মারিউপোল
মারিউপোলে বাড়ছে লাশের সারি, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কাও বাড়ছে
মারিউপোলের একটি বিধ্বস্ত ভবন থেকে শ্রমিকরা অসংখ্য লাশ উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে বুধবার দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইউক্রেনের অবরুদ্ধ বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি করতে না পারার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা বেড়েছে।
মারিউপোল শহরের মেয়রের সহকারী পেট্রো অ্যান্ড্রুশচেঙ্কো জানান, মারিউপোলের অনেক বিল্ডিংয়ে শ্রমিকরা ৫০ থেকে ১০০টি করে লাশ খুঁজে পাচ্ছেন।
ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ অনুমান করেছে, কয়েক মাসের টানা অবরোধের কারণে মারিউপোলের কমপক্ষে ২১ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান বাহিনী বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের সিভিয়ারোডোনেস্টকের কেন্দ্রস্থল ডনবাস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচণ্ড লড়াই করেছে।
যুদ্ধ যতই দীর্ঘস্থায়ী হয়, এর মানবিক সংকটও ততই বাড়তে থাকে। যুদ্ধের ফলে পূর্ব ইউরোপের বাইরেও খাদ্য সংকট বাড়ছে। এছাড়া সরবরাহকৃত খাদ্যের দামও কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: লুহানস্কের ৯৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণের দাবি রাশিয়ার
ইউক্রেন ‘ইউরোপের রুটির ঝুড়ি’- হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও গম, ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেলের বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারকদের মধ্যে অন্যতম এ দেশ। তবে যুদ্ধ ও কৃষ্ণ সাগর উপকূলে ইউক্রেনের বন্দরে রাশিয়ার অবরোধের কারণে খাদ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটিতে আনুমানিক ২২ মিলিয়ন টন শস্য মজুদ রয়েছে। এসব শস্য রপ্তানি না করতে পারায় অনেক উন্নয়নশীল দেশে, বিশেষ করে আফ্রিকাতে খাদ্য সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বুধবার সাগরে একটি নিরাপদ করিডোর তৈরির ব্যাপারে জাতিসংঘের এক প্রস্তাবে সমর্থন প্রকাশ করেছে রাশিয়া। এর ফলে ইউক্রেন পুনরায় শস্য রপ্তানি শুরু করতে পারবে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল বুধবার ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে ‘খাদ্য সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করার’ অভিযোগ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম শস্য রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া অভিযোগ করছে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার জন্য ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকট দায়ী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানোর দায় সম্পূর্ণ রাশিয়ার।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল আরও বলেন, রুশ জাহাজ এবং ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে ইউক্রেন শস্য রপ্তানি করতে পারছে না। রাশিয়ান ট্যাঙ্ক, বোমা ও মাইনের জন্য ইউক্রেনে ফসল রোপণ এবং ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে না।
পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে শস্য এবং অন্যান্য খাদ্যকে অব্যাহতি দিয়েছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ রুশ জাহাজের বিরুদ্ধে ব্যাপক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করেছে।
মস্কো বলছে, এসব বিধিনিষেধগুলোর কারণে শস্য রপ্তানির জন্য তাদের জাহাজগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না অন্যান্য শিপিং সংস্থাগুলোও তাদের পণ্য বহন করতে ইচ্ছা পোষণ করছে না।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ, জলবায়ু বিপর্যয় বহুমুখী খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে: জাতিসংঘ
তুরস্ক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং শস্যের চালান পুনরায় শুরু করার জন্য আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে চাইছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বুধবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে ইউক্রেনকে এই আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সিভিয়েরোডোনেটস্ককে ডনবাসের যুদ্ধের ‘কেন্দ্র’ এবং সম্ভবত যুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন অংশগুলোর মধ্যে একটি বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
জেলেনস্কির অফিসের একজন উপদেষ্টা বলেন,রাশিয়ান বাহিনী যুদ্ধে তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে। তারা শহর থেকে পিছু হটছে, তবে তারা কামান ও বিমান হামলা বাড়িয়েছে।
লুহানস্কের গভর্নর সের্হি হাইদাই রাশিয়ান বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের অসুবিধার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘হয়তো আমাদের পিছু হটতে হবে, কিন্তু এই মুহূর্তে শহরে যুদ্ধ চলছে।’
আরও পড়ুন: চলতি বছরে তেলের দাম ৪২ শতাংশ বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
২ বছর আগে
স্টিল কারখানার ২৫০০ ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দির ভাগ্য নিয়ে উদ্বেগ
অবরুদ্ধ মারিউপোল শহরের স্টিল কারখানা থেকে আজভ রেজিমেন্টের প্রায় দুই হাজার ৫০০ ইউক্রেনীয় যোদ্ধাকে বন্দি করার দাবি করেছে রাশিয়া। এছাড়া মস্কো-সমর্থিত এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এ সকল যুদ্ধবন্দিদের ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায়, সেনাদের ভাগ্যে কি আছে তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
এর আগে শনিবার রাশিয়া আজভস্টাল স্টিল কারখানার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ঘোষণা করে। এর ফলে কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়ে যাওয়া মারিউপোলের শেষ বাহিনীর পরাজয় ঘটেছে এবং ইউক্রেনের এই কৌশলগত বন্দর শহরটির পতন ঘটেছে।
গত তিন মাসের রুশ হামলায় শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শহরটির ২০ হাজারেরও বেশি নাগরিকের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে৷
শহরটির পতনের ফলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় তিন মাস ধরে চালানো যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে বলেই ধরা যায়।
এদিকে ইউক্রেনের অন্যতম মিত্র পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা এক অঘোষিত সফরে ইউক্রেনে পৌঁছেছেন। তার কার্যালয় জানিয়েছে, রবিবার দুদা ইউক্রেনের পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন।
আরও পড়ুন: মারিউপোলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
পোল্যান্ড ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের ইচ্ছার দৃঢ় সমর্থক এবং যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটি লাখ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের সমুদ্র বন্দরগুলোকে অবরুদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনে পশ্চিমা মানবিক সহায়তা এবং অস্ত্র সরবরাহের অন্যতম একটি প্রধান প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে পোল্যান্ড। এছাড়া পোল্যান্ড ইউক্রেনকে তার শস্য ও অন্যান্য কৃষি পণ্য বিশ্ব বাজারে পৌঁছাতেও সহায়তা করছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আটক করার ভিডিও প্রকাশ করে ঘোষণা করেছে, তার বাহিনী মারিউপোলের স্টিল কারখানার বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ টানেল থেকে শেষ ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের বন্দি করেছে।
এতে আরও বলা হয়, মোট দুই হাজার ৪৩৯ জন বন্দি আত্মসমর্পণ করেছে।
যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা বন্দিদের ‘যুদ্ধবন্দি’ হিসেবে গণ্য করতে রুশ বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করেছেন।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক শনিবারও বলেছেন, ইউক্রেন তাদের (যুদ্ধবন্দী সেনা) প্রত্যেককে ‘ফেরানোর জন্য লড়াই করবে’।
অন্যদিকে মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের একটি এলাকার ক্রেমলিনপন্থী প্রধান ডেনিস পুশিলিন বলেছেন, আটক যোদ্ধাদের মধ্যে কিছু বিদেশি নাগরিক রয়েছে; এর বেশি বিস্তারিত তিনি জানাননি।
তিনি বলেন, ‘তারা নিশ্চিত ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি হবেন।’
রুশ কর্মকর্তারা এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এসব যোদ্ধাদের (ইউক্রেনীয়) নব্য-নাৎসি এবং অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস পুশিলিনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘আমি বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে হবে। সাধারণ মানুষ, সমাজ এবং সম্ভবত বিশ্ব সম্প্রদায়ের বুদ্ধিমান অংশের কাছ থেকে এর জন্য বিশেষ অনুরোধ রয়েছে।’
তবে ইউক্রেন সরকার আজভস্টাল দখলের রাশিয়ার দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংঘাতে ৩৭৫২ বেসামারিক মানুষের প্রাণহানি: জাতিসংঘ
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী যোদ্ধাদের বলেছিল তাদের মিশন সম্পূর্ণ এবং এখন তারা বেরিয়ে আসতে পারে। তারা এটিকে ‘গণআত্মসমর্পণ’ হিসেবে নয়, বরং এটিকে তারা উচ্ছেদ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
প্রসঙ্গত, ক্রেমলিন ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ ও রাশিয়ার মধ্যে একটি স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা করার জন্য মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। অন্যদিকে এই বন্দরটি হারানোর ফলে ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হারাবে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ শনিবার জানিয়েছেন, রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের প্রধান বন্দর ওডেসার কাছে ইউক্রেনের একটি বিশেষ-অপারেশন ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। সেইসঙ্গে উত্তর ইউক্রেনের জাইটোমির অঞ্চলে পশ্চিমা সরবরাহকৃত অস্ত্রের একটি ভাণ্ডারও ধ্বংস করেছে।
তবে এবিষয়েও ইউক্রেনের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসের বেশিরভাগ অংশে ব্যাপক লড়াইয়ের খবর দিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশ্যে তার রাতের ভিডিও ভাষণে বলেন, ‘ডনবাসের পরিস্থিতি খুব খারাপ।’
তিনি বলেন, ‘আগের দিনের মতো রাশিয়ার সেনাবাহিনী স্লোভিয়ানস্ক ও সিভিয়েরোডোনেটস্কে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে।’
সিভিয়েরোডোনেটস্ক হল লুহানৎস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রণাধীন প্রধান শহর। এই শহরটি ডোনেৎস্ক অঞ্চলের সঙ্গে ডনবাসকে সংযুক্ত করেছে।
শহরটির গভর্নর সের্হি হাইদাই বলেছেন, শহরের একমাত্র কার্যকরী হাসপাতালে মাত্র তিনজন ডাক্তার এবং ১০ দিন কাজ চালানোর মতো সরবরাহ রয়েছে।
আরও পড়ুন: খারকিভের চারপাশ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার: ইউক্রেন
২ বছর আগে
মারিউপোলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
ইউক্রেনের আলোচিত মারিউপোল শহর দখল করার দাবি করেছে রাশিয়া। প্রায় তিন মাসের অবরোধের পরে শুক্রবার ইউক্রেনের কৌশলগত এই বন্দর শহরটি দখলকে এখন পর্যন্ত যুদ্ধে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত প্রায় তিনমাসে রুশ সেনারা এই শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। শহরটির প্রায় ২০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক মারা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মারিউপোল দখলের সংবাদ জানিয়েছেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে ইউক্রেন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ৩৪ ফরাসি কূটনীতিককে বহিষ্কার করল রাশিয়া
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে বলেছে, গত সোমবার থেকে স্টিল কারখানাগুলোতে আটকে থাকা মোট দুই হাজার ৪৩৯জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে।
শুক্রবারও ৫০০ জনেরও বেশি ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে। তারা আত্মসমর্পণ করার সঙ্গে সঙ্গে রুশ সেনারা ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের বন্দী করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েকজনকে একটি প্রাচীন শাস্তি উপনিবেশে নিয়ে যায় এবং অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্টিল কারখানার প্রতিরক্ষার নেতৃত্বে ছিল ইউক্রেনের আজভ রেজিমেন্ট। রাশিয়া বরাবরই এই আজভ রেজিমেন্টকে ‘নব্য নাৎসি’ বলে অভিহিত করে আসছে।
রাশিয়া বলেছে, আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডারকে একটি সাঁজোয়া যানে করে প্ল্যান্ট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ যুদ্ধাপরাধের জন্য স্টিল কারখানার কিছু যোদ্ধাকে ‘নাৎসি’ এবং অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি আনার হুমকি দিয়েছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, মারিউপোলের সম্পূর্ণ অধিগ্রহণ পুতিনকে ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শুরু করা যুদ্ধে দেরিতে হলেও দুর্দান্ত একটি বিজয় এনে দিয়েছে।
শনিবার ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুশ বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে গোলাবর্ষণ করেছে এবং ডনবাসের অংশ লুহানস্ক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে হামলা চালিয়েছে। এসময় তারা অন্যান্য স্থাপনার পাশাপাশি একটি স্কুলে আঘাত করেছে।
আরও পড়ুন: খারকিভের চারপাশ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার: ইউক্রেন
প্রসঙ্গত, ক্রেমলিন ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ ও রাশিয়ার মধ্যে একটি স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা করার জন্য মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ চেয়েছিল। অন্যদিকে এই বন্দরটি হারানোর ফলে ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হারাবে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে খারাপ ফল ভোগ করেছে মারিউপোলবাসীরা। আনুমানিক এক লাখ অধিবাসী দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে। অনেকে খাদ্য, পানি, তাপ বা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর মধ্যে আটকা পড়েছে।
গত এপ্রিল মাসে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতে দেখা যায়, মারিউপোলের ঠিক বাইরে গণকবর বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৯হাজার বেসামরিক লোককে কবর দিয়ে হত্যাকাণ্ড গোপন করার অভিযোগ করেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার বলেছেন, যোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে আজভস্টালের নিচের কয়েক মাইল সুড়ঙ্গ ও বাঙ্কার থেকে তাদের বাহিনীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মানবিক যুদ্ধবিরতির সময় শত শত বেসামরিক লোককে এখানকার প্ল্যান্ট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বন্দি রুশ সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু ইউক্রেনের
২ বছর আগে
ইউক্রেনের ইস্পাত কারখানা থেকে আরও ৫০ নাগরিক সরিয়ে নেয়া হলো
ইউক্রেনের মারিউপোলের একটি ইস্পাত কারখানার সুড়ঙ্গে অবরুদ্ধ আরও ৫০ জন বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
টানা দু’মাসের বেশি সময় ধরে দেশটির কৌশলগত বন্দর নগরী মারিউপোলে রুশ সেনাদের ক্রমবর্ধমান মরিয়া আক্রমণে শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, আজভস্টাল ইস্পাত কারখানা থেকে ৫০ জনকে সরিয়ে নিয়ে জাতিসংঘ এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই দলে ১১ জন শিশু রয়েছে।
রুশ কর্মকর্তারা এবং ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেছেন, শনিবারও সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এর আগে এই ইস্পাত কারখানা এবং শহর থেকে প্রায় ৫০০ জন বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো’ সৈন্যদের উদ্ধারে প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে, যদিও তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি।
রাতের ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘আজভস্টালে থাকা আমাদের সৈন্যদের বাঁচাতে আমরা কূটনৈতিক বিকল্প নিয়েও কাজ করছি।’
পড়ুন: মারিউপোলে ইস্পাত কারখানায় অবরুদ্ধ সেনাদের আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি
মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় রুশ হামলা জোরদার
২ বছর আগে
মারিউপোলে ইস্পাত কারখানায় অবরুদ্ধ সেনাদের আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি
ইউক্রেনের মারিউপোলের একটি ইস্পাত কারখানার সুড়ঙ্গে অবরুদ্ধ সেনারা রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা দু’মাস ধরে দেশটির কৌশলগত বন্দর নগরী মারিউপোলে রুশ সেনাদের ক্রমবর্ধমান মরিয়া আক্রমণে শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ওই সেনাদের মধ্যকার এক কমান্ডারের স্ত্রী ক্যাটরিনা প্রোকোপেনকো জানান, তারা ‘শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধের’ অঙ্গীকার করেছে।
তিনি বলেন, তার স্বামী আজভ রেজিমেন্টের কমান্ডার ডেনিস প্রোকোপেনকোর সঙ্গে তার টেলিফোনে কথা হয়েছে। ‘তারা আত্মসমর্পণ করবে না। তারা কেবল একটি অলৌকিক ঘটনার (ঈশ্বরের সাহায্যের) আশা করছে।’
এদিকে আগামী সোমবার রাশিয়ার বিজয় দিবস। এ দিনটি রাশিয়ার ক্যালেন্ডারে সবচেয়ে বড় দেশপ্রেম দিবস, যা নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়কে নির্দেশ করে।
রাশিয়ার সাম্প্রতিক অনুমান অনুযায়ী প্রায় দুই হাজার ইউক্রেনীয় যোদ্ধা মারিউপোলের বিস্তৃত আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানার নিচে টানেল এবং বাঙ্কারগুলোর একটি গোলকধাঁধায় আটকে আছে। এছাড়া কয়েকশ’ বেসামরিক লোকও সেখানে আটকে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার রাতের ভিডিও ভাষণে বলেছেন, ‘অনেক আহত (যোদ্ধা) আছে, কিন্তু তারা আত্মসমর্পণ করছে না। তারা তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।’
আরও পড়ুন: মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় রুশ হামলা জোরদার
তিনি বলেন, অব্যাহত রুশ হামলার ফলে বাকি বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্তন গেরাশচেঙ্কো বলেছেন, লেআউটটি জানতেন এমন একজন ইলেকট্রিশিয়ানের সাহায্যে রুশ সেনারা ভিতরে (কারখানার) প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।
গেরাশচেঙ্কো বুধবার পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘রাশিয়ানরা বিশ্বাসঘাতকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে এই টানেলগুলোতে আক্রমণ শুরু করে।’
তবে ক্রেমলিন এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি।
মারিউপোলের পতনের ফলে ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হারাবে। এর ফলে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপে একটি স্থল করিডোর স্থাপন করতে পারবে। ২০১৪ সালে যেটিকে ইউক্রেন থেকে দখল করে নেয় রাশিয়া।
ধারণা করা হচ্ছে ক্রেমলিনের পূর্বের শিল্পাঞ্চল ডনবাস এরপর সেনাদের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য হবে।
আজভ রেজিমেন্টের ডেপুটি কমান্ডার ক্যাপ্টেন স্যাভিয়াতোস্লাভ পালামার ইউক্রেনীয় টিভিতে ইস্পাত কারখানা থেকে বেসামরিক নাগরিক এবং আহত যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেছেন সেনারা ‘সঠিক চিকিৎসার অভাবে যন্ত্রণায় মারা যাচ্ছে।’
ক্রেমলিন বারাবার ইউক্রেনের অবরুদ্ধ সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে বেসামরিক নাগরিকদের স্থানানন্তরের বাধা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইইউ
‘ইউক্রেনের খেরসনকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া’
২ বছর আগে
মারিউপোলের ইস্পাত কারখানায় রুশ হামলা জোরদার
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিউপোলের আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় হামলা জোরাদার করেছে রাশিয়ান বাহিনী।
মারিউপোলের মেয়র জানিয়েছেন, আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় প্রচণ্ড লড়াই চলছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত এই বন্দর নগরীটি ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের শেষ শক্ত ঘাঁটির প্রতিনিধিত্ব করছে।
ইউক্রেনীয় সামরিক ইউনিটের কমান্ডার বলেছেন, রাশিয়ান সৈন্যরা কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেছে।
রাশিয়ান সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইউক্রেন জুড়ে পাঁচটি রেলস্টেশনে বৈদ্যুতিক শক্তি সুবিধা ধ্বংস করার জন্য সমুদ্র এবং বায়ুচালিত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
বুধবার রাতে সারা দেশের শহরগুলোতে বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে এবং রাজধানী কিয়েভের নিকটবর্তী, মধ্য ইউক্রেনের চেরকাসি এবং ডিনিপ্রো এবং দক্ষিণ-পূর্বে জাপোরিঝিয়াতে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ডিনিপ্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি রেল স্টেশনে হামলা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সেখানে একটি সেতুতে হামলা হয়েছে।
তবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে এই সমস্ত অপরাধের আইনগতভাবে এবং বাস্তবিকভাবে শক্ত জবাব দেয়া হবে।’
অপরদিকে, আগামী ৯ মে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে 'সর্বাত্মক যুদ্ধ' ঘোষণা করবে-এরকম একটি জল্পনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
পেসকভ বলেন, এমনটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এবং এসব জল্পনা অর্থহীন।
রাশিয়া এই দিনটিকে ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের 'বিজয় দিবস' হিসেবে পালন করে থাকে।
পড়ুন: রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইইউ
২ বছর আগে
স্যাটেলাইট ছবিতে মারিউপোলের কাছে সম্ভাব্য গণকবরের সন্ধান
সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু স্যাটেলাইট ছবির ভিত্তিতে ইউক্রেনের মারিউপোলের কাছে গণকবর আছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্যাটেলাইট ইমেজ প্রদানকারী ম্যাক্সার টেকনোলজিস এ ছবিগুলো প্রকাশ করে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে বলেছে বন্দর শহর অবরোধে সংঘটিত মৃত্যু লুকানোর জন্য গণকবরে প্রায় ৯ হাজার ইউক্রেনীয় বেসামরিক নাগরিকদের কবর দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডনবাসে হামলা শুরু করেছে রাশিয়া: জেলেনস্কি
স্যাটেলাইট ছবিগুলোতে শহরে ২০০ টিরও বেশি গণকবর দেখানো হয়েছে। চিত্রটিতে মারিউপোলের বাইরে মানহুশ শহরের একটি কবরস্থান থেকে দূরে প্রসারিত কবরের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো রাশিয়ানদের অভিযুক্ত করে বলেছেন,শহর থেকে বেসামরিক লোকদের লাশ নিয়ে মানহুশে দাফন করে রাশিয়া তাদের ‘সামরিক অপরাধ’ লুকিয়ে রেখেছে।
মারিউপোল সিটি কাউন্সিল বৃহস্পতিবার টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি পোস্টে বলেছে, কবরগুলোতে ৯ হাজার জনের মতো মৃত ব্যক্তি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: লাভিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৭ জন নিহত: ইউক্রেন
২ বছর আগে
মারিউপোলে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম প্রত্যাখান ইউক্রেনীয় সেনাদের
ইউক্রেনের অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলে আত্মসমর্পণের যে সময় সীমা বেধে দিয়েছিল রুশ বাহিনী তাতে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা সাড়া দেয়নি। এ পরিস্থিতিতে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
শহরটির টহল পুলিশের প্রধান মিখাইল ভার্শিনিন রবিবার মারিউপোল টেলিভিশনকে বলেছেন, শিশুসহ অনেক মারিউপোল বেসামরিক নাগরিকও আজভস্টাল প্ল্যান্টে আশ্রয় নিচ্ছেন। তারা রাশিয়ান গোলাগুলি থেকে এবং যে কোনও দখলদার রাশিয়ান সৈন্যদের কাছ থেকে লুকিয়ে আছে।
এর আগে জীবন রক্ষার সুযোগ হিসেবে ইউক্রেনের সৈন্যদের রবিবারের মধ্যে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিল রাশিয়া।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল এই সপ্তাহে এবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, আমরা এই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য লড়াই করব।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন সম্ভব হলে কূটনীতির মাধ্যমে যুদ্ধের লাগাম টানতে প্রস্তুত, তবে আমাদের আত্মসমর্পণের ইচ্ছা নেই।’
ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে যুদ্ধ শুরু পর মারিউপোলে রাশিয়ার হামলা চলছে এবং এতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে । ইউক্রেনের এই বড় বন্দর নগরীটির পতন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি মারিউপোলের পতন ঘটে, এটি হবে গত দুমাসের যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিজয়।
পড়ুন: মারিউপোলে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহ্বান রুশ সেনাবাহিনীর
কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে নতুন করে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া
২ বছর আগে
মারিউপোলে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের আত্মসমর্পণের আহ্বান রুশ সেনাবাহিনীর
মারিউপোলে জীবন রক্ষার সুযোগ হিসেবে ইউক্রেনের সৈন্যদের আজ রবিবারের মধ্যে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। তারা বলেছে, যারা অস্ত্র সমর্পণ করবে তাদের জীবনের নিশ্চয়তা দেয়া হবে।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগেই বলেছেন, মারিউপোলে ইউক্রেনের যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করার অর্থ হলো আলোচনার সমাপ্তি টেনে দেয়া।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে মারিউপোলে আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে যাচ্ছে রাশিয়া।
রবিবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়া জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অস্ত্র সমর্পণ করলেই কেবল তাদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হবে। এ জন্য তারা কিয়েভের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেদের নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউক্রেনের সৈন্যদের।
তারা বলছে, ইউক্রেনের যেসব সৈন্য ও বিদেশি ভাড়াটে যোদ্ধারা মারিউপোলে এখনো লড়াই করছে, তারা স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে বেলা একটার মধ্যে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করলে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
যারা এটা করবে তাদের বন্দী হিসেবে জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আচরণ করা হবে।
তবে যারা আত্মসমর্পণ করবে না তাদের বিষয়ে কী হবে সে সম্পর্কে দেশটি তাদের বিবৃতিতে কিছু উল্লেখ করেনি।
রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনের সৈন্যদের শহরটির একটি ছোট এলাকায় ঘিরে রাখা হয়েছে।
পড়ুন: কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে নতুন করে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া
মারিউপোলে কী হয়েছে
ইউক্রেনের এই বড় বন্দর নগরীটির পতন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ছয় সপ্তাহ ধরে সেখানে রাশিয়ার হামলা চলছে এবং এতে মারা গেছে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক।
যারা বেঁচে গেছে তারাও কনকনে ঠাণ্ডায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
বোমায় শহরটি তছনছ করে দিয়েছে রুশরা। ফলে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পানি ও ঔষধের চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
হাজার হাজার মানুষ শহরটির আরও উত্তরে সরে গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও স্বীকার করেছেন যে শহরটির অল্প অংশই তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
২ বছর আগে
মারিউপোলে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত: মেয়র
ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিউপোলের মেয়র সোমবার বলেছেন, তার শহরের রুশ অবরোধে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং এই সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সোমবার দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাথে ফোনে আলাপকালে মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো রাশিয়ান বাহিনীকে বহির্বিশ্বের কাছ থেকে সেখানে হত্যাকাণ্ড লুকানোর প্রয়াসে শহরে আটক মানবিক কনভয়কে কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ করারও অভিযোগ করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে আগ্রাসনের নির্দেশ দেয়ার পরপরই শুরু হওয়া রুশ হামলার কারণে মারিউপোল অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধের সবচেয়ে নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে।
পড়ুন: পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: জেলেনস্কি
বয়চেঙ্কো ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক অভিযোগের নতুন বিবরণ দিয়েছেন যে, রুশ বাহিনী মারিউপোলে অবরোধের শিকারদের মৃতদেহ নিষ্পত্তি করার জন্য মোবাইল শ্মশান সরঞ্জাম এনেছিল।
বয়চেঙ্কো বলেন, রুশ বাহিনী অনেক লাশ একটি বিশাল শপিং সেন্টারে নিয়ে গেছে যেখানে স্টোরেজ সুবিধা এবং রেফ্রিজারেটর রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মোবাইল শ্মশানগুলো ট্রাকের আকারে এসেছে: আপনি সেগুলো খুলুন এবং ভিতরে একটি পাইপ আছে এবং এই মৃতদেহগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
বয়চেঙ্কো ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের একটি স্থান থেকে কথা বলেছেন, তবে এটি মারিউপোলের বাইরে।
মেয়র বলেন, শহরে রাশিয়ান বাহিনী কর্তৃক কথিত শ্মশানের মৃতদেহ পোড়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে তার কাছে বেশ কয়েকটি উৎস রয়েছে, তবে তার তথ্যের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানান নি।
পড়ুন: শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
২ বছর আগে