তত্ত্বাবধায়ক সরকার
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আইন উপদেষ্টা
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বিএনপির সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় যা বুঝেছি, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাননি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে— সেটাই বলেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছেন। আমরা তাদের বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের নিশ্চয়তা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন। জনপ্রশাসন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় ধরনের বদলির ব্যাপারটি তিনি নিজে দেখবেন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়— এটা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে, সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা পরিষদ ছোট হবে কিনা জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এ ধরনের কথা কোথাও আলোচনা হয়নি। এটা উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনার বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার ছোট হবে কিনা— এ ধরনের কোনো দাবিও কোনো মহল থেকে উত্থাপন হয়নি।’
দলীয় কেউ অন্তর্বর্তী সরকারে থাকলে সে বিষয়ে বিএনপির দৃষ্টিআকর্ষণের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা তো তারা আগেও বলেছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি আরও নিবিড়ভাবে মনিটর করবেন।’
একজন উপদেষ্টা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন— এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করার মতো অবস্থানে নেই। আমি জনপ্রশাসনের দায়িত্বে নেই।’
তাছাড়া, জনপ্রশাসনের নিয়োগ-বদলি দলীয়ভাবে হয় না বলেও মনে করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে। এক দল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে এই দলের লোক আছে। যেহেতু সব দলই অভিযোগ করে অন্য দলের লোক আছে, তার মানে হচ্ছে আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।’
৪৩ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিল শুনানি আজ। এই শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগে থেকেই মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দিন ধার্য রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে আজ (মঙ্গলবার) আবেদনগুলোর শুনানি হবে।
এর আগে, গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করেন। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয় এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশিত হয়।
এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন আনে।
সরকার পতনের পর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। অন্য আবেদনকারীরা হলেন— প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ (প্রয়াত), এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া, জাহরা রহমান।
পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (১৬ অক্টোবর), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (২৩ অক্টোবর) এবং নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথকভাবে একই ধরনের আবেদন জানান।
ফলে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক উদ্যোগ মিলিয়ে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের শুনানিতে রয়েছে।
২৭ আগস্ট শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে, তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, গেল দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল— সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন, আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়।
সে সময় তিনি ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়। আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ মঙ্গলবার।
আইনজীবীদের মতে, এই শুনানির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিতে পারে। অনেকের প্রত্যাশা—আদালতের রায় দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে।
৪৫ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে অধিকাংশ দল একমত: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৫তম দিনের আলোচনার প্রথমার্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দলের মতামতের আলোকে কমিশন সভা করে দলগুলোর কাছে ফের একটি সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাব প্রদান করেছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবটিতে বিস্তারিতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই প্রস্তাবের অধিকাংশ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবটির ভাষাগত ও খুঁটিনাটি দিক পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর আগামীকালের মতামতের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।
রবিবার (২০ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৫তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
সকালে একাডেমি সম্মুখে ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধনকারী জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই মানববন্ধন কর্মসূচির সঙ্গে আমরা আন্তরিক সংহতি প্রকাশ করছি।’
পড়ুন: গোপালগঞ্জে পরিস্থিতির কারণে গুলি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
একটি জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাকি দিনগুলোর আলোচনায়ও আরও কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, এই প্রক্রিয়া চলমান থাকলে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে।
উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে কোনো ভিন্নমত নেই উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, উচ্চকক্ষ কীভাবে হবে, তা নিয়ে দুটি ভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে কমিশনের কাছে দায়িত্ব অর্পণের মতামত দিয়েছে।
কমিশন ইতোমধ্যে উচ্চকক্ষ বিষয়ে বৈঠক করেছে। কী ধরনের উচ্চকক্ষ হবে, সে বিষয়ে কমিশন আরেকটু সময় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
১৩৭ দিন আগে
ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন চাইলে গণভোট লাগবে: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৪তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভেদ নেই বলে এর পরিবর্তনে গণভোটের কথা বলা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আলোচনায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যদি উচ্চকক্ষ গঠিত না হয় বা উচ্চকক্ষ হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হবে৷ তবে সুনির্দিষ্ট কিছু অনুচ্ছেদ—যেমন: প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংক্রান্ত ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ ও ৫৮ঙ সংবিধানে যুক্ত হলে তা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চ্যালেঞ্জে সরকারের পাশে থাকার ঘোষণা বিএনপির
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এ মত প্রকাশ করেছে। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আজও ঐকমত্য হয়নি। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে, ভোটের সংখ্যানুপাতে যেন উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়; অন্যদিকে আসনের সংখ্যানুপাতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো এ বিষয়ে একাধিক আলোচনার পরও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, সেহেতু দল ও জোটগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন নিজেদের মধ্যে এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে একটি অবস্থানে পৌঁছার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
১৪২ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই: আলী রীয়াজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দেশের সব রাজনৈতিক দল অভিন্ন মত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঐকমত্য আছে।
বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনার শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও কাঠামো এবং এর এখতিয়ার নিয়েও আলোচনা হয়েছে আজ। এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও আজকে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এ বিষয়েও আজকের আলোচনায় উল্লেখযোগ্য ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি জানান, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে আশু এবং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। আশু ব্যবস্থা হিসেবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে নিয়ে একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন (যদি এরইমধ্যে তা গঠিত হয়ে থাকে, তবে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে) এবং সেই কমিটির পরামর্শক্রমে সংসদীয় এলাকা নির্ধারণ করা।
আরও পড়ুন: সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে একটি সাংবিধানিক কমিটি হবে: ডা. তাহের
দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, ‘প্রতি আদমশুমারি বা অনধিক ১০ বছর পরে সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এর দফা ১ এর (গ) এর শেষে উল্লেখিত ‘এবং’ শব্দটির পর ‘আইনের দ্বারা নির্ধারিত একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠনের বিধান’ যুক্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ আইন ২০২১, যা ২০২৫ সালে সংশোধিত হয়েছে, তার ৮(৩) সঙ্গে যুক্ত করে ওই কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি নির্ধারণ করা হবে।
আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি এবং উচ্চ কক্ষের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীকাল ৩ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় আবারও কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
১৫৫ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক ১৬ এপ্রিল
জাতীয় নির্বাচন ও সংস্কার বিষয়ে আলোচনার জন্য বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। বিএনপির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, ‘বৈঠকটি ১৬ এপ্রিল দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, সেটি দূর করতে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছি। বৈঠকের পর নির্বাচন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আমরা জানাব।’
আরও পড়ুন: সংস্কার সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে: বিএনপি মহাসচিব
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপনের অনুরোধ করবেন। নির্বাচনের রোডম্যাপ যদি স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হয়, তবে বর্তমান যে অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা দূর হবে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের সঠিক রোডম্যাপ কেবল বিভ্রান্তি দূর করতেই নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে সহায়ক হবে।’
বিএনপি নেতা জানান, ‘তারা নির্বাচন ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্তি করারও অনুরোধ করবেন।’
‘আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আগেই কথা বলেছি, তারা জানিয়েছেন, জুনের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পক্ষ থেকে নানা ধরনের বক্তব্যের কারণে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টাকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হবে।’
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির অপর স্থায়ী কমিটির বলেন, ‘আমরা সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করব, বিশেষত, নির্বাচন কবে হবে – এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাই।’
তিনি জানান, ‘সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে হবে, কারণ নির্বাচন নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রকৃত অবস্থান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি: ফখরুল
এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য গেছেন। তবে, তিনি শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন এবং বৈঠকে অংশ নেবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন ওই নেতা।
বিএনপি প্রতিনিধি দল বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেবে যে, যদি সরকার অযথাই আগামী বছরের জুন পর্যন্ত ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করে, তবে বিএনপি সেটি কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
২৩৯ দিন আগে
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বাধা নেই
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় আর কোনো বাধা রইল না।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে এই রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৪ ডিসেম্বর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন আদালত।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন এই আবেদনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বেশিরভাগই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের পক্ষে ছিল।
২০১১ সালের ৩০ জুন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান বাতিল করে দিয়েছিলেন।
সংশোধনীতে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এটিকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
সংশোধনীতে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমাও পরিবর্তন করা হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছে যে সংসদীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু: পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রায় আজ
এর আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা ছিল।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ছোট ও বড় মিলে মোট ৫৫টি পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
মঙ্গলবারের রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। সংবিধানের সৌন্দর্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন।
এই রায়ের মধ্যদিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছিল তার সবগুলোই বাতিল হয়ে গেল।
৩৫৩ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের রিভিউ শুনানি ১৭ নভেম্বর
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় রিভিউ চেয়ে বিএনপি, জামায়াত ও সুজনের করা রিভিউ শুনানি আগামী ১৭ নভেম্বর হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) শুনানির কার্যতালিকা এলে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় ৪ সপ্তাহ সময় চান। এসময় বিএনপির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন এবং সুজনের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়াও এর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন।
এসময় আদালতে জামায়াতের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরও ছিলেন।
একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ তিনটি রিভিউ একসঙ্গে শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
এদিকে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিচার হওয়া উচিত কি না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, তিনি অসাধুতা করেছেন। তার বিচার হওয়া উচিত।’
এর আগে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ৪২ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত ছিল রিভিউ আবেদনটি।
রিভিউ আবেদনগুলো করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
এর আগে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী রিট করলে হাইকোর্ট এ ব্যবস্থা বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
তবে পরবর্তী দশম ও একাদশ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়, ‘এ ক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।’
আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন— সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।’
রায়ে আদালত আরও জানায়, ‘এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে অথবা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধানটি বাতিল করার পূর্ণ স্বাধীনতাও সংসদের থাকবে। একই সঙ্গে ২০০৫ সালে এ প্রসঙ্গে দায়ের করা লিভ টু আপিলটিও খারিজ করা হলো।’ কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই রায় অনুযায়ী আর দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়নি।
এ অবস্থায় গত আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।
এরপর গত ১৬ অক্টোবর আরেকটি রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২০ অক্টোবর দুটি রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
পরে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে রিভিউ আবেদন করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ আবেদনটিও আগের দুটি আবেদনের সঙ্গে একসঙ্গে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি। সে অনুযায়ী পৃথক তিনটি রিভিউ আবেদনই আদালতের কার্যতালিকায় এসেছে।
৪০৭ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছে জামায়াত
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন দায়ের করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম।
বুধবার আপিল বিভাগে এ রিভিউ আবেদন দায়ের করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
দলটির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে আপিল পুনরুজ্জীবিত
গত ১৬ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনটি করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া গত আগস্ট মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার পৃথক রিভিউ আবেদন দায়ের করেন।
১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আদালত। রায়ে বলা হয়, এক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
আদালত তার রায়ে বলেন, আপিল বিভাগের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই আবেদনটি গৃহীত হয়েছে। এর মাধ্যমে সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধনী) আইন ১৯৯৬ এই নির্দেশের পর থেকে অবৈধ ও সংবিধান বহির্ভূত ঘোষণা করা হলো। তবে আইনসম্মত না হলেও (প্রয়োজনের কারণে আইনসম্মত এবং জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন- সুপ্রাচীনকাল ধরে চলে আসা নীতিমালার ভিত্তিতে) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করা ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায়ই হতে পারে।
এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে অথবা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধানটি বাতিল করার পূর্ণ স্বাধীনতাও সংসদের থাকবে। একইসঙ্গে ২০০৫ সালে এ প্রসঙ্গে দায়ের করা লিভ টু আপিলটিও খারিজ করা হয়। আপিল বিভাগের এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় জামায়াত নেতার মৃত্যুর অভিযোগ
৪০৭ দিন আগে
বিএনপিকে তো সংলাপে ডাকা হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের সাম্প্রতিক বক্তব্যে মনে হচ্ছে, আমরা যেন তাদেরকে সংলাপের জন্য ডেকেছি।
তিনি বলেন, তাদেরকে তো সংলাপের জন্য ডাকা হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কোনো সংলাপ করার সুযোগ নাই, কোনো সংলাপ হবেই না।
আরও পড়ুন: আমরা চাই বিএনপি পূর্ণশক্তিতে নির্বাচনে অংশ নিক: তথ্যমন্ত্রী
শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের বাসভবনে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এসময় সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এই বাস্তবতা বিএনপিকে মেনে নিতেই হবে।
তিনি বলেন, তাদের যে তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের দাবি, সেটি দেশে যেমন সমর্থন পায়নি, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তারা যাদের হাতে-পায়ে ধরে, নিয়মিত দেন-দরবার করেও তারা কোনো সমর্থন পায়নি।
এ সময় নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৬ প্রতিনিধির ৮ থেকে ২৩ জুলাই বাংলাদেশ সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, এতে এটিই প্রমাণিত হয় যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে। সেই স্বাধীন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এবং সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ইইউ প্রতিনিধি দল আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো ও প্রস্তুতিমূলক নানা বিষয় তারা পর্যবেক্ষণ করবে, একইসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথেও বৈঠক করবে তারা।
আরও পড়ুন: মার্কিন কর্মকর্তাদের আগমন দু’দেশের ঘনিষ্ঠতর সম্পর্কের বার্তাবাহী: তথ্যমন্ত্রী
তত্ত্বাধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না: তথ্যমন্ত্রী
৮৮১ দিন আগে