ই-অরেঞ্জ
ই-অরেঞ্জের প্রতারণা: ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণা মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বনানী থানার বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দাশের আদালত এই আদেশ দেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা আমানুল্লাহ, বিথী আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও নাজমুল হাসান রাসেল।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ তদন্তের পরে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত তা গ্রহণ করেন। এরপর ই-অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।’
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জ থেকে রাজস্ব আদায় না করায় হাইকোর্টের উষ্মা প্রকাশ
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা করেন চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারের ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুরুল আবসার পারভেজ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে অগ্রিম টাকার পুরোটা পরিশোধের পরও মাসের পর মাস পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ব্যবসায়ী নুরুল আবছার পারভেজ।
তিনি মামলায় অভিযোগ করেন, ওই বছরের ২৭ মে এরপর থেকে বিভিন্ন সময় পণ্য ক্রয় করার জন্য ই-অরেঞ্জকে টাকা দেন এই গ্রাহক। নির্দিষ্ট সময়ের পরও; এমনকি এখন পর্যন্ত গ্রাহককে কোনো পণ্য সরবরাহ করেনি। অর্ডার নেওয়ার পর থেকে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের আশ্বাস দেয়, কিন্তু তারা পণ্য সরবরাহ না করে দেশে প্রায় ১ লাখ গ্রাহকের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আত্মসাৎ করা এ টাকার মধ্যে চট্টগ্রামের নুরুল আবছার পারভেজ, মোর্শেদ সিকদার ও মাহমুদুল হাসান খান নামের তিনজন ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া ও তার স্বামীসহ ৩ জন একদিনের রিমান্ডে
১ বছর আগে
ই-অরেঞ্জ থেকে রাজস্ব আদায় না করায় হাইকোর্টের উষ্মা প্রকাশ
ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান প্রতিবেদন দাখিল না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘উনি (এনবিআর চেয়ারম্যান) কেন আদালতের আদেশ ফলো (অনুসরণ) করছেন না? কারণ কী? উনি নিজেকে কি সম্রাট ভাবেন? যে ব্যাখ্যা ও তথ্য চাওয়া হয়েছে,তা দাখিল করতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে বলবেন।’
এরপর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি জানাব।’
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় বিষয়ে জানাতে স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানের কার্যতালিকায় আসে।
শুনানির শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত চলছে। গত বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্র হাতে এসেছে, যে কারণে হলফনামা করা হয়নি। এ সপ্তাহে দাখিল করা যাবে। তবে পত্রিকায় এসেছে, জামিন নিয়ে ভারতের কারাগার থেকে সোহেল রানা পালিয়ে গেছেন। ভারত থেকে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজিপির প্রতিবেদন একই ধরনের।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম বলেন, আদেশ প্রতিপালনের জন্য সময় চাইলে আদালত সময় দিতে পারেন। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তথা এনবিআরের চেয়ারম্যান প্রতিবেদন দাখিল করেননি। শেখ সোহেল রানার (বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক) বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোল কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে, যা পরে দেয়া হয়নি বলে রাষ্ট্রপক্ষের হলফনামায় দেখা যাচ্ছে।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘শেখ সোহেল রানার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হয়েছে, যার নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রিপোর্ট পাইনি।’
এ সময় আদালত বলেন, ‘এনবিআরকে জানিয়েছিলেন কি?’
হ্যাঁ–সূচক জবাব দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, গুরুত্ব দেখা যাচ্ছে না।
আদালত বলেন, ‘এনবিআরেরটিসহ দু’টি প্রতিবেদন একসঙ্গে দেবেন।’
একপর্যায়ে আদালত বলেন, এনবিআরের চেয়ারম্যান কে?
তখন আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ুম বলেন, আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আমরা লাস্ট চান্স দিলাম। এটি দেখেন। বলে দেবেন, এবার প্রতিবেদন না দিলে ডাকা হবে। রেড নোটিশ জারি না হয়ে থাকলে, জারির ব্যবস্থা বা কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা দেখবেন। যে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা দিতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে বলবেন। এই দু’টি দেন। বিষয়টি ২৭ মার্চ কার্যতালিকায় আসবে।’
ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেনসহ ছয়জন গ্রাহক গত বছর মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার ভাই সোহেল রানা, বিথি আক্তারসহ ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ব্যাংকসহ কার কোথায় কত ব্যক্তিগত সম্পদ আছে তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয় রিটে।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডিকে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
একই সঙ্গে গ্রাহক নিরাপত্তা, সুরক্ষায় ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না,জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ
সোহেল রানা,সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে রিট আবেদনকারীসহ প্রতারিত অন্যান্য গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বণ্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএফআইউর প্রধান, সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারকে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত।
এরপর গত বছরের ৩ নভেম্বর বিএফআইইউ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আইজিপির প্রতিবেদন সুস্পষ্ট নয় এবং দুদকের প্রতিবেদন সন্তোষজনক নয় উল্লখ করে সেদিন আদালত নতুন করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশসহ আদেশ দেন।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
সেদিন রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, ‘ভারতে অনুপ্রবেশের কারণে শেখ সোহেল রানা তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে প্রেসিডেন্সি কারেকশনাল হোম আলীপুর, ভারতে আটক ছিলেন। পত্রপত্রিকার খবরে দেখেছি, জামিন নিয়ে পরে সেখান থেকে সোহেল রানা পালিয়ে গেছেন। আর বিএফআইইউর পক্ষ থেকে ই-অরেঞ্জ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা ও ব্যাংক হিসাবের নম্বর উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই দিন শুনানি নিয়ে শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় বিষয়ে জানিয়ে ফের প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
১ বছর আগে
ই-অরেঞ্জের অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এবং ভাই পুলিশ পরিদর্শক (বরখাস্ত) শেখ সোহেল রানার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
পাশাপাশি সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই শেখ সোহেল রানা ও চাচা মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ কর্তৃক নগদে উত্তোলন ও ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং নিজ নামে স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করার জন্য মোট ১৮ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা ই-অরেঞ্জ এর হিসাব থেকে স্থানান্তর/উত্তোলন করেন।
গ্রাহকদের অগ্রীম মূল্য পরিশোধিত অর্ডারের কাঙ্ক্ষিত পণ্য সরবরাহ না করে সন্দেহভাজনরা উল্লিখিত অর্থ তাদের ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর, নগদে উত্তোলন ও ব্যক্তিগত স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করেছেন মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে যা প্রতারণার শামিল।
বুধবার (২ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে বিএফআইইউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,প্রাথমিক পর্যায়ে ই-অরেঞ্জ.শপ ও অরেঞ্জ বাংলাদেশ এর মালিকানায় সোনিয়া মেহজাবিন থাকলেও পরে তা পরিবর্তন করে পুলিশ কর্মকর্তা (বরখাস্ত) শেখ সোহেল রানার (সোনিয়া মেহজাবিনের ভাই) স্ত্রী নাজনীন নাহার বিথির নামে হস্তান্তর করা হয়।
সন্দেহভাজন প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে অল্প সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ১৩টি হিসাব খুলে লেনদেন পরিচালনা করা হয়েছে।
১৩টি হিসাবের মাধ্যমে জানু ২০১৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত সময়ে ১ হাজার ১১১.৪৫ কোটি টাকা জমা ও ১ হাজার ১০৯.৯৭ কোটি টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ২২১.৪২ কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে।
হিসাবগুলোতে জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুলাই ২০২১ পর্যন্ত সময়ে অধিকাংশ লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মো. মাসুকুর রহমানের নামে সর্বমোট ২৪টি হিসাব পরিচালনা করে লেনদেন সম্পন্ন করা হয়েছে মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে। ওই ২৪টি হিসাবের মাধ্যমে সময়ে সময়ে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি প্রায় ১২০ কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন করেছেন।
হিসাব খোলার ফরমের তথ্য অনুযায়ী ই-অরেঞ্জ শপ ও অরেঞ্জ বাংলাদেশ এর ব্যাংক হিসাবের নমিনি ও হিসাব খোলার আবেদনে হিসাবটির পরিচয়দানকারী ছিলেন মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ।
একইভাবে, রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল এর হিসাব খোলার আবেদন ফরমে পরিচয়দানকারী ছিলেন সোনিয়া মেহজাবিন। আলোচ্য সন্দেহভাজন প্রতিষ্ঠান ৩টির ব্যবসায়িক ঠিকানা একই মর্মে ব্যাংক হিসাবের দলিলাদিতে উল্লেখ রয়েছে।
তাছাড়া প্রতিষ্ঠান তিনটির ব্যাংক হিসাবে নিয়মিতভাবে ফান্ড ট্রান্সফার, আরটিজিএস এর মাধ্যমে লেনদেন সংঘটিত হয়েছে মর্মে লেনদেন বিশ্লেষণে পরিলক্ষিত হয়েছে।
প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যালোচনা অংশে বলা হয়েছে, ই-অরেঞ্জ শপ, অরেঞ্জ বাংলাদেশ ও রেড অরেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক কমমূল্যে গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের বিভিন্ন লোভনীয় অফারে প্রলুব্ধ করে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ডারের মূল্য বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। পরে জমা করা অর্থ থেকে বিভিন্ন মার্চেন্টকে পরিশোধ করার পাশাপাশি সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, ভাই শেখ সোহেল রানা ও চাচা মোহাম্মদ জায়েদুল ফিরোজ কর্তৃক নগদে উত্তোলন ও ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং নিজ নামে স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করার জন্য মোট ১৮.৫৬ কোটি টাকা ই-অরেঞ্জ এর হিসাব থেকে স্থানান্তর/উত্তোলন করেন। গ্রাহকদের অগ্রীম মূল্য পরিশোধিত অর্ডারের কাঙ্ক্ষিত পণ্য সরবরাহ না করে সন্দেহভাজনরা উল্লিখিত অর্থ তাদের ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর, নগদে উত্তোলন ও ব্যক্তিগত স্থায়ী সম্পদ ক্রয় করেছেন মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে যা প্রতারণার শামিল।
উল্লেখ্য, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ২(শ)(৫) ধারা অনুসারে প্রতারণা সম্পৃক্ত অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত। কাজেই বর্ণিত অপরাধলব্ধ আয় আলোচ্য ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা, উত্তোলন, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মানিলন্ডারিং অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।
বিএফআইইউ কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত ই-অরেঞ্জ.শপ ও এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব হিসাবের সব তথ্য তদন্তের স্বার্থে ২৩/০৬/২০২১ তারিখে সিআইডিতে সরবরাহ করা হয়েছে। ই-অরেঞ্জ.শপ ও এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত সব হিসাবে প্রতারণা থেকে উদ্ভূত অর্থ জমা হয়ে থাকতে পারে মর্মে সন্দেহ করে সিআইডির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে হিসাবগুলোর লেনদেন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২৩(১)(গ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গত ২৫/০৮/২০২১ তারিখে স্থগিত করা হয়। পরে ওই স্থগিতাদেশ ৩য় দফায় বর্ধিত করা হয়। বর্তমানে ই-অরেঞ্জ.শপ ও এর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত মোট আটটি হিসাব আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের অংশে বলা হয়েছে, ই-অরেঞ্জ.শপ ও অরেঞ্জ বাংলাদেশ এর হিসাবে সম্পন্ন হওয়া লেনদেন পর্যালোচনায় পেমেন্ট গেটওয়ে সফটওয়্যার শপ লি.(এসএসএল কমার্স) কর্তৃক মোট তিন লাখ চার হাজার ৫২৫টি অর্ডার আইডির বিপরীতে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ই-অরেঞ্জ শপকে পরিশোধ করা হয়েছে এবং ৬৬১টি অর্ডার আইডির মোট ৬৫.৯৯ লাখ টাকা গ্রাহককে রিফান্ড করা হয়েছে মর্মে পরিলক্ষিত হয়েছে।
ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয়জন গ্রাহক গত মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)এর কাছে প্রতিবেদন চান। রুলে গ্রাহকদের নিরাপত্তা, সুরক্ষায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার সাময়িক বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, সত্ত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, অর্থপাচারের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিস্ক্রীয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
একইসঙ্গে সোহেল রানা, সত্ত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে আবেদনকারীসহ অন্যান্য প্রতারিত গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বন্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। ওই আদেশ অনুসারে বিএফআইইউ প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও আব্দুল কাইয়ুম লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত ই–অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত সোহেল রানাকে গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করে। পরে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্তের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ।
২ বছর আগে
ই-অরেঞ্জের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
গ্রাহকদের সঙ্গে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণা ও গ্রাহক ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত বাংলাদেশর কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে এই তদন্ত করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাত করে বিদেশে থাকা পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিক বিথিসহ ৫ জনের ব্যাংক হিসাব তলব
বৃহস্পতিবার গ্রাহকদের কাছ থেকে আত্মসাতকৃত অর্থ ফেরতের দাবিতে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট রুলে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত করে যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন। সেই সঙ্গে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার করে গ্রাহকদের কেন ফেরত দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাণিজ্য সচিবসহ মোট ৯ জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। আর রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও আব্দুল কাইয়ুম।
গত বছরের বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকরা ই-অরেঞ্জ থেকে বিভিন্ন পণ্যের জন্য অর্থ দিয়ে ভাউচার কিনেন। কিন্তু পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে মালিকপক্ষ কোম্পানি গুটিয়ে পালিয়ে যায়। এমন প্রেক্ষাপটে ৭৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার পাশাপাশি কত টাকা বিদেশ পাচার করা হয়েছে তা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩ এপ্রিল এই রিটটি করেন ই-অরেঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত ৫৪৭ গ্রাহক। সে রিটের শুনানি নিয়ে আজ রুলসহ আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
২ বছর আগে
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া ও তার স্বামীসহ ৩ জন একদিনের রিমান্ডে
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান ও চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্ল্যাহর একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
একই দিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করা হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক সুব্রত দেবনাথ তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন।
গত ৭ অক্টোবর সাজ্জাদ ইসলাম নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী হাতিরঝিল থানায় মামলাটি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ই-অরেঞ্জের চমকপ্রদ অফার দেখে তিনি, তার ভাই এবং এক বন্ধু গৃহস্থালি পণ্য ও মোটরসাইকেল কেনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু ই-অরেঞ্জ পণ্য সরবরাহ না করে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করে।
আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট গ্রাহকদের এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন মো. তাহেরুল ইসলাম নামের আরেক গ্রাহক। ওই দিনই সোনিয়া মেহজাবিন এবং তার স্বামী মাসুকুর রহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় আমান উল্যাহকে।
২৩ আগস্ট এ তিন আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় এবং আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়। কয়েকটি মামলায় বেশ কয়েক দফা তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিক বিথিসহ ৫ জনের ব্যাংক হিসাব তলব
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
৩ বছর আগে
ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
প্রতারণার আভিযোগে এবার চট্টগ্রামে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিকসহ সাত জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে নুরুল আবছার পারভেজ নামে এক গ্রাহক মামলাটি করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ সোহেল রানা, চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্লাহ, বীথি আক্তার, জায়েদুল ফিরোজ ও ই-অরেঞ্জের সাবেক চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) নাজমুল আলম রাসেল।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবি গোলাম মাওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ই-অরেঞ্জ সারাদেশে লাখ লাখ গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা চট্টগ্রামের প্রতারিত গ্রাহকদের টাকা ফেরত চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কয়েকদিন আগে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং প্রতারিতদের অর্থ ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করি, আমরা ন্যায়বিচার পাবো।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৭ মে এর পর থেকে বিভিন্ন সময় পণ্য ক্রয় করার জন্য ই-অরেঞ্জকে অর্থ প্রদান করেন গ্রাহক নুরুল আবছার পারভেজ। নির্দিষ্ট সময়ের পরও এমনকি এখন পর্যন্ত গ্রাহককে কোনও পণ্য সরবরাহ করেনি। অর্ডার নেয়ার পর থেকে ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে নোটিশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহের আশ্বাস দেয়, কিন্তু তারা পণ্য সরবরাহ না করে দেশে প্রায় এক লাখ গ্রাহকের ১১শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। আত্মসাৎ করা এ টাকার মধ্যে চট্টগ্রামের নুরুল আবছার পারভেজ, মোর্শেদ সিকদার ও মাহমুদুল হাসান খান নামের তিনজন ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ ৩ জন কারাগারে
একই অভিযাগে এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত ও কুমিল্লার আদালতেও সোনিয়া মেহজাবিন এবং মাসুকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, কর্মকর্তা আমান উল্লাহ ও সাবেক কর্মকর্তা নাজমুল আলম রাসেল অন্য এক প্রতারণা মামলায় ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারে আটক আছেন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ তিনজন ৫ দিনের রিমান্ডে
৩ বছর আগে
ই-কমার্স নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চায় হাইকোর্ট
দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের গৃহীত পদক্ষেপসহ তিনটি বিষয় জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ে এনবিআরের পলিসি কী এবং ই-কমার্স খাতের স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের করা ১৬ সদস্যের কারিগরি কমিটির কার্যপরিধি কী তা-ও জানতে চেয়েছেন।
ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীদের পৃথক তিনটি রিটের শুনানিকালে মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত রিট আবেদনগুলোর শুনানি মূলতবি করে এ সময়ের মধ্যে লিখিতভাবে এসব বিষয়ে জানাতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: ই-কমার্সে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়া সম্ভব: বাণিজ্যমন্ত্রী
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ শিশির মনির ও হুমায়ন কবির পল্লব। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ই-কমার্সের গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.আনোয়ারুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন।
পরে গত ২২ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুজন গ্রাহকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির একটি রিট দায়ের করেন। এই রিটে কোনো ব্যক্তি বা সরকারি কর্তৃপক্ষের অবহেলা বা ব্যর্থতায় ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, দারাজ, কিউকম, আলাদিনের প্রদীপ ও দালাল প্লাসের মতো পরিচিত বাজার থেকে পণ্যের জন্য লাখ লাখ গ্রাহকের ক্ষতি ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে এক সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স বন্ধ নয়, শৃঙ্খলা আনতে রেগুলেটরি অথরিটি হচ্ছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
পরে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জের কাছে আটকে থাকা টাকা উদ্ধারে ৩৩ জন গ্রাহক একটি রিট করেন। এই রিটে ই-অরেঞ্জসহ অন্যান্য অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহে রিসিভার নিয়োগের, অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানসমূহের দায়িত্বশীল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান এবং গ্রাহক ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু পরিচালনার নিমিত্তে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অর্থনীতিবিদ, তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের আর্জি জানানো হয়েছে।তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
মঙ্গলবার এই তিনটি রিটের ওপর এসব রিটে কোন ব্যক্তি বা সরকারি কর্তৃপক্ষের অবহেলা বা ব্যর্থতায় ইভ্যালি, আলিশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, দারাজ, কিউকম, আলাদিনের প্রদীপ ও দালাল প্লাসের মতো পরিচিত অনলাইন বাজার থেকে পণ্যের জন্য লাখ লাখ গ্রাহকের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে এক সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তিনটি রিট একই ধরণের হওয়ায় আদালত একসাথে শুনানি গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
৩ বছর আগে
ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ
টাকা ফেরত ও ই-অরেঞ্জের মূলহোতা সোহেলকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দেড়টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মৎস্য ভবনের দিকে যাওয়ার পথে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করলে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ ৩ জন কারাগারে
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় নেয়া হয়েছে। এমনিতেই আজ বৃহস্পতিবার, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস। সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। এরমধ্যে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। আমরা তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি।
এর আগে তারা বেলা ১২ টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। এরপর কর্মসুচি শেষ করে মৎস ভবনের দিকে যায়। মানববন্ধনে ই-অরেঞ্জের মালিক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ পরিদর্শক সোহেলের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
গ্রাহকদের দাবি, ই-অরেঞ্জ যেহেতু অরেঞ্জ বাংলাদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠান, তাই ভুক্তভোগীদের সব দায় মূল প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। ই-অরেঞ্জ সংক্রান্ত সব মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির দাবিও করেন তারা। একইসঙ্গে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না আসা পর্যন্ত সব আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করার আহ্বান জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
৩ বছর আগে
ই-কমার্স বন্ধ নয়, শৃঙ্খলা আনতে রেগুলেটরি অথরিটি হচ্ছে: বাণিজ্যমন্ত্রী
ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধ করা হবে না। তবে এই ব্যবসা সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে এবং সব প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেছেন, ‘সারা বিশ্বে ই-কমার্স চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে এ ব্যবসার সাথে লাখ লাখ মানুষ জড়িত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাণিজ্য পরিচালিত হবে। সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য একটি রেগুলেটরি অথরিটি গঠন করা হবে।’
বুধবার বিকালে ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের দেনা পরিশোধে তাদের কি পরিমাণ সম্পদ আছে, ইভ্যালির সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের সে সম্পদ দিয়ে কতটুকু অ্যাড্রেস করতে পারবে। আগামীতে যাতে মানুষ আর প্রতারিত না হয় সেটি দেখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘তাদের জেলে ভরে রাখলে তো কিছু পাবে না তারা (গ্রাহক)। আবার কিছু না থাকলে বের করলেও লাভ হবে না। দেশে দুই হাজার ব্যবসায়ী ছিল না, এখন দুই লাখ ব্যবসায়ী হয়েছে। যে সমস্যা হয়েছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। ১০/১২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, এছাড়াও আলিশা মার্টকেও আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’
আরও পড়ুন: ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
টিপু মুনশি বলেন, ইভ্যালির ৫০০ কোটি টাকার দায় রয়েছে। অর্ধেক কাস্টমার, অর্ধেক মার্চেন্টদের। শুনেছি ৮০/৯০ কোটি টাকার সম্পদ আছে। তাদের চিন্তা কি সেটা জানার চেষ্টা করা হবে। এগুলো আজকের আলোচনায় এসেছে। ইভ্যালির মতো প্রতিষ্ঠানের টাকা শোধের এবিলিটিই নেই। তারা প্রচারের জন্য ব্যাপক টাকা বিনিয়োগ করেছে। ক্রিকেট খেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় টাকা নষ্ট করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের মালিক জেলে আছে। আবার কোম্পানির কেউ কেউ পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, অনেকে যারা করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী তারা ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছে। তাই ই-কমার্স বন্ধ করা যাবে না। যারা চিটিং করেছে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটি একটি বিষয় এবং সামনে কিভাবে চলা যায় সেটি একটি বিষয়।’
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
তিনি বলেন, ‘গত ৪ জুনের আগে ছয় হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এখন বাকি চারমাসে ৬০০ কোটি টাকা স্ক্রো ফান্ডে জমা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানানো ১২ টাকার জিনিস ১ টাকায় দেয়া যায় না। এ ধরনের বড় কোম্পানিকে এখন থেকে সতর্কীকরণ বার্তা দিতে হবে। ’
আরেক প্রশ্নে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের কাজ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। কিন্তু তারা যে মানুষকে লোভ দেখাচ্ছে সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে না। ১০০ টাকার জিনিস তারা ৫০ টাকায় দিতে চায়, সেটা কিভাবে সম্ভব। মানুষ লোভ সংবরণ করতে পারেনি। লোভ সংবরণ করা দরকার।’
সরকার টাকার দায় নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার তো টাকা নেয়নি। যে লোকটা একটি মটরসাইকেল কিনে লাভ করেছে, পরে আরও ১৭ টা অর্ডার করেছে। লাভের ভাগিদার তো সরকার হয়নি। তাদের (ইকমার্স প্রতিষ্ঠান) কতটুকু সম্পদ আছে সেটা দেখতে হবে।’
বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘আজকের বৈঠকে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। কেউ কেউ ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়েছে কয়েকটি খারাপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করা ঠিক হবে না। কিছু সুপারিশ এসেছে, সেগুলো হলো- ই-কমার্স ব্যবস্থাপনার জন্য ই-কমার্স রেগুলেটোরি করতে হবে,
ডিজিটাল কমার্স আইন করতে হবে। যে অভিযোগ আসছে সেগুলো বিভিন্নভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে, তাই সব কমপ্লেইন মনিটরিংয়ের কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে। যারা ইতোমধ্যে যে অপরাধ করেছে, প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যাতে ব্যবস্থা নেয়া যায় সেজন্য আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে। আর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন নিতে হবে, নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: ‘ই-কমার্স খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ জরুরি’
সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ে হাইকোর্টে রিট
অনলাইন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার দাবি করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম সোমবার সকালে আদালতের অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিটকারী আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের অনুমতি নিয়ে রিটটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ইভ্যালি ও ই অরেঞ্জের মতো ই কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে: ডিএমপি
রিটে বাণিজ্যসচিব, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব, অর্থসচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টসহ ছয়জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে ই-কমার্স বাণিজ্যে জবাবদিহি নিশ্চিত ও গ্রাহকের অধিকারবিরোধী চর্চা রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ই-কমার্স বাণিজ্যে জবাবদিহি নিশ্চিত ও গ্রাহকের অধিকারবিরোধী চর্চা রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে রিটে। এছাড়া ২০১৮ সালের জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে অনলাইন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।
আরও পড়ুন: ‘ই কমার্স খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ জরুরি’
রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অনলাইন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গ্রাহকের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠায় কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের আরজি জানানো হয়েছে এই রিটে
দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা নিয়ে একটা অস্থির সময় যাচ্ছে। গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ ও ধামাকার মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরী ও সাবেক সিওও নাজমুল আলম রাসেলকে। মামলা হয়েছে ধামাকার মালিকদের বিরুদ্ধেও। এরই মধ্যে হাইকোর্ট রবিবার লোভ কমাতে গ্রহকদের সচেতন করার তাগিদ দেন।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যান ৩ দিনের রিমান্ডে
৩ বছর আগে