রুমিন ফারহানা
হামলা হলে পুলিশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
পুলিশের ওপর হামলা হলে তাদের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বলেই আক্রমণের মুখে পড়লে নিজেদের রক্ষা করার অধিকার কি তাদের থাকবে না? তাদের (বিএনপির) মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে যে পুলিশের দিকে বোমা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার পরও বা তারা বন্দুক হামলার শিকার হওয়ার পরও তারা (পুলিশ) কিছুই করতে পারে না।’
এর আগে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সংসদে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশের বিপরীতে ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের দলের সাম্প্রতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে।
তার এই বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচি যেখানে শান্তিপূর্ণ ছিল, সেখানে পুলিশ কিছুই করেনি।
পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করবে এটাই স্বাভাবিক। হ্যাঁ, আমি পুলিশকে বলেছি কিছু না বলার জন্য, এটা ঠিক আছে, কিন্তু পুলিশ প্রথমে কিছুই করেনি। যদি কোনো ব্যক্তি আক্রমণের শিকার হয়, তবে সেই ব্যক্তির সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
বর্তমান সংসদের ১৯তম অধিবেশনে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা তার সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিল ও আন্দোলনের ক্ষেত্রে কেউ কিছু বলবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। যেখানে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, সেখানে কেউ কিছু করবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপির লোকজন হামলার চেষ্টা করে বা মিডিয়া কভারেজের জন্য পরিস্থিতি তৈরি করে।
মিডিয়া এবং বিরোধী দলগুলোর একটি অংশের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সাম্প্রতিক সময়ে হতাশা ছড়াচ্ছে যেন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তবে তারা (সমালোচক) ভালো অবস্থায় আছে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য ঝুঁকিতে নেই। গত ১৬ আগস্ট আইএমএফও তার মূল্যায়নে মন্তব্য করেছে যে বাংলাদেশ কোনো সংকটে নেই।
পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের অর্থ পরিশোধে টান পড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র: রুমিন ফারহানা
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, বর্তমান সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন তাদের বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের ভয়াবহতার চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
রবিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, বিরোধী দল-মত দমন, বিরাজনীতিকরণ, সেপারেশন অব পাওয়ার মুছে ফেলে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের অধীনস্ত করা, বীভৎস দুর্নীতি, সব কিছুর ফল হয়েছে এই যুক্তরাষ্ট্রের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশনের রিপোর্ট।
এছাড়াও গণতন্ত্রের সূচক প্রকাশকারী ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, ফ্রিডম হাউজ, বেরটেলসম্যান স্টিফ টুং, ভি-ডেম, ইন্সটিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, সিভিল লিবার্টি নিয়ে কাজ করা সিভিকাস, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স, আইনের শাসনের সূচক প্রকাশকারী ওয়ার্ল্ড জাস্টিস রিপোর্ট, দুর্নীতির সূচক প্রকাশকারী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, নির্বাচনের মান নিয়ে সূচক প্রকাশ করা ইলেক্টোরাল ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্টের গত কয়েক বছরের রিপোর্টে বাংলাদেশের দুরবস্থার চিত্র পরিষ্কার।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে রুমিন বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে এটা স্পষ্ট, নিষেধাজ্ঞা এখানেই শেষ হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিশ্বের স্বনামধন্য ১২টি মানবাধিকার সংস্থা র্যাবের সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে পদায়নের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘে জোর দাবি জানিয়েছে। জাতিসংঘও বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে।
বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন,‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আর সব মন্ত্রী প্রথমে খুব কড়া ভাষায় আমেরিকাকে আক্রমণ করলেও এখন গলার স্বর নিচু। এখন নিজেদের সমস্যা খতিয়ে দেখার আলাপ হচ্ছে। প্রয়োজনে লবিস্ট, ল ফার্ম নিয়োগের কথা হচ্ছে।’
সরকার জনগণের করের কোটি কোটি টাকা খরচ করে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম পুষছে দাবি করে রুমিন ফারহানা বলেন, মজার ব্যাপার হচ্ছে, লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ কোনো নতুন বিষয় নয়। জনগণের করের কোটি কোটি টাকা খরচ করে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম পুষছে সরকার।
বিএনপির এই সাংসদ বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রে লবিং করতে শিখিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে লবিং সংস্কৃতির সূচনা করেছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অ্যালক্যাড অ্যান্ড ফে নামের লবিং প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ১২ লাখ ডলারের (১০ কোটি টাকার বেশি) বেশি দিয়েছে বলে দাবি বিএনপির এই সংসদ সদস্যের।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে সরকার: বিএনপি
ইসি নয়, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রতিই বিএনপির মনোযোগ: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
২ বছর আগে