ক্যাপিটল
মার্কিন ক্যাপিটলে হামলার সংবাদ পরিবেশন করে পুলিৎজার পেল ওয়াশিংটন পোস্ট
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটলে দাঙ্গার সংবাদ কভারেজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে।
সোমবার পুরস্কারটির এডমিনিস্ট্রেটর মার্জোরি মিলার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলার ওপর সিরিজ আকারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
গেটি ইমেজের পাঁচজন ফটোগ্রাফার এই দাঙ্গা কভারেজের জন্য ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফিতে দুটি পুরস্কারের একটি পেয়েছেন।
ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফিতে দেয়া অন্য পুরস্কারটি কাবুলের পতন সংক্রান্ত কভারেজের জন্য লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের সংবাদদাতা এবং ফটোগ্রাফার মার্কাস ইয়ামকে দেয়া হয়েছে।
সিরিয়া, ইরাক এবং আফগানিস্তানে মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুর চ্যালেঞ্জিং প্রতিবেদন করার জন্য নিউইয়র্ক টাইমস আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং বিভাগে বিজয়ী হয়।
দ্য টাম্পা বে টাইমস ‘পয়জনিং’ শিরোনামের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার জিতেছে। যাতে পরিবেশ দূষণকারী সীসা কারখানা সম্পর্কে বিশদ অনুসন্ধানী তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেলেন জেলেনস্কি
মায়ামি হেরাল্ড মারাত্মক সার্ফসাইড কন্ডো টাওয়ার ধসে পড়ার সময় তার কাজের জন্য ব্রেকিং নিউজ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছে, বেটার গভর্নমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং শিকাগো ট্রিবিউন স্থানীয় রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
অন্যদিকে কোয়ান্টা ম্যাগাজিন ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার পেয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জাতীয় রিপোর্টিং বিভাগেও পুরস্কার জিতেছে এবং সালামিশাহ টিলেট নামক টাইমসের একজন সমালোচক সমালোচনা বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন।
এছাড়া সচিত্র প্রতিবেদন এবং মন্তব্যের পুরস্কার জিতেছে ফাহমিদা আজিম, অ্যান্টনি ডেল কোল, জশ অ্যাডামস এবং ইনসাইডারের ওয়াল্ট হিকি।
দ্য আটলান্টিকের জেনিফার সিনিয়র ৯/১১ হামলার ২০তম বার্ষিকী নিয়ে ফিচার লেখার জন্য পুরস্কার জিতেছে।
দ্য কানসাস সিটি স্টারের মেলিন্ডা হেনবার্গার ধারা ভাষ্যের জন্য পুরস্কার জিতেছেন। সম্পাদকীয় বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন লিসা ফালকেনবার্গ, মাইকেল লিন্ডেনবার্গার, জো হোলি এবং হিউস্টন ক্রনিকলের লুইস ক্যারাস্কো।
ফিউচারো মিডিয়া এবং পিআরএক্স-এর কর্মীরা অডিও রিপোর্টিং বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে।
ফিচার ফটোগ্রাফির পুরষ্কার জিতেছে আদনান আবিদি, সান্না ইরশাদ মাট্টু, অমিত ডেভ এবং রয়টার্সের ড্যানিশ সিদ্দিকী। ৩৮ বছর বয়সী সিদ্দিকী একই বিভাগে ২০১৮ সালের পুলিৎজার জিতেছিলেন, তিনি আফগান বাহিনী এবং তালেবানদের মধ্যে লড়াইয়ের সংবাদ সংগ্রহের সময় তিনি আফগানিস্তানে নিহত হন।
আমেরিকার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া পুলিৎজার পুরস্কার সাংবাদিকতায় সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার বলে বিবেচিত। সাংবাদিকতার ১৫টি বিভাগে এবং সাতটি শিল্প বিভাগে এ পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডের বিজয়ী একটি স্বর্ণপদক পায় এবং অন্যান্য বিভাগের প্রতিটি বিজয়ী ১৫ হাজার মার্কিন ডলার করে পান।
আরও পড়ুন: নেপালে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতলো ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা: সামাজিক মাধ্যমে দেয়া বিভিন্ন পোস্ট দেখে শাস্তি দেয়া হচ্ছে
জানুয়ারির ৬ তারিখ যেসব দাঙ্গাকারী যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা করেছে কিংবা হামলার আগে-পরে বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্য বা ছবি শেয়ার করেছে, এখন তাদের সেসব পোস্ট তাদের সাজা দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা জজ অ্যামি জ্যাকসন রাসেল পিটারসন নামের এক দাঙ্গাকারীর সাজা ঘোষণার আগে রাসেলের দেয়া একটি ফেসবুক পোস্ট পড়ে শোনান। পোস্টে লেখা ছিল, ‘সবমিলিয়ে আমার খুব মজা লেগেছে, লল।’
পোস্টটি পড়ে শোনানোর পরে জজ জ্যাকসন বলেন, এই পোস্ট পড়ার পর রাসেলকে মুক্তি দেয়া খুব কষ্টকর। কেননা ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে যা কিছু হয়েছে,তাতে মজা পাওয়ার কিছু ছিল না। দাঙ্গাকারীদের ভয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ঘরে আইন প্রণয়নকারীদের আটকে থাকা কিংবা টেবিলের নিচে আত্মগোপনে থাকাটা কোনোভাবেই হাসি-মজার ব্যাপার না।
এভাবেই দাঙ্গাকারীদের সামাজিক মাধ্যম তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে টর্নেডোর তাণ্ডবে শতাধিক মৃত্যুর শঙ্কা
এফবিআই সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে দেয়া কয়েকশ’ পোস্ট থেকে কয়েকশ’ দাঙ্গাকারীকে শনাক্ত করেছে। আইনজীবীরা সেসব পোস্ট মামলার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এমনকি বিচারকেরা ব্যবহারকারীদের ব্যবহৃত শব্দ বা বাক্যের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বেশি বা কম সাজা দিচ্ছেন।
সম্প্রতি আদালতের দেয়া রায় পর্যালোচনা করে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) দেখেছে শুক্রবারও ওই দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৫০ জন ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে অন্তত ২৮টি মামলায় আইনজীবীরা প্রমাণ হিসাবে দাঙ্গাকারীদের ফেসবুকে দেয়া বিভিন্ন পোস্টকে ব্যবহার করেছেন।
সেসময় অনেক দাঙ্গাকারী সামাজিক মাধ্যমে দাঙ্গা উপলক্ষে আগ্রাসী বিভিন্ন কথা লিখেছে বা বিভিন্ন ঘৃণাসূচক মন্তব্য করেছে। অনেকে আবার এই দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে কিংবা না জেনেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন তত্ত্ব আলোচনা করেছে। তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র
সেসময় দেয়া বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট বা প্রমাণ ডিলিট করার জন্যও আদালত অনেক জনকে সাজা দিয়েছে। এই পর্যন্ত ক্যাপিটল দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৭০০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এরমধ্যে অন্তত ১৫০ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে গত ৬ জানুয়ারি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ৩ নভেম্বর হওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দেয়ার সংসদীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই সেখানে তাণ্ডব চালায় উগ্রবাদীরা। এতে এক পুলিশসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সব ব্যবসার প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
২ বছর আগে