আইসিডিডিআর
নিজের বাসার পানিতেও গন্ধ পান ওয়াসার এমডি
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান নিজের বাসার পানিতেও গন্ধ পান। তিনি বলেছেন, আমাদের পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ জায়গার মধ্যে পাইপ ফাটা থাকে। যখনই অভিযোগ পাই সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা ঠিক করে দেই। তারপরও কিছু জায়গায় সমস্যা হয়। নয়াপল্টনে আমার নিজের বাসার পানিতেও গন্ধ আছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত 'নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা' শীর্ষক ‘ডুরা সংলাপে’ তিনি এসব কথা বলেন।
এমডি আরও বলেন, ওয়াসা যেই পরিমাণ পানি উৎপাদন করে, সেই পরিমাণ পানি গ্রাহকের কাছে যায়। আমাদের পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ সিস্টেম লস আছে, যা খুবই নগণ্য। কিন্তু রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি দেখলেই সাধারণ মানুষ মনে করেন, এটা ওয়াসার লাইন। এ কারণে অনেক সময় লাইনে ময়লা পানি ঢুকে পড়ে।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশুরোগ ও ডায়রিয়া বেড়েছে
পানি ফুটিয়ে পান করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান বলেন, ওয়াসার পানি নিরাপদে ট্যাংকি পর্যন্ত দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। বাসার লাইন পর্যন্ত নেয়ার দায়িত্ব আমাদের না। সেজন্য আমরা বলব আপনারা পানি ফুটিয়ে খান। এছাড়া পানিতে কোনো সমস্যা হলে- আমরা তিন স্থান থেকে পানি নিয়ে পরীক্ষা করি। একটা হচ্ছে আমাদের পাম্প, দ্বিতীয় হচ্ছে যে এলাকায় সমস্যা ওই এলাকার লাইন, আর তৃতীয় হচ্ছে বাসার লাইন থেকে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এ অবস্থায় অনেকেই ওয়াসার লাইনের পানিকে দোষারোপ করছে।
এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে আমাদের ঘনঘন যোগাযোগ আছে। তারা যখনই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া ১০টি এলাকার ঠিকানা আমাদের দেয়, সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওইসব এলাকার পানি ল্যাবে টেস্ট করাই। সেই ল্যাব টেস্টে আমরা কোনও ব্যাকটেরিয়া পাইনি। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে আইসিডিডিআর,বিকে জানিয়েছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বেড়েছে ডায়রিয়া: চাপ সামলাতে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
তিনি বলেন, পানিতে যদিওবা কোনও জীবাণু থাকে, সেটি যাতে মরে যায় বা ধ্বংস হয়ে যায় সেজন্য ক্লোরিন দিয়ে থাকি। অনেক সময় ক্লোরিন পাইপের শেষ মাথা পর্যন্ত যায় না। কিন্তু আমরা ওই বিশেষ স্থানগুলোতে ক্লোরিন বাড়িয়ে দিয়েছি। এই ডায়রিয়ার সঙ্গে আমাদের ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে যা পেয়েছি, তাতে কোনও সম্পৃক্ততা সরাসরি নেই। আর ক্লোরিন মেশানোর কারণে পানিতেও গন্ধ পাওয়া যায় না। এই গন্ধ দূর করতে আমরা আন্ডারগ্রাউন্ড পানি ও আমাদের শোধন করা পানির মিশ্রণ করে সরবরাহ করি।
পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে সবকিছু আমরা জানিয়েছি, এখন সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
২ বছর আগে
ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়া নিয়ে রোগী ভর্তি অব্যাহত রয়েছে।
আইসিডিডিআ,বির জনসংযোগ কর্মকর্তা একেএম তারিফুল ইসলাম খান ইউএনবিকে বলেছেন, সাধারণত প্রাক-বর্ষা বা শীতের আগে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ে, তবে এ বছর গ্রীষ্মকালে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
গত ১৫ দিনে মোট ১৬ হাজার ১৭৭ জন ডায়রিয়া রোগী আইসিডিডিআর,বিতে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৭৬৯ জন রোগী পানিবাহিত এই রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং ২৮ মার্চ (সোমবার) এক হাজার ৩৩৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যা গত ১৫ দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যা।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবে হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক
তিনি বলেন, ২৭ মার্চ প্রায় এক হাজার ২৩০ জন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
ইউএনবি বাগেরহাট প্রতিনিধির প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলার ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমদ্দার জানান, বর্তমানে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট ১৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
মোট রোগীদের মধ্যে দশজন শিশু এবং আটজন প্রাপ্তবয়স্ক।
তবে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ডায়রিয়ার জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করেছেন। তারা খাবার গ্রহণের আগে সঠিকভাবে হাত ধুতে ও বিশুদ্ধ পানি পান করার আহ্বান জানান।
ইউএনবির চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, গত তিন দিনে মোট ৯৭ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রতিদিন ২৫-৩৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য।
স্থানের অভাবে লোকজনকে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
২ বছর আগে