অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও স্কলারশিপসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
বাস্তবসম্মত ও মেধাবৃত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা এবং ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার সহায়ক ও সুস্থ পরিবেশে শিক্ষার সর্বোচ্চ পর্যায় উচ্চশিক্ষার নিশ্চায়ক হলো অস্ট্রিয়া। তবে শিক্ষার অঙ্কুরে নিহিত থাকে কাঙ্ক্ষিত জীবনধারণের স্বপ্ন। আর এই স্বপ্ন বুকে নিয়েই সম্পূর্ণ অপরিচিত দেশটিতে পাড়ি জমান লাখ লাখ শিক্ষার্থী। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলো অন্যান্য উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর চেয়ে তুলনামুলকভাবে সাশ্রয়ী খরচে পড়াশোনার সুযোগ দেয়। শিক্ষাক্ষেত্রে এই বিশ্বায়নের উজ্জ্বল একটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে সেঙ্গেনভুক্ত দেশ অস্ট্রিয়া। ৯৮ শতাংশ সাক্ষরতার হারের এই দেশটি বিগত দশক জুড়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ব মানের শিক্ষা নিশ্চিত করে আসছে। সেই অভাবনীয় সুযোগ লাভের জন্য চলুন- অস্ট্রিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও খরচসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
অস্ট্রিয়া কেন উচ্চশিক্ষার অন্যতম গন্তব্য
জাতীয়ভাবে আর্থ-সামাজিক অবস্থা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রিয়াকে একটি নিরাপদ অভিবাসনের দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি বিশ্ব জুড়ে ব্যবসা ও শিক্ষাভিত্তিক নেটওয়ার্কগুলোতে এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে দেশটিকে পরিণত করেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশটি ২৯ দশমিক ৪ গ্লোবাল ক্রাইম ইন্ডেক্স নিয়ে পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ৩০তম অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, ১ দশমিক ৩১৩ গ্লোবাল পিস ইন্ডেক্স অধিকারী এই রাষ্ট্রটি বিশ্বের তৃতীয় শান্তিপূর্ণ দেশ।
অস্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব জুড়ে শিক্ষার্থী ও স্কলারদের অভিজাত নেটওয়ার্কগুলোতে বহুল সমাদৃত। এগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি এবং টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনার কিউএস র্যাঙ্কিং যথাক্রমে ১৩৭ এবং ১৯০। এ ছাড়া ৪১৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে গ্রাজ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং ৪৭২তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম জোহানেস কেপলার ইউনিভার্সিটি লিঞ্জ।
আর সেঙ্গেনভুক্ত দেশ হওয়ায় সুযোগ থাকছে একই সঙ্গে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো ভ্রমণ করার। এর মাধ্যমে একাধিক ডিগ্রি নেওয়ার এবং চাকরি কিংবা ব্যবসা ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারকে সুবিস্তৃত করার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন: হাঙ্গেরিতে উচ্চশিক্ষা: আবেদনের উপায়, পড়াশোনার খরচ, স্কলারশিপ, ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য যে যোগ্যতাগুলো থাকা দরকার
প্রধান ভাষা জার্মান হওয়ায় দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি স্কলারশিপ ও চাকরি প্রতিটি ক্ষেত্রেই গুরুত্ব পায় জার্মান ভাষার ওপর দক্ষতা। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধুমাত্র স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের অধ্যয়ন ফ্রি। তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা জার্মান ভাষায় পারদর্শি, তারা তাদের অধ্যয়ন খরচে অনেকাংশে ছাড় পায়। তবে অস্ট্রিয়া থেকে ডিগ্রি লাভের জন্য জার্মান-ই একমাত্র ভাষা নয়। এর বিকল্প হিসেবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাও বিশেষ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পায় সমান গুরুত্ব।
ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য প্রয়োজন হয় ডিপ্লোমা কিংবা হাই স্কুল সনদ পরীক্ষা। স্নাতকোত্তর যে কোনও কোর্স বা ডিগ্রির জন্য একই বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতক করা থাকতে হয়। অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিগুলোতে স্নাতক ডিগ্রিতে আবেদনের পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে পেশাদার অভিজ্ঞতা।
মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য ন্যূনতম ১৮০ ইসিটিএস (ইউরোপীয়ান ক্রেডিট ট্রান্সফার অ্যান্ড অ্যাক্যুমুলেশন সিস্টেম) ক্রেডিট থাকা আবশ্যিক। এর সঙ্গে কমপক্ষে ৬ সেমিস্টারের প্রাসঙ্গিক স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হয়। পিএইচডি প্রোগ্রামগুলোর জন্য প্রয়োজন হয় প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণা বা সমতুল্য অধ্যয়নের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
আরো পড়ুন: ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষা: আবেদন পদ্ধতি, খরচ ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও চাহিদা সম্পন্ন কোর্স
বিশ্বজুড়ে শিক্ষাকেন্দ্রিক প্রসিদ্ধ নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই বেশি ভিড় হয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের। এরমধ্যে অস্ট্রিয়ার প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-
- ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়
- টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনা
- ইউনিভার্সিটি অব ইনসব্রুক
- ক্লাজেনফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয়
- ভিয়েনা ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
- গ্রাজ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
- জোহানেস কেপলার ইউনিভার্সিটি লিঞ্জ
- ইউনিভার্সিটি অব গ্রাজ
- ইউনিভার্সিটি অব ন্যাচারাল রিসোর্স অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড লাইফ সায়েন্সেস, ভিয়েনা (বকু)|
আরো পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
ব্যবসা ও গবেষণা ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার বিকাশে পর্যাপ্ত সুযোগের সূত্রে যে বিষয়গুলো সর্বাধিক প্রাধান্য পায়, সেগুলো হলো
- শিল্পকলা এবং হিউম্যানিটিস
- ব্যবসা প্রশাসন
- ভাষা
- মনোবিজ্ঞান
- মার্কেটিং
- আন্তর্জাতিক ব্যবসা
- কম্পিউটার বিজ্ঞান
- প্রকৌশল|
আরো পড়ুন: সুইডেনে স্কলারশিপ পাওয়ার কিছু উপায়
অস্ট্রিয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদনের উপায়
সাধারণত দুটি মৌসুমকে কেন্দ্র করে স্নাতক বা ডিপ্লোমা এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। একটি উইন্টার সেমিস্টার, যেটি শুরু হয় সেপ্টেম্বর থেকে এবং আর সামার সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারি থেকে। অবশ্য কোর্সভেদে প্রতি মৌসুমেই নিবন্ধনের সময়কাল ভিন্ন হয়ে থাকে। যা হালনাগাদ করা হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে। এই অনলাইন পোর্টালগুলোর মাধ্যমে আবেদনের সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এ সময় আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোডের বিষয় থাকে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
বিশ্ববিদ্যালয়, প্রোগ্রাম ও কোর্স নির্বিশেষে ভর্তির আবেদনে সাধারণত যে কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হয়-
- পাসপোর্ট এবং ছবি বা নামের সত্যতা প্রমাণে প্রার্থীর নিজের দেশের সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত যে কোনও পরিচয়পত্রের অনুলিপি
- সর্বশেষ ডিপ্লোমা বা হাই স্কুল সনদ পরীক্ষা বা ব্যাচেলর ডিপ্লোমার সনদ
- অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক ডিগ্রির জন্য প্রাসঙ্গিক পেশাদার অভিজ্ঞতা
- ইংরেজি ভাষার দক্ষতা হিসেবে আইইএলটিএস, পিটিই একাডেমিক বা টিওইএফএল স্কোর কিংবা ক্যামব্রিজ সার্টিফিকেট
- জার্মান ভাষায় পাঠদানকৃত কোর্সের জন্য জার্মান ভাষার দক্ষতা প্রমাণপত্র
- এগুলোর পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আরও কিছু কাগজপত্র চাইতে পারে।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
আবেদন পরবর্তী প্রক্রিয়া
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে ব্যাচেলর স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি সাধারণত একাডেমিক প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার ৬ মাস আগে হয়ে থাকে। অন্যান্য স্তরগুলোতে অনলাইনে (জুম বা স্কাইপে) মৌখিক পরীক্ষা বা ভর্তি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ স্বহস্তে পূরণকৃত আবেদন ই-মেইলের পাশাপাশি ডাকযোগে প্রেরণের দরকার পড়তে পারে। পরবর্তীতে আবেদনের ফলাফলসহ যাবতীয় নির্দেশনা ই-মেইলের মাধ্যমেই জানানো হবে। ভর্তি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হলে অধ্যয়ন ফি পরিশোধের জন্য বলা হয়। এই ফি পরিশোধের পরেই অফার লেটার এবং স্টুডেন্ট আইডি ইস্যু করা হয়।
অস্ট্রিয়ার স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদি অধ্যয়নের জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে ডি-টাইপ ভিসায়, যেখানে সেঙ্গেনভুক্ত দেশগুলোতে ৬ মাসের বেশি থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। অস্ট্রিয়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস শুরু হওয়ার কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ মাস আগে ভিসার আবেদন করা উচিত।
এখানে প্রধানত পর্যায়ক্রমে প্রথমে রেসিডেন্স পারমিট এবং পরবর্তীতে এন্ট্রি পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়। প্রথম পর্যায়ের আবেদনের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় ভারতের নয়াদিল্লির অস্ট্রিয়ান দূতাবাসে।
অস্ট্রিয়ার দূতাবাসের ঠিকানাঃ ইপি-১৩, চন্দ্রগুপ্ত মার্গ, চাণক্যপুরী, নয়া দিল্লি, দিল্লি-১১০০২১, ভারত।
আরো পড়ুন: যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে পড়তে পারবেন
আবেদনের যাবতীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে দূতাবাসে যাওয়ার আগে ই-মেইলের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিতে হবে। অতঃপর ফিরতি ই-মেইলে নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হলে সে অনুযায়ী উপস্থিত হতে হবে দূতাবাসে। এ সময় আঙ্গুলের ছাপ ও ফটোগ্রাফের মতো বায়োমেট্রিক ডেটা নেওয়া হবে।
আবেদনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হলে দূতাবাস থেকে সেটি সরাসরি অস্ট্রিয়াতে পাঠানো হবে এবং সেখানে রেসিডেন্স পারমিটের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এখানে যেহেতু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়, তাই প্রার্থীকে অস্ট্রিয়াতে প্রবেশের অন্তত তিন মাস আগে আবেদন করা উচিত।
৪ মাস আগে
অস্ট্রিয়াকে বিদায় করে ১৬ বছর পর কোয়ার্টারে তুরস্ক
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই গোল, এরপর খেলা শেষ হওয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে দারুণ একটি গোল সেইভ- এই দুই কীর্তিতেই অস্ট্রিয়াকে হতাশ করে ১৬ বছর পর ইউরোর শেষ আট নিশ্চিত করেছে তুরস্ক।
লাইপসিগের রেড বুল আরেনায় মেরিহ দেমিরালের জোড়া গোলে অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে তুরস্ক। এর ফলে ইউরোর চলতি আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভিনসেন্সো মনতেল্লার শিষ্যরা।
৬০ শতাংশ সময় নিজেদের পায়ে বল রেখে ২১টি শট নেয় অস্ট্রিয়া, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। তবে একবারের বেশি জাল খুঁজে পেল না রাল্ফ রাংনিকের শিষ্যরা।
অন্যদিকে, ৪০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ৬টি শটের তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারল তুরস্ক, যার দুটি থেকেই পেল সফলতা। ফলে অস্ট্রিয়ানদের হৃদয় ভেঙে শেষ আট নিশ্চিত করল তারা।
এর ফলে ২০০৮ সালের পর আবারও শেষ আটে উঠল তুরস্ক। সেবার পেনাল্টিতে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালও খেলেছিল দেশটি, যা ইউরোতে তাদের সেরা দৌড়।
আরও পড়ুন: বিরল কীর্তিতে রোনালদোর পাশে বসলেন ইয়ামাল
ম্যাচ শুরুর প্রথমেই আক্রমণে ওঠে অস্ট্রিয়া। তবে সেই আক্রমণ থেকে বল নিয়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ম্যাচের ৫৭ সেকেন্ডের মাথায় গোল করে অস্ট্রিয়ানদের দুঃস্বপ্নময় শুরু উপহার দেয় তুরস্ক।
পাল্টা আক্রমণে গিয়ে কর্নার আদায় করে তুরস্ক। কর্নার থেকে রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ প্রতিভা আর্দা গুলেরের উড়ন্ত শটটি অস্ট্রিয়ান ফুলব্যাক স্টেফান পশের পায়ে লেগে গোল পেয়েই যাচ্ছিল তুরস্ক। কিন্তু গোললাইন থেকে বলটি কোনোমতে ঠেকান গোলরক্ষক পাট্রিক পেন্টস। তবে মুহূর্তেই তা দেমিরালের পায়ে চলে গেলে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
ফলে ম্যাচ শুরু হতেই এগিয়ে যায় তুরস্ক। দেমিরালের এই গোলটি ইউরোর নকআউট পর্বের ইতিহাসে দ্রুততম গোল।
৫ মাস আগে
যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অল্প খরচে পড়তে পারবেন
উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভাবনার বিষয় থাকে স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা। বিশ্ব মানের শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থার সাথে বাজেটের দিকটা মিলে গেলেই উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে দেশটিতে পাড়ি জমানো যায়। ইউরোপ, মধ্য-এশিয়া এমনকি অ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশগুলো এমন শিক্ষার্থীদের আশাকে সাধুবাদ জানিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম খরচে অধ্যয়নের সুযোগ দিয়ে থাকে। বেশ ভালো শতাংশ ছাড়ের পরও আর্থিক সংকুলান না হলে আছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা। এতে টিউশন ফি সহ থাকা-খাওয়ার খরচ অনেকটাই পুষিয়ে নেয়া যায়। আজকের নিবন্ধে এমন কিছু দেশের কথা বলা হয়েছে, যেগুলোর টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচের সাথে মানিয়ে নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করছে। স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়ার জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেরা ১০টি গন্তব্য।
যে ১০টি দেশে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা কম খরচে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেন
জার্মানি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এখন শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ জার্মানি। এখানকার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত। এগুলোর ব্যাচেলর কোর্স এবং বেশিরভাগ মাস্টার্স কোর্সের জন্য সাধারণত কোন ফি নেই। কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রামে টিউশন ফি থাকলেও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় তেমন বেশি নয়।
পড়ুন: জার্মানিতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খরচ বলতে আছে সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন ফি, যার সাথে টিউশন ফি-এর কোন সম্পর্ক নেই। এটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই পাবলিক পরিবহণ, ক্রীড়া, অনুষদ/বিভাগীয় ছাত্র সংগঠন এবং প্রশাসনিক ফি ব্যায়-ভার বহন করে। এই ফি প্রতিষ্ঠান ভেদে পরিবর্তিত হয় এবং সাধারণত ১০০ থেকে ৩৫০ ইউরোর (প্রায় ৯,৬৫০ থেকে ৩৩,৭৩০ টাকা) মধ্যে থাকে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ সাধারণত প্রতি মাসে ৭২৫ ইউরোর (প্রায় ৬৯,৯০০টাকা) মত হয়ে থাকে, যেখানে বাসস্থান, খাবার, পোশাক এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম; সবই অন্তর্ভুক্ত।
নরওয়ে
এখানেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সমস্ত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি মুক্ত রেখেছে। প্রতি সেমিস্টারে শুধুমাত্র একটি শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ফি দিতে হবে, যা ৩০ থেকে ৬০ ইউরো (প্রায় ২,৮৯০ থেকে ৫,৭৮০ টাকা)-এর মধ্যে। এর মাধ্যমে পাবলিক পরিবহণ, জাদুঘর এবং সাংস্কৃতিক ইভেন্ট, স্বাস্থ্যসেবাতে বিশেষ ছাড় এবং ক্রীড়া সুবিধাগুলো সহ বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।
পড়ুন: নরওয়েতে বিনামূল্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের উপায়
নরওয়েতে জীবনযাত্রার জন্য প্রতি মাসে গড়ে ৮০০ থেকে ১,৪০০ ইউরো (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ১,৩৪,৯০০ টাকা) এর মত খরচের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বড় শহরগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই খরচ অনেক বেশি কিন্তু ছোট শহরগুলোতে গড়পড়তায় ৮০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৭৭,০০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যেই থাকা-খাওয়া, চলাফেরার যাবতীয় খরচ হয়ে যায়।
ফ্রান্স
বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্গ বলা যেতে পারে ফ্রান্সকে। শুধু পড়াশোনার জন্যই নয়; বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং সমগ্র ইউরোপীয় বাজারে তাদের রয়েছে অভিজাত পদচারণা। স্নাতক করার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাতে আকর্ষণীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ার আশা করতে পারে। সুস্বাদু খাবার থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক, ফ্যাশন, শিল্প-সাহিত্য এবং জীবনধারা; জীবনের প্রায় সবকিছুর একটি আনন্দদায়ক মিশ্রণের নাম ফ্রান্স।
এখানে লাইসেন্স (স্নাতক) স্তরে প্রতি বছর খরচ হতে পারে ২,৭৭০ ইউরো (প্রায় ২,৬৭,০০০ টাকা)। মাস্টার লেভেলে খরচ আছে বছর প্রতি ৩,৭৭০ ইউরো যা প্রায় ৩,৬৩,৪০০ টাকার সমান।
পড়ুন: জার্মানিতে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার জন্য প্যারিস, নিস, লিয়ন, ন্যান্টেস, বোর্দো বা টুলুজের মত অভিজাত শহরগুলো বাদ দিয়ে বাকি অন্যান্য শহরগুলোকে বাছাই করলে, ৬৫০ ইউরো (প্রায় ৬২,৬৫০ টাকা)-এর নিচেই দিন যাপন করা যাবে।
অস্ট্রিয়া
ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র অস্ট্রিয়া যে কোন উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ইউ(ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন)/ইইএ(ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক এরিয়া) দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর টিউশন ফি একদম ফ্রি।
কিন্তু নন-ইউ/ইইএ দেশগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতি সেমিস্টারে ২০ ইউরো (প্রায় ১,৯২৭ টাকা) ছাড়াও টিউশন ফি বাবদ গড়ে ৭২৬.৭২ ইউরো (প্রায় ৭০,০০০ টাকা) ধার্য করে। তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অস্ট্রিয়ার অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি মুক্ত শিক্ষা প্রদান করছে। এগুলোর মধ্যে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিয়েনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়, জোহানেস কেপলার ইউনিভার্সিটি লিঞ্জ, গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং লিওবেন বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।
পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
অপরূপ দেশটিতে অতি প্রত্যাশিত জীবনযাত্রার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশ কম। প্রতি মাসে ৯০০ থেকে ১,৩০০ ইউরো (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ১,২৫,২৩০ টাকা)-এর বাজেট ভিয়েনা এবং সালজবার্গে আবাসন, খাবার, সামাজিক কার্যকলাপ এবং পাবলিক পরিবহণ সহ সমস্ত খরচ কভার করতে পারে। অন্যান্য জনপ্রিয় স্টুডেন্ট লোকেশনের মধ্যে লিনজ বা গ্রাজ ৯০০ থেকে ১,০০০ ইউরোর (প্রায় ৮৬,৭০০ থেকে ৯৬,৫০০ টাকা) মধ্যে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ হয়ে যায়।
তাইওয়ান
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিগত, ঐতিহাসিক, রন্ধনসম্পর্কীয়, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সহ যাবতীয় অভিজ্ঞতার সুযোগে ভরপুর এশিয়ার এই দেশটি। এখানে ইংরেজি-ভাষায় অধ্যায়নের জন্য প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। বহুসাংস্কৃতিক এবং সমৃদ্ধ পুরনো ইতিহাস পরিদর্শনে তাইওয়ান বিদেশী শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। ফলে খুব সহজেই সাবলীল হয়ে ওঠা যায় অপরিচিত এই দেশেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই তাইওয়ানের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দারুণ স্বীকৃতিও পেয়েছে।
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যায়ন খরচ প্রতি বছর ৬৭৫ থেকে ১২,৭০০ ইউরো (প্রায় ৬৫,০০০ টাকা থেকে ১২,২৪,০০০ টাকা)। এখানে নূন্যতম জীবনধারণের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ৬৮০ থেকে ৮৮০ ইউরো (প্রায় ৬৫,৫৪০ থেকে ৮৪,৮২০ টাকা) খরচ করতে হবে।
পড়ুন: দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগে যে অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরি
তুরস্ক
এশিয়া এবং ইউরোপ; দুই মহাদেশকে স্পর্শ করেই গড়ে ওঠা তুরস্ক স্থাপত্য বিস্ময় এবং হট-এয়ার বেলুন ট্রিপের জন্য বিখ্যাত। তবে এখানকার যে বিষয়টি বিশ্বে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে, তা হলো দেশটির মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশটি ইউরোপীয় উচ্চশিক্ষা অঞ্চলের অংশ যা বোলোগনা প্রক্রিয়ার অন্তর্ভূক্ত। এতে করে তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি সমস্ত ইউরোপে স্বীকৃতি পায়।
তুরস্কে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব সাশ্রয়ী মূল্যের। সাধারণত প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১০০ থেকে ৪,০০০ ইউরোর(প্রায় ৯,৬৪০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) মত খরচ করতে হয় শিক্ষার্থীকে। বিশ্বের অন্যান্য অধ্যয়নের গন্তব্যের তুলনায় এটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৬৫০ ইউরো (৩৮,৫৬০ থেকে ৬২,৬৫০ টাকা) বাজেটের মধ্যে তুরস্কে থাকতে পারেন।
পোল্যান্ড
৪৫০ টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেশ পোল্যান্ড ইউরোপের দ্বিতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়কে বক্ষে ধারণ করে আছে। পোলিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অ্যাডমিশন পরীক্ষা না থাকার কারণে এই অধ্যয়নের গন্তব্য দেশের বাইরের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। আন্ডারগ্রাজুয়েশনের জন্য সর্বসাকূল্যে প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষার একটি শংসাপত্র, একটি আর্থিক কার্যকারিতা শংসাপত্র এবং ইংরেজি বা পোলিশ ভাষার দক্ষতা।
পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
প্রথম, দ্বিতীয় এবং দীর্ঘ-চক্র অধ্যায়নের জন্য টিউশন ফি ২,৩৬৮ ইউরো (প্রায় ২,২৮,১১০ টাকা)। পোল্যান্ড বেশ স্থিতিশীল অর্থনীতির ইউরোপীয় দেশ। তাই বাইরের শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার খরচ এখানে প্রতি মাসে ৩৫০ থেকে ৫৫০ ইউরো (প্রায় ৩৩,৭৩৪ থেকে ৫৩,০০০ টাকা)-এর মধ্যে পরিবর্তিত হয়। শহরের সীমারেখা ও নগরায়নের অবস্থার উপর নির্ভর করে এই বাজেটের তারতম্য ঘটে থাকে।
মালয়েশিয়া
২০২১ সালে মালয়েশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডক্টর অফ ফিলোসফি (পিএইচডি) প্রোগ্রামের জন্য মোট ১১,১৬১ আন্তর্জাতিক আবেদনকারী অংশ নিয়েছিলেন। দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পাবলিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচিত ইউনিভার্সিটি মালায়া ২০২২ সালে এশিয়ার শীর্ষ ৫০টি সেরা গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছে।
এখানকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রীতে খরচ পড়ে গড়ে প্রতি বছর ২,০০০ থেকে ৪,৫০০ ইউরো (১,৯২,৭৬০ থেকে ৪,৩৩,৭২০ টাকা)। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৪,০০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,১৯০ থেকে ৩,৮৫,৫২৬ টাকা) লেগে যায়।
পড়ুন: নরওয়েতে উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৮০০ ইউরোর (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭৭,০০০ টাকা) মত বাজেটের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকা উচিত।
গ্রিস
ঈশ্বরের দেশ নামে খ্যাত অধ্যায়নের এই গন্তব্যটি শুধুমাত্র তাদের সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার নিয়েই গর্ব করে না, তারা তাদের শিক্ষার মাধ্যমে সে ঐতিহ্যকে উন্নতও করে। দেশ জুড়ে প্রচুর গ্রীক বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি ভাষায় অধ্যয়ন করে ডিগ্রি লাভের সুবিধা রেখেছে। ইইউ-দেশ হিসাবে গ্রীস বোলোগনা প্রক্রিয়ার সদস্য, তাই এখানকার শিক্ষার্থীরা ইউরোপের যে কোন বোলোগনা সদস্য দেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট স্থানান্তর করতে পারেন।
নন-ইউ/ইইএ শিক্ষার্থীদের জন্য বেশিরভাগ ব্যাচেলর এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ ইউরোর (১,৪৪,৬০০ থেকে ১,৯২,৭৭০ টাকা) মত অর্থ খরচ করতে হয়। গ্রীসের সাশ্রয়ী পরিবেশে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাজেট প্রতি মাসে ৪৫০ থেকে ৭৫০ ইউরো (প্রায় ৪৩,৩৭২ থেকে ৭২,২৮৭ টাকা) হয়ে থাকে। এটি স্পেন, জার্মানি, বা ইতালির মত প্রধান ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেকটাই যুক্তিসঙ্গত।
পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যেতে প্রস্তুতির ধাপগুলো জেনে নিন
হাঙ্গেরি
বৈচিত্র্যতা ও বহুসংস্কৃতির এক চমৎকার মেলবন্ধন চোখের পড়বে হাঙ্গেরিতে ঘুরতে গেলে। পাশাপাশি এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। পাবলিক হাঙ্গেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টিউশন ফি-এর দিক থেকে তাদের পশ্চিমা সমকক্ষদের তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী। একজন বিদেশী শিক্ষার্থীকে অধিকাংশ ডিগ্রির জন্য প্রতি বছর ১,২০০ থেকে ৫,০০০ ইউরো (প্রায় ১,১৫,৬৬০ থেকে ৪,৮১,৯০০ টাকা) মত খরচের প্রস্তুতি নিতে হয়। আর
বসবাসের জন্য বাজেট করতে হয় ৩৭৫ থেকে ৭০০ ইউরোর (প্রায় ৩৬,১৪০ থেকে ৬৭,৪৭০ টাকা) মধ্যে। তবে তা অবশ্যই শহরের ধরনের উপর নির্ভর করে। আবাসন, খাবার, পরিবহন সহ আনুষঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে রাজধানী বুদাপেস্টে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৫৭,৮৩০ টাকা) যথেষ্ট। আর ছোট শহরগুলোতে প্রতি মাসে ৬০০ ইউরো (প্রায় ৪৮,২০০ টাকা) নিচে জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
শেষ কথা
স্বল্প খরচে দেশের বাইরে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে সমস্ত উপলব্ধ তহবিল বিকল্পগুলো ভালো ভাবে যাচাই করে নেয়া উচিত। চাহিদা, সামর্থ এবং লক্ষ্যগুলোর সব কিছুর সাথে সামঞ্জস্য করে চুড়ান্ত ভাবে সেরা বৃত্তির জন্য চেষ্টা করা উচিত। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ নির্দিষ্ট বৃত্তিমুলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ-খবর করা যেতে পারে। গন্তব্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট; এমনকি সেখানকার অধ্যায়ন উপদেষ্টার সাথে স্কলারশিপ বা স্টুডেন্ট লোনের ব্যাপারে কথা বলাটা উত্তম। বিদেশে স্নাতক অধ্যায়নের জন্য আর্থিক সহায়তার মধ্যে আছে ফেডারেল অনুদান, ফেডারেল এবং ব্যক্তিগত ঋণ। এর বাইরে আছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি, যেগুলো এই দেশগুলোতে জীবনযাত্রার খরচের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করতে পারে।
পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়
২ বছর আগে
বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চায় অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে ইচ্ছুক এবং তারা বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর কার্ল নেহাম্মার।
চ্যান্সেলর বলেন, অস্ট্রিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে ইচ্ছুক, বাংলাদেশের সঙ্গে তারা অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ইউএনবিকে বলেন, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহাম্মার বিকাল ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেন এবং ১০ মিনিট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
ইহসানুল করিম বলেন, উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়টি এবং অস্ট্রিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য চ্যান্সেলরকে আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর: ব্রিট বাংলা বন্ধনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিনিয়োগের জন্য খুবই উপযোগী।’
প্রধানমন্ত্রী তাকে আমন্ত্রণ জানালে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রথমদিকে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন করোনা ভ্যাকসিন উপহার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলরকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
কার্ল নেহাম্মার এ সময় উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের যদি আরও ভ্যাকসিন লাগে তা তারা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র: কংগ্রেসম্যান মিকস
২ বছর আগে
বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সমাজে বড় সমস্যা: স্পিকার
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘অসত্য তথ্য ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য সমাজে বৃহত্তর সমস্যা ডেকে আনে। এই সমস্যা সমাধানে দারিদ্র, অসমতা, লিঙ্গ বৈষম্য ইত্যাদি নিরসন এবং প্রচলিত ধারণা, মানসিকতা ও চিন্তাধারার পরিবর্তন দরকার।’
অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ৫ম ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব স্পিকার্স অব পার্লামেন্ট-এর ‘কাউন্টারিং মিস ইনফরমেশন এন্ড হেইট স্পিচ রিকয়ার্স স্ট্রঙ্গার রেগুলেশন্স’ শীর্ষক আলোচনায় স্পিকার এসব কথা বলেন। ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) উদ্যোগে এবং জাতিসংঘ ও অস্ট্রিয়ান পার্লামেন্টের সহযোগিতায় অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদল বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন এমপি, রুমানা আলী এমপি, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: তিন সম্মেলনে যোগ দিতে ভিয়েনা গেলেন স্পিকার
স্পিকার বলেন, ‘প্রবীণ প্রজন্মের মাঝে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি নব প্রজন্মকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শক্তিশালী পারিবারিক কাঠামো যথাযথ শিক্ষার জন্য জরুরি। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসত্য তথ্য মানুষ ও সমাজকে ভুল পথে চালিত করে। অন্যদিকে, সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য গঠনমূলক মত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। বাক ও মতপ্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সত্য প্রচারে অধিকতর কার্যকর ও উদ্ভাবনী সমাধান অন্বেষণ করতে হবে। বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া না গেলে অধিকতর শক্তিশালী আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা সিনেটের প্রভিশনাল প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া লেদেসমা আবদালা, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের পার্লামেন্টারি এসেম্বলির প্রেসিডেন্ট রিক ডিমস, নাইজেরিয়া হাউজ রিপ্রেজেনটেটিভ স্পিকার ও. হাকিম গাজাবিয়ামিলা, রোমানিয়া সিনেটের প্রেসিডেন্ট আনকা ডানা ড্রাগু প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্পিকার এবং অন্যান্য স্বনামধন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের অন্তরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জাগ্রত করার আহ্বান স্পিকারের
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা: স্পিকার
৩ বছর আগে
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নারী নেতৃত্ব প্রয়োজন: স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের পাশাপাশি সকলক্ষেত্রে নারী নেতৃত্ব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ২০৩০ সাল খুব সন্নিকটে এবং নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে লক্ষ্যগুলো অর্জনে সময় খুব বেশি নেই। নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী-পুরুষ সমতা আনয়নে নারীর প্রতি সহিংসতা একটি জটিল বাধা। প্রচলিত রীতিনীতি, প্রথা, অভ্যাস, আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনে নারীশিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রসার জরুরি। উদ্ভাবনী নীতি ও আইন প্রণয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অধিক নারী নেতৃত্ব প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: তিন সম্মেলনে যোগ দিতে ভিয়েনা গেলেন স্পিকার
সোমবার অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ‘উইমেন স্পিকার্স অফ পার্লামেন্টের’ ১৩তম সামিটে ‘২০৩০ সালের মধ্যে নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা, বাল্যবিবাহ ও নারীদের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য প্রথাগুলো বিলীন হয়ে যাবে’ শীর্ষক আলোচনায় স্পিকার এসব কথা বলেন।
ড. শিরীন শারমিন বলেন, বিভিন্ন প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করা সত্ত্বেও আমরা নারীর ক্ষমতায়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এখনও পৌঁছাতে পারিনি। নারীর প্রতি সহিংসতা সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: সমতার ভিত্তিতে ভ্যাক্সিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে: স্পিকার
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে নারীদের জন্য উদ্ভাবনী পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। করোনা মহামারি এই সময়ে নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। যথাযথ আইন থাকা সত্ত্বেও এখনও বাল্যবিবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বাল্যবিবাহ রোধে পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামো মেয়েদের জন্য শক্তিশালী করা প্রয়োজন। নারী নেতৃত্বকে সামনে এগিয়ে নিয়ে সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হতে হবে।
আরও পড়ুন: সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ আর নেই
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) উদ্যোগে এবং জাতিসংঘ ও অস্ট্রিয়ান পার্লামেন্টের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জিম্বাবুয়ের সিনেট প্রেসিডেন্ট ম্যাবেল এম চিনোমনা, ওএসসিই পার্লামেন্টারি এসেম্বলির মার্গারেটা সেডারফেল্ট, স্পেনের কংগ্রেস অফ ডেপুটিজের প্রেসিডেন্ট মেরিটজেল ব্যাটেট, উরুগুয়ে জেনারেল এসেম্বলির প্রেসিডেন্ট বিয়াট্রিজ আরজিমন, মোজাম্বিক এসেম্বলির স্পিকার স্পেরানকা লরিন্দা ফ্রান্সিসকো নিউয়ান বায়াসসহ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ।
৩ বছর আগে