হিলি
ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বিকল, ৪ ঘণ্টা পর হিলি দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্টে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় একটি ট্রাক রাস্তার ওপর বিকল হয়ে পড়ায় প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা ধরে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পরে ট্রাকটিকে সচল করা হলে এই বন্দর দিয়ে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুপুর সোয়া ২টায় ভারত থেকে আমদানিকৃত গমের ভূষিবোঝাই একটি ট্রাক বাংলাদেশের দিকে রওনা দেয়।
আরও পড়ুন: বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
এসময় ভারতীয় ট্রাকটি হিলি স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্টের কাছাকাছি আসলে রাস্তার ওপর বিকল হয়ে পড়ে। ফলে স্থলবন্দরের রাস্তাটি একমুখী হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানিকৃত কোন পণ্যবাহী ট্রাক আসা-যাওয়া করতে না পারায় দুই অংশে বহু ট্রাক আটকা পড়ে।
এতে করে দুপুর সোয়া ২টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত এই পথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে ট্রাকটিকে সচল করা হলে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা পর পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়। এতে কিছুটা হলেও বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারি অপারেটর ‘পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের’ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্যবাহী ৬৬টি ট্রাক পানামা পোর্টের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
তিনি বলেন, এরপর আর আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করেনি। স্থলবন্দরের গেট থেকে ৪/৫ গজ ভারত অংশে একটি গমের ভূষির ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, একারণে বন্ধ থাকার সাড়ে ৩টা ঘন্টা পর আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এতে বন্দর দিয়ে সাময়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এদিকে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ট্রাক হঠাৎ দুপুরের দিকে আসা বন্ধ হয়ে যায়। খবর নিয়ে জানতে পারি বন্দরের গেটের ভারত সাইডে একটি ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ট্রাকটি সচল হলে আবার কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ২ দিন পর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি শুরু
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র আগমন উপলক্ষে বেনাপোলে ২ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি। ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের শুন্যতায় হু-হু করে বাড়ছে দেশি পেঁয়াজের দাম।
ঈদের পর থেকে কয়েকদফা দাম বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা। এতে নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাদের।
এছাড়া দাম বেড়ে কোথায় গিয়ে ঠেকবে এই দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।
বন্দরের আমদানিকারকেরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৯ মে) বিদেশ সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এরপর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা
আবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকেও মিলেছে সুখবর।
এদিকে বন্দরের মোকামের গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় কোনো কোনো গুদামে তালা ঝুলছে, আবার কোনটা খুলে অলস সময় পার করছেন কেউ। এছাড়া ভাড়া করা গুদাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে।
সোমবার সকালে বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে খুচরা ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শনিবারও একই পেঁয়াজ ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি ছাড়া ভিনদেশি কোনো পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।
বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মঈনুল হোসেন জানান, এখানে দেশি পেঁয়াজের কোনো মোকাম নাই। আমরা দক্ষিণাঞ্চল থেকে দেশি পেঁয়াজ কিনে আনি। বর্তমানে ভারতের পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঈদের আগে ৩০-৩৫ টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে। এখন কেজিতে অন্তত ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। আমরা ৫০-৫২ টাকা পাইকারী দরে কিনছি।
আরেক খুচরা ব্যবসায়ী শাকিল জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবর শুনলেই ব্যবসায়ীরা কেজিতে ৮-১০ টাকা কমে দেয়। যখন দেখে আসছে না তখন আবার আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে। পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসলে দাম আরও বাড়বে।
ক্রেতা শফিকুল জানান, সকালে আসলে একদাম। বিকালে আসলে আরেক দাম। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মত মানুষদের এর থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। যে যার মতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। পেঁয়াজের সঙ্গে অন্যান্য জিনিসপত্রেরও একই অবস্থা।
বন্দরের আমদানিকারক ও উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি দিয়েছিল।
এরপর ১৬ মার্চ থেকে দেশে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শুরু হয়। এ কারণে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
পেঁয়াজ আমদানিকারক ও হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী বিদেশ সফরে আছেন। মঙ্গলবার (৯ মে) তারা দেশে ফিরলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনিও এমন আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এই আশায় আমরা আমদানিকারকেরা গত সাত দিনে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়ীতে আবেদন করেছি।’
শহীদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আজ পেঁয়াজের দামে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হতো না। ভোক্তাদের বেশি দামে কিনতে হতো না। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলা মুশকিল।
পেঁয়াজের আরেক আমদানিকারক মো. মোবারক হোসেন বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রেখেছে। আসলে কি কৃষকেরা সঠিক মুল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারেন? লাভ তো করেন মজুদদাররা।
তিনি বলেন, দাম বাড়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে শুধু ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকার সুযোগে অসৎ ব্যবসায়ীরা এই সুবিধা নিচ্ছে। বর্তমানে ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজ আমদানি করে আনতে সবমিলে কেজিতে ২৪-২৫ টাকা পড়বে। তাই সব বিবেচনায় সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি দিবে এই দাবি করছি।
এদিকে, সোমবার দুপুরে ভারতের ব্যাঙ্গালুরের পেঁয়াজ রপ্তানিকারক কুতুব মিয়া ও দেভানসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ভারতের নাসিকসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭-১০ রুপিতে। এখানে পর্যাপ্ত পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। আমরা প্রস্তুত আছি বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করতে। শুনেছি বাংলাদেশে দাম বেড়েছে। এখানকার পেঁয়াজ ওদেশে (বাংলাদেশ) গেলে সেখানে দাম অনেক কমে যাবে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, শুনেছি আমদানিকারকেরা পেঁয়াজ আমদানি জন্য খামারবাড়ীতে অনলাইনে আবেদন করেছেন। সরকার হয়ত বিবেচনায় নিতে পারেন। কারণ বাজারে প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, দেশের কৃষকদের উদপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
মে দিবস উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
আজ ১লা মে দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রবিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্ত নেন।
তবে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টে যাত্রী পারাপার চালু আছে।
বাংলাহিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, আজ সারাবিশে^ আন্তর্জাতিক মে দিবস পালিত হচ্ছে। তাই পরিবহন-শ্রমিক নির্ভর আমদানি-রপ্তানি হওয়ায় এবং সরকারি ছুটি থাকায় আজ হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পুনরায় শুরু হবে বন্দরের সকল কার্যক্রম।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক মে দিবস আজ
বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের সহ-ব্যবস্থাপক এসএম হায়দার জানান, দিবসটির কারণে বন্দরের ওয়্যারহাউজে পণ্য উঠা-নামা সহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে পানামা পোর্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শ্রমিকদের নিয়ে সকাল ১১টায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দোয়া মাহফিল সহ শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আশরাফুল জানান, সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে। ফলে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম সরকারি ছুটির আওতামুক্ত। তাই মে দিবসে স্থলবন্দরের কার্যক্রম সহ পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এই চেকপোস্ট ব্যবহার করে পাসপোর্ট যাত্রীরা ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ঈদের পর হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু
হিলি সীমান্তে মিষ্টি উপহার দিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
হিলি চেকপোস্টে আনসার সদস্যকে লাথি মারার অভিযোগ
দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্টে ভারতীয় অবৈধ মালামালের ব্যাগ আটক করা নিয়ে কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখার আনসার সদস্যকে লাথি মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
হিলি কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখায় কর্মরত আনসার সদস্য মাসুদ রানা জানান, ‘রবিবার দুপুর ২টার দিকে দিনার নামে এক ব্যক্তি বলেন যে ইন্ডিয়া থেকে আমার ব্যাগ আসবে তুমি আমার ব্যাগ আটক করবে না। এর কিছু পর তার ব্যাগ আসলে আমি কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখায় তল্লাশির জন্য নিতে বললে সে আমাকে অশ্লিলভাষায় গালাগালি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে যায়।’
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধভাবে কেন ব্যাগ নিয়ে যাওয়া হলো এ কথা বললে দিনার একপর্যায়ে আমাকে লাথি মারলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। পরে আমার সহকর্মীরা আমাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এব্যাপারে আমি থানায় মামলার করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
এদিকে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা সুকান্ত দাস জানান, বিজিবি কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই স্থানীয় লাগেজপার্টি দিনারসহ তার লোকজন দুপুর ২টার দিকে হিলি চেকপোস্টের জিরো পয়েন্ট থেকে ভারতীয় অবৈধ মালামালের ব্যাগ নিয়ে কাস্টমসের পাসপোর্ট শাখার কাছে আসে। এসময় কর্তব্যরত আনসার সদস্য মাসুদ রানা তাদের ব্যাগটি পাসপোর্ট শাখায় নিতে বলে। তখন দিনার কাস্টমস শাখায় ব্যাগ না ঢুকিয়ে তল্লাশি ছাড়াই বাইরে দিয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ওই আনসার সদস্য অবৈধভাবে ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দিনার তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সজোরে লাথি মারে। এর তিন মাস আগেও দিনার আমাকে সহ কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রাণনাশের হুমকি সহ হাত কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল।
ওই ঘটনায় দিনারের নামে দিনাজপুর আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই ব্যক্তি বারবার এই ধরনের অপরাধ করছে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছায়েম মিয়া জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বা আনসার সদস্যদের পক্ষে থানায় মামলা বা অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
তিনি আরও জানান, এর আগেও দিনারের নামে একই অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দিনারের নামে আদালতে প্রসিকিউশন মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
হিলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত: অবশেষে লাশ হস্তান্তর
হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত দুইদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজান মাস শুরু হলে আরও দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা।
সরকার কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে। ফলে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে বন্দরের মোকাম ও বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে,গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার যে পেঁয়াজ প্রকারভেদে ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল, শুক্রবার সেই পেঁয়াজ ২৬ থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে আসন্ন রমজানে আরও দাম বাড়তে পারে।
শুক্রবার সকালে বাংলাহিলি বাজারে কথা হয় ক্রেতা নুর ইসলামের সঙ্গে।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বাজারে আসলে মাথা ঠিক থাকে না। দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়না। যে যার মতো দাম বাড়িয়ে দেয়। আর আমাদের কিনতে কষ্ট হয়। রমজানে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কোন পর্যায়ে যাবে এখন থেকে বলা মুশকিল।
আরও পড়ুন: ১৫ মার্চের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ
আরেক ক্রেতা শামসুল আলম জানান, গত বুধবার পেঁয়াজ কিনেছি ২২ টাকায়। আজ সকালে এসে একই পেঁয়াজ ২৬ টাকায় কিনতে হলো। এখনই বাজারে মনিটরিং করা দরকার।
বাজারের খুচরা বিক্রেতা ময়নুল হোসেন জানান, হিলি বন্দর দিয়ে ভারতে থেকে পেঁয়াজ আসছে না। শুনেছি গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজানে আরও দাম বাড়বে এটাই এখন স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে গেছে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রতি রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন। এবারও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সরকার গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর ১৬ মার্চ থেকে নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।
বন্দরের প্রসিদ্ধ পেঁয়াজ আমদানিকারক ও সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এবার রমজানকে সামনে রেখে আমরা আগে থেকেই পেঁয়াজের আমদানি শুরু করি, যাতে রমজানে দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে। বাজারে যেন কোনও অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু সরকার পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় দাম বাড়ছে। রমজানে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে,সেজন্য আমদানির অনুমতি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের ভারতে ৮-১০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজের এলসি করা আছে। এই পেঁয়াজ দেশে আমদানির অনুমতি দেয়া না হলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দেয়া বন্ধ রেখেছে। ১৫ মার্চ পর্যন্ত আইপি দেয়া ছিল। এখন দেশে পেঁয়াজের ভরামৌসুম। তাই নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু
দিনাজপুরের হিলিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দশম শ্রেণীর এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সাতকুড়ি রেলগেটের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওয়াজেদ ইসলাম ওয়াদুদ (১৪) রায়ভাগ গ্রামের রশিদুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় গোহাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ওয়াদুদের বাবা রশিদুল ইসলাম জানান, সকালে কিছু না খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় ওয়াদুদ। সে স্কুলেও যায়নি। কি কারণে তার মন খারাপ ছিল জানি না। বেলা ১১টার দিকে লোকমুখে শুনতে পাই সে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে।
আরও পড়ুন: নগরকান্দায় ট্রেনের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
স্থানীয় পান দোকানদার আমেদ আলী জানান, সকাল থেকে ছেলেটি রেলগেট এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিল। ট্রেন আসার আগে সে রেলগেটের উত্তর পাশে রেললাইনের ওপর বসে মোবাইল টিপছিল। অনেকে তাকে রেললাইনের ওপর থেকে সরে যেতে বললেও কারও কথা শুনেনি। এসময় ট্রেনে কাটা পড়ে সে মারা যায়।
হিলি রেলস্টেশন মাস্টার তপন চক্রবর্তী জানান, সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা নীলফামারী গামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেলা ১১টার দিকে হিলি রেলস্টেশন অতিক্রম করে। এর কয়েক মিনিট পর খবর পাই হিলি রেলস্টেশনের অদূরে সাতকুড়ি এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক কিশোর মারা গেছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে রিকশাচালকের মৃত্যু
নেত্রকোণায় ট্রেনের ধাক্কায় সংবাদকর্মীর মৃত্যু
হিলি ও লালমনিরহাটের রেল ও সড়ক পথ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত: রেলমন্ত্রী
রেলপথ মন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজন বলেছেন, হিলি ও লালমনিরহাটের রেল ও সড়ক পথ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
তিনি বলেন, ভারত তাদের আসামসহ সেভেন সিস্টারের সঙ্গে রেলপথ ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের হিলি ও লালমনিরহাট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে করে দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল ও বৃদ্ধি পাবে। দুই দেশই লাভবান হবে। আমরা এই বিষয়টি ভেবে দেখছি।
শুক্রবার বেলা আড়াইটায় বিরামপুর রেলস্টেশনে নির্মাধীণ ইয়ার্ডের জায়গা ও রেলস্টেশনের নতুন ভবন কাজের অগ্রগতি পরিদর্শননে এসে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকার ও পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আক্কাছ আলী সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের সব রেলপথকে ডাবল লাইনে করা হবে। সরকার এই লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। যাত্রী সেবার মান ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনের আরও বগি বাড়ানো হবে। রেলের আরও অনেক অনেক সংস্কার কাজ করা হবে। সকল রেলস্টেশনকে আধুনিকায়ণ ও নতুন রেলপথ নির্মাণ করা করা হবে। যার প্রমাণ হিসেবে বিরামপুর রেলস্টেশনে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে: রেলমন্ত্রী
হিলি রেলস্টেশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দিনাজপুরের হিলি রেলস্টেশনে ইয়ার্ড ছিল। ফলে যেখানে পণ্য লোড-আনলোড করা হতো। কিন্তু ভারতের বর্ডারের কাছে হওয়ায় পণ্য লোড-আনলোডে তারা আপত্তি দিয়েছে। একারণে পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় সেখান থেকে সরিয়ে বিরামপুর রেলস্টেশনে ইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। এরফলে এখন থেকে পরিবহনের মাধ্যমে ট্রেনের মালামাল দেশের সব জায়গায় পণ্য পাঠানো যাবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ঘটনা ঘটার কারণে কিন্তু হিলি রেলস্টেশনের কিছু কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা পরীক্ষা করে দেখব চলমান কাজ কেন বন্ধ হয়ে গেল। যদি ভারতের দিক থেকে আর কোন আপত্তি না থাকে বা আমাদের দিক থেকে যেসব ঘটনার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই সমস্যাগুলো যদি আর না থাকে তাহলে আমরা চেষ্টা করব সেখানে স্টপেজ বাড়ানোর। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেখানে নতুন কোন ট্রেনের স্টপেজ দেয়া হবে না। তবে পশ্চিমপাশ থেকে পূর্বপাশে স্টেশন সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তিনি ভেবে দেখার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিরামপুর রেলস্টেশনে ইয়ার্ড নির্মাণ ও রেলস্টেশনের ভবণ নির্মাণ কাজ চলছে। যা ইতোমধ্যে রেলস্টেশনটির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এ বছরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী
সব যানবাহনে ভাড়া বাড়লেও ট্রেনের ভাড়া বাড়েনি: রেলমন্ত্রী
দুই দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
দুই দিন বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে।
শনিবার বেলা ১২টায় আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাকগুলো দেশে প্রবেশ করে।
গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে এই দুইদিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ
বন্দরের বাংলাহিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান লিটন জানান, ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপিত হয়। একারণে সেখানে সরকারি ছুটি থাকায় ভারতের ব্যবসায়ীরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এই দুই কারণে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকে। শনিবার বেলা ১২টায় ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
এদিকে বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, দুইদিন বন্ধ ছিল আমদানি-রপ্তানি। আজ থেকে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। এর ফলে বন্দরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচঞ্চলতা ফিরে এসেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: পেপার স্প্রে করে জঙ্গি ছিনতাই: হিলি সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা
হিলি চেকপোস্টে পাসপোর্টধারী যাত্রীর মৃত্যু
পায়ে হেঁটে ১৫ হাজার কি.মি. পাড়ি দিয়ে রোহান এখন হিলিতে
প্লাস্টিক ব্যবহারের ভয়াবহতা ও পরিবেশ রক্ষার আহ্বান নিয়ে ভারতের ২৭টি রাজ্য ঘুরে বাংলাদেশে এসেছেন রোহান আগারওয়াল নামের এক ভারতীয় যুবক। নিজ দেশের ২৭টি রাজ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা শেষে তিনি ২০২২ সালের অক্টোবরে ফেনীর বিলোনিয়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৩৩টি জেলা ঘুরে সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাতে দিনাজপুরের হিলিতে আসেন তিনি। এরপর তিনি হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিকের কুফল সম্পর্কে প্রচারণা চালান।
রোহান আগারওয়াল জানান, ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসিতে গঙ্গা নদীর তীর থেকে পায়ে হাঁটা শুরু করি। সেখান থেকে নিজ দেশের রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি, চন্ডিগড়, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি, কর্ণাটক, কেরালা ও গোয়াসহ ২৭টি রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনবহুল এলাকা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পর্যায়ে প্লাস্টিক-পলিথিনের ক্ষতিকারক দিক ও ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছি।
এছাড়া পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার আহ্বান জানিয়েছি।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশে আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ ৩৩টি জেলায় প্রচারণা চালান রোহান। এরপর সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাতে হিলিতে আসেন।
রোহান আগারওয়াল আরও জানান, এই যাত্রায় আমি ১৫ হাজার কিলোমিটার হেঁটেছি এবং কখনও কখনও লিফটও নিয়েছি। আমি ৯০ দিনে ভারতের ২৭টি রাজ্য এবং বাংলাদেশের ৩৩টি জেলা কভার করে ৮৬০ দিনেরও বেশি ভ্রমণ করেছি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর দু’দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, এই যাত্রা শুরু করার মূল উদ্দেশ্য হল প্লাস্টিকের বিপজ্জনক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দেয়া। আমি ভারত ও বাংলাদেশের অনেক স্কুল ও ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছি এবং তারপর আমি সাইবেরিয়ার ওমিয়াকোমে হেঁটে যাব। যেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৭২ ডিগ্রি এবং এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান। আমার আশা আমিই দক্ষিণ এশীয় হিসেবে প্রথম স্থলপথে সেখানে পৌঁছাব। সাইবেরিয়া যাওয়ার পথে পাঁচ বছরে আমার দক্ষিণ এশিয়ার ২০টি দেশ অতিক্রম করার ইচ্ছা আছে।
এদিকে, সোমবার রাতে দিনাজপুরের হিলিতে পৌঁছালে সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম, আকতার হোসেন বকুল, আব্দুল আজিজ, মোসলেম উদ্দিন, লুৎফর রহমান ও সোহেল রানা তাকে অভ্যর্থনা জানান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রোহান জানান, নাগপুরে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারে তার মা-বাবা ও ছোট বোন রয়েছে। পৃথিবীটা শুধু মানুষের জন্য নয়। প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্যও পৃথিবী। প্লাস্টিক থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতেই আমার এই যাত্রা। তাই ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছি।
তিনি বলেন, এছাড়া পরিবেশের বিষয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। এটা সব মানুষের দায়িত্ব। বাংলাদেশের যেখানেই গেছি, সেখানকার স্কুল-কলেজে গেছি, বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে গেছি। সবাইকে পরিবেশের সুরক্ষার কথা বলেছি। বাংলাদেশের মানুষ আন্তরিক ও ভালো। কেউ কোনোদিন জানতে চায়নি, আমি কোন ধর্মের। মানুষ হিসেবে সবাই ‘হেল্প’ করেছে। আই লাভ বাংলাদেশ।
তিনি আরও জানান, আমি ভারতের গভর্নমেন্ট সিকিম প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটির স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাংলাদেশের পর মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, চীন, হংকং, ম্যাকাও ও মঙ্গোলিয়াসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ভারতীয় এই শিক্ষার্থীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য আমাদের জীবনে ও পরিবেশের ওপর মারাত্মকভাবে ক্ষতি করছে। এর ফলে পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আমি মনে করি রোহানের এই প্রচারণা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। তার এই পথচলায় সবার এগিয়ে আশা দরকার।
তাহলে হয়তো একদিন প্লাস্টিকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় সীমানা পেরিয়ে দুই যুবকের ভারতে প্রবেশ, ফিরিয়ে আনল বিজিবি
চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রঘুরে দেখলেন ৩৮ ভারতীয় ট্যুরিস্ট
হিলিতে ধানের জমি থেকে পরিত্যক্ত মর্টার শেল উদ্ধার
দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুরে ধানের জমি থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি মর্টার শেল উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার মহেশপুর এলাকা থেকে মর্টার শেল দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সায়েম মিয়া জানান, উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ইউসুফ আলী সকালের দিকে তার নিজের জমিতে কোদাল দিয়ে মাটি প্রস্তুত করছিলেন। এসময় মাটিতে কোদালের কোপ দিলে লোহার শব্দ পেয়ে মাটি সরাতে থাকেন। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে তিনি দুটি মর্টার শেল উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের মর্টার শেল ছোড়ার তীব্র প্রতিবাদ জানাল ঢাকা
ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রামপুলিশ থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ পরিত্যক্ত মর্টার শেল দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে মর্টার শেল দুটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে।
মর্টারশেল দুটির ওজন ২৪ কেজি বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার
মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপ: বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা রাষ্ট্রদূতের