ডায়াবেটিস
ধরাছোঁয়ার বাইরে শহরের এক নীরব ঘাতক শব্দদূষণ
সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত একজন ব্যক্তি কোনো অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলেন না, ধূমপান করলেন না। তা সত্ত্বেও তিনি রোগাক্রান্ত হলেন! কারণ আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াচ্ছে এক নীরব ঘাতক।
ধরাছোঁয়ার বাইরে, কিন্ত আমাদের শরীর ও মন কোনোকিছুই রেহাই পাচ্ছে না এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে। হৃদরোগ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, এমনকি মস্তিস্ক থেকে স্মৃতি হারিয়ে যাওয়ার মতো শারীরিক ক্ষতি করতে পারে এই ঘাতক।
এই নীরব ঘাতক কোনো অস্ত্র কিংবা বিষ নয় বরং এটি শব্দ দূষণ। এটি শুধু যে শ্রবণশক্তি কমিয়ে দেয় তা নয়, এটি মানবদেহে নানা ক্ষতি করে থাকে।
অবাক করার মতো বিষয় হলো আমাদের রাজধানী ঢাকা বিশ্বে শব্দ দূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে। ঢাকা শহরে রাস্তায় নামলে মাঝে মাঝে মনে হয়, গাড়ি চালকেরা যেন হর্ন বাজানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। কোনো কিছু সামনে পড়ে গেলেই কানফাটা শব্দে বেজে উঠছে হর্ন।-খবর বিবিসির
আরও পড়ুন: শ্রবণক্ষমতা হারানোর ঝুঁকি কমাতে শব্দদূষণ রোধ জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
এছাড়া নানা উৎসব আয়োজনে উচ্চশব্দে গান বাজানো, নির্মাণ কাজ, গ্রিল-টাইলস কাটা, মেশিনে ইট ভাঙা, নানা প্রচারণায় মাইক বাজানো, জেনারেটরের শব্দে কানের অবস্থা নাজেহাল হয়ে যায়। এই শহরের মানুষ বাধ্য হয়েই এই শব্দের তাণ্ডবের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। কিন্তু এই শব্দদূষণ কীভাবে আমাদের ক্ষতি করছে, তা আমরা সবাই জানি তো?
সেন্ট জর্জেসের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক শার্লট ক্লার্ক বলেছেন, ‘শব্দদূষণ এমন একটি জনস্বাস্থ্যগত সমস্যা, প্রচুর মানুষ এই সমস্যায় পড়ে থাকেন। কিন্তু এমন একটি সমস্যা নিয়ে আমরা খুব কমই কথা বলি।’
শব্দদূষণ কখন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে, সেটি কিভাবে মানুষের ক্ষতিসাধন করে, তা জানতে অনুসন্ধান চালিয়েছেন বিবিসির এক সাংবাদিক জেমস গ্যালাঘের। এ সময় তিনি কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন, এই ঘাতকের হাত থেকে বাঁচার কোনো উপায় আছে কিনা সে উত্তরও খুঁজে দেখেছেন।
প্রথমেই জেমস অধ্যাপক ক্লার্কের সঙ্গে একটি সম্পূর্ণ নিঃশব্দ ল্যাবরেটরিতে যান। সেখানে তিনি নানা পরীক্ষার মাধ্যমে দেখান কোন ধরনের শব্দে মানবশরীর কেমন প্রতিক্রিয়া জানায়। এজন্য তাকে মোটা স্মার্টওয়াচের মতো যন্ত্র পড়ানো হয়।
সাধারণত এই কাজে হার্টরেট মনিটর (যা হৃদস্পন্দন পরিমাপ করে), গ্যালভানিক স্কিন রেসপন্স (ত্বকের ঘাম থেকে স্নায়বিক উত্তেজনা পরিমাপ করে), ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (অ্যামিগডালার সক্রিয়তা পরিমাপ করে) ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
যন্ত্রটি জেমসকে পরানোর পরে তাকে ঢাকার যানজটের সময় রেকর্ড করা ভিন্ন পাঁচটি শব্দ শোনানো হয়। তিনি জানান, ‘তীব্র এক যানজটের মধ্যে রয়েছেন— এমন মনে হচ্ছিল তার। তার পরিহিত যন্ত্রের সেন্সরে এই শব্দের কারণে তার হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার রেকর্ড হয়। শুধু তাই নয়, ঘামছিলেনও।’
অধ্যাপক ক্লার্ক বলেন, ‘এই পরীক্ষা প্রমাণ করে শব্দ মানুষের হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। কারণ উচ্চশব্দে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।’
জেমস জানান, ‘ঢাকার ওই পাঁচটি শব্দের মধ্যে বাচ্চাদের খেলা করার সময়ে আনন্দপূর্ণ কোলাহলের শব্দটি তার শরীরে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, বাকি কুকুরের ঘেউ ঘেউ কিংবা গভীর রাতে অন্য বাসায় উচ্চশব্দে গান বাজানোর শব্দে তার শরীরে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
কিন্তু একেক রকম শব্দে কেন শরীর ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া করে জানতে চাইলে ক্লার্ক বলেন, ‘আমাদের শরীর শব্দ সংবেদনশীল। রাগ, উত্তেজনা, ভয়ের মতো শব্দেও শরীর প্রতিক্রিয়া করে।’
ক্লার্ক জানান, ‘কানই প্রথমে যেকোনো শব্দ গ্রহণ করে। এরপর সেটি ককলিয়ার নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়। এরপর অ্যামিগডালা নামে মস্তিস্কের একটি অংশ এই শব্দ চিহ্নিত করে প্রতিক্রিয়া জানায়।’
যখনই কোনো উচ্চমাত্রার শব্দ মস্তিষ্কে পৌঁছায়, এরপর অ্যামিগডালা সেটি শনাক্ত করলে তা আমাদের নার্ভার্স সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। এতে শরীরে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়।
প্রথমদিকে এতে ক্ষতি না হলেও কয়েকবছর ধরে একইরকম শব্দ শুনতে থাকলে তা মানুষের রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক, উচ্চরক্তচাপ, লেভেল ২ ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি সৃষ্টি করে বলে জানান অধ্যাপক ক্লার্ক। তাছাড়া এটি শ্রবণশক্তিও কমিয়ে দেয় বলে জানান তিনি।
আরও আশঙ্কার কথা হলো, আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখনও শব্দ ঠিক একইভাবে আমাদের ক্ষতি করে। ক্লার্ক বলেন, ‘মানুষের কান সদা জাগ্রত। তাই আমরা ঘুমিয়ে থাকলেও শব্দ শুনতেই থাকি। একারণে আশপাশে উচ্চশব্দ থাকলে তা ঘুমন্ত অবস্থাতেও ক্ষতি করে।’
আসলে শব্দদূষণ একটি অবাঞ্ছিত বিষয়। ধরুন, আপনার পাশের বাড়িতে কারো বিয়ে, তারা আনন্দ করতে গান বাজাচ্ছে। এই আনন্দ তাদের পাশাপাশি অন্যদেরও ক্ষতিসাধন করে চলে। আর এটি আমরা বুঝতেই পারি না, আবার নিজে বুঝলেও অন্যকে বুঝাতে পারি না।
বিবিসির প্রতিবেদনে শব্দদূষণে ক্ষতির শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগীর কথা উঠে এসেছে। জেমসের কাছে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন স্পেনের বার্সালোনার ভিলা দে গ্রাসিয়া এলাকারনিবাসী কোকো।
তিনি জানান, ‘ইতোমধ্যেই বুকের ব্যথা নিয়ে দুইবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার বাসার আশপাশের উচ্চ শব্দের কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে বলে কোকোর ধারণা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য শব্দদূষণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনাকারী গবেষক ড. মারিয়া ফোরাস্টারের মতে, শুধু ট্র্যাফিক শব্দের কারণে বার্সেলোনায় প্রতি বছর আনুমানিক ৩০০টি হার্ট অ্যাটাক ও ৩০টি মৃত্যু ঘটে।
ড. মারিয়া জানান, ইউরোপে প্রতিবছর ১২ হাজারের মতো অকাল মৃত্যু, নিদ্রাহীনতা ও নানা ধরনের মানসিক সম্যসার সঙ্গে শব্দদূষণ জড়িত। ৫৩ ডেসিবলের বেশি মাত্রার শব্দই হার্টের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মারিয়া বার্সোলোনার একটি সড়ক ঘুরিয়ে দেখান জেমসকে, যেখানে শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলের চেয়ে কম। তিনি জানান, এই এলাকার যানবাহনগুলো ধীরে চলার কারণে ও অতিরিক্ত হর্ণ না বাজানোর কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়াও সড়কের পাশ পথচারীদের হাঁটার জায়গা, ক্যাফে ও ফুলের বাগানের জন্য ফাঁকা জায়গা রয়েছে। কিছু শব্দ যে আমাদের জন্য ভালো তাতো জেমস তিনি ল্যাবরেটরিতে বুঝতে পেরেছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ৬৫ ডেসিবেল (ডিবি) এর উপরে শব্দের মাত্রা দূষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। যার মধ্যে ৭৫ ডিবি ক্ষতিকারক এবং ১২০ ডিবি সরাসরি যন্ত্রণাদায়ক। ২০১৮ সালে ডব্লিউএইচও স্বাস্থ্যগত কারণে ট্র্যাফিক শব্দকে ৫৩ ডিবিতে সীমাবদ্ধ করার সুপারিশ করেছিল।
বাংলাদেশে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, নীরব এলাকায় গ্রহণযোগ্য শব্দসীমা দিনের বেলায় ৫০ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল। আবাসিক এলাকায় দিনের জন্য ৫৫ ডিবি এবং রাতের জন্য ৪৫ ডিবি। মিশ্র অঞ্চলে দিনের জন্য ৬০ ডিবি এবং রাতের জন্য ৫০ ডিবি। বাণিজ্যিক এলাকায় দিনের জন্য ৭০ ডিবি এবং রাতের জন্য ৬০ ডিবি এবং শিল্পাঞ্চলে দিনের জন্য ৭৫ ডিবি এবং রাতের জন্য ৭০ ডিবি।
কিন্তু, ঢাকার বাসিন্দারা প্রতিদিন বাসাবাড়িতে, কর্মস্থলে, স্কুল এমনকি হাসপাতালগুলোতে বিপজ্জনক মাত্রার শব্দের সম্মুখীন হচ্ছেন। শব্দদূষণ কেন এত বৃদ্ধি পাচ্ছে— এই প্রশ্নের উত্তরে জেমসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নগরায়নের ফলের শহরগুলোতে এই সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নিয়মিতই সম্প্রসারণ ঘটছে মেগাসিটি ঢাকার। এটি বিশ্বের অন্যতম বর্ধনশীল নগরী। যার ফলে যানবাহন বৃদ্ধি পাচ্ছে ঢাকায়। আর হর্ন বাজানো সম্ভবত ঢাকার গাড়ি চালকদের একটি বড় বদভ্যাস। ট্রাফিক সিগনাল ও জ্যামে আটকে থাকার সময় সামনে এগনো যাবে না জেনেও হর্ন বাজান তারা।
ঢাকার শহরের এই শব্দদূষণ প্রতিরোধ করতে আন্দোলন করে অনেকের নজর কেড়েছেন শিল্পী মোমিনুর রহমান রয়াল। তিনি ‘একাকী নায়ক’ নামে পরিচিত। তিনি প্রতিদিন ঢাকার কোনো এক ব্যস্ত সড়কে ১০ মিনিট একটি হলুদ প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রচণ্ড শব্দে হর্ণ বাজানো বন্ধ করতে তিনি এই কাজ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: শব্দদূষণকারীদের প্রতিহত করতে হবে: পরিবেশ সচিব
শুধু ঢাকাই নয়, তিনি সমগ্র বাংলাদেশ থেকেই এই উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো বন্ধ করতে চান। শব্দ দূষণের জন্য তিনি কেবল মানুষকেই দায়ী করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, তিনি মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর শব্দদূষণের প্রভাব নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ‘দুয়েক বছরের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, তবে ঢাকার শব্দদূষণ অব্যশই কমিয়ে আনা সম্ভব। কম শব্দে মানুষ যখন ভালো অনুভব করবেন, তখন নিজেরাই তাদের অভ্যাস পরিবর্তন করবেন।’
তবে শব্দদূষণ দূর করা কঠিন, জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ন বল মন্তব্য করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা। এদিকে শব্দ দূষণকে ‘এক নীরব ঘাতক ও ধীরে কাজ করা বিষ’ বলে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের অধ্যাপক ড. মাসরুর আবদুল কাদের।
৯ দিন আগে
দেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা ‘রঙিন চাল’, কমাবে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা
দেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার আলো নিয়ে এসেছে রঙিন চাল। এই চালের ব্রানে প্রোটিন ও আঁশের পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে বেশি হওয়ায় ডায়াবেটিস ও স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির ও তার গবেষকদল বিশেষ এই চাল নিয়ে গবেষণা করে এর পুষ্টিগুণ, স্বাস্থ্য উপকারিতা, চাষাবাদ, ফলন ও এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ইউএনবির কাছে তুলে ধরেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত ওই গবেষণা দলে আরও যুক্ত ছিলেন কো-পিআই অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস ও সাগরিকা খাতুন।
রঙিন চালের পুষ্টিগুণের কারণেই এটি স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বর্তমানে জনপ্রিয় হচ্ছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, বর্তমানে পাহাড়ি এলাকায় ও প্রগতিশীল কৃষকরা রঙিন চালের চাষ করছেন। সাধারণ সাদা চালের তুলনায় এই চাল অধিক প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আঁশ-সমৃদ্ধ। রঙিন চালের ধানের রং সোনালি, লাল, কালো কিংবা বেগুনি বর্ণের হতে পারে, তবে চালের রং লাল, বেগুনি, বাদামি বা কালো রঙের হয়।
তিনি জানান, খোসা ছাড়ানোর পর এই চালের দানা বাইরে থেকে কালো বা লাল রঙের বহিরাবরণ দিয়ে আবৃত থাকে যাকে ব্রান বলা হয় এবং ব্রানের ভেতরে দানা ও ভ্রুণ থাকে। দানা প্রধানত স্টার্চ ও জার্ম প্রোটিন, আঁশ, ফাইটোক্যামিকেলস ও এন্থোসায়ানিন নামক লাল পদার্থ দ্বারা গঠিত। ব্রানের লাল রং সাধারণত এন্থোসায়ানিনের উপস্থিতির কারণে হয়ে থাকে। এন্থোসায়ানিনসহ অন্যান্য ফাইটোক্যামিকেলসের প্রচুর স্বাস্থ্য গুণাগুণ বিদ্যমান। গবেষণায় জানা গেছে, এন্থোসায়ানিন ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদরোগ প্রশমিত করে।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করলেন বাকৃবির অধ্যাপক
রঙিন চালের পুষ্টি ও ঔষধি গুণ সম্পর্কে এই অধ্যাপক জানান, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়দের খাবারে প্রোটিন, ভিটামিন, আঁশ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদির প্রায়শই ঘাটতি থাকে। সাদা চালের চেয়ে কালো চালের ব্রানে দুই থেকে তিনগুণ খনিজ পদার্থ, বিশেষ করে আয়রন ও জিঙ্ক বিদ্যমান। অধিকন্তু আমাদের দেশে অটোরাইসমিল থেকে প্রাপ্ত ব্রান/ভূষি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে এই ভূষিতে মূল্যবান পুষ্টিগুলো চলে যায়। রঙিন চালের ব্রানে প্রোটিন ও আঁশের পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে বেশি। এই আঁশ ডায়াবেটিস ও স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে।
তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, রঙিন চালের ব্রানে প্রোটিন, ফ্লাভোনয়েড, ফেনল ও ভিটামিন রয়েছে যা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খুবই উপকারী। রঙিন চালে বিদ্যমান এন্থোসায়ানিন একটি শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট যা দেহের ক্ষতিকারক রেডিক্যালসকে বিশোধন করে।
তাছাড়া এই চাল দিয়ে ভাত, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, চিড়া, মুড়ি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও কেক প্রস্তুত করা যায়। তাই সহজেই এটি দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকির।
৬২ দিন আগে
দেশের প্রতিটি ডায়াবেটিস হাসপাতাল ইন্টারনেটের আওতায় আসবে: পলক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, দেশের প্রতিটি ডায়াবেটিস হাসপাতালকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, শুরুতে দুই শতাধিক ডায়াবেটিস হাসপাতাল ও প্রতিটি কেন্দ্রে অল্প দিনের মধ্যেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে স্মার্ট টেলিমেডিসিন সুবিধা চালু করা হবে।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে ডায়াবেটিস ফেডারেশন আয়োজিত ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন দেশের যৌথ সহযোগিতা ছাড়া সাইবার স্পেস সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয়: পলক
পলক বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করেন।
তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি পর্যায়ে গ্রামীণ হাসপাতাল স্থাপন করেছিলেন। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ইন্টারনেটের সেবা দিয়ে প্রতিটি গ্রামকে শহরে পরিণত করছেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সারা বাংলাদেশে গত ১৪ বছরের স্বাস্থ্যকে জনগণের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। উপজেলা পর্যায়ে ৫০ শয্যার হাসপাতাল, সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, ২৭ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে গ্রামের সাধারণ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল এবং অর্থনৈতিকভাবে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্র ইন্টারনেটকে সুলভ এবং সহজলভ্য করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা টেলিমেডিসিন সেবা দূরবর্তী জায়গা থেকেও পাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
পলক বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ দেশের প্রত্যেক নাগরিককে সুস্থ-সবল, প্রগতিশীল ও উদ্ভাবনী স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করতে হবে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি’র সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ. কে. আজাদ খানের সভাপতিত্বে অন্যান্যোর মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস ম্যালার, নভো নরডিস্ক এর ভিপি ও জিএম রাজর্ষি দে সরকার।
অনুষ্ঠানে অল্পবয়সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হওয়া বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণীদের পুরস্কৃত করা হয়।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশের রোল মডেল হবে ডিজিটাল সেন্টার: পলক
ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের আমন্ত্রণে বেলজিয়াম গেলেন পলক
৫০০ দিন আগে
খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য সমস্যা যা বিশ্বজুড়ে মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে আসছে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়। ফলে কিডনি জটিলতাসহ স্ট্রোকের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভয়ঙ্কর রোগটির জন্য সচেতনতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের জটিলতা তুলে ধরতে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়।
দিবসটি ১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমর্থনের জন্য আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন কর্তৃক প্রস্তাবিত হয়েছিল এবং ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ দিবসে পরিণত হয়।
তাই, আপনি যদি ডায়াবেটিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাসের ওপর নজর রাখা জরুরি। সর্বোপরি রক্তের গ্লুকোজ, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে খাদ্যগ্রহণে মনযোগী হতে হবে।
তাই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আজকের আয়োজনে থাকছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী কিছু খাবারের তালিকা। আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে চান তাহলে খাবারের তালিকায় এই খাবারগুলো রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন: কাউনের চালের তৈরি নুডলস নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস: শাবিপ্রবির গবেষণা
৮৬৫ দিন আগে
কাউনের চালের তৈরি নুডলস নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস: শাবিপ্রবির গবেষণা
ইনস্ট্যান্ট নুডলস এখন পুরো বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমাদের দেশে এই নুডলস উৎপাদনের সাধারণত গম, চাল, আলু, মিষ্টি আলুকেই প্রধান কাঁচামাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে উপাদানগুলোতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকায় ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিসসহ নানারকম জটিল রোগের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এজন্য এর বিকল্প হিসেবে এসকল রোগ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম এবং একই সঙ্গে জলবায়ু অভিযোজন সম্পন্ন শস্যকে কাচাঁমাল হিসেবে ব্যবহার করে সম্প্রতি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একটি পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে।
এই গবেষণার গবেষক ছিলেন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের পিএইচডি ফেলো মোছা.মেহেরুন্নাহার। তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক। এছাড়া সহ-তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) ইন্সটিটিউট অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএফএসটি) সিএসও ড. মো. আব্দুস সাত্তার মিয়া।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ পেলেন শাবিপ্রবির ২২ শিক্ষক
শরীরে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস সহ নানারকম জটিল রোগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সময়ের চাহিদায় শস্য বৈচিত্র আনা এবং অল্প খরচে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের কাঁচামাল উৎপাদনের উদ্দেশ্যে এই গবেষণা।
১১৯১ দিন আগে
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার দ্রুত বিদেশে যাওয়া দরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার বলেছেন, তাদের দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার যকৃত থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে অবিলম্বে তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া অনেক রোগে ভুগলেও এখন প্রধান সমস্যা তার লিভারে। লিভার থেকে রক্তক্ষরণ তার জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশের সেরা চিকিৎসকরা কয়েকদিন ধরে তার লিভারে রক্তক্ষরণের উৎস শনাক্ত করতে নানাভাবে কাজ করছেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির অভাবে তারা কোনো অগ্রগতি করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সুস্থতায় দেশব্যাপী বিএনপির দোয়া মাহফিল
বিএনপি নেতা বলেন, এ কারণেই ডাক্তাররা বারবার বলছেন তাকে একটি উন্নত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে যেখানে তার সমস্যা এবং রক্তপাতের উৎস শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও ডিভাইস আছে।
শহীদ ডক্টর মিলন দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং নব্বই দশকের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এর বিএনপিপন্থী ছাত্রনেতারা।
এসময় খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন ‘অপমানজনক’ মন্তব্যের জন্য ফখরুল ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার বা মানবিক মূল্যবোধ নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা এতই ‘উদ্ধত’ যে তারা খালেদা জিয়াসহ কারও বিরুদ্ধে ‘অশোভন’ মন্তব্য করতে দ্বিধা করেন না।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয়দিন পর ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করা হয়।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
তারা বলেন, খালেদার অবিলম্বে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কারণ তিনি হৃদরোগ, কিডনি ও লিভারের জটিল সমস্যা, উচ্চ রক্তে শর্করা এবং নিম্ন হিমোগ্লোবিনের মাত্রায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: ফরিদপুরে ডিসি অফিসে বিএনপির স্মারকলিপি
পরিবারের পক্ষ থেকে, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফেরার পর নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আপিল বিবেচনা করবে।
১২১৭ দিন আগে
রক্তে সুগার থাকলে হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে
ডায়াবেটিস থাকলে হার্ট ফেইলিওর হয়ে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা বেশি বলে সতর্কবাণী শোনালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কার্ডিয়োথোরাসিক ভাস্কুলার সার্জন নরেশ ত্রেহান।
১৯০৩ দিন আগে