জাইকা
সেন্টমার্টিনে নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) একটি প্রকল্পের আয়োজনে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে নিরাপদ খাদ্য প্রস্তুত, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবেশন ও সংরক্ষণবিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ‘স্ট্রেন্দেনিং দ্য ইনস্পেকশন, রেগুলেটরি অ্যান্ড কোঅরডিনেটিং ফাংশন অব বিএফএসএ প্রোজেক্ট’- শীর্ষক প্রশিক্ষণটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আব্দুল কাইউম সরকার।
কর্মশালায় উপস্থিত খাদ্য ব্যবসায়ীদের তিনি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইন ও বিধি-বিধান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো পর্যটন নগরীর মূল আকর্ষণ হলো খাবার-দাবার। তাই খাদ্য প্রস্তুতকালে পোড়া তেলের ব্যবহার পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার প্রস্তুতের উপর জোর দিতে হবে। এতে করে সেন্টমার্টিনে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব এবং এসটিআইআরসি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুন নাসের খান।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ দিবে কমিউনিটি ক্লিনিক: সাংবাদিক কর্মশালায় বক্তারা
তিনি পর্যটকদের নিরাপদ খাবার পরিবেশনের জন্য খাদ্য ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উন্নত বিশ্বের মতো পর্যটকবান্ধব নিরাপদ খাবার পরিবেশনের নির্দেশনা দেন।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএ'র অতিরিক্ত পরিচালক (উপসচিব) মো. কাওছারুল ইসলাম সিকদার।
তিনি উপস্থিত খাদ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিরাপদ খাদ্যসম্পর্কিত বিষয়ে মুক্ত আলোচনা পরিচালনা এবং ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে করণীয় শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন কক্সবাজারের নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম, মনিটরিং অফিসার মো. আবদুল হান্নান এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণা কর্মকর্তা মো. তাইফ আলী।
কর্মসূচিতে উপস্থিত খাদ্য ব্যবসায়ীদের সচেতনতামূলক লিফলেট, নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক পারিবারিক খাদ্য নির্দেশিকা, অ্যাপ্রোন, ক্যাপ ও হ্যান্ড গ্লাভস দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রায় অর্ধ-শতাধিক খাদ্য ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা, নিরসনের পদক্ষেপ নিয়ে জাতিসংঘের কর্মশালায় সাংবাদিকরা
শেষ হলো ওয়াইল্ডটিমের বাঘ সংরক্ষণ কর্মশালা
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে অবদান রাখবে জাইকা
সম্প্রতি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে ‘ডেভেলপমেন্ট অব মিডিয়েশন অ্যান্ড সিভিল লিটিগেশন প্র্যাকটিস ফর এনহ্যান্সমেন্ট অব অ্যাকসেস টু জাস্টিস’- শীর্ষক একটি চুক্তি (রেকর্ড অব ডিসকাশন) সই করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
এটি জাইকার কারিগরী সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম এবং অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আদালত, লিগ্যাল এইড অফিস (আইনি সহায়তা কেন্দ্র) এবং বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে জাইকা।
প্রকল্পটি প্রথমে ঢাকা, কুমিল্লা ও নরসিংদীতে শুরু হবে; পরে এটি বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও সম্প্রসারণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন জাইকার
জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘ন্যায়বিচার ও একটি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখব বলে আশাবাদী।’
সরকারের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম এবং ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব ও উইং চিফ (আমেরিকা ও জাপান) একেএম শাহাবুদ্দিন।
এছাড়া, এই প্রকল্পের অধীনে সবার জন্য মধ্যস্থতা সংক্রান্ত আইনি সেবা আরও সহজতর এবং সাধারণ নাগরিকের মাঝে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া জনপ্রিয় করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশে মামলার জট হওয়ার পেছনে মূল কারণগুলো বের করে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করবে জাইকা। যার ফলে দেওয়ানী মামলার বিচার প্রক্রিয়ার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে প্রায় ৩৫ লক্ষ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই প্রকল্পের কার্যক্রম ২০২৪ সালে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের মাঝে জাইকার পৃষ্ঠপোষকতায় ট্যাব বিতরণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন জাইকার
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের সঙ্গে নিজেদের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে।
এই মাইলফলককে স্মরণীয় করে রাখতে সোমবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: জাইকার সহায়তায় প্রণীত হলো ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা
জাইকার এ অংশীদারিত্বের যাত্রায় শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার ক্ষেত্রে অব্যাহত প্রতিশ্রুতির বিষয়গুলো উঠে আসে।
বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদার জাপান। জাইকার মাধ্যমে গত পাঁচ দশকে এই অংশীদারিত্ব আরও বিকশিত ও শক্তিশালী হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের উন্নয়নের চিত্রকে বাস্তবে রূপদান করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাইকা সদর দপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান।
এসময় জাইকার অতিথিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও উন্নয়ন সহযোগীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এখন পর্যন্ত অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স (ওডিএ) লোন হিসেবে তিন হাজার ২৮৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), ২০২২ সাল পর্যন্ত অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড) হিসেবে ১৪৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৯৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার), ২০২২ সাল পর্যন্ত টেকনিক্যাল কোঅপারেশনের জন্য ১০৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ৬৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং লোন ও ইক্যুইটি হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রাইভেট সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট ফাইন্যান্সের জন্য ২৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি ১৪ হাজারেরও বেশি সরকারি কর্মীর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে এবং এক হাজার ২৮৬ জন জাপানিজ ওভারসিজ কোঅপারেশন ভলান্টিয়ার্সকে দেশে নিযুক্ত করেছে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বের জন্য আদর্শ উদাহরণ জাপান। জাইকা ও জাপানের সহযোগিতায় আমাদের কমিউনিটির বিকাশ ও উন্নয়ন সাধিত হবে। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু; এই অংশীদারিত্ব আমাদের দেশের লক্ষ্যপূরণে সহায়তা করবে বলে আশাবাদী আমরা।’
বাংলাদেশ ও জাপানের অসামান্য বন্ধুত্বের উপর গুরুত্বারোপ করে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘৫০ বছরের এই যাত্রার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে টেকনিকেল কো-অপারেশন, রেয়াতি ঋণ (কনসেশনাল লোন), অনুদান সহায়তা (গ্র্যান্ট এইড), স্বেচ্ছাসেবী ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে বহু খাতে সহযোগিতা করেছে জাইকা। সবসময় সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার শক্তিশালী বন্ধুত্ব গড়ে তোলাই ছিল জাইকার লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের মাঝে জাইকার পৃষ্ঠপোষকতায় ট্যাব বিতরণ
দেশে জাইকা’র সহযোগিতায় সম্পন্ন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর উপর আলোকপাত করে জাইকা সদরদপ্তরের সাউথ এশিয়া ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুয়ুকি বলেন, ‘জাইকা সর্বমোট তিন ট্রিলিয়ন জাপানি ইয়েনেরও বেশি সহযোগিতা প্রদান করেছে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে আমাদের শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা দেশের একটি।’
এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান বলেন, ‘গত ৫০ বছরের মধ্যে জাপানের সহযোগিতা বাংলাদেশের সর্বত্র পৌঁছে গেছে। দেশের ১৫টি খাতের সবগুলোতে জাপানের অংশগ্রহণ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী জাপান। দেশের উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে জাইকা অত্যন্ত ইতিবাচক ও সহযোগিতাপরায়ণ। তাই গত ৫০ বছরে সবধরনের সহযোগিতার জন্য জাপান সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে এমন উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টেগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, তিনটি ঢাকা মেট্রো লাইনের জন্য ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প, দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য প্রকল্প এবং ব্রিজেস রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন প্রজেক্টস।
জাইকার ৫০ বছরের এই সহযোগিতার মধ্যে আরও রয়েছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, সুশাসনের বিকাশ, বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন, পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন, কঠিন (সলিড) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি।
বাংলাদেশে জাইকার ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন কেবলমাত্র অতীতের স্মৃতিচারণ নয়; বরং বাংলাদেশের মানুষের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার অংশ।
এটি দীর্ঘ প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে থাকা অংশীদারিত্বের শক্তি এবং আগামীর দিনগুলোতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগিতায় ‘জাপানের আধুনিকায়নে শিক্ষাগত উন্নয়ন’ শীর্ষক চতুর্থ জাইকা চেয়ার লেকচার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সেমিনারটি আয়োজন করে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
জাইকা ওগাতা সাদাকো রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাডভাইজার ড. কায়াশিমা নোবুকো সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তিনি তার বক্তব্যে জাপানের শিক্ষাব্যবস্থার ঐতিহাসিক উন্নয়নের ওপর আলোকপাত করেন এবং বিশ্বজুড়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। এছাড়াও জাপানে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন ও প্রসারে জাপান সরকার ও বিদেশি শিক্ষকদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনার জন্য পাঠাতে সরকারের ভূমিকা এবং পরে জাপানের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে ওই শিক্ষার্থীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: জাইকার সহায়তায় প্রণীত হলো ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা
এ সময় তিনি যেকোনো দেশে মানসম্মত শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা এবং পাশাপাশি বিদেশি জ্ঞানের স্থানীয়করণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
তিনি জাপানের শিক্ষাগত উন্নয়নের দিকটি তুলে ধরে বলেন, যেভাবে শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে জাপান একটি উন্নত ও আধুনিক দেশে পরিণত হয়েছে তা প্রশংসার পাওয়ার যোগ্য।
এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে স্বনামধন্য শিক্ষকদের এনে জাপানে শিক্ষার প্রসার ঘটানো এবং জাপানি শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে তাদের জাতীয় উন্নয়নে কাজে লাগানোর প্রশংসা করেন।
এ ছাড়াও দেশের প্রাথমিক থেকে টারশিয়ারি শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে আলোচনা করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সেমিনারে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিবলী নোমান। পাঁচশোর বেশি অ্যাকাডেমিক, গবেষক, উন্নয়ন পেশাজীবী ও শিক্ষার্থী সেমিনারটিতে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে নিরাপত্তা জোরদারে ই-সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স চালু
জাইকার সহায়তায় প্রণীত হলো ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা
ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে নন-কম্যুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলকে (এনসিডিসি) কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস)।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি হোটেলে উন্মোচিত এই নির্দেশিকা দেশের ডাক্তারদেরকে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সঠিক চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিতে সাহায্য করবে।
ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ ও পরিচর্যার পাশপাশি রোগীদের ব্যক্তিগত সচেতনতা ও ব্যবস্থাপনা জ্ঞান থাকা জরুরি, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখা ১ কোটি ৩১ লাখ, যা বিশ্বে ৮ম সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: জাইকার সঙ্গে সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির চুক্তি সই
ডায়াবেটিসসহ অসংক্রামক রোগসমূহ (নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস-এনসিডিএস) সারা দেশে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করে জাইকা, যে কারণে ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নে প্রতিষ্ঠানটি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানে উদ্যোগী হয়।
উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এনসিডিএসের ম্যানেজমেন্ট মডেল প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণসহ এনসিডিসি’র প্রোগ্রাম কার্যক্রমের উন্নয়ন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে এনসিডিসি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে জাইকা’র ‘স্ট্রেন্থেনিং হেলথ কেয়ার সিস্টেমস ফর অর্গানাইজিং কমিউনিটিস’ (পূর্বে এসএইচএএসটিও নামে পরিচিত) এর প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রকল্প।
নির্দেশিকা উন্মোচন প্রসঙ্গে জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ কোমোরি তাকাশি বলেন, ‘রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ডাক্তারদের সহায়তা করার জন্য ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এনসিডিসি, ডিজিএইচএস, বাডাস ও বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিতে পেরে জাইকা আনন্দিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই নির্দেশিকা স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের সহায়তা করবে, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করবে, এবং রোগীদের পরিচর্যা ও জীবনমান উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। এ মাসে আমরা স্ট্রেন্থেনিং হেলথকেয়ার সিস্টেমস ফর প্রিভেন্টিং নন-কমিউনিকেবল ডিজিজেস প্রকল্পটিও উন্মোচন করতে যাচ্ছি, যা ‘এসএইচএএসটিও২’ নামে পরিচালিত হবে। এটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন অংশীদারিত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রাণ হারানো জাপানি নাগরিকদের স্মরণ করেছে জাইকা
ডায়াবেটিস মেলিটাস সংক্রান্ত এই জাতীয় নির্দেশিকা বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নির্ণয়, প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রমাণ-নির্ভর দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সাধারণ আচার-অভ্যাস, চাহিদা, ও প্রাপ্যতার বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এটি স্ক্রিনিং, ঝুঁকি নিরূপণ, গ্লাইসেমিক কন্ট্রোল, ওষুধের ব্যবহার, ইনসুলিন থেরাপি, লাইফস্টাইল ইন্টারভেনশনসহ ডায়াবেটিক রোগীর সেবার বিভিন্ন দিক আলোচনা করে, এবং রেটিনোপ্যাথি, নিউরোপ্যাথি ও নেফ্রোপ্যাথিসহ ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
জাতীয় নির্দেশিকা উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ খান, জাইকা বাংলাদেশের’ সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ কোমোরি তাকাশি, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. আখতার হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কম্যুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ীতে বিশুদ্ধকরণ প্রকল্পের পানি কৃষকদের ব্যবহারের অনুমতি দিতে জাইকার প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১
মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার ১১টা ৫৮ মিনিটে এটি জাতীয় গ্রিডে সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট ইউনিট-১ থেকে পরীক্ষামূলক প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধীরে ধীরে প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে।’
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে দুটি ইউনিট বিশিষ্ট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) এটি প্রতিষ্ঠা করে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এর অধীনে জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের সুবিধার্থে একটি গভীর সমুদ্র প্রকল্পও তৈরি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে কয়লা খালাসের জন্য ব্যবহৃত জেটির কাজ প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজ চলাচলও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৪ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়ীতে
প্রকল্পের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্লান্টটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ১৩ হাজার ১০৪ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এ জন্য কয়লা খালাসের জেটি ও সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে।
বিশাল সাইলোতে ৬০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা রাখা হয়েছে। ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার মাদার ভেসেল সরাসরি কয়লা জেটিতে প্রবেশ করতে পারে। আর মাদার ভেসেল থেকে কয়লা খালাস করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ বছরের ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক অ্যাশপন্ড রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর, অন্যটি ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড নির্মাণকরা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন এ প্রকল্পের একটি ঋণচুক্তি সই হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা এবং বাকি ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২০২৬ সালে শুরু হবে: খালিদ মাহমুদ
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জেটি ও ভৌত অবকাঠামোর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বোধনের আগে এখান থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে চাই। মাতারবাড়ী কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার কথা রয়েছে, তবে আমরা আশা করছি এই ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।’
তিনি আরও বলেন, আগামী জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু হবে।
তবে উভয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পটির কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেন নির্বাহী পরিচালক।তিনি বলেন, ‘জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করলেই কয়লা দেখা যাবে। এরপর জেটি থেকে কয়লা সরাসরি প্ল্যান্টে যাবে। এটি পরিবেশ দূষিত করবে না।’
চলতি বছরের ২৩ জুন ইন্দোনেশিয়া থেকে মাতারবাড়ি প্ল্যান্টের জন্য ৬৪ হাজার ৩০০টন কয়লা বহনকারী একটি জাহাজ বাংলাদেশে আসে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরে ভিড়েছে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ
হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রাণ হারানো জাপানি নাগরিকদের স্মরণ করেছে জাইকা
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বলেছে যে তারা প্রকল্পটি পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবে, যাতে বাংলাদেশের ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সাত জাপানি নাগরিকের উত্তরাধিকার বেঁচে থাকে।
জাইকা ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান হামলার সময় মারা যাওয়া সাত জাপানি পরামর্শকের প্রতি সমবেদনা জানাতে ৩ জুলাই উত্তরার মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে (এমইআইসি) একটি বার্ষিক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নিহত সাতজন জাপানি ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
জাইকার এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইয়ামাদা জুনিচি বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনার সাত বছর পেরিয়ে গেছে এবং বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও নাগরিকসহ অনেক মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছে।
জুনিচি বলেন, ‘মর্মান্তিক এ ঘটনার সাত বছর পার হয়েছে-বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও নাগরিকরাসহ প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ। আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন পেশাদার হিসেবে, বাংলাদেশের উন্নয়নে যারা সময় ও অক্লান্ত শ্রম দিয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন তাদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাদের অবদান চির স্মরণীয়। আমরা কখনওই তাদের অবদান ভুলবো না। গত বছর, আমরা মেট্রোরেল এক্সিবিশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছি। এ স্মৃতিস্তম্ভটি তারই প্রতীক।’
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজান হামলা: সপ্তম বার্ষিকীতে নিহতদের প্রতি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা
বক্তৃতার সময় তিনি আরও জানান যে জাইকা প্রকল্প কাজে নিয়োজিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়াও, বিভিন্ন যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং তারা যেনো মেট্রোরেলের সুবিধা উপভোগ করতে পারেন এজন্য ঢাকা মেট্রো রেলের লাইন ৬ -এ লিফট, স্বয়ংক্রিয় প্রশস্ত টিকিট গেট, ব্রেইল ব্লক, বয়স্কদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন, শুধুমাত্র নারীরা ব্যবহার করবেন এমন গাড়িসহ নানা সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত সাত জাপানি নাগরিকের স্মৃতি ও অবদান যেনো বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে এজন্য ধারাবাহিকভাবে এ প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করবে জাইকা।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান সরকার অনুষ্ঠানের অংশীদার ছিল এবং জাপানি পরামর্শদাতা যেমন আলমেক করপোরেশন, ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল এবং কাতাহিরা অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্টারন্যাশনাল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাইকার এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইয়ামাদা জুনিচি, বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল কোম্পানির সিইও ও প্রেসিডেন্ট ইয়োনেজাওয়া এইজি, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জনাব মোঃ নাজমুল হুদা, মহাপরিচালক, (দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া), ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম.এ.এন. সিদ্দিক, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।
আরও পড়ুন: শনিবার হলি আর্টিজানে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে বাংলাদেশ
হলি আর্টিজানে নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রদূতদের শ্রদ্ধা
জাইকা ও রাজউকের আয়োজনে টিওডি সেমিনারে ঢাকার ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নের খসড়া উপস্থাপন
ঢাকার ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে সম্প্রতি ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেপলমেন্টের (টিওডি) দ্বিতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজউক ও জাইকা প্রকল্প দলের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জাইকার চলমান টেকনিক্যাল সহযোগিতা প্রকল্প ‘দ্য প্রজেক্ট ফর ডেভেলপমেন্ট অব পলিসি অ্যান্ড গাইডলাইন্স ফর ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেপল্পমেন্ট (টিওডি) অ্যালং মাস ট্রানজিট করিডরস’-শীর্ষক এই সেমিনারে টিওডি নির্দেশিকা ও পাইলট প্রকল্পের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি ও অগ্রগতি উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: জাইকার সঙ্গে সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির চুক্তি সই
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিয়া, বিপিএএ এবং জাইকা বাংলাদেশ অফিসের মুখ্য প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে ।
জাইকা বাংলাদেশ অফিসের মুখ্য প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদেএই প্রকল্পের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করে জানান, ‘টিওডি’র আওতা সম্প্রসারিত হলে ও তা প্রচার করা গেলে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নের বিকাশের মধ্যদিয়ে ঢাকা বা স্মার্ট ঢাকার মানুষদের জীবন আরও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও কার্যকর করে তোলা যাবে।’
টিওডি’র সফলতার মূল চাবিকাঠি হিসেবে তিনি সমন্বিত লক্ষ্য ও অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং আলোচনা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।
আরও পড়ুন: হাতিরঝিলে স্থাপনা নিষিদ্ধ: আপিলের অনুমতি পেল রাজউক
প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেয়ায় জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
বাংলাদেশে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ।
মঙ্গলবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
উভয় পক্ষ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ, বিশেষ করে বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রতি জাপানি সহায়তা এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থের দ্বিপক্ষীয়, বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: পায়ে হেঁটে ১৫ হাজার কি.মি. পাড়ি দিয়ে রোহান এখন হিলিতে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জাপানের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে জাপান তার সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
নতুন রাষ্ট্রদূতের মেয়াদে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের সফল মেয়াদ কামনা করেন এবং তার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিনিয়োগের বৃহত্তম উৎস: দূতাবাস
জাইকার সঙ্গে সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির চুক্তি সই
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মানব সম্পদ উন্নয়ন বৃত্তি (জেডিএস) প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের সঙ্গে অনুদান চুক্তি সই করেছে।
একটি বিবৃতিতে বলা হয়, জেডিএস হলো একটি অনুদান সহায়তা যার মাধ্যমে জাপানে বাংলাদেশি তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল কর্মকর্তাদের প্রাসঙ্গিক মাস্টার্স বা ডাক্তারের কোর্সে কঠোর গবেষণার মাধ্যমে জনসাধারণের ভালো সেবা করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়নে জাইকার অংশীদারিত্ব আরও জোরদারের আশা
বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরীফা খান, নিজ নিজ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে নোট বিনিময় ও অনুদান চুক্তিতে সই করেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য জেপিওয়াই সর্বোচ্চ ৪৭৬ মিলিয়ন (প্রায় ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রদান করবে। জি/এ সাক্ষরের মাধ্যমে জাপানের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুলে পড়ার জন্য বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের মোট ৩৩টি বৃত্তি প্রদান করবে (৩০টি মাস্টার্স এবং ৩টি ডক্টরাল) জাইকা।
এই কর্মসূচিটি একটি একাডেমিক বিনিময়ের পরিবেশ তৈরি করে। এর মধ্যে নিমজ্জন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের এক্সপোজার অন্তর্ভুক্ত যেগুলো আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার একটি মাধ্যম হয়ে ওঠে।
এখন পর্যন্ত ৪৯২ ফেলো (৪৭৭ মাস্টার্স এবং ১৫ ডক্টরাল ফেলো) জাপানে অধ্যয়ন করেছেন।
এ বছর জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরপূর্তি হয়েছে।
জাইকা বাংলাদেশ অফিস বিশ্বাস করে যে জেডিএস চিরস্থায়ী জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: দেশে ফুড ভ্যালু চেইন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে জাইকা