বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
বাকৃবির নতুন উপাচার্য ড. ফজলুল হক ভূঁইয়া
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২৬তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলামের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।
আরও পড়ুন: মাঙ্কিপক্স নিয়ে বাকৃবির অণুজীববিজ্ঞানী ড. বাহানুর রহমানের মতামত
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপাচার্য হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ থেকে চার বছর হবে। তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন ভাতাদি পাবেন।
তিনি বিধি অনুযায়ী সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।
রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূইয়া পশুপালন অনুষদের সাবেক ডিন, বাকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) বাকৃবি শাখার সভাপতি, বাকৃবির জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের সংগঠন সোনালি দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বর্ষে শিক্ষক সমিতিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের চারা দেবে বাকৃবি
গবাদিপশুর জন্য ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
৩ মাস আগে
দিনব্যাপী আয়োজনে বাকৃবির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
দেশের কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ৬৪ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৫টা ৩৪ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির শুরু করে বাকৃবির শিক্ষক সমিতি।
বেলা ১১টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
এরপর বৃক্ষরোপণ, ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি কামনা করে বাকৃবির সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে রাজনীতি নিষিদ্ধসহ শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবি
এসময় ছিলেন- বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সরদার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান সরকার ও বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গড়ার পেছনে বাকৃবি গ্র্যাজুয়েটদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সামনের দিনগুলোতে এই অর্জনগুলো ধরে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নোংরা রাজনীতি মুক্ত রাখতে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদ ও ৪৪টি বিভাগে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত।
দেশের সর্বোচ্চ এই কৃষি বিদ্যাপীঠের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং গবেষকরা উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন ফসল এবং আধুনিক ও লাভজনক চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন, শস্যবীমা কার্যক্রম, ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রমের উন্নয়নসহ কৃষি অর্থনীতিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বাকৃবি।
প্রাণিদের বিভিন্ন ভ্যাকসিন, টিকা, আণুবীক্ষণিক পর্যায়ে প্রায় শতভাগ নির্ভুল রোগ নির্ণয়, উচ্চফলনশীল গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির জাত উৎপাদন করছে। এছাড়াও বিভিন্ন পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মাছ চাষ ও মাছের জাত উদ্ভাবনের মৎস্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে তারা।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে শিক্ষক লাঞ্ছিত, প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি সোনালী দলের
৪ মাস আগে
বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ, নেপাল ও মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। এ আয়োজনে অংশ নেন তিন দেশের প্রায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল ৯টায় লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের অর্থায়নে ও বাকৃবি লিও ক্লাবের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাষি ভবনে এই আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়।
এদিন বিকেল ৩টায় তিন দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি প্রদর্শন করে।
আরও পড়ুন: দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের
এ সময় বাকৃবির লিও ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. কে.এইচ.এম নাজমুল হুসাইন নাজির বলেন, ব্যাপক সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের সংস্কৃতি বহির্বিশ্বে প্রচারের উদ্দেশ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একে অপরের দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে ও শ্রদ্ধাশীল হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশই চায় তাদের সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে প্রচার হোক। বাকৃবিতে প্রতি বছরই বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসে। ৩০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী আমাদের লিও ক্লাবের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছে। তাদের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বে ভালোভাবে প্রচার করতেই এই আয়োজন করা হয়েছে।
লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা ময়মনসিংহ হেরিটেজের সভাপতি লায়ন ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম এনামুল বলেন, ক্ষুধা, দৃষ্টিশক্তি, শিশু ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও পরিবেশ নিয়ে লায়ন্স ক্লাব সারা বিশ্বে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কাজের পাশাপাশি লায়ন্স ক্লাব ও লিও ক্লাবের উদ্যোগে দরিদ্র মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, গরু ছাগলের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন প্রদান, বয়স্কদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও পথশিশুদের চিকিৎসা, খাবার ও সাহায্য করা হয়। এছাড়া গর্ভবতী মা ও কিশোরীদের জন্যও সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
তিনি আরও বলেন, দেশের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লিও ক্লাবেই একমাত্র বিদেশিদের অংশগ্রহণ রয়েছে। তাদের মাধ্যমেই লিও ক্লাব ও লায়ন্স ক্লাবের মানব কল্যাণমূলক কার্যক্রম সহজেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় ছড়িয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তানভীর রহমান, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ , অধ্যাপক ড. বাপন দে, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন।
আরও পড়ুন: কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর রঙিন ফুলকপি: বাকৃবি অধ্যাপক
৯ মাস আগে
উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাত উদ্ভাবন, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩০ টন
দেশি ও বিদেশি ৮০টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা করে উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ ও তার গবেষকদল।
ইউএসএআইডি, ইউএসডিএ/এআরএস ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের যৌথ অর্থায়নে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬টি ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ২৪টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে।
দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে গাজরের হেক্টরপ্রতি ফলন গড়ে ১০ টন হলেও গবেষণায় উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল গাজরগুলোর জাত থেকে হেক্টরপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টন ফলন পাওয়া যাবে। এছাড়া গাজরগুলো দেশের উষ্ণ ও খরাপ্রবণ অঞ্চলেও চাষের উপযোগী ।
উচ্চ ফলনশীল এসব জাতের গাজর চাষ সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, ৭০ থেকে ৮০ দিনেই গাজরগুলোর ফলন পাওয়া যায় এবং এক একটি গাজরের ওজন প্রায় দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘গাজরগুলো দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন খরাপ্রবণ এলাকায় যেমন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা, লালমনিরহাট ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় মাঠ পর্যায়ে চাষ করে সফলতা পেয়েছি। তাছাড়া যেসব অঞ্চলে আলুর ফলন বেশি হয় সেখানে এসব গাজরের চাষ কৃষকদের ভাগ্য বদলাতে সাহায্য করবে।’
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র শীতে বোরোর বীজতলা নষ্টের আশঙ্কা
১০ মাস আগে
দেশের প্রথম গয়াল-ইল্যান্ডের কঙ্কাল তৈরি করলেন বাকৃবি অধ্যাপক
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের এনাটমি মিউজিয়ামে প্রথমবারের মতো গয়াল ও আফ্রিকান কমন ইল্যান্ডের কঙ্কাল প্রস্তুত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার সহযোগিতায় ২০১৯ সাল থেকে এনাটমি মিউজিয়ামের উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে উদ্যোগ গ্রহণ করেন এনাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি, গৃহপালিত ও বন্য প্রাণির ১৪টি কঙ্কাল প্রস্তুত করেছেন। তিনি দেশে প্রথমবারের মতো গয়াল, আফ্রিকান কমন ইল্যান্ডের কঙ্কাল ও দ্বিতীয় হিসেবে জিরাফের কঙ্কাল তৈরি করেছেন।
মিউজিয়ামটিতে হাতি, জিরাফ, শুশুক, হরিণ, অ্যারাবিয়ান হর্স, বানর, খরগোশ, বিড়াল, কুকুর, টার্কি, হাঁস ও মুরগির কঙ্কাল প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া জলঢোঁড়া সাপ ও লেঙ্গুরের কঙ্কাল বানানোর কাজ চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
১ বছর আগে
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) টিএসসি মিনি কনফারেন্স রুমে শনিবার (১৮ ই নভেম্বর) বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাউ প্ল্যান্ট লাভারস অনলাইনভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রথমবারের মতো বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়।
এসময় মেলা পরিদর্শন করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারি, সহকারী প্রক্টর মো. শরীয়ত-উল্লাহ ও ড. মো. আরিফ সাকিল।
আরও পড়ুন: বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
১ বছর আগে
বাকৃবির মরণ সাগর: সূর্য সন্তানদের অমলিন স্মৃতি
১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু পূর্ব পাকিস্তান ভেটেরিনারি কলেজের। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষণা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।
মূলত এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টি পাকিস্তানের শোষণ, অবিচার, বাষট্টি’র শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলার এক নতুন সূর্যোদয় দেখা সকল কিছুরই স্বাক্ষী।
৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তালিকায় নাম রয়েছে বাকৃবির কিছু সূর্য সন্তানদের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দল-মত নির্বিশেষে সবার জন্য তাদের স্মৃতি রক্ষার্থেই নির্মিত হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ’ বা ‘মরণ সাগর’।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয় মরণ সাগর, যা পরবর্তীতে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলী আকবরের (২০১৫-২০১৯ সময়কাল) পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মুক্তিযুদ্ধ স্থাপনা সংস্কার সম্পর্কিত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে বর্তমান রূপে নিয়ে আসেন।
স্মৃতিস্তম্ভটিতে একটি সম্পূর্ণ পরিস্ফুটিত শাপলা ফুলের মধ্য থেকে বেরিয়ে আছে দু’টি হাত, হাতের মধ্যে একটি রাইফেল উঁচু করে ধরা এবং রাইফেলের অগ্রভাগে বাংলাদেশের পতাকা বাধা। যা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশেকে অর্জনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ গবেষক
স্মৃতিস্তম্ভটির দেয়ালে খোদাই করে লেখা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া বাকৃবির ১৯ জন শহীদের নাম। মরণ সাগরের লাল রঙয়ের সিঁড়ি ও মেঝে দ্বারা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বোঝানো হয়েছে।
বাকৃবি হতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী শহীদদের মধ্যে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী সকলেই রয়েছেন। শিক্ষকদের (১ জন) মধ্যে রয়েছেন সহকারী অধ্যাপক এ.বি.এম আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া। কর্মচারীদের (৬ জন) মধ্যে মো. আক্কাছ আলী, মধুসূদন বর্মন, মো. নুরুল হক, মো. গাজী ওয়াহিদুজ্জামান, মো. হাসান আলী ও গিয়াস উদ্দিন।
ছাত্রদের (১২ জন) মধ্যে - মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মো. জামাল হোসেন, আব্দুল মতিন খন্দকার (টিপু) ও মনিরুল ইসলাম আকন্দ; কৃষি প্রকৌশল অনুষদের নাজির আখতার কাশেম ও আ.ন.ম নাজমুল আহসান; কৃষি অনুষদের হাবিবুর রহমান ও খুরশীদ আলম (শিবলী); ভেটেরিনারি অনুষদের আবুল কাশেম, কাজী মো. মঞ্জুর হোসেন ও ইব্রাহীম মোস্তফা কামাল; কৃষি অর্থনীতি অনুষদের মো. শামসুল হক তালুকদার ও মো. তহসীন আলী।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে- তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর শামসুল ইসলাম, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হক, প্রফেসর আতিয়ার রহমান মোল্লা, প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন, প্রফেসর ড. শেখ জিনাত আলী, প্রফেসর ড. নূর মো. তালুকদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক রেজিস্ট্রার মো. নজিবুর রহমানসহ ৮৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম।
শহীদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে বাকৃবিতে ছাত্রদের জন্য নির্মিত ৩টি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে। মো. জামাল হোসেনের স্মরণে ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর নির্মিত হয় শহীদ জামাল হোসেন হল। আ.ন.ম নাজমুল আহসানের স্মরণে ১৯৭৩ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মিত হয় শহীদ নাজমুল আহসান হল। মো. শামসুল হক তালুকদারের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৯ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় পূর্বের কায়েদে আযম হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদ শামসুল হক হল।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দেশ সেরা এই কৃষি শিক্ষার বিদ্যাপীঠে হাজার হাজার আগন্তুকদের মাঝে যুগের পর যুগ দেশ স্বাধীন করার কারিগরদের স্মৃতি প্রতিফলিত করবে মরণ সাগর। ধ্বনিত হবে – ‘মরণ সাগর পাড়ে তোমরা অমর তোমাদের স্মরি’।
আরও পড়ুন: নালিয়ার দোলায় হচ্ছে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
১ বছর আগে