২ মাস
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ
রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ২ মাসের জন্য বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১০ নভেম্বর) রাত থেকে ওই ইউনিটটি বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এতে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
এদিকে শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এই সময়টিকে বেছে নিয়েছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ শেষে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরবে বলে জানানো হয়েছে।
২০২০ সালে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাণিজ্যিকভাবে পুরোদমে উৎপাদনে আসে। বিদ্যুৎখাতে নানা টানাপোড়েন ও দেশে যাতে বিদ্যুতের ঘাটতি না হয় সেজন্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটই বিরতিহীনভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আসছিল।
আরও পড়ুন: বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তৃতীয় ইউনিট সচল, গ্রিডে যোগ হচ্ছে ২৮৫ মেগাওয়াট
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর সব যন্ত্রের বিরাম, ছোটখাটো মেরামতসহ রক্ষণাবেক্ষণ দরকার হয়, নাহলে এগুলো কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু দেশের চাহিদার বিষয় বিবেচনায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটই উৎপাদন অব্যাহত রাখায় বর্তমানে এর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়ে। তাই মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে গত ১০ নভেম্বর (রবিবার) দিবাগত রাত থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করতে অন্তত দুই মাস লাগবে।
বর্তমানে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মাধ্যমে উৎপাদিত ৬২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এর আগে, গত জানুয়ারি মাসে প্রথম ইউনিটের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হয়।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘আশা করছি, আগামী দুই মাসের মধ্যে এই বন্ধ ইউনিটটি উৎপাদনে ফিরে আসবে। বাংলাদেশে আরও পাঁচটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। গ্যাস ও অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আশা করি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদাগুলো মেটাতে পারবে।’
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প ব্যাবস্থাপক, প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মওলা বলেন, ‘জরুরি মেরামতের প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় এই সময়টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এরপরও ঘাটতি দেখা দিলে অন্যান্য কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে তা পুরণ করা হবে। এছাড়া চীনের সঙ্গে চুক্তির মধ্যেই এ রক্ষণাবেক্ষণ কাজে বাড়তি কোনো খরচ হবে না।
আরও পড়ুন: বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ, দিনাজপুরে তীব্র লোডশেডিং
১ সপ্তাহ আগে
২ মাসের মধ্যে বিমান কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে: মন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, বিমান তৈরি করা প্রতিষ্ঠান এয়ার বাস ও বোয়িংয়ের প্রস্তাব মূল্যায়ন করে আগামী দুই মাসের মধ্যে বিমান কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া মূল্যায়ন কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার আগে পর্যন্ত বিমান কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে না।’
রবিবার (৭ জুলাই) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফারুক খান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেট থেকেই আমাদের এটার জন্য অর্থায়ন করতে হবে। মনে করি আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে এটা শেষ হবে।’
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে: বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী
কতটি বিমান কেন হচ্ছে- এ বিষয়ে বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ১০টির মতো বিমান কেনার। সেটা নির্ভর করে, যে অর্থনৈতিক প্রস্তাব এসেছে সেটার ওপর ভিত্তি করে তারা (মূল্যায়ন কমিটি) আমাদের কী রিপোর্ট করে। তবে অবশ্যই দুই থেকে চারটির মতো হতে পারে।’
বিমানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন আমেরিকান কোম্পানির কথা বলেছেন, যারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। আগামীতে সেটা আরও সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী। আমিও তাকে জানিয়েছি যে আমরা যেভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে কেনাকাটা করি ইভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে সেভাবেই করব। সবসময় আমরা একটা ভালো প্রোডাক্ট নিতে চাই এবং আগামীতেও তাই নেব।’
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় তিনি (রাষ্ট্রদূত) বোয়িংয়ের কথা বলেছেন। সেটা মূল্যায়ন করছি। মূল্যায়ন শেষে কমিটি যে কোম্পানিকে সুপারিশ করবে, সেই কোম্পানি থেকে কেনার বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরও নতুন বিমান কিনতে চাই। কারণ সেটা আমাদের জন্য প্রয়োজন। আপনার জানেন এ বিষয়ে বিভিন্ন এক্সপার্টদের নিয়ে একটি মূল্যায়ন কমিটি কাজ করছে।’
বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা প্রতিযোগিতামূলক পৃথিবী। আমরা দু'টার মধ্যে যেখান থেকে ভালো অফার পাব, সবকিছু মিলে যেটা ভালো হবে সেটা কিনব। এটা ঠিক যে এয়ার বাসও আমাদের ভালো অফার দিয়েছে।’
এর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ তাদের প্রস্তাব মূল্যায়ন করছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (রাষ্ট্রদূত) আজকেও আমাকে এ কথাটা বলেছেন। আমি বলেছি মিডিয়াতে যখন কোনো খবর আসে সেটা খবর হিসেবে দেখবেন। আপনি জানেন যে বাংলাদেশ সরকার এখনও এটাকে মুল্যায়ন করছে। কমিটি রিপোর্ট না দেওয়া পর্যন্ত ফাইনাল হবে না।’
বোয়িং থেকে বিমান না কিনলে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে। এমন একটা কথা আসছে- এ বিষয়ে ফারুক খান বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হবে কেন? আমাদের দিক থেকে এর কোনো কারণ দেখি না, আমেরিকার দিক থেকেও কারণ দেখি না।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকা অতীতে অনেক বাংলাদেশি কেনাকাটায় অংশগ্রহণ করেছে, সেখানে অন্য কোনো কোম্পানিতে আমরা দিয়েছি। আমার মনে হয় এই কথাগুলো সাইড লাইনের। অবশ্যই আমেরিকান কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য বিক্রি করতে চায়, একইভাবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন জায়গায় অফার দিচ্ছে। যেটাতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হবে, সেটাই কেনা হবে।’
আরও পড়ুন: পর্যটন কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে মালয়েশিয়া সরকারের সহযোগিতাকে স্বাগত জানানো হবে: পর্যটনমন্ত্রী
বিমানের অগ্রগতিতে যারাই বাধা সৃষ্টিকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না: পর্যটনমন্ত্রী
৪ মাস আগে
সুন্দরবনে মধু আহরণের মৌসুম শুরু
দেশে মধু সংগ্রহের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র সুন্দরবনে ২ মাসব্যাপী মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। যা চলবে ৩১ মে পর্যন্ত।
সোমবার (১ এপ্রিল) সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী প্রাইমারি স্কুল মাঠে মধু আহরণের মধ্যে দিয়ে মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আতাউল। এ সময় বন বিভাগের পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মহসিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আজ থেকে মধু আহরণ শুরু
এ বছর সুন্দরবন পশ্চিম ও পূর্ব বিভাগে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কুইন্টাল এবং মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫০ কুইন্টাল।
এছাড়া বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন থেকে অনুমতি নিয়ে মৌয়ালরা গভীর বনে প্রবেশ করেছেন মধু সংগ্রহ করতে।
এদিকে কয়রা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কাটকাটা, মঠবাড়ি, পাথরখালী, গড়িয়াবাড়ি, হরিহরপুর এবং সুন্দরবনের বানিয়াখালি, তেতুল তলা, ফুলতলা, সরদার ঘাট, নুয়ানি, ৪ নম্বর কয়রা, সিংগাসহ নানা স্থান থেকে পেশাদার মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করবেন। এছাড়া বনে এখন গরান, বাইন ও খলিশা ফুলের মধু পাওয়া যাবে।
বন বিভাগের সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সুন্দরবন থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজার ২৪০ কেজি মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়। মধু ও মোম থেকে রাজস্ব আদায় হয় ৪৬ লাখ ৮৬ হাজার ৪১৩ টাকা।
এর মধ্যে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৫ কেজি মধু থেকে ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৩ টাকা এবং এক লাখ ৩৩ হাজার ৯০৫ কেজি মোম থেকে ১৩ লাখ ৩৯০ হাজার ৫০ টাকা রাজস্ব আয় হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু
বন বিভাগের সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২২ সালে সুন্দরবনের মধু থেকে রাজস্ব আয় হয় ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা এবং মোম থেকে ১৫ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা। সে বছর সুন্দরবন থেকে ২ হাজার ৩২০ কুইন্টাল মধু ও ৬৯৬ কুইন্টাল মোম পাওয়া যায়।
২০২৩ সালের ১ হাজার ২২৫ কুইন্টাল মধু ও ৩৬৭ দশমিক পাঁচ কুইন্টাল মোম আহরণ করা হয়। আর এ থেকে ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা সরকারের রাজস্ব আসে।
৭ মাস আগে
২ মাস বেতন-ভাতা বন্ধ ১৭০ জন চিকিৎসক-নার্স-কর্মচারীর
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৭০ জন চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে ২ মাস ধরে।
আগের কর্মকর্তা বদলির পর যোগদান করা নতুন কর্মকর্তা শেষ বেতনের প্রত্যয়নপত্র না নিয়ে আসায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
এতে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবাদান কার্যক্রম, ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের।
গত মাসে যোগদান করা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অবহেলার কারণে বেতন-ভাতা বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক-নার্স কর্মচারীদের।
এদিকে শারদীয় দুর্গাপূজায় বেতন-বোনাস না পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরর্ত ১৩ জন সনাতন ধর্মের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যদের আনন্দ ম্লান হয়েছে।
নাম প্রকাশ না শর্তে সনাতন ধর্মের কয়েকজন কর্মচারী জানান, উচ্চ পদে যারা চাকরি করেন, তাদের পয়সার অভাব নেই। এদিকে ওদিক করে তারা চলতে পারে। আমরা কর্মচারী, দিনশেষে বেতন-বোনাসের টাকা দিয়ে চলতে হবে। এবার পূজোয় বাচ্চাদের সামনে দাঁড়াতে পারিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমাসের বদলির পর ১ সেপ্টেম্বর ডা. শাকিলা আক্তার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই পদে যোগ দেন। ওই আদেশে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের কথা থাকলেও কর্মস্থলে যোগ দেন ১৩ সেপ্টেম্বর।
হাসপাতালের কর্মচারী ও সেবা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ- যোগদানের পর থেকে নিয়মিত অফিস করেন না উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তার।
তার অনুপস্থিতির সুযোগে জরুরি বিভাগ, ইনডোর ও আউটডোরে শুরু হয়েছে অব্যবস্থাপনা। নিয়মিত বসছে না চিকিৎসক, ঘুরে যেতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের লেদু রাম তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে।
আরও পড়ুন: বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
দুপুর ২টায় তার স্ত্রীকে নিয়ে ফিরে হাসপাতাল গেটে বসে লেুদরাম বলেন, ‘অফিসারের দরজাখান বন্ধ, এইতানে বাকি ডাক্তারদের কুনো খবর নাই। দেড় ঘণ্টা বসে থাকে বাড়িত যাচু, কাইল ঠাকুরগাঁও যাবা হবে, এ ছাড়া আর কুনো রাস্তা নাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১১ জন চিকিৎসক, ৩৪ জন নার্স ও ১২৫ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
সেপ্টেম্বর মাসের বেতন-ভাতা বন্ধের কারণে অনেক কর্মচারীর পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। এদিকে মাসের ২৫ তারিখে হিসাব রক্ষণ অফিসে চলতি মাসের বিল দাখিল করার কথা থাকলেও এলপিসির কারণে সেটি জমা হয়নি। তাই অক্টোবর মাসের বেতন-ভাতা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান হিসাব রক্ষক ওয়ালিউল্লাহ লিটু জানান, শেষ বেতনের প্রত্যয়নের (এলপিসি) অনলাইন কপি এলেও হার্ড কপি হাতে না পাওয়ায় পূজার আগে বিলটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া উপায় নেই।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তার মুঠোফোনে জানান, অফিসে নিয়মিত না আসার অভিযোগ সঠিক নয়। তা ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রধান কর্মকর্তার বদলি হলে বেতন-ভাতা নিয়ে এ ধরনের জটিলতা তৈরি হয়, আমাদের বেলাও তাই হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ১৭০ জনের বিল-বেতন বন্ধ, বিষয়টি খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। তা ছাড়া অনলাইন এলপিসি দিয়ে হিসাব রক্ষণ বিল ছাড় দিচ্ছে না।
এ সমস্যা কবে সমাধান হবে- জানতে চাইলে তিনি জবাব দিতে পারেনি।
জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ঝামেলা করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। আমি অনেকবার বলেছি, এখন আবারও বলছি কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রাখার অধিকার কারো নেই।’
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২০,৪০০ টাকা দাবি, মালিকদের ১০,৪০০ টাকা প্রস্তাব
১ বছর আগে
র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করুন: হাইকোর্ট
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আরও দুই মাস সময় বেধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেছেন, এটা সেনসিটিভ বিষয়। দুই মাস ক্রস করবেন না। দুই মাস কিন্তু দুই মাসই। আর দেরি করবেন না।
আরও পড়ুন: জেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়: চিকিৎসক
এর আগে গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্টের উপরোক্ত বেঞ্চ আটকের পর র্যাব হেফাজতে নওগাঁর সুলতানা জেসমিন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
কমিটিতে নওগাঁর জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন এবং সেখানকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তদন্তকালীন সময়ে জেসমিনকে আটকের সঙ্গে র্যাবের যেসব সদস্য জড়িত ছিলেন তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে মামলা ছাড়াই সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া ও পরবর্তী পদক্ষেগুলো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান ও তৌফিক সাজাওয়ার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের পক্ষে দুই মাস সময়ের আরজি জানিয়ে শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে গত ২২ মে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি রাজশাহী ও নওগাঁ সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
আদালত বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া কি সম্পূর্ণ হয়েছে? তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এভিডেন্স ও তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হয়নি।
কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় বাড়ানোর প্রার্থনা করেছে।
আদালত বলেন, কমিটি কবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল? জবাবে সমরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত ২৯ থেকে ৩১ মে।
যেসব মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে, তা জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর ফরেনসিক টেস্ট করা হবে। সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, গত ৫ এপ্রিল আদালত আদেশ দেন। ২২ মে কমিটি গঠন করা হয়। আদালতের আদেশের পর এক মাসের বেশি সময় লেগেছে কমিটি গঠন করতে। ধীরগতিতে করেছে। এক মাস সময় দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, নওগাঁ ও নাটোরের র্যাবকে বিবাদী করে রিট আবেদনকারী রিট করেন। এটি সংশোধন করতে হয়েছে, যা রিট আবেদনকারী আদালতে আনেননি।
দুই মাস সময় দিলে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা যাবে।
এ সময় আদালত বলেন, বিষয়টি সেনসিটিভ। বারবার সময় নেওয়া যাবে না। দুই মাস কিন্তু দুই মাস। এর মধ্যে শেষ করবেন। পরে আদালত দুই মাস সময় দিয়ে আদেশ দেন।
স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে।
এনামুল হককে সঙ্গে নিয়েই র্যাব ওই অভিযান চালায়।
এনামুল হকের অভিযোগ, সুলতানা জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে।
আটকের পর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে তাঁকে নওগাঁর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। ২৪ মার্চ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর জানা যায়, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হক একটি মামলা করেছেন, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেলে। এ মামলার আসামি জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আল-আমিন।
এদিকে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত ২৭ মার্চ হাইকোর্টের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
পরে আদালতের নির্দেশে ২৮ মার্চ তিনি হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র্যাবের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে মৃত্যু: জেসমিনের ছেলে ও ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ
১ বছর আগে