তিনি জানান, দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ভুগলে স্নায়বিক সমস্যা অনিবার্য। তাই হৃদযন্ত্রের সমস্যা হলেও বুকে অস্বস্তি তেমন হয় না। হয় না যন্ত্রণার অনুভূতি। এই সূত্রেই হার্ট ফেইলিওর হয়ে প্রাণ সংশয়ের কথা জানান তিনি।
নরেশের ব্যাখ্যা, একাধিক সমীক্ষা ও গবেষণায় এই দুই অসুখের পারস্পরিক সম্পর্ক প্রমাণিত। পাশাপাশি ডায়াবেটিস যে হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি বাড়ায়, তাও প্রতিষ্ঠিত।
বিজ্ঞান পত্রিকা ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই)-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, ব্লাড সুগার থাকলে হার্ট ফেইলিওরের আশঙ্কা বেশি।
রক্তে গ্লুকোজ ও ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সবসময় বেশি থাকা এবং ডায়াবেটিসের জেরে বিপাকজনিত হরেক বিশৃঙ্খলার কারণেই রক্ত সংবহনতন্ত্রে এই অনিয়ম জাঁকিয়ে বসে ক্রমাগত। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে হার্ট ফেইলিওরের হার বেশি। কারণ এটি হৃদযন্ত্রের এমন একটা সমস্যা, যা বিনা চিকিৎসায় লাগাতার বেড়েই চলে এবং একসময় হার্ট জবাব দিয়ে দেয়। পরিস্থিতি তখন প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
হার্ট হলো আসলে একটি পাম্প, যা প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ বার হার্টবিট বা হৃৎস্পন্দন তৈরি করে রক্তের প্রবাহকে সচল রাখে। এই হৃৎস্পন্দন তৈরিতে বা প্রবাহে কোনো গোলমাল হলে জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। দুর্বল হৃদযন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না এবং এই অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলিওর।
কোন অবস্থাকে হার্ট ফেইলিওর বলে? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, হৃদপেশি ধীরে ধীরে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে তা পর্যাপ্ত ক্ষমতার সঙ্গে হার্ট পাম্প করে উঠতে পারে না। ফলে প্রতি পাম্পে যতটা রক্ত ও অক্সিজেন হার্ট থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার কথা, তাতে ঘাটতি থেকে যায়। হার্ট থেকে শরীরের দূরবর্তী অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর জেরে। সে জন্যই পা ফুলে যাওয়া হার্ট ফেইলিওরের অন্যতম বড় লক্ষণ।
নরেশের কথায়, ‘এখন ২৫ পেরোলেই একবার সকলের হার্ট চেক-আপ করিয়ে নেয়া জরুরি। পরিবারে বা নিকট পূর্বপুরুষেরও যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে, তা হলে অন্যদের তুলনায় তার হার্ট ফেইলরের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটা।’ সূত্র: এইসময়