ভ্যাটিকান
পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থার অবনতি
রোমান ক্যাথলিকদের শীর্ষ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান। স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পোপের অবস্থা গতকাল শনিবারের চেয়ে অবনতি হয়েছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়, নিউমোনিয়া ও ফুসফুস সংক্রমণের কারণে নাজুক শারীরিক অবস্থায় রয়েছেন পোপ। তিনি অ্যাজমা সংক্রান্ত শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন। তবে ৮৮ বছর বয়সী এই ধর্মগুরুর হুঁশ আছে।
তাকে শ্বাপ-প্রশ্বাস চালিয়ে নেওয়ার জন্য উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। শরীরে প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় তাকে রক্ত দেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিসের দুই ফুসফুসে নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। এছাড়িাও তার ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তিনি শ্বাসনালির প্রদাহে ভুগছিলেন। গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তাকে রোমের জেমেল্লি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রিন্স আগা খান চতুর্থ আর নেই
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘পবিত্র পিতার অবস্থা এখনো গুরুতর। পোপ এখনো বিপদমুক্ত নন।’ গত শুক্রবার তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরে এই প্রথম ‘গুরুতর’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিসের চিকিৎসক ডা. সার্জিও আলফেরি জানান, পোপ জানেন তার শারীরিক অস্থা ভালো নয়। তিনি চান তার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে খোলাখুলি তথ্য দেওয়া হোক। এ কারণে ভ্যাটিকান থেকে প্রতিদিন তার শারীরিক অবস্থার কথা জানানো হচ্ছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২১ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের ফুসফুসের একটি অংশ অপসারণ করতে হয়েছিল। পরে তার ফুসফুসের চারপাশে এক ধরনের প্রদাহ তৈরি হয়। সে কারণে তিনি ফুসফুস সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।
গত ১২ বছরে এই পোপকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের মার্চ ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি ৩ রাত হাসপাতালে ছিলেন।
৫৪ দিন আগে
পোপ ফ্রান্সিস-অধ্যাপক ইউনূসের নামে যৌথ উদ্যোগ চালু করল ভ্যাটিকান
মানবতার জন্য একটি রূপান্তরমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের প্রয়াসে যৌথভাবে রোমে ‘পোপ ফ্রান্সিস-ইউনূস থ্রি জিরো ক্লাব’ চালু করেছেন ক্যাথলিক চার্চের আধ্যাত্মিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
‘থ্রি জিরো ক্লাব’ রোমের প্রান্তিক সম্প্রদায়ের যুবকদের জন্য আশার বাতিঘর হিসেবে দাঁড়িয়েছে। উদ্ভাবনী ধারণাগুলোর বিকাশ এবং দৃঢ় এবং টেকসই সমাধান তৈরির জন্য এটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস সকলকে সম্মিলিতভাবে এই রূপান্তরিত যাত্রা শুরু করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি পরবর্তী প্রজন্মকে এমন একটি সভ্যতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান, ‘যা প্রতিটি ব্যক্তির মর্যাদাকে সম্মানিত করবে এবং আমাদের (পৃথিবী) গ্রহের পবিত্রতা রক্ষা করবে।’
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে অন্তত ৪ হাজার ৬০০টি থ্রি জিরো ক্লাব রয়েছে, যার সবগুলোই অধ্যাপক ইউনূসের নতুন সভ্যতার স্বপ্নের দ্বারা অনুপ্রাণিত। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, এসব ক্লাবের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গড়ে উঠেছে।
রোমের ভিকার জেনারেল কার্ডিনাল বাল্ডো রেইনাকে লেখা এক চিঠিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, এই পদক্ষেপে তিনি 'গভীরভাবে সম্মানিত' বোধ করছেন।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ-জটিলতা মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান ইউনূসের
এই উপলক্ষে তিনি কার্ডিনাল রেইনাকে 'আন্তরিক অভিনন্দন' জানান।
শান্তিতে ২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী শনিবার বলেছিলেন, ‘এই অসাধারণ উদ্যোগটি পোপ ফ্রান্সিসের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং একটি রূপান্তরমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য আমার নিজের আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে।’
প্রধান উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘এই উদ্যোগের লক্ষ্য কেবল শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ অর্জন করা নয়, বরং একটি নতুন সভ্যতার উত্থানকে উৎসাহিত করাও - যা সহানুভূতি, সমতা এবং স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ভিত্তি তৈরি করে।’
তিনি বলেন, ‘এমন একটি সভ্যতা যেখানে কেবল কাউকে পিছনে ফেলে রাখা উচিত নয়, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি তাদের ভাগ্যের চালকও হতে পারে, একটি মানব পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য গর্বিত হতে পারে, যেমনটি পবিত্র পিতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জোর দিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকল ভাই-বোনেরা আসুন আমরা স্বপ্ন দেখি, একটি একক মানব পরিবার হিসেবে, একই মাংসের অংশীদার সহযাত্রী হিসেবে, একই পৃথিবীর শিশুদের মতো, যা আমাদের সাধারণ বাড়ি, আমাদের প্রত্যেকে তার বিশ্বাস এবং বিশ্বাসের সমৃদ্ধি নিয়ে আসে, আমাদের প্রত্যেকে তার নিজস্ব সমর্থন দিয়ে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের অবিচল অঙ্গীকার এবং সামাজিক ব্যবসার শক্তিতে আমার বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে, থ্রি জিরো ক্লাব তরুণদের অর্থপূর্ণ পরিবর্তন আনতে প্রকল্পগুলো গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উৎসাহিত করে।’
তিনি বলেন, ‘তারা সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তা চেতনা লালন করে, আমরা এই তরুণ নেতাদের আরও ন্যায়সঙ্গত ও সম্প্রীতিপূর্ণ সমাজের স্থপতি হতে ক্ষমতায়ন করি।’
আরও পড়ুন: নতুন সভ্যতার জন্য 'বুদ্ধিবৃত্তিক, অর্থনৈতিক, যুব শক্তিকে' একত্রিত করার আহ্বান ইউনূসের
১৫৩ দিন আগে
ভ্যাটিকানের পোপের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
ভ্যাটিকান,১৪ মে (ইউএনবি)- ভ্যাটিকানে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু পোপ ফ্রান্সিসের কাছেঅনাবাসী রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।
শনিবার (১৩ মে) ভ্যাটিকান সিটির এপোস্টলিক প্রাসাদে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে এ পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও আরও চারটি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা পোপের কাছে তাদের পরিচয়পত্র পেশ করেন। পরিচয়পত্র গ্রহণের পর পোপ নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতগণের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
পোপ তার বক্তব্যে সুদান, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো, লেবানন, ইউক্রেন, জেরুজালেম ও বিশেষত মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ ও অস্থিতিশীলতায় নিরীহ বেসামরিক জনগণের দুর্ভোগ, অস্ত্র উৎপাদন ও ক্রয়ের প্রতিযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রতিকূলতাসহ বর্তমান বিশ্বের নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন। নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি বিশ্ববাসীর জন্য আশার আলো হয়ে বিশ্বশান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতগণকে আহ্বান জানান পোপ।
রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান পোপকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দেন।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত সুফিউর শুক্রবার ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি ফর রিলেশনস (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আর্চবিশপ রিচার্ড গ্যালাঘার এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ভ্যাটিকানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ভ্যাটিকানের বিকল্প সেক্রেটারি অফ স্টেট (বিকল্প প্রধানমন্ত্রী) আর্চবিশপ এডগার পেনা পেরার সঙ্গেও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ এবং প্রগতিশীল দেশ গঠনে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় ও উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন এবং এতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বাংলাদেশিদের অবদানের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানে খ্রিস্টান মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান তুলে ধরেন। আর্চবিশপ পেনা পেরা (বিকল্প প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে বলে উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গাদের নিজদেশে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে গৃহীত পাইলট স্কিম গ্রহণের প্রেক্ষিত বর্ণনা করে বিশ্ববাসীর অব্যাহত সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত।
৭০৪ দিন আগে