জানুয়ারির ৬ তারিখ যেসব দাঙ্গাকারী যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলা করেছে কিংবা হামলার আগে-পরে বিভিন্ন উসকানিমূলক তথ্য বা ছবি শেয়ার করেছে, এখন তাদের সেসব পোস্ট তাদের সাজা দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা জজ অ্যামি জ্যাকসন রাসেল পিটারসন নামের এক দাঙ্গাকারীর সাজা ঘোষণার আগে রাসেলের দেয়া একটি ফেসবুক পোস্ট পড়ে শোনান। পোস্টে লেখা ছিল, ‘সবমিলিয়ে আমার খুব মজা লেগেছে, লল।’
পোস্টটি পড়ে শোনানোর পরে জজ জ্যাকসন বলেন, এই পোস্ট পড়ার পর রাসেলকে মুক্তি দেয়া খুব কষ্টকর। কেননা ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে যা কিছু হয়েছে,তাতে মজা পাওয়ার কিছু ছিল না। দাঙ্গাকারীদের ভয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ ঘরে আইন প্রণয়নকারীদের আটকে থাকা কিংবা টেবিলের নিচে আত্মগোপনে থাকাটা কোনোভাবেই হাসি-মজার ব্যাপার না।
এভাবেই দাঙ্গাকারীদের সামাজিক মাধ্যম তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে টর্নেডোর তাণ্ডবে শতাধিক মৃত্যুর শঙ্কা
এফবিআই সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে দেয়া কয়েকশ’ পোস্ট থেকে কয়েকশ’ দাঙ্গাকারীকে শনাক্ত করেছে। আইনজীবীরা সেসব পোস্ট মামলার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এমনকি বিচারকেরা ব্যবহারকারীদের ব্যবহৃত শব্দ বা বাক্যের গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে বেশি বা কম সাজা দিচ্ছেন।
সম্প্রতি আদালতের দেয়া রায় পর্যালোচনা করে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) দেখেছে শুক্রবারও ওই দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৫০ জন ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এরমধ্যে অন্তত ২৮টি মামলায় আইনজীবীরা প্রমাণ হিসাবে দাঙ্গাকারীদের ফেসবুকে দেয়া বিভিন্ন পোস্টকে ব্যবহার করেছেন।
সেসময় অনেক দাঙ্গাকারী সামাজিক মাধ্যমে দাঙ্গা উপলক্ষে আগ্রাসী বিভিন্ন কথা লিখেছে বা বিভিন্ন ঘৃণাসূচক মন্তব্য করেছে। অনেকে আবার এই দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে কিংবা না জেনেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন তত্ত্ব আলোচনা করেছে। তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রাপ্তবয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র
সেসময় দেয়া বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট বা প্রমাণ ডিলিট করার জন্যও আদালত অনেক জনকে সাজা দিয়েছে। এই পর্যন্ত ক্যাপিটল দাঙ্গার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৭০০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এরমধ্যে অন্তত ১৫০ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে গত ৬ জানুয়ারি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ৩ নভেম্বর হওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দেয়ার সংসদীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই সেখানে তাণ্ডব চালায় উগ্রবাদীরা। এতে এক পুলিশসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সব ব্যবসার প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ চায় যুক্তরাষ্ট্র