সমুদ্র অর্থনীতি
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. সুব্রত সরকার।
তিনি জানান, বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে। ২০৩৭ সাল নাগাদ বিশ্বে জনসংখ্যা হবে ৯ বিলিয়ন। আর এই বহুল জনসংখ্যার খাদ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের সমুদ্রের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হবে। আমরা যদি প্রতিনিয়ত এই সমুদ্র সম্পদ নিতেই থাকি। তাহলে একসময় আমাদের এই সম্পদের মজুদ ফুরিয়ে যাবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমুদ্র অর্থনীতির গুরুত্ব ও করণীয় নিয়ে বার্তাসংস্থা ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেন ড. সুব্রত সরকার।
তিনি বলেন, সমুদ্র সম্পদকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রাখতে চাই, তাহলে আমাদের ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হবে। সমুদ্র অর্থনীতিতে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এই উপমহাদেশে সমুদ্রের গুরুত্ব পেয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমুদ্র পথে আসার প্রাক্কালে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সমুদ্রের বিষয়টি মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা জয়ের পর গুরুত্ব পায়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
বর্তমানে সরকার ব্লু ইকোনোমি এর ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশে ব্লু ইকোনোমির ক্ষেত্রে ফিসারিজ সার্ভে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতীতে এই ফিসারিজ সার্ভের জটিলতা থাকলেও বর্তমানে সরকার ফিসারিজ সার্ভে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া সরকার এখন সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে মৎস্য চাষে গুরুত্ব আরোপ করেছে। বর্তমানে আমাদের মৎস্য আহরণ উপকূলের ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ৪০ মিটারের বাইরেও মৎস্য আহরণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা টুনা মাছ সম্পর্কে অনেকেই জানি। আমাদের সাগর অংশে টুনা মাছ ওইভাবে ধরা পড়েনি। সরকারের পদক্ষেপ অনুযায়ী সরকারিভাবে টুনা মাছ ধরা হবে। আর অন্যরা যাতে টুনা মাছ ধরার জন্য আগ্রহী হয় সরকার সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টর যেনো সমুদ্র অর্থনীতির অংশ হিসেবে আনা যায় সরকার এজন্য কাজ করছে।
সুব্রত সরকার জানান, সমুদ্র অর্থনীতিতে বর্তমানে সি-উইড বিশাল একটি অংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে সি-উইড চাষের সম্ভাবনার ক্ষেত্রে বড় পরিসরে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক আকারে এই সমুদ্রসম্পদ সি-উইড উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি জানান, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তিনটি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া এবং একটি মেরিন রিজার্ভ ঘোষণা করেছে। মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ছাড়াও সমুদ্র অর্থনীতিতে ট্যুরিজমের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই বৃদ্ধির বিষয়টি লক্ষণীয়। সরকারের এইদিকে বিশেষ নজর দেখা যাচ্ছে।
সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে সুব্রত সরকার বলেন, চলতি বছরের ১২ মার্চ থেকে ২৩মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সমুদ্র বিষয়ক সংস্থা পোগো এবং শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে জাপানভিত্তিক সংস্থা নিপ্পন ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায়, জাতিসংঘের সমুদ্র দশক (২০২১-২০৩০) প্রোগ্রাম ও ভারতের জাতীয় সমুদ্র তথ্যসেবা কেন্দ্রের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭টি দেশ হতে ১৫০টি এর মধ্যে টপ ২২জনকে ট্রেনিং প্রদান করা হয়। যেখানে সমুদ্র অর্থনীতিতে সমুদ্রসম্পদের
ব্যবস্থাপনার দিকগুলোকে মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়। সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার, সুনীল অর্থনীতির ক্রমবিকাশ, সমুদ্র ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া এখন জরুরি। সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা এর যেমন জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান কর্মতৎপরতায় সমুদ্র অর্থনীতি আরও বেশি এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন
১ বছর আগে
সমুদ্র অর্থনীতির ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে আইওআরএ’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিত।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ১২ সদস্য বিশিষ্ট আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল তাঁর সাথে সভা করলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশাল সম্ভবনা সত্ত্বেও আমাদের আন্তআঞ্চলিক বিনিয়োগ কম। আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক বিস্তারের অনেক সুযোগ রয়েছে।’
প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রের সাথে দ্বি পক্ষীয় সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, প্রতিনিধি দল এমন সময়ে বাংলাদেশে রয়েছে যখন দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। তিনি বলেন, ‘আপনাদের উপস্থিতি জন্মশতবর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’
করোনা মোকাবিলায় নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে করোনার টিকা তৈরির চেষ্টা করছি।’
আইওআরএ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশকে উন্নয়নের গতিপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ সভা সঞ্চালনা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শীর্ষ শ্রেণির ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারকে শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে ইন্দোনেশিয়া
যোগাযোগ প্রযুক্তি ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কাজে আগ্রহী মাদাগাস্কার
২ বছর আগে
সমুদ্র অর্থনীতির গুরুত্ব বিবেচনায় কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করা হবে যাতে তারা সরকারকে ‘ব্লু ইকোনমি’র (সমুদ্র অর্থনীতি) সম্ভাব্যতা কাজে লাগাতে সহায়তা করতে পারে।
৩ বছর আগে
সুনীল অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে কাজ করছি: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে সরকার একটি প্রাণবন্ত সুনীল অর্থনীতি গড়ে তুলতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৩ বছর আগে
সমুদ্র অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
জ্ঞান, তথ্য এবং ধারণা ভাগাভাগি করে নেয়ার মাধ্যমে একসাথে কাজ করে সমন্বিতভাবে ব্ল ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে নানা উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র।
৪ বছর আগে
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উপকূলীয় জেলেদের দক্ষতা উন্নয়নের তাগিদ
দেশের সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমির অসাধারণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উপকূলের সাড়ে ৬ লাখ জেলের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪ বছর আগে