অঙ্গীকার
বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন: সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে।
ঢাকার বিজিবি সদর দপ্তরে ৫ মার্চ শুরু হওয়া সীমান্ত সম্মেলনটি জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন (জেআরডি) দলিল সইয়ের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার (৯ মার্চ) শেষ হয়েছে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতি পাঠ করা হয়।
এতে বলা হয়, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিবেচনায় রেখে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী নীতিন আগরওয়ালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একটি মৌলিক উদ্বেগের পাশাপাশি চোরাচালান, মানবপাচার, অসাবধানতাবশত সীমান্ত অতিক্রম ও যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের পাশাপাশি নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, সীমান্ত হাট বৃদ্ধি, আটকে থাকা আইসিপি/এলসিপি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সমাপ্তকরণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের সময়াবদ্ধ সম্মতি প্রদানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজিবি মহাপরিচালক।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএসএফের গুলিতে বিজিবি সদস্য নিহত
গত ২২ জানুয়ারি সিপাহী মো. রইসউদ্দিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিএসএফ মহাপরিচালক আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিএসএফ ও বিজিবির সমন্বিত প্রচেষ্টায় সন্তোষ প্রকাশ করে উভয়েই সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উভয় পক্ষ যৌথ টহল, নজরদারি, জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার, যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ, আন্তর্জাতিক সীমান্তের (আইবি) পবিত্রতা সম্পর্কে সীমান্তের জনগণকে শিক্ষিত করা এবং অপরাধী বা বাসিন্দাদের আইবি অতিক্রম করা এবং সঠিক সময়ে তথ্য আদান-প্রদান করে নেওয়ার মাধ্যমে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বা আহত শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে।
উভয় পক্ষ আইবি লঙ্ঘন বা অবৈধ অতিক্রম বা অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, মানব পাচার, সীমান্ত স্তম্ভ উপড়ে ফেলা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত অপরাধ থেকে বিরত থাকার জন্য সীমান্তের জনগণকে সংবেদনশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে। সার্বিকভাবে সীমান্তের কাঙ্ক্ষিত পবিত্রতা রক্ষার আশ্বাস দিয়েছে দু'পক্ষই।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্যের লাশ হস্তান্তর
প্রতিনিধি দলের উভয় নেতা আন্তঃসীমান্ত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিষয়ে তাদের বিদ্যমান 'জিরো টলারেন্স' নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং তাাৎক্ষণিক তথ্যের মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত চলাচল রোধে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হন।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি যশোর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্য সিপাহী মো. রইসউদ্দিনের মৃত্যুতে বিএসএফ মহাপরিচালক গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তবে সিপাহী রইসউদ্দিনের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএসএফের ডিজি নীতিন আগরওয়াল সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।
সিপাহী রইসউদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, এটি মূলত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়। উভয়পক্ষের অস্পষ্টতা, কুয়াশা ও বিভ্রান্তির মধ্যে এটি ঘটেছে। ভবিষ্যতে উভয় পক্ষ থেকে ইউনিফর্ম বিজিবি ও বিএসএফ সদস্য বা বাংলাদেশ ও ভারত উভয় বেসামরিক নাগরিকের উপর যেকোনো হত্যা এড়াতে সমস্ত প্রচেষ্টা থাকবে।
বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী নিতিন আগরওয়াল বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিক।
আরও পড়ুন: স্বজন হারানোর দুঃখের গভীরতা আর কেউ অনুধাবন করতে পারবে না, যেমনটা আমি করি : বিজিবি সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত সপ্তাহে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ শান্তি, সার্বভৌমত্ব এবং সার্বিক বিশ্ব নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
সম্প্রতি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ২০২৪-এ যোগ দিতে জার্মানির মিউনিখে তিন দিনের সফরের ফলাফল বিষয়ে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৫ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ যান এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন।
মিউনিখে অবস্থানকালে তিনি সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: ত্যাগের মহিমায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
লিখিত বক্তব্যে শেখ হাসিনা তার এই সফরকে সফল বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তিনি বিশ্ব নেতাদেরকে বলেছেন, আকার নয়, একটি দেশের নীতির শক্তিই হচ্ছে রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক মুক্তির পথ।
এছাড়া বন্ধুপ্রতীম দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে এবং সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২৪ অংশগ্রহণ নিয়ে ব্রিফ করছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ফ্রম পকেট টু প্ল্যানেট : স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলে তিনি অবিলম্বে গাজা ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে সব ধরনের শত্রুতা, অবৈধ দখলদারিত্ব ও নিরস্ত্র মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অমানবিক হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরেও প্রভাব ফেলে।’
এ প্রসঙ্গে অর্থহীন অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস ও অর্থায়ন সহজলভ্য ও বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন,‘মানবতার অস্তিত্বের সংকটের মধ্যে আমি এই কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছি যে, ক্ষুদ্র স্বার্থ কেবল দুর্দশা নিয়ে আসে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়ন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে তিনি বিশ্ব নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বহুমুখী নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও জনগণের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি, প্রতিশ্রুত তহবিলের প্রকৃত স্থানান্তর এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছি।’
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক ঝুঁকি মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং পারস্পরিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনার সময় রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে পারস্পরিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এলএনজি সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সহিংসতা বন্ধে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন নীতি ও অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গের (অ্যাক্সেল ভন ট্রটসেনবার্গ) সঙ্গে বৈঠকে তিনি মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তিতে অবদানের আলোকে চলতি অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্রুত ছাড়ের আহ্বান জানিয়েছেন।
উচ্চ-মধ্যম আয় ও উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত পথেও বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ করে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং গম, ভোজ্যতেল এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতার জন্য তাদের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত দ্রুত সমাধানের কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার জন্য আমি তাকে আহ্বান জানিয়েছি। আমরা গাজা উপত্যকার সংঘাত নিয়েও আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সফর শেষে মিউনিখ থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
সম্পর্ক গভীর করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের
অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে আমরা সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারি।’
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং এখানে তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বিশেষ করে আইসিটি, সাইবার নিরাপত্তা, দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আমরা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে কাজ করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এক বার্তা পাঠিয়েছেন এবং এ সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে একযোগে কাজ করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন ও রোহিঙ্গাদের কল্যাণের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যু এবং দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবেন।
কুক বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গাদের কল্যাণে আমাদের অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।
মানবাধিকার ইস্যু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই মানবাধিকার বিশ্বব্যাপী একটি ইস্যু এবং প্রতিটি দেশ এই ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য কাজ করছে।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর ও ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: বকেয়া পাওনা আদায়ে টেলিটক-বিটিসিএল-বিটিআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত
শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, সরকারের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো এক বার্তায় তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমসহ আপনার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে জাতিসংঘ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে মার্কিন বিশ্লেষক যা বললেন
গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি উদারতা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে জাতিসংঘ গভীরভাবে মূল্য দেয়।
জাতিসংঘ প্রধান বলেছেন, 'আমি গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপে আপনার অংশগ্রহণের প্রশংসা করছি এবং বিশ্বাস করি যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামোর সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনসহ ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় আমি আপনার সমর্থনের উপর নির্ভর করা অব্যাহত রাখতে পারি।’
আরও পড়ুন:ন্যাম ও সাউথ সামিটে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে উগান্ডায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের সঙ্গে ‘দৃঢ় সহযোগিতা’ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার সুইজারল্যান্ডের
সুইজারল্যান্ড পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ‘দৃঢ় সহযোগিতা’ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি।
তিনি বাংলাদেশের নেতৃত্বে তাদের সাফল্য কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড দূতাবাস বাংলাদেশের সাথে পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য শক্তিশালী সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়ানের অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন
২০৩০ সালের জন্য কার্বন নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার আরও জোরদার করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের জন্য নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতি সাত গুন বাড়ানো দরকার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোকে তাদের ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত সংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত ও সহজ হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার তাগিদ
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে কপ২৮-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সবংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০:৫০ বরাদ্দের পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ়। আমরা নতুন ও অতিরিক্ত সরকারি অর্থায়নে গুরুত্ব দেব। বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে জাতিসংঘের ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানস (এনএপি) বাস্তবায়নের জন্য দ্বিগুণ অভিযোজন তহবিল ও সমর্থনের উপর জোর দেয়, যা ৪৯টি দেশের অগ্রাধিকার। এসব দেশ ইতোমধ্যে তাদের এনএপি প্রস্তুত করেছে এবং জমা দিয়েছে। আমরা জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা অর্জনের জন্য সময়সীমাবদ্ধ বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ্যগুলোর ওপর জোর দিয়ে অভিযোজন সংক্রান্ত গ্লোবাল গোলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রস্তুত।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অটল, যার উদাহরণ "ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড" এবং "জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড" প্রাপ্তি।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক: সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও কম কার্বনের পথে বাংলাদেশ
শাহাব উদ্দিন সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে গৃহীত ৭০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির তহবিলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের জন্য কপ২৮-এর প্রেসিডেন্ট ও সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, উভয় প্রশমন কর্ম কর্মসূচির অগ্রগতি, গ্লোবাল স্টক টেক (জিএসটি) এর অধীনে প্রশমন এবং ন্যায্য রূপান্তরের কর্মসূচি খুবই অপর্যাপ্ত। তিনি জরুরি ভিত্তিতে জলবায়ু অর্থের একটি সাধারণ সংজ্ঞা ঠিক করতে অর্থসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির (এসসিএফ) প্রতি আহ্বান জানান। জলবায়ু অর্থায়নের নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল (এনসিকিউজি) আলোচনার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এবং আবুধাবিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি তহবিল নিয়ে আশার সঞ্চার
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সেমিনার
বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে ‘৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসের অঙ্গীকার: রুখতে হবে বিএনপি-জামায়াত-রাজাকার’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
পারভেজ জামান, এবিএম ফারুক, লিয়াকত হোসেন খান, ফুয়াদ হোসেন চৌধুরী, আফরোজা জামিল কঙ্কাসহ বঙ্গবন্ধু পরিষদের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় রাশিয়ায় অধ্যয়নের সুযোগ নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
পারভেজ জামান বলেন, ‘জয় বাংলা একটি জাতীয় স্লোগান। এটি কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্লোগান নয়। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা এই স্লোগান নিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যারা জয় বাংলা স্লোগান গ্রহণ করে না, তারা দেশদ্রোহী। আসন্ন নির্বাচন আমাদের টিকে থাকার লড়াই। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য যা ভালো তা করতে হবে।’
সাবেক আইজিপি লিয়াকত হোসেন খান ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ফুয়াদ হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। জনগণের সচেতনতা ছাড়া এ দেশ এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবে না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (মরণোত্তর) জামিল উদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় কন্যা আফরোজা জামিল কঙ্কা বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমাদের এতিম বলা যেতে পারে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও পরে যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাদের হত্যা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের সময়ে যে প্রজন্ম বেড়ে উঠেছিল, তা বাংলাদেশের সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এখন বাংলাদেশের উন্নয়নে সব দলের মানুষ উপকৃত হলেও দেশের বিরোধী দলগুলো এ নিয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।’
ডুয়েটের উপাচার্য মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দেশ যে আদর্শে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেনি।
ড. রহমান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর সুস্থ রাজনীতি বন্ধ হয়ে যায়।’
রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র রাতারাতি নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই করা হয়েছে।
খন্দকার মোশতাকের যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে জাতিসংঘে পাঠানো মুজিবনগর সরকারের পর্যবেক্ষক দলের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাকে ধরে রাখা হয়নি।
তার বদলে আবদুস সামাদ আজাদকে পাঠানো হয়েছে। কারণ তাজউদ্দীন আহমেদকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছিল যে খন্দকার মুশতাক যদি জাতিসংঘে যান, তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও কনফেডারেশনের প্রস্তাব দেওয়া হবে।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন এবং তাজউদ্দীনের কাজ ছিল যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জন করা। কারণ তখন যুদ্ধের কোনো বিকল্প ছিল না। তাই খন্দকার মোশতাককে পাঠানো হয়নি।
অধ্যাপক সিদ্দিক বলেন, ‘কয়েকজন মিলে বঙ্গবন্ধুকে ও জেলহত্যা করেছে। কিন্তু ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাদের প্রতিহত করা হলে তা সম্ভব হতো না। তখন তারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে নিরাপদে দেশ ছাড়তে পারতেন না। সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিযোজন নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে সেমিনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
হামাসকে 'ধ্বংস' করার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর : গাজা আক্রমণ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে
গাজা উপত্যকায় প্রত্যাশিত স্থল আক্রমণের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত করার সময় হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু শুক্রবার(১৩ অক্টোবর) রাতে জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এই হুমকি দেন।
গত শনিবার হামাস জঙ্গিরা নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলা চালিয়ে নৃশংস তাণ্ডবে এক হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে হত্যা করার পর থেকে গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল গাজার অর্ধেক জনসংখ্যাকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলের বিমান হামলা
নেতানিয়াহু বলেন, 'এটা শুরু মাত্র। 'আমরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে এই যুদ্ধের অবসান ঘটাব'
‘আমরা হামাসকে ধ্বংস করব’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অভিযানের জন্য ইসরায়েলের প্রতি ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন রয়েছে।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে
দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন শনিবার
দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনাল শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে উদ্বোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। এটি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গৃহীত সমস্ত ‘মেগা প্রজেক্টের’ মধ্যে অন্যতম আলোচিত।
উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে বিমানবন্দরে চলছে মহড়া।
উদ্বোধনের দিন রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করে ঢাকা ত্যাগ করবে। সেই ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংও করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্স।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ মায়ের্স্ক গ্রুপের প্রস্তাব বিবেচনার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সহযোগিতায় উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি৩৭১ ফ্লাইটটি ইতোমধ্যে টার্মিনাল থেকে দু'বার উড্ডয়ন করেছে। যদিও সেখানে ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
উদ্বোধনের আগে ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় টার্মিনাল-৩ এর নির্মাণকাজ প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল টার্মিনাল ছাড়াও আমদানি-রপ্তানি সুবিধা সম্বলিত কার্গো কমপ্লেক্সের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, কার্গো কমপ্লেক্সটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবারের সফট ওপেনিং- এর জন্য বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আমাদের লক্ষ্য ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টার্মিনালটি যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি চালু করা।
তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ এগিয়ে চলছে এবং আমরা নিশ্চিত যে নির্ধারিত সময়সীমার আগে টার্মিনালটি চালু হবে।
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম ইউএনবিকে বলেন, টার্মিনাল-৩ সফট ওপেনিংয়ের জন্য জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
টার্মিনাল-৩ এর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এর জন্য নতুন সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কর্তব্যরত কর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের ইউনিফর্ম সরবরাহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংসহ বিভিন্ন মহড়া চালিয়েছে এয়ারলাইন্সটি।
টার্মিনাল ৩ একটি অত্যাধুনিক ব্যবস্থায় যাত্রীদের অভিজ্ঞতা এবং পছন্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এটি ৩৭টি বিমান পার্কিং স্পেস দিয়ে শুরু হয়, যেখানে ইতোমধ্যে কিছু এয়ারলাইন্স দেখা গেছে। এর আগে সেগুলোকে বাংলাদেশে ফ্লাইট চালু করতে দেখা যায়নি।
২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ (যার মধ্যে ১২টি অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা) এবং ১৫টি সেলফ-সার্ভিসসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার ঢাকা ছেড়ে যাওয়া বা উড়ে যাওয়া যে কোনো ব্যক্তির জন্য একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা।
নিচতলায় ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, দ্বিতীয় তলায় ডিপারচার লাউঞ্জ ও বোর্ডিং ব্রিজ এবং বিস্তৃত শুল্কমুক্ত দোকান ও এক্সিট লাউঞ্জ থাকবে।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালু হতে যাচ্ছে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল
টার্মিনাল ৩ সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে বার্ষিক ১ দশমিক ২০ কোটি (১২ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটি বছরে ৮০ লাখ (৮ মিলিয়ন) যাত্রীকে সেবা দিতে সক্ষম।
একটি বহুতল গাড়ি পার্কিং সুবিধা, কাস্টমস হল, ভিআইপি এবং ভিভিআইপি যাত্রী এলাকা এবং একটি ট্রানজিট যাত্রী লাউঞ্জও টার্মিনালের অংশ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি কর্পোরেশন (প্রাইভেট) লিমিটেড সিঙ্গাপুরের রোহানি বাহারিনের নকশায় নির্মিত তিনতলা টার্মিনালের ফ্লোর স্পেস হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। বাহারিনের সিভিতে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের প্রশংসিত তৃতীয় টার্মিনাল এবং আহমেদাবাদের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে একটি করিডোর এবং ১ হাজার ৩৫০ টি পার্কিং স্পেস সহ মাল্টি লেভেল কার পার্কিং বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন টার্মিনালে অটোমেটেড পাসপোর্ট কন্ট্রোল বা ই-গেট চালু করা হবে।
যাত্রীরা ই-গেটের মাধ্যমে নিজেই ইমিগ্রেশন করতে পারেন বা ৫৬টি প্রস্থান ইমিগ্রেশন কাউন্টারের মধ্যে যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন।
একটি আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং উন্নত নিরাপত্তা স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করবে।
টার্মিনালে মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, এয়ারলাইন লাউঞ্জ এবং বিশ্বমানের শুল্কমুক্ত দোকানও থাকবে।
ওয়াই-ফাই, মোবাইল চার্জিং, প্রার্থনার জায়গা এবং একটি মিটার্স এবং গ্রিটার প্লাজার মতো সুবিধাগুলো ভালো পরিমাপের জন্য স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া মায়েদের জন্য ব্রেস্টফিডিং বুথ, ডায়াপার চেঞ্জিং এলাকা, পারিবারিক বাথরুমসহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাচ্চাদের একটি ডেডিকেটেড খেলার জায়গা থাকবে।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এসডিজি অর্জনের অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ' সম্পর্কিত এসডিজি-৩ সহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকট থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এসডিজি অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের পার্শ্ব ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মা, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য অংশীদারিত্বের (পিএমএনসিএইচ) চেয়ার হেলেন ক্লার্ক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের প্রথম নারী মহাসচিব পাওয়ার সময় এসেছে: ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্মে প্রধানমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এর স্বাস্থ্যসেবা সকলের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার অনুযায়ী চলতি অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১১-২০৩০) বাস্তবায়ন করছে।
বৈঠকে হেলেন ক্লার্ক শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে সার্বিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
আরও পড়ুন: আসন্ন জলবায়ু সংকট এড়াতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই ন্যায্য অংশীদারিত্ব করতে হবে: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী