রাখাইন
‘চিন-রাখাইনের চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বুঝতে হবে বাংলাদেশকে’
এক আলোচনায় বক্তারা বলেন, চিন ও রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বাংলাদেশকে বুঝতে হবে। তারা উল্লেখ করেন, ভারত, চীন ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলোর জন্যও রাখাইন গুরুত্বপূর্ণ।
বিআইপিএসএসের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মনিরুজ্জামান বলেন, 'মিয়ানমারের সার্বিক উন্নয়ন পরিস্থিতি বা সংঘাতময় পরিস্থিতি আমাদের বিশেষ করে রাখাইন ও চিনকে গুরুত্ব দিয়ে বুঝতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্য ওয়েস্টিনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস) আয়োজিত 'মিয়ানমার কি উন্মোচিত হচ্ছে? বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের জন্য প্রভা ‘ শিরোনোমে এ গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
মিয়ানমারের জটিল সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো বিশ্লেষণ এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া মূল্যায়নের জন্য এই আয়োজনে অংশ নেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
স্বাগত বক্তব্যে বিপসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাফকাত মুনির রোহিঙ্গা সংকটের বাইরেও মিয়ানমারের গতিপ্রকৃতি বোঝার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মুনিরুজ্জামান গত অক্টোবরে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের উত্থানের মাধ্যমে এই অঞ্চলে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ভূমিকা এবং চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
মুনিরুজ্জামান বলেন, রাখাইন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, চীন, ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য বড় শক্তির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘চীনের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কিয়াউকফিউতে তাদের একটি গভীর সমুদ্রবন্দর রয়েছে যা চীনের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জন্য রয়েছে কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট, যার জন্য সীমান্তবর্তী রাজ্য চিন ও রাখাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্যানেল আলোচক সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন, মিয়ানমারের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশে ও লিবিয়ায় সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. শহীদুল হক এবং ইউল্যাবের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (সি-এসএএস) পরিচালক ও 'দ্য ইস্টার্ন গেট' বইয়ের লেখক সুদীপ চক্রবর্তী তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
তৌহিদ হোসেন পরিস্থিতিকে একটি ক্রমবর্ধমান গৃহযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ ও বেসামরিক বিরোধিতা উভয়ের মুখোমুখি তাতমাদাও।
তিনি বলেন, 'এই প্রথম বামনরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছে।’
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। এই অঞ্চলে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত পরিকল্পনাগুলো উল্লেখ করেছিলেন এবং সংঘাতের সংস্থান নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকৃতির উপর জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশের জন্য সম্পদ নিয়ন্ত্রণ ও রোহিঙ্গা ইস্যুর কৌশলগত গুরুত্বের ওপরও জোর দেন হোসেন।
মেজর জেনারেল শহীদুল হক তার প্রারম্ভিক বক্তব্যে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের সংঘাতের বিপরীত প্রকৃতি নিয়ে একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, কিছু অনুমানের কারণে মিয়ানমার বিচ্ছিন্ন হবে না। তিনি এমন একটি দৃশ্যকল্পের কল্পনা করেছিলেন যেখানে তাতমাদাও শেষ পর্যন্ত ইএওগুলোর সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করবে, মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে সংঘাতের অনন্য মাত্রা বোঝার গুরুত্বের উপর জোর দেবে।
হকের মতে, পূর্ব সীমান্তে লড়াইয়ের গতিশীলতা পশ্চিম সীমান্তের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক, প্রতিটি অঞ্চল স্থিতিশীলতার জন্য নিজস্ব চ্যালেঞ্জ এবং প্রভাব উপস্থাপন করে।
তিনি বলেন, একটি অঞ্চলে বিপর্যয় সামগ্রিকভাবে মিয়ানমারের জন্য সর্বনাশ নয়।
তিনি আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
যে আরাকান আর্মির সঙ্গে জড়িত হওয়া ভারতের জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে বলেও পরামর্শ দেন, বিশেষত কালাদান প্রকল্পের প্রেক্ষাপটে।
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মেজর জেনারেল হক একটি প্রকল্পকে মৃত ঘোষণা করেন, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের উপর আঞ্চলিক গতিশীলতার প্রভাব এবং কৌশলগত যোগাযোগ ও জোটের গুরুত্বকে চিত্রিত করে।
সুদীপ চক্রবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে তেল ও গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি খাতে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করে মিয়ানমারের গভীর ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরেন।
তিনি এই জ্বালানি রুটগুলো সুরক্ষিত করতে মিয়ানমারের জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক লালন করার চীনের দীর্ঘদিনের অনুশীলনের উপর জোর দেন।
বিপরীতে, তাতমাদাওয়ের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পরিবর্তিত গতিশীলতার বিলম্বিত প্রতিক্রিয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছে।
চক্রবর্তী মিয়ানমারের অস্থিতিশীলতার বৃহত্তর প্রভাবের কথাও উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে সংঘাত ও অস্ত্রশস্ত্র প্রতিবেশী দেশগুলো, বিশেষত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
চক্রবর্তীর বিশ্লেষণে মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতা এবং এর আঞ্চলিক প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশকে কৌশলগত পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা, আসিয়ানের কূটনৈতিক সম্ভাবনা এবং মিয়ানমারের প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির রূপরেখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ করে দেয়।
কথোপকথনে মিয়ানমারের কোনো জাতিগোষ্ঠীর নৌ সক্ষমতা না থাকার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হয়, যা ওই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য ও নিরাপত্তার গতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
অধিকন্তু, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হলেও আলোচনায় এতটাই প্রাধান্য পেয়েছে যে তা আসিয়ানের সঙ্গে সম্পৃক্ততাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে ঐকমত্য হয়েছে।
এই সংকটে আসিয়ানকে আরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
শ্রোতারা আসিয়ানের মধ্যে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন।
ইন্টারেক্টিভ সেশনে আঞ্চলিক রাজনীতির জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশের একটি সক্রিয় ও উদ্ভাবনী কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করার অপরিহার্যতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পারস্পরিক স্বার্থ চিহ্নিতকরণ এবং তার সঙ্গে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ তার কৌশলগত অবস্থান উন্নত করতে পারে এবং আরও নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।
আলোচনা শেষে মেজর জেনারেল মুনিরুজ্জামান পরিকল্পিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান এবং জটিল গতিশীলতার গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণের জন্য প্যানেলিস্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানটি কেবল কঠোর বিশ্লেষণের জন্য একটি প্ল্যাটফর্মই নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত আলোচনাকে সমৃদ্ধ করতে বিআইপিএসএসের অবদান তুলে ধরে।
বিআইপিএসএস জানায়, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বৃহত্তর বোঝাপড়ায় অবদান রেখে এ ধরনের জটিল আলোচনা জোরদার করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় তা নিশ্চিত করুন: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
৮ মাস আগে
রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৫৮ নাসাকা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৮ সদস্য।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, বিজিপির ৫৮ জন সদস্য বা নাসাকা সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি তিনি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে দুই বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা, বান্দরবানে ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
আহতদের মধ্যে পবিন্দ্র ধর নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে।
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে এবং এসব গোলাগুলি ও বিস্ফোরণে ঘুমধুমের সীমান্ত এলাকায় এখন উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, জিরো লাইনে পড়ছে গুলির খোসা ও মর্টার শেল। ফলে তার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তুমব্রু, বাইশফাড়ি, ভাজাবনিয়া সীমান্ত পয়েন্টের বাসিন্দারা এখন চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, একটি মর্টার শেলের অংশ একটি বসতবাড়ির উপরে পড়ায় দুটি গ্রামের বাসিন্দারা চলে গেছেন।
চলমান পরিস্থিতির কারণে অনেক কৃষক তাদের ফসলি জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। উৎপাদিত ফসল জমি থেকে কাটতে না পারায় জমিতে পচে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
৯ মাস আগে
রাখাইনে অস্ত্রবিরতি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তার দেশ রাখাইন রাজ্যে আরেকটি অস্ত্রবিরতির জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে খুব শিগগিরই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।
আজ রবিবার (২৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন ইস্যুটি নিয়ে আমরা বেশ গভীরভাবে আলোচনা করেছি। আমরা বুঝতে পারছি, এখন আমরা কঠিন সময়ের মুখোমুখি। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।’
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন- তারা অতীতে রাখাইন রাজ্যে চীনের মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতি দেখে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের যৌথ উদ্যোগে তারা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছে চীন: ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীন তার ভূমিকা অব্যাহত রাখবে এবং রোহিঙ্গারা যাতে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্পৃক্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিস্তা প্রকল্প সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীন এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে এর জন্য সবার আগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব প্রয়োজন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নত ভবিষ্যৎ ও গভীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিবেশি দেশটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে সাময়িক বিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বাংলাদেশ বাহিনী অনেক আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি অবশ্যই রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মস্থান মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ সৃষ্টি করলে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
৯ মাস আগে
রাখাইনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থবহ সম্পৃক্ততা চান মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতি এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা জোরদারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থবহ সম্পৃক্ততা কামনা করেছেন।
তিনি বলেন, নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান।
মোমেন উল্লেখ করেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের কারিকুলামে চলমান শিক্ষা এবং বহনযোগ্য দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম প্রত্যাবাসন উদ্যোগের পরিপূরক হওয়া উচিৎ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) আয়োজিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচন: সায়মা ওয়াজেদকে সমর্থনের জন্য থাইল্যান্ডের প্রতি বাংলাদেশের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মোমেন
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি মঙ্গলবার রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হিসেবে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের কথা উল্লেখ করেন এবং সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।
গ্র্যান্ডি বলেন, ‘এটি একটি মানবিক সংকট, যা ভুলে যাওয়া উচিৎ নয়। সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সমাধান অন্বেষণ করতে হবে।’
ব্যাংককে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের জন্য অব্যাহত মানবিক সহায়তায় ইউএনএইচসিআরকে ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার অধিকার ও প্রত্যাশা বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের আঞ্চলিক বৈঠকে যোগ দিতে ব্যাংককে মোমেন
মার্কিন মিশনের সুপারিশ নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার কিছু নেই: মোমেন
১ বছর আগে
প্রত্যাবাসন ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখাইনের উদ্দেশে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল
প্রত্যাবাসনের আগে রাখাইন রাজ্যের মংডুর পরিবেশ-পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বাংলাদেশে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
শুক্রবার (৫ মে) সকাল ৯টার দিকে প্রতিনিধি দলটি টেকনাফ দিয়ে নৌপথে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা হয়। যেখানে তিন নারীসহ ২০ রোহিঙ্গা, একজন অনুবাদক এবং ছয়জন বিভিন্ন দপ্তরের বাংলাদেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার জন্য দুটি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্পিডবোটসহ ১৬ বিজিবি সদস্য রয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির 'নীরব সাক্ষী' জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ: রাষ্ট্রদূত মুহিত
তিনি জানান, প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি ও সেখানকার পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করবেন। একই দিন সন্ধ্যা নাগাদ তারা ফিরে আসবেন।
মূলত প্রত্যাবাসন হলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের যেখানে তাদের রাখা হবে, সে জায়গাটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করবেন।
জানা গেছে, এর আগে বাংলাদেশ থেকে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গার একটি তালিকা পাঠানো হয় মিয়ানমারের কাছে। ওই তালিকা থেকে ফেরত নিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম দফায় প্রায় এক হাজার ১৪০ জনকে নির্ধারণ করে দেশটি। সেখান থেকে ৪২৯ জনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমার। পরে গত ১৫ মার্চ ১৯ সদস্যদের একটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশের টেকনাফে এসে ১৭৭ রোহিঙ্গা পরিবারের ৪৮০ জনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মিয়ানমারে ফিরে যায়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতকে আরও বড় ভূমিকা রাখার আহ্বান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের
১ বছর আগে
যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা: মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সমর্থনে আইনি পদক্ষেপ
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় স্টার শিপ গ্রুপ অব কোম্পানিজ, ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়েস গ্রুপ কোম্পানিস লিমিডেট(আইজিজি) ও স্কাই কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিডেট রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, সামরিক বাহিনীর অস্ত্রের তৎপরতা ও রাজস্ব আয় সীমিত করতে তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী আমান্ডা মিলিং যুক্তরাজ্যের এই মনোভাবের কথা নিশ্চিত করেছেন। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলায় হস্তক্ষেপ করতে এটি করছেন।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মিয়ানমার জেনোসাইড কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছে কিনা তা এই মামলার রায়ে নির্ধারণ হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে।
পড়ুন: মিয়ানমারে সহিংসতায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা ও সাত লাখ ৪০ হাজার মানুষকে উচ্ছেদ করে প্রতিবেশী বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী যৌন নির্যাতন, শিশুদের নির্যাতন করে মাটিতে পুঁতে ফেলা এবং গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মতো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
এগুলো হলো সেনাবাহিনীর দায়মুক্তির জন্য কর্মকান্ড এবং যুক্তরাজ্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে মিয়ানমারের বিরোধী গণতন্ত্রপন্থীদের দমন করতে তারা একই কৌশল নিয়েছে।
যুক্তরাজ্য নিশ্চিত যে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জাতিগত নিধন করা হয়েছে, এবং এখনও মিয়ানমারে যে বর্বরতা চলছে তা বন্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায় নিতে হবে।
আমান্ডা মিলিং বলেন, যারা আমাদের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ছোট ও ধ্বংস করতে চায় যুক্তরাজ্য সব সময় তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
‘পাঁচ বছর ধরে আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করে পাশে আছি এবং ভয়ানক জাতিগত ধ্বংসযজ্ঞের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিন্দা জানিয়েছি।
মন্ত্রী মিলিং বলেন, আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার মামলায় মধ্যস্থতা এবং নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ২০১৭ সালের নৃশংসতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অর্থনীতি ও অস্ত্র
সরবরাহ সীমিত করাতে যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সমর্থনের ব্যাপারে শক্তিশালী বার্তা দেয়। ২০১৭ সালের সহিংসতার লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গাদের পরিচয় ও ভবিষ্যৎ বংশধর ধ্বংস করা।
রাখাইন রাজ্যে থাকা ৬ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে এবং নিয়মিত বৈষম্যের মাধ্যমে তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা সীমিত করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্য আবারও ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনকে উদ্ধৃত করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্য ২০১৭ সাল থেকে শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রয়োজনীয় খাবার, তাবু, পয়নিষ্কাশন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা খাতে ৩৩০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সত্য আড়ালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
মিয়ানমারে ৪ গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
২ বছর আগে
মিয়ানমারের নতুন সরকারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে: যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্য চায় যে সংঘাতের মূল কারণ সমাধান করে মিয়ানমারের নতুন সরকার রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মস্থান রাখাইন রাজ্যে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদার সাথে ফিরিয়ে নিতে পদক্ষেপ নেবে।
৪ বছর আগে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ‘সমন্বিত ভূমিকা’ চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে ‘বিস্তৃত এবং ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে’ সমন্বিত ভূমিকা চেয়েছে যাতে রোহিঙ্গারা আবারও নির্বাসিত হওয়ার কোনো ভয় ছাড়াই তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।
৪ বছর আগে
ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান
ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মিয়ানমারের উত্তরণ দৃঢ় করার জন্য যে আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সাথে দেশটির সরকারকে সহযোগিতা করতে সোমবার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেত।
৫ বছর আগে
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল অনুপ্রবেশের ২ বছর আজ
ঢাকা, ২৫ আগস্ট (ইউএনবি)- বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢলের অনুপ্রবেশের দুই বছর আজ। রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম দমন অভিযানের কারণে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাধ্য হয়ে নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
৫ বছর আগে