উত্তেজনা
সংঘর্ষের পর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে উত্তেজনা, নিহত ২
দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ।
সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং অন্যান্য বাহিনীর একটি বড় চৌকস দল নিয়মিত পুলিশসহ টহল দিচ্ছে বলে ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন ইউএনবির জেলা প্রতিনিধি।
বিজিবি সদর দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই এলাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও সেখানে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাওলানা সাদের অনুসারীরা মাঠের ভেতরে রয়েছেন এবং মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা বাইরে অবস্থান করছেন।
এদিকে আজ (বুধবার) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে দুই পক্ষকে মাঠ খালি করতে বলা হয় এবং তারা এলাকা ছেড়ে চলে যেতে রাজি হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জুবায়ের ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি এবং সাদ ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সরকার সাদ অনুসারীদেরকে প্রথম দফা আয়োজনের অনুমতি দিলেও বিরোধী দলটি এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য 'জোড় ইজতেমা'র প্রস্তুতিতে সাদের অনুসারীরা মাঠে ঢুকতে শুরু করেন।
কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে রাত ৩টার দিকে জুবায়েরের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালায় বলে জানা গেছে।
জবাবে, সাদ সমর্থকরা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করে একটি পাল্টা আক্রমণ শুরু করে, যার ফলে একটি ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে দু'জন মারা যায় এবং অসংখ্য আহত হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাদের সমর্থকরা মাঠে ঢুকলে ইজতেমা এলাকায় অবস্থানরত পুলিশ সরে গিয়ে পূর্ব দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি
৪ দিন আগে
সীমান্ত উত্তেজনায় ক্রসফায়ারের মুখে বাংলাদেশ: বিএনপি
মিয়ানমার ও ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
দলটির স্থায়ী কমিটি বলেছে, আওয়ামী লীগ ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে এসব দেশকে বিভিন্ন 'অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক' সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একদিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে ভারতের সীমান্তে আমাদের বিজিবি সদস্য ও লোকজন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া ও মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। রাখাইন রাজ্য থেকে সেনারা পালিয়ে এসে (আমাদের দেশে) আশ্রয় নিচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বাংলাদেশ সীমান্তে বিরাজমান উত্তেজনার পেছনের কারণ কী হতে যাচ্ছে এবং কী হতে যাচ্ছে তা ভেবে দেখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নানা ব্যর্থতা ও সমস্যা থেকে বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, 'যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের গোপন সম্পর্ক আছে কি না... সরকার এর আগেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে একের পর এক ইস্যু তৈরি করেছে।’
মিয়ানমার সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে সরকার প্রয়োজনীয় ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: জনগণের কাছে তওবা করে বিএনপিকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান নানকের
বিএনপি বলেছে, মিয়ানমারের মতো দেশ কখনো বাংলাদেশে গুলি চালানোর সাহস পায়নি। এখন কেন তারা এটা করার সাহস পাচ্ছেন? এই বিষয়টি আপনাদের সকলকে ভাবতে হবে... কোথায় যাচ্ছে আমাদের দেশ?
তিনি সীমান্ত সমস্যার বিষয়ে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে বাধ্য করতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের নাগরিকরা এখন যেভাবে চারদিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা থেকে রক্ষা করতে হবে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্তে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের অন্তত ৩২৭ জন সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপৈতলী গ্রামের রান্নাঘরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর দাবি করেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ‘ফ্যাসিবাদী সরকার নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ভারত, চীন ও রাশিয়াকে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে তাদের সমর্থন নিয়েছে।’
তিনি বলেন, তাদের দল দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। তিনি বলেন, ‘আমরা চলমান আন্দোলনে আছি। আন্দোলনের গতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দিকে রূপ নেয়।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ নির্বাচন ও এর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করায় ৬২টি রাজনৈতিক দলের ৭ জানুয়ারি 'একতরফা' নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যৌক্তিক ছিল।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। ‘জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন বিএনপির রাজনীতির সফলতা ও বিজয়ের বহিঃপ্রকাশ।’
গয়েশ্বর দাবি করেন, ৭ জানুয়ারির 'প্রহসনমূলক' নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ‘বরং অবৈধ, অনৈতিকতা ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে জাতির সঙ্গে চরম প্রতারণা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে ডামি প্রার্থী, ডামি পার্টি, ডামি ভোটার এবং ডামি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে একটি ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
বিএনপির মতো পৃথিবীতে এমন কোনো রাজনৈতিক দল আছে কি না, যেখানে ৫০ লাখের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার অনুগত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের ২ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৭০০ নিরীহ মানুষকে গুম করেছে। গয়েশ্বর প্রশ্ন তুলে বলেন, আসন ভাগাভাগির নির্বাচনের আগে ফ্যাসিস্ট সরকার কেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করল?
কারাগারে তাদের দলের ১১ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ৫০ লাখ নেতা-কর্মী তাদের জীবনে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তারা পুলিশ ও বিচার বিভাগের অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশছোঁয়া মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির জন্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
গয়েশ্বর আরও বলেন, 'দেশের ১৮ কোটি মানুষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। জনগণও আশা করে, বিএনপির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বিএনপির নেতৃত্বে রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী
১০ মাস আগে
মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা, বান্দরবানে ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের জের ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম ইউনিয়নের ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং একটি মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শান্তনু কুমার দাশ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ১২টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টার ব্যবহার হবে
বিদ্যালয়গুলো হলো- তমরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশফাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তমরু পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় এবং মিশকাতুল নবী দাখিল মাদরাসা।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা জানান, প্রাণভয়ে এলাকাবাসী নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ায় স্কুলগুলো ছাত্রশূন্য হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
১০ মাস আগে
রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই সংলাপে উৎসাহ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তিনি সহিংসতা নয়, শান্তিপূর্ণ সংলাপের পক্ষে।
বুধবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে একথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি যোগাযোগের জন্য উন্মুক্ত পন্থা বজায় রাখা এবং আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলে সরকার বাধা দেবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের প্রাথমিক মাধ্যম হিসেবে সংলাপের তাৎপর্য তুলে ধরেন। রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য সংলাপের অপরিহার্যতার বিষয়টি স্বীকার করে এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত পোষণ করেন সারাহ কুক।
সংলাপের কোনো বিকল্প নেই বলেও জোর দেন মন্ত্রী। তিনি কুকের সঙ্গে সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনাকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহারের উপর জোর দেন। তারা উভয়েই সংলাপের জন্য সংবিধানের কাঠামো মেনে চলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: আনসার বাহিনীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টি ভুল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চলমান অবরোধের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এটি দীর্ঘদিনের অবস্থান এবং প্রশ্নবিদ্ধ দলগুলো ধারাবাহিকভাবে সংলাপ প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ আলোচনার পরিবর্তে সহিংসতা ও প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করছে, যা বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার পরিপন্থী।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, জাতিসংঘের উচিত সবাইকে সহিংসতা পরিহার ও সংলাপের নীতি মেনে চলতে উৎসাহিত করা। সরকার আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সহিংসতা সহ্য করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সহিংসতার দায় বিএনপির নেতারা এড়াতে পারবেন না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১ বছর আগে
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফের উত্তেজনা, দোছড়ি ও ঘুমধুম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ৩০ পরিবার
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শনিবার ছয় ঘণ্টা একটানা গুলি ও মর্টার গোলাবর্ষণের পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ও ঘুমধুম ইউনিয়নে স্থানীয় প্রশাসন ৩০টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে।
এক সপ্তাহ শান্ত থাকার পর শনিবার আন্তর্জাতিক সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শব্দ ও উত্তেজনা ফের শুরু হয়।
দুপুর ১টায় দোছড়ি থেকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও গুলিবর্ষণ শুরু হয় এবং তা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
দেশটির সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ায় কয়েক মাস ধরে সীমান্ত এলাকায় প্রায়ই গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
জামছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের স্থানীয় মো. রহমান বলেন, রাখাইন রাজ্যভিত্তিক একটি জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন আরকান আর্মি দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিবর্তে তারা মিয়ানমারের বেশ ভেতরে কাজ করছে। কিন্তু গত সপ্তাহে আরাকান আর্মি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন, বেশ কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় কোনো গোলাগুলি হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করেই তা আজ দুপুর ১টায় আবার শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে, এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় তিনি জামছড়িতে ছিলেন।
ইমন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারী মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাবর্ষণের মধ্যে ত্রিশটি পরিবার যাদের বাড়ি সীমান্তের খুব কাছাকাছি তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’
এছাড়াও গত দুই মাস ধরে বাংলাদেশের ঘুমধুমের তুমব্রুতে মিয়ানমারের পাশ থেকে গুলি চলছে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার
২ বছর আগে
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা: ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে স্থানীয় প্রশাসন। গত এক মাস ধরে তুমব্রু সীমান্তের কাছে ক্রমাগত গুলিবর্ষণ ও মর্টার শেল নিক্ষেপের পর প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে ভাবছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৩০০ থেকে ৫০০ গজের মধ্যে প্রায় ৭০টি বাংলাদেশি পরিবার বসবাস করছে। সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা তাদের সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ঘুমধুম সীমান্তে বসবাসকারী ৩০০ পরিবারকে পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নেয়া হবে।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো জানান, শনিবার সকালে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত (১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা) গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যায়নি।
ঘুমধুম বাসিন্দা কফিল উদ্দিন জানান, যে কোনো মুহূর্তে আবারও গুলি শুরু হতে পারে এমন আশঙ্কায় অনেক এলাকাবাসী নিজ থেকেই সীমান্ত এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চতুর্থবারের মতো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব
ইতোমধ্যেই প্রায় ৩৫টি বাংলাদেশি পরিবার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী, রাতাপালং, সোনারপাড়া, পালংখালী, টেকনাফ উপজেলার হোইকং এলাকায় তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে চলে গেছে।
ঘুমধুম সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ঘুমধুম সীমান্তে চার হাজার ২০০ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এই পয়েন্টে আশ্রয় নেয়ার পর থেকেই তারা নানা আতঙ্কে আছে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার বারবার রোহিঙ্গাদের জিরো পয়েন্ট থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এখন খুবই আতঙ্কিত। কিন্তু তারা এখনও জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে। কি করতে হবে তারা তা জানে না।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সীমান্তে গোলাবর্ষণে রোহিঙ্গা কিশোর নিহত, আহত ৫
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ দৌজা ইউএনবিকে জানান, সীমান্তের জিরো পয়েন্টে জনগণ বা গোষ্ঠীর জন্য কমিশনারের কিছু করার সুযোগ নেই। অনেকেই স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা করছেন এবং সীমান্তে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গারা জিরো পয়েন্টের বাইরে ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিলে তাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করা সম্ভব।’
ইউএনও সালমা বলেন, এছাড়া সীমান্তে উত্তেজনা থাকায় এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র উখিয়া উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে, যেখান থেকে শনিবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৯৯ জন পরীক্ষার্থী।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন চৌকিতে যানবাহন তল্লাশি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে নাইপিদোর কাছে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ ঢাকার
এদিকে, বাংলাদেশ চতুর্থবারের মতো রবিবার দেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মোকে তলব করেছে এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সাম্প্রতিক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে প্রতিবাদ জানানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শাখা) মো. নাজমুল হুদার কার্যালয়ে তলব করা হয়।
এর আগেও ঢাকা সীমান্তে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক মর্টার শেল নিক্ষেপ, সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্বিচারে আকাশপথে গোলাবর্ষণ এবং আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন,সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে প্রয়োজনে সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদেরকে (মিয়ানমার) কয়েকবার সতর্ক করলেও তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘তুমব্রু সীমান্তে শুক্রবারে মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপে হতাহতের ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত তার সীমান্তের মধ্যেই থাকা উচিত। কিন্তু তাদের বাহিনী বারবার সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশি নাগরিকদের আহত করছে।’
তিনি বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিজিবি সতর্ক, মিয়ানমার থেকে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না’: শাহরিয়ার আলম
শুক্রবার রাতে বান্দরবানের তুমব্রুতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে মোহাম্মদ ইকবাল নামে ১৭ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়।
নিহত ও আহতরা সবাই জিরো পয়েন্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। ক্যাম্পটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড এলাকার সবচেয়ে কাছের ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত।
রাত ৮টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরপর চারটি মর্টার শেল পড়ে।
এর আগে, শুক্রবার দুপুরেও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে অংঞাথোয়াই তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক আদিবাসী যুবক গুরুতর আহত হয়।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত ১২টি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল
২ বছর আগে