কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে যৌথভাবে গবেষণা চালাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণায় বাংলাদেশের মাটি ও পানি সম্পদের ওপর সংরক্ষণমূলক কৃষির প্রভাব, সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাব্য ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হবে।
গবেষণা দলের প্রধান বাকৃবির মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান জাহাঙ্গীর ইউএনবিকে বলেন, ‘মাটি ও পানি সম্পদের ওপর কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং এই পদ্ধতির সম্প্রসারণের উপযুক্ত কৌশল নির্ধারণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, সংরক্ষণমূলক কৃষি বা কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি টেকসই চাষাবাদের একটি আধুনিক পদ্ধতি যা মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক। এতে তিনটি মূলনীতি অনুসরণ করা হয়— ন্যূনতম চাষ, ফসলের আচ্ছাদন বজায় রাখা ও ফসলের বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা।
গবেষণায় মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল ও ড. ডাভিনা বয়েড প্রজেক্ট লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কৃষি অর্থনীতি বিষয়ের প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করছেন বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান।
ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত উর্বর হলেও এর উর্বরতা দ্রুত কমছে। ২০১২ সাল থেকে মারডক বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা কৃষি সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গুণগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করছি।’
আরও পড়ুন: বৃত্তি পেল বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ৩৬ শিক্ষার্থী
গবেষণা প্রকল্পের আওতায় ৮টি পিএইচডি ও ৪টি মাস্টার্স ফেলোশিপের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।
এটি দেশের বিজ্ঞানীদের দক্ষতা, শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর।
‘বাংলাদেশে সংরক্ষণমূলক কৃষি গ্রহণে সহায়তা এবং মাটি ও পানির গতিশীলতার পরিবর্তন (সাকা)’ শীর্ষক চার বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে। এটি অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর) ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
এই প্রকল্পে আরও অংশ নিয়েছে— বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), সংরক্ষণমূলক কৃষি সেবা প্রদানকারী সংস্থা (ক্যাসপা) ও পিআইও কনসাল্টিং লিমিটেড।
গবেষকরা আশা করছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থায় টেকসই পরিবর্তন আসার পাশাপাশি কৃষকদের উৎপাদনশীলতা ও আয় বাড়বে।