আগুন
সুন্দরবনের আগুনের কারণ না জানাতে পারলেও ১৮ সুপারিশ কমিটির
সম্প্রতি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে লাগা আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ না করলেও ১৮ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। তবে আগুন লাগার সম্ভাব্য সাতটি কারণ উল্লেখ করেছে কমিটি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পৃথক প্রতিবেদনে সুন্দরবনের শাপলার বিল ও টেপার বিলে আগুনে মোট ৬ দশমিক ৬৩ একর বনভূমি পুড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দুইস্থানে আগুনে সুন্দরবনের গাছপালা পুড়ে এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের আনুমানিক ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭০ টাকা ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের পক্ষ থেকে রবিবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তবে বন অধিদপ্তরের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের পাঁচ সদস্যের কমিটি এখনও তদন্ত করছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাস জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিল এবং টেপার বিলে আগুনের ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাকে ওই দুটি কমিটির প্রধান করা হয়েছে। পৃথক দুটি স্থানে আগুনের ঘটনায় তদন্ত করে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তরে ৭ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিল করেছেন সেই কমিটির সদস্যরা।
আগুনে সুন্দরবনের শালপার বিলে ৪ দশমিক ৪৩ একর এবং টেপার বিলে ২ দশমিক ২০ একর বনভূমি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। দুই স্থানে আগুনে সুন্দরবনের মোট গাছপালা পুড়ে এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের আনুমানিক ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭০ টাকা ক্ষয়ক্ষতির কথাও উল্লেখ করা হয়। দ্বীপন চন্দ্র দাস আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে তারা সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করতে না পারলেও সম্ভাব্য সাতটি কারণ চিহ্নিত করতে পেরেছেন তারা। সুন্দরবনে প্রায় প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ড ঠেকাতে তাদের পক্ষ থেকে ১৮টি সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে সুন্দরবনে আগুন ঠেকানো সম্ভব হবে বলেও অভিমত দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিল এবং টেপার বিলে আগুনের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির সদস্যরা তদন্ত শেষে পৃথক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ডাকাতদের আস্তানা থেকে অপহৃত ৬ নারীসহ ৩৩ জেলে উদ্ধার
নুরুল করিম আরও জানান, তদন্ত কমিটি সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ সুনিদিষ্ট করে বলতে পারেনি। আগুন লাগার সম্ভাব্য সাতটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সুন্দরবনে ভবিষ্যতে আগুন লাগা প্রতিরোধে প্রতিবেদনে স্বল্প মেয়াদি, মধ্যম মেয়াদি এবং দীর্ঘ মেয়াদি করণীয় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পৃথক তদন্ত প্রতিবেদনে সুন্দরবনে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
তদন্ত প্রতিবেদনে শাপলার বিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪ দশমিক ৪৩ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই এলাকায় আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেবে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, ৩ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের ১০ কুইন্টাল সুন্দরী গাছ, তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ২ হাজার কুইন্টাল বলা গাছ, ১ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের পাঁচ কুইন্টাল গেওয়া গাছ এবং জীববৈচিত্র ও পরিবেশের আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৩ লাখ টাকা।
এছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে টেপার বিলে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২ দশমিক ২০ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। ওই এলাকায় আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার কুইন্টাল বলা গাছ, ৪২০ টাকা মূল্যের দুই কুইন্টাল গেওয়া গাছ এবং জীববৈচিত্র ও পরিবেশের আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।
১ দিন আগে
চাঁদপুরে আগুনে পুড়ল ১৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আহত ১০
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিখ্যাত মুন্সিরহাট বাজারে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ১৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ সময় আগুন নেভাতে গিয়ে অন্তত আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ভোর সোয়া ৭টার দিকে বাবুরহাট-মতলব পেন্নাই সড়কের পাশে দোকানগুলোতে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দেড় ঘন্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
স্থানীয়রা জানান, নবির নামের একজনের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে মুহূর্তেই তা পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নবীরের হার্ডওয়ার দোকান, শরীফের রঙয়ের দোকান, অনিলের ফার্মেসী, গণেশের স্বর্ণের দোকান, মুক্তার হার্ডওয়ারের দোকান, আলমের মুদি দোকান, ফারুকের টিনের দোকান, রহিমের ফার্মেসী ও কুমিল্লা মিষ্টান্ন ভান্ডার আগুনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
এছাড়াও বাকি দোকানগুলোর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় আগুন নেভাতে গিয়ে অন্তত আরও ১০ জন আহত হন। আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: নাজিম উদ্দিন রোডের ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, আহত ১৮
৬ দিন আগে
নাজিম উদ্দিন রোডের ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, আহত ১৮
রাজধানীর বংশালের নাজিম উদ্দিন রোডের পাঁচতলা ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এতে আহত হয়েছেন ১৮ জন। রবিবার দিবাগত রাত ৪টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট রাত ৪টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম রনি।
আরও পড়ুন: আগুনে পুড়ল ১৭ কৃষকের ২৫ বিঘা পাকা গমের খেত
তিনি জানান, বংশালের নাজিম উদ্দিন রোডের মাকরোশা মাজারের পাঁচতলা ভবনের নীচ তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের ৫টি ইউনিট ও লালবাগ ফায়ার স্টেশনের ২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভোর ৫টা ১২ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপন করা হয়েছে।
আগুনের ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছেন।
১০ দিন আগে
আগুনে পুড়ল ১৭ কৃষকের ২৫ বিঘা পাকা গমের খেত
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় আগুনে পুড়ল ১৭ জন কৃষকের ২৫ বিঘা পাকা গমের খেত। সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতরের দিন বিকালে রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের দক্ষিণ বনগাঁও গ্রামের গম খেতে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বনগাঁও গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে সাব্বির তার পাকা গম জমি থেকে কেটে বাড়ি নিয়ে যায়। ঘটনার দিন জমিতে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত গমের ডাটা ছাই করে জমিতে সার হিসাবে ব্যবহারের জন্য আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
আর তখনই ঘটে বিপত্তি। খরা আবহাওয়া ও হালকা বাতাসে সেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পাশে থাকা ১৭ জন কৃষককের প্রায় ২০ থেকে ২৫ বিঘা পাকা গমের খেতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে এক ঘণ্টার মধ্যে সব পুরে ছাই হয়ে যায়।
ঈদ আনন্দের পরিবর্তে কৃষকদের পরিবারে বিরাজ করছে ফসল হারানোর শোক।
আরও পড়ুন: বরিশালে আগুনে পুড়ল যাত্রীবাহী লঞ্চ
পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও কৃষক ফিরোজ আলম, আব্বাস আলী, গোলাম রব্বানী, কামরুজ্জামান ও আব্দুল হালিমসহ ১৭ জনের ২০ থেকে ২৫ বিঘা জমির সব গম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফিরোজ আলম বলেন, ‘হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফসল ঘরে তুলবো কিন্তু একজনের ভুলের কারণে সব শেষ হয়ে গেল।’
১৫ দিন আগে
বরিশালে আগুনে পুড়ল যাত্রীবাহী লঞ্চ
বরিশাল-পাতারহাট রুটে চলাচলকারী এমএল সাইমন-১ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় পাতারহাট বন্দরে ঘাটে বাঁধা অবস্থায় এই ঘটনা ঘটে।
লঞ্চঘাটের শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ করে দিবাগত রাত ৩টার দিকে লঞ্চটিতে আগুন জ্বলে ওঠে। তখন অবশ্য সেটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।’
লঞ্চের মালিক রুহুল আমিন বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে এমএল সাইমন-১ নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে বরিশালে যাওয়ার কথা ছিল। আগুনে লঞ্চের প্রায় পুরোটাই পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ধারণা করা হচ্ছে— মশা তাড়ানোর কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় যুবককে মারধর, মোটরসাইকেলে আগুন
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’
তিনি বলেন, তবে যতদূর মনে হচ্ছে, এটি শুধু দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
২০ দিন আগে
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে জোয়ারের পানিই ভরসা, বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
সুন্দরবনে নদ-নদী ও খাল জালের মতো বিস্তৃত। জোয়ারে পানি বাড়লে উপচে পড়ে নদী-খালের পানি, প্রবেশ করে সুন্দরবনে। কিন্তু সেই সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পর্যাপ্ত পানি মেলে না। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় একের পর এক বনভূমি পুড়তে থাকে। এমতাবস্থায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিস ও বনকর্মীদের। অনেক সময় আগুন নেভানোর জন্য ভরসা করতে হয় জোয়ারের পানির ওপর—কখন জোয়ার হবে। এমনকি ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকলে, বন্ধ হয়ে যায় আগুন নেভানোর কাজও। এ অবস্থায় পানির উৎস তৈরি করতে সুন্দরবনের মধ্যে বড় বড় পুকুর খনন করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বন অধিদপ্তর। একই সঙ্গে পানি প্রবাহ বাড়াতে সুন্দরবনের নদী-খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনে জরুরি প্রয়োজনে পানির চাহিদা মিটবে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী তাদের পানির চাহিদাও মেটাতে পারবে সহজে।
জানা গেছে, সম্প্রতি সুন্দরবনের শাপলার বিলে জ্বলতে থাকা আগুন নেভাতে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে—কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায়। পানির জন্য প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের ভোলা নদীতে পাম্প মেশিন বসিয়ে পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়। তবুও চাহিদা মাফিক সার্বক্ষণিক পানি মেলেনি ভোলা নদীতে। জোয়ারের পানির জন্য ফায়ার সার্ভিসের এবং বন কর্মীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। জোয়ারে সময় পানি মিললেও ভাটার সময় নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ থাকে আগুনে পানি ছিটানোর কাজ—দীর্ঘায়িত হয় আগুন নেভানোর কাজ। পুনরায় জোয়ারের জন্য তাদের কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ভোলা নদীর তলদেশ পলিমাটি জমে ভরাট হওয়ার কারণে জোয়ারের সময়েও পর্যাপ্ত পানি প্রবেশ করে না। আর ভাটার সময়তো নদীতে পানি থাকে না। ভোলা নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকলে অনেক আগেই শাপলার বিলের আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো সম্ভব হতো বলে জানিয়েছে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের ৪ একর বনভূমি পুড়ে ছাই, আগুন নিয়ন্ত্রণে
শুধু সুন্দরবনের শাপলার বিলের আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়েছে—এমন নয়। বনের এই অংশ বিভিন্ন সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় একই অবস্থা তৈরি হতে দেখা গেছে অতীতেও। দ্রুত পানি দিতে না পারায় আগুনের ব্যাপকতা বেড়েছে। কয়েক কিলোমিটার দূরে নদীতে পাইপলাইন স্থাপন করে পানি নিয়ে আগুনে ছিটানো হয়। কাছাকাছি পানির উৎস থাকলে সহজে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো যেত। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় প্রায় প্রতিবার আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হয়।
কয়েকটি সূত্র জানায়, শুধু ভোলা নদী নয়। সুন্দরবনের মধ্যে খড়মা, আড়ুয়ারবের নদীসহ বিভিন্ন নদী এবং খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। জোয়ারে পর্যাপ্ত পানি নদী-খালে প্রবেশ করতে পারে না। আর ভাটার সময় অনেক নদী-খাল পানিশূন্য থাকে। নদী-খালে পানি না থাকলে বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ অহরহ সুন্দরবনে প্রবেশ করে। একই সঙ্গে অনেকে আবার তাদের গবাদি পশু সুন্দরবনে চড়ায়। নদী-খালে পানি প্রবাহ থাকলে মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পরবে না। আর গবাবি পশু নদী-খাল পাড়ি দিয়ে সুন্দরবনে বিচরণ সম্ভব হতো না। আর সুন্দরবনে আগুনের মতো ঘটনা ঘটলে নদী-খাল থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো সহজ হতো। যুগযুগ ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল নদী-খাল খননের।
সুন্দরবন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে প্রায় ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল রয়েছে। এসব নদ-নদী ও খাল সমগ্র সুন্দরবনে জালের মতো ছড়িয়ে আছে। অধিকাংশ নদ-নদী ও খাল দীর্ঘদিন ধরে পুনঃখনন না করায় তলদেশ পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এসব নদ-নদী ও খাল পুনঃখনন করা হলে পানি সংকট দূর হবে। পাশাপাশি বন সংলগ্ন গ্রামের মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। আর সুন্দরবনে গবাদি পশুর বিচরণ ঠেকানো যাবে।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সাকরিয়া হায়দার জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিল এলাকায় রবিবার দুপুরে জ্বলতে দেখা আগুন নেভানোর কাজে ৮টি ফায়ার স্টেশন, বন বিভাগ এবং স্থানীয় লোকজন অংশ নেয়। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদীতে পাইপ লাইন স্থাপন করে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করা হয়। শুধুমাত্র জোয়ারের সময় ভোলা নদীতে পানি পাওয়া গেছে। ভাটার সময় নদীতে পানি না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ রাখতে হয়। পুনরায় জোয়ারের পানির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। ভোলা নদীতে সার্বক্ষণিক পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলে একদিনের মধ্যে আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো যেত।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ওই এলাকার কাছাকাছি পানির উৎস নেই। একারণে ৩ কিলোমিটার দূরে ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে আগুনে ছিটানো হয়। শুধুমাত্র জোয়ারের সময় পানি মিলেছে ভোলা নদীতে। পানির অভাবে ভাটার সময় আগুনে পানি ছিটানো যায়নি। সার্বক্ষণিক পানি থাকলে অনেক আগেই আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভানো সম্ভব হতো।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, সুন্দরবনের ভোলা, আড়ুয়ারবের এবং খড়মা নদীসহ বিভিন্ন নদী-খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে। এ কারণে নদী-খালে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ভাটার সময় নদী-খালে পানি না থাকায় বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ অবৈধভাবে অহরহ সুন্দরবনে প্রবেশ করছে। সেই সঙ্গে আইনভঙ্গ করে মানুষ তাদের গবাদি পশু সুন্দরবনে বিচরণ করাচ্ছে। নদী-খালে পানি প্রবাহ থাকলে মানুষ এবং গবাদি পশু এইভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন, পানির উৎসের অভাবে নিয়ন্ত্রণে জটিলতা
বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন পিসি বারুইখালী গ্রামের ধানসাগর টহল ফাঁড়ি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের লিডার লুৎফর রহমান জানান, সুন্দরবনের শাপলার বিলে জ্বলতে থাকা আগুন নেভানোর কাজে অন্যদের সঙ্গে সে নিজেও অংশ নিয়েছে। ভোলা নদীর জোয়ারের পানি আগুন নেভানোর একমাত্র ভরসা ছিল। জোয়ারের সময় আগুনে পানি দিতে পারলেও ভাটায় সময় নদীতে পানি না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ ছিল। নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বনসংলগ্ন গ্রামের মানুষ যত্রতত্র সুন্দরবনে প্রবেশ করে। কেউ কেউ তাদের জ্বালানি কাঠ সুন্দরবন থেকে সংগ্রহ করে। দ্রুত নদী-খাল খনন করার দাবি জানান লুৎফর রহমান।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনে শাপলার বিল এলাকার কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়। একারণে সুন্দরবনের মধ্যে পানির উৎস তৈরি করতে ফাঁকা স্থানে বড় বড় পুকুর খননের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। একই সাথে পানি প্রবাহ বাড়াতে সুন্দরবনের ভোলা, খড়মা ও আড়ুয়ারবের নদী এবং খাল পুনঃখননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জোয়ারের পানি যাতে সহজে বনভূমিতে প্রবেশ করতে পারে, সে জন্য নদীর উঁচু পার নিচু করা হবে। সুন্দরবনের মধ্যে পানির উৎস সৃষ্টি এবং পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করা গেলে জরুরি প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বন্যপ্রাণী তাদের পানির চাহিদা মেটাতে পারবে।
২০ দিন আগে
খাগড়াছড়ির লারমা স্কয়ারে ফের আগুন, পুড়ল ২৪টি প্রতিষ্ঠান
খাগড়াছড়ি, ২৬ মার্চ (ইউএনবি)— ১৮ দিনের ব্যবধানে খাগড়াছড়ির লারমা স্কয়ারে ফের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এবারের আগুনে অন্তত ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে লারমা স্কয়ারের পাশেই অবস্থিত বোয়ালখালী বাজারের তৃপ্তি হোটেলে প্রথমে আগুন লাগে। এরপর তা আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া।
আরও পড়ুন: অগ্নিকাণ্ডে ঘর পুড়ে ছাই, খোলা আকাশের নিচে ঝিনাইদহের ৯ পরিবার
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পচিালক মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানান, খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি, লংগদু ও দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোনের সদস্য, দীঘিনালা পুলিশ ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এরই মধ্যে কাপড় দোকান, হার্ডওয়ার স্টোর, মুদি দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ অন্তত ২৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান এ কর্মকর্তা।
২২ দিন আগে
‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় যুবককে মারধর, মোটরসাইকেলে আগুন
মাগুরায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষানলে পড়েছেন এক যুবক। মারধরের পাশাপাশি তার মোটরসাইকেলটিতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা।
রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে মাগুরা শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ইউসুফ নামের ওই যুবককে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিশে দেয় সেনাসদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মাগুরা শহরে আজ বিক্ষোভ মিছিল করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষের লোকজন। এ সময় ইউসুফ নামের ওই যুবক ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভকারীরা তাকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি দোকানে খুঁজে পেয়ে তাকে সেখানে থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পিটুনি দেওয়া শুরু করেন তারা।
আরও পড়ুন: খুলনায় হাজতির প্রহারে এসআই আহত
এ নিয়ে শহরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। তবে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ওই যুবককে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, সেনা সদস্যরা ইউসুফকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সদর থানায় নেওয়া হয়। বিক্ষুব্ধরা মাগুরা সরকারি কলেজের সামনে থেকে তার মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দিয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
২৪ দিন আগে
সুন্দরবনের ৪ একর বনভূমি পুড়ে ছাই, আগুন নিয়ন্ত্রণে
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদী থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হচ্ছে। বনে আগুনের ওই এলাকায় মাঝে মধ্যে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুনে এরই মধ্যে প্রায় ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। রবিবার সকালে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিশ্চিত করেছে।
এদিকে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় বন বিভাগ রবিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ওই কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে নদী ভাঙনে কমছে বনভূমি, পদক্ষেপের ঘাটতি
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, শনিবার(২২ মার্চ) রাতভর বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ করে। ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে তারা জ্বলতে থাকা আগুনেব ছিটিয়েছে। রবিবার সকাল ৮টার দিকে তাদের সঙ্গে ফায়ার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদীতে পাইপ লাইন বসিয়ে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে মাঝে মধ্যে কোনো কোনো স্থানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পাইপ দিয়ে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। আগুনে প্রায় ৪ একর বলা ও নলবনের ক্ষতি হয়েছে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের তথ্য মতে, ২০২৪ সালের ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সুন্দরবনের ২৪, ২৫ এবং ২৭ নম্বর কম্পারমেন্টাল এলাকায় মৌয়ালদের পাশ (অনুমতি) দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এবছর ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হবে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের ধারণা, মৌসুম শুরুর আগেই অবৈধ কোন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারে। মৌয়ালের মশাল অথবা বিড়ি সিগারেটের অংশ থেকে সুন্দরবনে আগুন ধরতে পারে। এছাড়া আইনভঙ্গ করে কোনো কোনো রাখাল ভোলা নদী পারি দিয়ে তাদের গবাদী পশু নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ওই রাখালদের ফেলে রাখা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম তথ্য মতে, সুন্দরবনে আগুনের সূত্রপাত এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাসকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর চন্দ্র দাস এবং কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম। কমিটির সদস্যদেরকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএফও।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, সুন্দরবনে যে স্থানে আগুন লেগেছে ওই এলাকার দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আগুন ফায়ার লেন অতিক্রম করতে পারেনি। শনিবার সকালের পর থেকে বন বিভাগের সদস্যরা একটানা আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনে কিছু বলা এবং নলবন পুড়ে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
বাগেরহাটের শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলম জানান,সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রে রয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন প্রায় ৯০ শতাংশ নিভে গেছে। এই মুহূর্তে কোথাও আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে না। তবে মাঝে মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলেই সঙে সঙ্গে পানি ছিটানো হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলম আরও জানান, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ এবং শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ৩টি ইউনিট, বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। বন বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।
ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই আলমের তথ্য মতে, রবিবার সকালে সুন্দরবনের গুলিসাখালী এলাকায় আগুনের খবর শুনে ফায়ার ব্রিগেডের কিছু কর্মী সেখানে রওনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন, পানির উৎসের অভাবে নিয়ন্ত্রণে জটিলতা
শনিবার সকাল ৭টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলার সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি ক্যাম্পের টেপার বিল এলাকায় আগুন জ্বলতে দেখে বন বিভাগের সদস্যরা। এর পর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়। আগুন যাতে বনের মধ্যে ছড়াতে না পারে সে জন্য দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়। সুন্দরবনে কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
এ নিয়ে ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৯ বার আগুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবনে আগুনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
২৫ দিন আগে
চাঁদপুরে গভীর রাতে আগুনে পুড়ল ১৭ দোকান, আহত ১৫
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৭টি দোকান পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে হাজীগঞ্জ পৌর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে— ফটোকপির দোকান, প্রিন্টার ও কম্পিউটার মেশিন ও ২০ জন দলিল লেখকের ১০ হাজার দলিল। এছাড়া আরও রয়েছে জুডিশিয়াল স্টাম্প, স্যানিটারি টাইলসের দোকানসহ ফাস্টফুড ও কনফেকশনারি দোকান।
স্থানীয়রা জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হওয়ার পর তা দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে রাত পৌনে ২টার দিকে হাজীগঞ্জ সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা দেবব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় ২ ঘণ্টায় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন, পানির উৎসের অভাবে নিয়ন্ত্রণে জটিলতা
আগুন নেভাতে গিয়ে একজন ফায়ার ফাইটারসহ ১৫ জন স্থানীয় আহত হয়েছেন।
দেবব্রত মণ্ডল ইউএনবিকে বলেন, ‘খুব সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।’
২৫ দিন আগে