোনো সরকারই ওই সমস্ত অসহায়, গরিব ও দুঃখী মানুষকে কোনো প্রকার ভাতা বা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে নাই।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই এসমস্ত গরিব, দুঃখী, অসহায় মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ব্যবস্থা করেছেন।
সরকারের উন্নয়ন চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পার্বত্য তিন জেলায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, খিয়াম, গীর্জা, মসজিদ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, মানুষের জীবন মান উন্নয়ন সব কিছু হয়েছে।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, এ সরকারের মেয়াদকালের মধ্যেই পার্বত্য অঞ্চলের ১৪৪টি বিদ্যালয়কে সরকারীকরণের আওতায় আনা হবে।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর বালুখালী সোলার প্যানেল হোম সিস্টেম বিতরণ শেষে নানিয়ারচর উপজেলাধীন বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ এর সমাধীস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদের সমাধীস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। স্মৃতিস্তম্ভে দাঁড়িয়ে তিনি কিছু সময় নিরবতা পালন করেন এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক: উশৈ সিং
১ বছর আগে