সামঞ্জস্য
পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে: ভূমিমন্ত্রী
সরকারের পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ।
তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে- ল্যান্ড জোনিং প্রকল্প ও বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে প্রোগ্রাম।
এসব উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই ভূমি ব্যবহার চর্চার উৎসাহ ও প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে পরিবেশগত ক্ষতি কমিয়ে আনা হবে।
আরও পড়ুন: ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে মালিক পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন: ভূমিমন্ত্রী
শনিবার (২ মার্চ) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের ‘সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী পরিবেশবিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘টাইম ফর ন্যাচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ অর্থাৎ, প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য এখনই সময়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের আওতায় আমরা মৌজা ও প্লটের ওপর ভিত্তি করে একটি ডিজিটাল ম্যাপ ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন করব।
এর মধ্যে জমির গুণমান মূল্যায়নের ভিত্তিতে কৃষি, আবাসিক, বাণিজ্যিক, পর্যটন এবং শিল্প বিকাশের মতো নির্দিষ্ট ব্যবহারে জমিকে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পের তথ্য-উপাত্ত ও ম্যাপ কাজে লাগিয়ে, ‘ভূমি জোনিং ও সুরক্ষা আইন’-এর মাধ্যমে অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন, গৃহ নির্মাণ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং শিল্প-সড়ক নির্মাণ রোধ করা হবে। এড়া ভূমির শ্রেণি বা প্রকৃতি বজায় রেখে পরিবেশ রক্ষা ও খাদ্যশস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এ ছাড়া কৃষি জমি, বন, টিলা, পাহাড়, নদী, খাল ও জলাশয় রক্ষাসহ ভূমির পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। পরিকল্পিত জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহারে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে।
এ সময় ল্যান্ড জোনিং প্রকল্পটি ‘প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা’য় অপরিহার্য হিসেবে পরিগণিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ভূমিসেবার বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার: ভূমিমন্ত্রী
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে দূষণ মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, উদ্যোগ নিয়েছিলেন দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুধাবন করেছিলেন টেকসই পদক্ষেপ না নিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্মার্ট সোনার বাংলা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
তাই তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা এবং দেশে দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বলিষ্ঠ নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
তিনি ২০১১ সালে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং গ্রহণ করেন দীর্ঘ মেয়াদী ব-দ্বীপ পরিকল্পনা।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ।
আরও পড়ুন: জনকল্যাণে যথাযথ ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করুন: ভূমিমন্ত্রী
৮ মাস আগে
ত্রয়োদশ সংশোধনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা পেশ করবে বিএনপি: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দল সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের আলোকে নির্দলীয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি ফর্মুলা পেশ করবে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সঠিক সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা জানতে পারবেন। আপনারা আরও জানতে পারবেন কখন আমরা একযোগে আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছি।’
বৃহস্পতিবার তিনি ২০ দলীয় জোটের দুই শরিক দল বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
এই বিএনপি নেতা বলেন, ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ৫৮ (বি) (সি) (ডি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা তৈরি করা হচ্ছে। ‘এই রূপরেখাটি (১৩তম সংশোধনীর) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হবে।"’
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য জাতীয় ঐক্য গড়তে তাদের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার অংশ হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকাল ১০টায় লেবার পার্টির সঙ্গে এবং বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এনপিপির সঙ্গে বৈঠক করেন।
১৯৯৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তত্ত্বাবধানে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা চালায় আওয়ামী লীগ এবং ১৯৯৬ সালে তীব্র আন্দোলনের মুখে বিএনপিকে তা মেনে নিতে বাধ্য করে।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে একতরফা জয়লাভ করে বিএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং ১৯৯৬ সালের ২৭শে মার্চ সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী পাস করে, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ১৩ তম সংশোধনীকে বেআইনি বলে বাতিল করায় ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়।
গত দুটি সাধারণ নির্বাচন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।
ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের পর থেকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: অচিরেই দেশব্যাপী সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে: মির্জা ফখরুল
দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ফখরুল বলেন, তারা লেবার পার্টি ও এনপিপির সঙ্গে খসড়া দাবি ও আসন্ন যুগপৎ আন্দোলনে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ‘মূল দাবির মধ্যে অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, সংসদ ভেঙে দেয়া, নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েকটি দাবিতে আমরা একমত হয়েছি। খালেদা জিয়া ও আমাদের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন।’
পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনার পর বিএনপি মহাসচিব বলেন, দাবি ও ইস্যু চূড়ান্ত করে তারা যুগপৎ আন্দোলনে যাবেন।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান তার দলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন এবং ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এনপিপির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। দুই দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।
গত রবিবার কল্যাণ পার্টির সঙ্গে প্রথম বৈঠকের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু করে বিএনপি। সরকারবিরোধী আন্দোলনের দাবি ও ইস্যু চূড়ান্ত করতে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও অলি আহমেদের এলডিপির সঙ্গেও সংলাপে বসে দলটি।
এর আগে, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার' করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করার রূপরেখা তৈরি করতে ২৪ মে থেকে শুরু হওয়া সংলাপের প্রথম পর্বে ২৩টি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য হাস্যকর: মির্জা ফখরুল
২ বছর আগে