যৌবন
কাপ্তাই লেকের যৌবন ফেরাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
কাপ্তাই লেকের হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, কাপ্তাই লেকের আগের সৌন্দর্য আর নেই। এটি যেন নুইয়ে পড়েছে। তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা কাপ্তাই লেকের আগের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে চাই।
তবে এই সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হলে শুধু মৎস্যজীবীদেরই নয়, এলাকার সর্ব সাধারণের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সহনশীল মাছ চাষে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
শনিবার দুপুরে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবীদের মাঝে ভিজিএফ (চাল) বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এ কথা জানান।
জেলেদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আগামী তিন মাস আপনারা লেকে মাছ ধরবেন না। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত মশারি জাল, বেহুন্দী জাল, কারেন্ট জাল ব্যবহার করবেন না। ছোট মাছ ধরবেন না। নিজের সন্তানের মতো মাছ বড় করতে হবে। কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে যা যা করা দরকার সবকিছুই করা হবে। এই লেকের ব্যবস্থাপনায় আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাপ্তাই লেক নিয়ে প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। রাঙামাটির বর্তমান ফিস ল্যান্ডিং সেন্টারটি সংস্কার করে আধুনিক ও উন্নত মানের ফিস ল্যান্ডিং স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
কৃষি জমিতে ব্যবহার করা কীটনাশকের ফলে মাছের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে ফসলের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তবে কেউ যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এসময় কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
জেলেদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যাতে বংশ পরম্পরায় কাপ্তাই লেকের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন সে বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ১ কোটি ৩০ লাখ গবাদিপশুর যোগান দেওয়া হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
৬ মাস আগে
যমুনার পানি প্রবেশ: হারানো যৌবন ফিরে পেল কাটাখালি
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ যুগ পর সিরাজগঞ্জ শহরের কাটাখালিতে যমুনার পানি প্রবেশ করায় হারানো যৌবন এখন ফিরে পাচ্ছে কাটাখালি। বিকাল হলেই এখন অনেকেই ভিড় জমায় কাটাখালির চিত্র দেখতে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (হেড কোয়ার্টার) জাকির হোসেন জানান, বিপুল অংকের টাকা ব্যয়ে দেশের ৬৪ জেলার ছোট নদী-খাল-বিল পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের কাটাখালি পুনঃখনন ও সংস্কারের কাজও এগিয়ে চলেছে। কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনা নদীর পানি ইছামতি ও ফুলজোড় নদীতে গড়েছে এবং বাঐতারা স্লুইচগেটে বন্যার পানি কাটাখালিতে প্রবেশ করছে। এ পানি প্রবেশ করায় কাটাখালির ময়লা আবর্জনাও চলে যাচ্ছে যমুনায়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জের যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত
জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের জন্য এ খালটি খনন করে যমুনা নদীর সাথে সংযোগ করা হয়। সিরাজগঞ্জ শহরের মাঝখানে কাটাখালির উপর ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৮৮২ সালে নির্মিত হয় একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ। ১৮০ ফুট লম্বা আর ১৬ ফুট চওড়া এ ব্রীজটির অন্যতম বৈশিষ্ট হলো এটির কোন পিলার (খুঁটি) নেই। স্টুয়ার্ট হার্টল্যান্ড নামের ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি এ পিলারবিহীন ব্রীজটির নামকরণ করা হয় ইলিয়ট ব্রীজ। ১৯৬২ সাল থেকে এ খালটির বাঐতারা প্রান্তের স্লুইচগেটের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে ময়লা-আবর্জনায় পরিণত হয় শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এ খাল। এ কাটাখালি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও সফলতায় আসেনি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন
অবশেষে ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই প্রকল্পের আওতায় কাটাখালির পুনরায় খনন কাজ শুরু করে। প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার এ খাল পুনরায় খনন শুরু করা হয়েছে। যমুনা নদীর উৎস মুখ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাঐতারা স্লুইচগেট থেকে শহরের মিরপুর, রেলওয়ে কলোনী বড়বাজার হয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের পাশ দিয়ে জানপুর, বাহিরগোলা এবং চন্দ্রকোণা হয়ে কালিঞ্জার ভেতর দিয়ে ইছামতি নদী পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এ খাল খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই কাটাখালির সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, কাটাখালিতে যমুনার পানি প্রবেশ করায় শহরের ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধ কমে যাচ্ছে এবং এ স্বচ্ছ পানিতে বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ছাড়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
এছাড়া কাটাখালির উভয়পাড় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
৩ বছর আগে