জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে অবদান রাখবে জাইকা
সম্প্রতি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে ‘ডেভেলপমেন্ট অব মিডিয়েশন অ্যান্ড সিভিল লিটিগেশন প্র্যাকটিস ফর এনহ্যান্সমেন্ট অব অ্যাকসেস টু জাস্টিস’- শীর্ষক একটি চুক্তি (রেকর্ড অব ডিসকাশন) সই করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
এটি জাইকার কারিগরী সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম এবং অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আদালত, লিগ্যাল এইড অফিস (আইনি সহায়তা কেন্দ্র) এবং বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে জাইকা।
প্রকল্পটি প্রথমে ঢাকা, কুমিল্লা ও নরসিংদীতে শুরু হবে; পরে এটি বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও সম্প্রসারণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন জাইকার
জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘ন্যায়বিচার ও একটি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখব বলে আশাবাদী।’
সরকারের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম এবং ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব ও উইং চিফ (আমেরিকা ও জাপান) একেএম শাহাবুদ্দিন।
এছাড়া, এই প্রকল্পের অধীনে সবার জন্য মধ্যস্থতা সংক্রান্ত আইনি সেবা আরও সহজতর এবং সাধারণ নাগরিকের মাঝে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া জনপ্রিয় করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশে মামলার জট হওয়ার পেছনে মূল কারণগুলো বের করে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করবে জাইকা। যার ফলে দেওয়ানী মামলার বিচার প্রক্রিয়ার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে প্রায় ৩৫ লক্ষ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই প্রকল্পের কার্যক্রম ২০২৪ সালে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের মাঝে জাইকার পৃষ্ঠপোষকতায় ট্যাব বিতরণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
১ বছর আগে
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১
মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার ১১টা ৫৮ মিনিটে এটি জাতীয় গ্রিডে সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট ইউনিট-১ থেকে পরীক্ষামূলক প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধীরে ধীরে প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে।’
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে দুটি ইউনিট বিশিষ্ট ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) এটি প্রতিষ্ঠা করে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এর অধীনে জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের সুবিধার্থে একটি গভীর সমুদ্র প্রকল্পও তৈরি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে কয়লা খালাসের জন্য ব্যবহৃত জেটির কাজ প্রায় শেষ। জেটিতে জাহাজ চলাচলও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৪ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়ীতে
প্রকল্পের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্লান্টটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ১৩ হাজার ১০৪ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এ জন্য কয়লা খালাসের জেটি ও সাইলো নির্মাণ করা হয়েছে।
বিশাল সাইলোতে ৬০ দিনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা রাখা হয়েছে। ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার মাদার ভেসেল সরাসরি কয়লা জেটিতে প্রবেশ করতে পারে। আর মাদার ভেসেল থেকে কয়লা খালাস করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ বছরের ছাই সংরক্ষণের জন্য দুটি পৃথক অ্যাশপন্ড রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর, অন্যটি ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড নির্মাণকরা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন এ প্রকল্পের একটি ঋণচুক্তি সই হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা এবং বাকি ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম ২০২৬ সালে শুরু হবে: খালিদ মাহমুদ
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জেটি ও ভৌত অবকাঠামোর ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং সার্বিক ভৌত অবকাঠামোর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বোধনের আগে এখান থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ করতে চাই। মাতারবাড়ী কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়ার কথা রয়েছে, তবে আমরা আশা করছি এই ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।’
তিনি আরও বলেন, আগামী জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু হবে।
তবে উভয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে প্রকল্পটির কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেন নির্বাহী পরিচালক।তিনি বলেন, ‘জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করলেই কয়লা দেখা যাবে। এরপর জেটি থেকে কয়লা সরাসরি প্ল্যান্টে যাবে। এটি পরিবেশ দূষিত করবে না।’
চলতি বছরের ২৩ জুন ইন্দোনেশিয়া থেকে মাতারবাড়ি প্ল্যান্টের জন্য ৬৪ হাজার ৩০০টন কয়লা বহনকারী একটি জাহাজ বাংলাদেশে আসে।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী বন্দরে ভিড়েছে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ
১ বছর আগে
হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রাণ হারানো জাপানি নাগরিকদের স্মরণ করেছে জাইকা
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বলেছে যে তারা প্রকল্পটি পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবে, যাতে বাংলাদেশের ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সাত জাপানি নাগরিকের উত্তরাধিকার বেঁচে থাকে।
জাইকা ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান হামলার সময় মারা যাওয়া সাত জাপানি পরামর্শকের প্রতি সমবেদনা জানাতে ৩ জুলাই উত্তরার মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে (এমইআইসি) একটি বার্ষিক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নিহত সাতজন জাপানি ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
জাইকার এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইয়ামাদা জুনিচি বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনার সাত বছর পেরিয়ে গেছে এবং বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও নাগরিকসহ অনেক মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছে।
জুনিচি বলেন, ‘মর্মান্তিক এ ঘটনার সাত বছর পার হয়েছে-বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও নাগরিকরাসহ প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ। আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন পেশাদার হিসেবে, বাংলাদেশের উন্নয়নে যারা সময় ও অক্লান্ত শ্রম দিয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন তাদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাদের অবদান চির স্মরণীয়। আমরা কখনওই তাদের অবদান ভুলবো না। গত বছর, আমরা মেট্রোরেল এক্সিবিশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছি। এ স্মৃতিস্তম্ভটি তারই প্রতীক।’
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজান হামলা: সপ্তম বার্ষিকীতে নিহতদের প্রতি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা
বক্তৃতার সময় তিনি আরও জানান যে জাইকা প্রকল্প কাজে নিয়োজিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়াও, বিভিন্ন যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং তারা যেনো মেট্রোরেলের সুবিধা উপভোগ করতে পারেন এজন্য ঢাকা মেট্রো রেলের লাইন ৬ -এ লিফট, স্বয়ংক্রিয় প্রশস্ত টিকিট গেট, ব্রেইল ব্লক, বয়স্কদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন, শুধুমাত্র নারীরা ব্যবহার করবেন এমন গাড়িসহ নানা সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত সাত জাপানি নাগরিকের স্মৃতি ও অবদান যেনো বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে এজন্য ধারাবাহিকভাবে এ প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করবে জাইকা।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান সরকার অনুষ্ঠানের অংশীদার ছিল এবং জাপানি পরামর্শদাতা যেমন আলমেক করপোরেশন, ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল এবং কাতাহিরা অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্টারন্যাশনাল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাইকার এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইয়ামাদা জুনিচি, বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল কোম্পানির সিইও ও প্রেসিডেন্ট ইয়োনেজাওয়া এইজি, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জনাব মোঃ নাজমুল হুদা, মহাপরিচালক, (দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া), ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম.এ.এন. সিদ্দিক, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।
আরও পড়ুন: শনিবার হলি আর্টিজানে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে বাংলাদেশ
হলি আর্টিজানে নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রদূতদের শ্রদ্ধা
১ বছর আগে