লামিন ইয়ামাল
আতলেতিকো-বার্সেলোনা: অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো
চলতি মৌসুমে ইউরোপের বদলে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে অন্যতম দুটি নাম আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এক দল বিপুল অর্থ খরচ করে সাজিয়েছে দুর্দান্ত এক দল, অন্যটি টাকার অভাবে একাডেমির কিশোর ফুটবলারদের তুলে দিয়েছে নতুন এক কোচের হাতে।
আতলেতিকোর অর্থ আর হান্সি ফ্লিকের জাদুকরি ছোঁয়ায় দুই দলেই এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। চলতি মৌসুমে এই দুই দলের আগের দুই ম্যাচেও মিলেছিল ধ্রুপদী লড়াইয়ের দেখা। তবে তৃতীয়বারের দেখায় যা হলো তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।
দুপক্ষই ম্যাচে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়েছে। চলুন দেখে নেই উত্তেজনাকর এই ম্যাচটি শুরু হয়ে কীভাবে শেষ হলো।
এদিন মাঠে নেমেই দুর্লভ এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ, এরপর বার্সেলোনা এবং পরে আবারও লস রোহিব্লাঙ্কোসদের জার্সি গায়ে চাপানো ফরাসি ফরোয়ার্ড আন্তোয়ান গ্রিজমান। লা লিগায় ৫২০তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। আর এতে করে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় বনে গেছেন সোনালি চুলের এই ফুটবল তারকা।
এই কীর্তি আছে মাত্র আর একজনের। আর্জেন্টিনা থেকে শৈশবে স্পেনে পাড়ি জমিয়ে সে দেশটিকেই নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলা লিওনেল মেসির। তবে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও আর এক ম্যাচ মাঠে নামলে মেসিকে ছাড়িয়ে যাবেন গ্রিজমান।
সেইসঙ্গে চলতি মৌসুম তো বটেই আরও কয়েক বছর সিমিওনের অধীনে খেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না এই আতলেতিকো কিংবদন্তির। সেক্ষেত্রে মেসিকে ছাড়িয়ে বহুদূর এগিয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরাসি তারকা।
৪৭ দিন আগে
আরও একটি প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শীর্ষে ফিরল বার্সেলোনা
অসাধারণ পারফর্ম করেও ভাগ্যের ফেরে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে দুর্দান্ত আতলেতিকো যখন জয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে, তার মাঝেই প্রায় অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করে বার্সেলোনাকে পথ দেখালেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। আর সেই পথে এগিয়ে গিয়েই দিয়েগো সিমিওনের রক্ষণাত্মক ফুটবল ভেঙেচুরে একাকার করে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নিল বার্সেলোনা।
রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোয় রবিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
ম্যাচের ৪৫ ও ৭০তম মিনিটে আতলেতিকোকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন হুলিয়ান আলভারেস ও আলেকজান্ডার সোরলথ। এর পরপরই আরও জ্বলে ওঠে বার্সেলোনা। ৭২তম মিনিটে সেই আক্রমণের সুর বেঁধে দেন লেভানডোভস্কি। এরপর ৭৮তম মিনিটে ফেররান তোরেস দলকে সমতায় ফেরানোর পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বার্সাকে প্রথমবার এগিয়ে নেন লামিন ইয়ামাল। শেষ মুহূর্তে ফেররানের আরও এক গোলে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা।
এই জয়ে ২৭ ম্যাচে ১৯ জয় ও তিন ড্রয়ে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠল কাতালান দলটি। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্টও ৬০, তবে মুখোমুখি লড়াই ও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে যেতে হয়েছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের।
অন্যদিকে, লিগে টানা দুই ম্যাচ হেরে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে আতলেতিকো মাদ্রিদের। রিয়ালের সমান ২৮ ম্যাচে দলটির সংগ্রহ ৫৬ পয়েন্ট। তবে ওসাসুনার বিপক্ষে নিজেদের বাকি থাকা ম্যাচটি জিতে দলটির সঙ্গে ব্যবধান ৭ পয়েন্ট এবং রিয়ালের সঙ্গে ৩ পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে বার্সেলোনার।
আরও পড়ুন: প্রথমে গোল পেয়েও হেরে সুযোগ হাতছাড়া করল আতলেতিকো
লিগের মাঝামাঝি সময় থেকে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদকে সমানে টক্কর দিয়ে এলেও মাত্র ১০ ম্যাচ বাকি থাকতে পরপর দুই ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলো দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। এছাড়া সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারল দলটি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দুই লেগে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে প্রতিযোগিতাটি থেকে ছিটকে গেছে তারা।
এখন কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এই বার্সেলোনাকেই তাদের মাঠে ৪-৪ গোলে রুখে দিয়ে প্রতিযোগিতাটিতে এখনও নিজেদের ধরে রেখেছে আতলেতিকো। আর লা লিগায় নিভু নিভু করে জ্বলছে তাদের শিরোপাস্বপ্ন।
অপরদিকে, নতুন বছরে বার্সেলোনার অপরাজেয় যাত্রা অব্যাহত রইল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ ম্যাচে (১৫ জয়, ৩ ড্র)। এছাড়া চলতি মৌসুমে ঘরের মাঠে লিগের প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হারের পর কোপা দেল রের সেমিফাইনালে ৪ গোল করেও ড্র করতে হয় ফ্লিকের শিষ্যদের; দুই ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকার পর আতলেতিকোর মাঠে এসে অবশেষে দলটির বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল তারা।
শুধু তা-ই নয়, বার্সেলোনার দায়িত্ব নেওয়ার পর সিমিওনের দলের বিপক্ষে হান্সি ফ্লিকেরও প্রথম জয় এটি।
শনিবার রাতে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ভিয়ারিয়ালকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আরও পড়ুন: ২৭ সেকেন্ডের গোলে ম্যাচ জিতেও টাইব্রেকারে আতলেতিকোর হার, কোয়ার্টারে রিয়াল
আতলেতিকো-বার্সা ম্যাচের মধ্যে দিয়ে দুই সপ্তাহের আন্তর্জাতিক বিরতিতে গেল লা লিগা। আগামী ৩০ মার্চ আরেক কাতালান দল জিরোনার বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরবে বার্সেলোনা। তার এক দিন আগে আরও এক কাতালান ক্লাব এস্পানিওলের মুখোমুখি হবে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
এরপর আগামী ২ এপ্রিল একই ভেন্যুতে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে মাঠে নামবে এই দুই দল।
৪৭ দিন আগে
লামিন, রাফিনিয়ার রেকর্ডের রাতে সবার আগে কোয়ার্টারে বার্সেলোনা
প্রথম লেগে একজন খেলোয়াড় কম নিয়ে প্রায় পুরো ম্যাচজুড়ে ভুগতে থাকার পরও কোনোমতে ১-০ গোলে জেতার পর ফিরতি লেগে যেন সব ক্ষোভ উগরে দিল বার্সেলোনা। তাতে পুড়ে অঙ্গার হয়ে শেষ ষোলো থেকে প্রথম দল হিসেবে বিদায় দিল বেনফিকা, আর সবার আগে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
কাতালুনিয়ার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে পর্তুগিজ দলটিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। এর ফলে ৪-১ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে উঠেছে কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচের সবগুলো গোলই এসেছে প্রথমার্ধে। বার্সার তিনটি গোল আসে ১১, ২৭ ও ৪২তম মিনিটে। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় গোলটি করেন রাফিনিয়া। আর বাকি গোলটি আসে লামিন ইয়ামালের পা থেকে।
অপরদিকে বেনফিকার একমাত্র গোলটি করেন নিকোলাস ওতামেন্দি।
এর ফলে নতুন বছরে অপরাজেয় যাত্রায় অব্যাহত রাখল বার্সেলোনা। টানা ১৭ ম্যাচ হারেনি দলটি।
ম্যাচজুড়ে এদিন মোট ২০টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার প্রথমার্ধে নেওয়া ৬টি শট ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, আটটি শট নিয়ে মাত্র দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে বেনফিকা। বল দখলের লড়াইয়েও ছিল বার্সেলোনার প্রত্যাশিত আধিপত্য। দলটির ৬৫ শতাংশ পজেশনের বিপরীতে বেনফিকার ছিল ৩৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অসীম ধৈর্য্য ও স্টান্সনির কৃতিত্বে জিতে ফিরল ১০ জনের বার্সেলোনা
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই কেউ কাউকে ছেড়ে কথা না বলার ইঙ্গিত দিলেও প্রথম শটটি নেয় বার্সেলোনা। পেদ্রির বাড়ানো পাস ধরে ষষ্ঠ মিনিটে গোলে শট নেন লামিন, তবে সহজেই তা লুফে নেন বেনফিকা গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিন।
দশম মিনিটে লামিনের পাস ধরে বক্সের মাঝ থেকে লেভানডোভস্কির নেওয়া আরও একটি শট প্রতিহত করেন ত্রুবিন। তবে পরের মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি এই ইউক্রেনীয় গোলরক্ষক।
একাদশ মিনিটে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের কয়েক খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে বক্সে ঢুকেই বিপরীত পাশ দিয়ে এগোতে থাকা রাফিনিয়াকে লক্ষ্য করে একটি নিখুঁত ক্রস বাড়ান লামিন। এরপর ট্যাপ-ইনে তা ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া রাফিনিয়ার জন্য ছিল জলের মতো সরল।
৫২ দিন আগে
কাঙ্ক্ষিত জয় পেতে ঘাম ছুটল বার্সেলোনার
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ হারায় ব্যবধান কমাতে নিজেদের ম্যাচটি জেতার প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। তবে কাঙ্ক্ষিত সেই জয় পেতে রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে লামিন-রাফিনিয়া-লেভানডোভস্কিদের।
রবিবার কাতালুনিয়ার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে দেপোর্তিভো আলাভেসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি।
এদিন মাঠে নেমেই ফুটবলের পাশাপাশি শারীরিক সামর্থ্য দিয়ে বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের অস্বস্তিতে রাখে আলাভেসের ফুটবলাররা। পুরোটা সময় সেই চ্যালেঞ্জ ধরে রাখে তারা। ফলে বল পায়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই পাস দেওয়া তো দূরের কথা, পজেশন ধরে রাখাই মুশকিল হয়ে পড়ে কাতালান জায়ান্টদের। সেইসঙ্গে বল কেড়ে নিয়ে বার্সার রক্ষণে ত্রাস ছড়ানো তো ছিলই। ফলে গোলের সুযোগ তৈরি করতে হিমশিম খেতে হয় ফ্লিকের শিষ্যদের।
আলাভেসের চ্যালেঞ্জ সামলে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই প্রথমবার গোলের সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনা। সতীর্থের কাছ থেকে আসা পাস ধরে ড্রিবলিং করতে করতে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থেকে বাঁ দিকে কিছুটা ফাঁকায় থাকা রাফিনিয়াকে পাস দেন লামিন। বল ধরে বক্সে ঢোকার মুখে জোরালো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করেন রাফিনিয়া, তবে বল সামান্যের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
আরও পড়ুন: এস্পানিওলে ধরাশায়ী রিয়াল মাদ্রিদ
পঞ্চদশ মিনিটে উড়ন্ত পাসে হেড করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সা মিডফিল্ডার গাভি ও আলাভেস উইঙ্গার তমাস কোনেচনিকে। এর দুই মিনিট পর কাতালানদের বিপদে ফেলেই দিয়েছিল আলাভেস। তবে শটটি পোস্টের ধারেকাছেও রাখতে পারেনি তারা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ শেষে ৪২তম মিনিটে আরও একবার আশা জাগানিয়া শট নেন পেদ্রি। তবে সেই শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আলাভেস গোলরক্ষক হেসুস ওউয়োনো।
গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে বিরতির পর কন্ট্রোলিং মিডফিল্ড থেকে মার্ক কাসাদোকে উঠিয়ে অভিজ্ঞ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এবং হলুদ কার্ড পাওয়া ডিফেন্ডার রোনালদ আরাউহোকে উঠিয়ে এরিক গার্সিয়াকে নামিয়ে দেন ফ্লিক। ফ্রেঙ্কির দক্ষতা ও সতীর্থদের সঙ্গে অসাধারণ সমন্বয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ভোল পাল্টে ফেলে বার্সেলোনা।
৮৯ দিন আগে
বেতিসকেও ৫ গোল দিয়ে কোপা দেল রের কোয়ার্টারে বার্সেলোনা
স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে গত রবিবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে যেখানে শেষ করেছিল বার্সেলোনা, কোপা দেল রের ম্যাচে বেতিসের বিপক্ষে যেন সেখান থেকেই শুরু করল তারা। আর কাতালানদের পারফরম্যান্সের আগুনে রিয়ালের মতো পুড়ে ছাই হলো মানুয়েল পেল্লেগ্রিনির শিষ্যরা।
বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ম্যাচে রিয়াল বেতিসকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ফলে টানা দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫ গোল পাঠাল দলটি।
এদিন বার্সেলোনার হয়ে গোলের দেখা পেয়েছেন পৃথক পাঁচ ফুটবলার— গাভি, জুল কুন্দে, রাফিনিয়া, ফেররান তোরেস ও লামিন ইয়ামাল। অন্যদিকে, পেনাল্টি থেকে বেতিসের একমাত্র গোলটি করেন বার্সা থেকে ধারে খেলা ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ভিতর রকে।
সুপার কাপ এল ক্লাসিকোর পর এদিন আরও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন লামিন ইয়ামাল। ম্যাচসেরার পুরস্কারও তাই উঠেছে তার হাতেই।
আরও পড়ুন: রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
গাভির গোলে ম্যাচের শুরুতেই এদিন এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে মাঝমাঠ থেকে দানি অলমোকে দারুণ একটি পাস বাড়ান পেদ্রি, বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে থাকা গাভিকে ডিফেন্সচেরা পাস দেন সম্প্রতি নিবন্ধন জটিলতায় পড়া এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, আর তা থেকে গোল করে দলকে লিড এনে দেন ২০ বছর বয়সী গাভি।
তিন মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যে গোল পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বার্সেলোনা। অষ্টম মিনিটে জুল কুন্দের বক্সের মধ্যে পাঠানো বল ধরে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে শট নেন অলমো। তবে অসাধারণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন বেতিস গোলরক্ষক ফ্রান ভিয়েইতেস।
আক্রমণের মালা গাঁথার একপর্যায়ে অলমোর আরও একটি শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ২০তম মিনিটে নেওয়া ওই শটটি ফিরে এলে তা পেয়ে যান রাফিনিয়া, কিন্তু তিনিও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন।
তবে এর সাত মিনিট পর দুর্দান্ত বার্সেলোনাকে আর আটকে রাখতে পারেনি বেতিসের ডিফেন্ডাররা। এবারও গোলের কারিগর সেই পেদ্রি।
মাঝমাঠের কিছুটা সামনে থেকে এগোতে থাকা কুন্দের উদ্দেশে পাস দেন পেদ্রি, তবে তা না ধরে ডামি দিয়ে দ্রুত বক্সে ঢুকে পড়েন এই উইংব্যাক। আর পেছনে থাকা লামিন ইয়ামাল প্রথম ছোঁয়াতেই দারুণ এক ফ্লিকে কুন্দের কাছে পাঠিয়ে দেন বল। তা নামিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ২৬ বছর বয়সী ফরাসি ডিফেন্ডার।
এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা চার মিনিটের প্রথম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে বেতিস। তবে সেই শটটি দিক পরিবর্তন করলেও বিপরীত দিকে পড়তে পড়তে হাত উঁচু করে কোনোরকমে তা ফিরিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়া।
শেষ মিনিটে লামিন-কুন্দে যুগলবন্দীতে আরও একটি গোল পায় বার্সেলোনা, তবে ভিএআর রিভিউতে অফসাইড ধরা পড়লে ব্যবধান ২-০ রেখেই বিরতিতে যায় সদ্য স্প্যানিশ সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নরা।
১০৭ দিন আগে
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
হাজারো সংকটের মাঝেও কীভাবে লক্ষ্যে অটল থেকে, মাথা ঠান্ডা রেখে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, তা-ই যেন দেখিয়ে চলেছেন হান্সি ফ্লিক। একের পর এক খেলোয়াড়ের চোট এবং ক্লাবের আর্থিক সংকটে নতুন খেলোয়াড় না পেয়ে একাডেমি লা মাসিয়া থেকে যুবাদের মূল দলে এনে জোড়াতালি দিয়ে শিষ্যদের মাঠে নামিয়ে চলেছেন এই জার্মান কোচ। অথচ এমনই তার দলের পারফরম্যান্স যা কোটি বার্সাভক্তকে ভুলিয়ে দেয়— দলটি ঠিক কতটা সংকটের মধ্যে সময় পার করছে। আর তেমনই এক স্মরণীয় ম্যাচ তিনি উপহার দিলেন রবিবার রাতেও।
সবশেষ কয়েক ম্যাচ উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আসার মাঝে দানি অলমো ও পাউ ভিক্তরের নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা, রোনালদ আরাউহোর দল ছাড়ার গুঞ্জন— সব মিলিয়ে ঝটিকাসংকুল সময়ের মাঝে কে ভেবেছিল, এই বার্সেলোনা সম্প্রতি ছন্দে ফিরতে শুরু করা রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করবে? তাও আবার শেষের অন্তত ৪০ মিনিট দশজন নিয়ে খেলে? অথচ মাঠের খেলায় সেটিই বাস্তবতা হয়ে ধরা দিল। আর হাজারো সমস্যার মাঝে লাল-নীল জার্সির মায়ায় পড়া বিশ্বব্যাপী কোটি কুলেরের হৃদয় বিগলিত করা একটি রাত উপহার দিল দলটি।
পড়তে পড়তে অনেকেরই হয়তো চোখ ভরে উঠবে, কিন্তু মরুর বুকে যে বিজয়গাঁথা বার্সেলোনা রচনা করল, তা কি এসব উপমার তুলনায় কম কিছু?
১১০ দিন আগে
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
আর্থিক সংকটে পড়ে খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে না পারা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের স্বীকার হলেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফের জ্বলে উঠল বার্সেলোনা। আর তাতে ম্যাচের শেষের ৩০ মিনিটের বেশি সময় একজন খেলোয়ড় কম নিয়ে খেলেও চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের জেদ্দায় সুপার কাপের ফাইনালে শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদকে ৫ গোল দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। অবশ্য জয়ের পথে দুটি গোল হজমও করতে হয়েছে তাদের।
এই হারে সুপার কাপ জয়ের হিসাবে বার্সেলোনাকে এ বছর আর ছোঁয়ার প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘ হলো রিয়াল মাদ্রিদের (১৩)। অপরদিকে, জিতে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল (১৫) ব্লাউগ্রানা খ্যাত দলটি।
এদিন ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তারপর কোথায় যেন হারিয়ে যায় দলটির সমন্বয়, সেইসঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের রক্ষণভাগও। আর দলীয় প্রচেষ্টা, সতীর্থদের দারুণ বোঝাপড়া আর নির্ভুল ফিনিশিংয়ে একের পর এক গোল করতে থাকে কাতালান জায়ান্টরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ২২তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান লামিন ইয়ামাল। এরপর ৩৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লেভানডোভস্কির গোলে প্রথমবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। তারপর ৩৯ ও ৪৮তম মিনিটে রাফিনিয়ার জোড়া গোল ও প্রথমার্ধের যোগ করা দশম মিনিটে আলেহান্দ্রো বালদের গোলে ব্যাবধান ৫-১ করে ফেলে তারা।
আরও পড়ুন: হেরে বার্সেলোনার রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন ধূলিসাৎ রিয়ালের
দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পর ৬০তম মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করেন রদ্রিগো। এরপর বার্সেলোনা রক্ষণে মনোযোগ দিলে আর গোল করা হয়ে ওঠে না কোনো দলেরই। ফলে ৫-২ গোলে শেষ হয় ম্যাচ।
এর ফলে সুপার কাপ জয়ের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুবারের দেখায় দুবারই বড় ব্যবধানে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাল বার্সেলোনা। গত ২৭ অক্টোবর লা লিগায় সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে অনুষ্ঠিত প্রথম এল ক্লাসিকো ৪-০ গোলে হেরেছিল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর বার্সেলোনাকে প্রথম শিরোপা জেতালেন হান্সি ফ্লিক। সেইসঙ্গে দুটি এল ক্লাসিকোতে ডাগআউটে থেকে দুটিই জিতলেন এই জার্মান কোচ।
বার্সেলোনার পরবর্তী ম্যাচ আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি)। কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ওই ম্যাচে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে মাঠে নামবে কাতালানরা। একদিন পর সেল্তা ভিগোকে আতিথ্য দেবে রিয়াল মাদ্রিদ।
১১০ দিন আগে
বিলবাওকে হারিয়ে সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনা
হান্সি ফ্লিকের অধীনে দুর্দান্তভাবে মৌসুম শুরু করলেও বছরের শেষদিকে এসে খেই হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে পুরনো ক্লেশ ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে ফের জয়যাত্রা শুরু করেছে দলটি।
শনিবার কোপা দেল রের ম্যাচে চতুর্থ স্তরের দল বারবাস্ত্রোকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বছর শুরু করা বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয় ম্যাচেই ছিল শক্ত প্রতিপক্ষ— আথলেতিক বিলবাও। তবে সেই পরীক্ষাতেও সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন বছরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছে নানা সমস্যায় জর্জরিত কাতালানরা।
বুধবার রাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম সেমিফাইনালে বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন গাভি। অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করার মাঝে ৫২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন লামিন ইয়ামাল। সুযোগ পেয়েছিলেন বিলবাওয়ের খেলোয়াড়রাও তবে বার্সার অফসাইডের ফাঁদ আর নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে দলটির।
আরও পড়ুন: হেরে ১২৬তম বছর শুরু বার্সেলোনার
এদিন ম্যাচের প্রথম থেকেই বিলবাওয়ের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে বার্সেলোনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চতুর্থ মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে উঠে পরপর দুটি সুযোগ তৈরি করেন জুল কুন্দে-রাফিনিয়ারা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে দুটিই মাঠে মারা যায়।
ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ৭০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে মাঠে একক আধিপত্য বিস্তার করে বার্সেলোনা। তবে এর পর খানিকটা ঝিমিয়ে যায় তারা। এ সময় সুযোগ কাজে লাগানোর পরিবর্তে ধীর লয়ে খেলতে থাকে বিলবাও-ও। ফলে ম্যাচের গতি বেশ পড়ে যায়। অবশ্য এর মধ্যেই ম্যাচর সপ্তদশ মিনিটে চকিতে আক্রমণে উঠে গোল আদায় করে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
পেদ্রির লং পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে বিলবাওয়ের ডিফেন্স চিরে ছয় গজ বক্সের মধ্যে নিচু ক্রস দেন আলেহান্দ্রো বালদে। আর দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে তা থেকে গোল আদায় করে দলকে এগিয়ে নেন গাভি।
গোল পাওয়ার পর ফের উজ্জীবীত ফুটবলে ফেরে বার্সেলোনা। আরও পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে মনোযোগী হয় এরনেস্তো ভালভের্দের শিষ্যরাও। ফলে আবারও জমে ওঠে ম্যাচ।
ম্যাচের ২৩তম মিনিটে বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোনকে একা পেয়েও ফিনিশিংয়ের অভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফিনিয়া। তবে রাফিনিয়ার শট সিমোন ঠেকিয়ে দিলে তা চলে যায় পেছনে থাকা লামিনের কাছে। তিনি দুর্বল শট নিলে সেটিও প্রতিহত করে দলকে বিপদমুক্ত করেন সিমোন।
প্রথমার্ধের শেষের মিনিট দশেক সমতায় ফিরতে জোর চেষ্টা চালায় বিলবাও। একের পর এক আক্রমণেও ওঠে তারা। তবে ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতা আর বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের আর গোলের মুখ দেখা হয়ে ওঠেনি। ফলে ব্যবধানে ধরে রেখেই বিরতিতে যায় কাতালানরা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
প্রথমার্ধে ৫৩ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে ৬টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার চারটিই লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় তারা। অপরদিকে, বিলবাও পাঁচটি শট নিলেও তার মাত্র একটি লক্ষ্যে ছিল।
১১৪ দিন আগে
লামিনের মাঝে নিজের কৈশোর দেখতে পান মেসি
বাঁ পায়ের জাদু দিয়ে ইতোমধ্যে ফুটবল বিশ্বে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন বার্সেলোনার তরুণ স্প্যানিশ প্রতিভা লামিন ইয়ামাল। অসাধারণ ড্রিবলিং, ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে গোলের জন্য বেশ আগে থেকে অনেকেই তাকে বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন। এবার সেই কথায় সমর্থন দিলেন খোদ মেসি।
সম্প্রতি জার্মানিতে ক্রীড়া সামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাসের সদর দপ্তরে একটি ইভেন্টে মেসির কাছে নতুন প্রজন্মের একজন খেলোয়াড়ের নাম জানতে চাওয়া হয়। সেখানে লামিন ইয়ামালের সম্পর্কে বলতে গিয়ে মেসি জানান, তার মধ্যে নিজের ছোটবেলার ছায়া দেখতে পান তিনি।
‘তরুণ ফুটবলারদের দারুণ একটি প্রজন্ম উঠে এসেছে, যাদের সামনে অনেক বছর পড়ে আছে। যদি কাউকে বেছে নিতে হয়, আর সেটা তার বয়স ও ভবিষ্যত বিবেচনায়, আমি শুনেছি অনেকেই লামিন ইয়ামালকে বেছে নিয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই আমিও তা–ই নেব, (এ বিষয়ে) আমি একমত।’
তিনি বলেন, ‘তবে এটি শুধু তার ওপর নয়, আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। কারণ, ফুটবল এমনই। কিন্তু সে-ই (ফুটবলের) বর্তমান এবং নিঃসন্দেহে দারুণ ভবিষ্যৎ তার সামনে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: বার্সার বিশেষ দিনে নিজের ‘বিশেষ দিন’ কোনটি, জানালেন মেসি
মেসির মতোই লা মাসিয়া ফুটবল অ্যাকাডেমিতে বেড়ে উঠে বার্সেলোনার জার্সিতে পেশাদার ফুটবলে হাতেখড়ি হয়েছে লামিনের। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সিনিয়র ফুটবলে নাম লেখানোর পর থেকে যেখানেই খেলছেন, একের পর এক রেকর্ড নিজের নামে করে নিচ্ছেন গত জুলাইতে ১৭ বছরে পা দেওয়া এই উইঙ্গার।
বার্সেলোনার জার্সিতে অভিষেকের দিন ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ (১৫ বছর ২৯০ দিন) ফুটবলার হিসেবে মাঠে নামেন তিনি। এরপর স্পেন জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নেমেই দেশটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলারদের অন্যতম বনে যান তিনি। তার চেয়ে কম বয়সে লা রোহাদের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন মাত্র চারজন খেলোয়াড়।
গত বছরের অক্টোবরে গ্রানাদার বিপক্ষে প্রথম জালের দেখা পেয়ে লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে (১৬ বছর ৮৭ দিন) গোল করার কীর্তি গড়েন এই তরুণ প্রতিভা। এরপর ২০২৪ সালের ইউরো আসরেও চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স উপহার দেন বাঁ পায়ের এই প্রতিভাবান ফুটবলার। টুর্নামেন্টের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ড গড়ার পর স্পেনকে রেকর্ড চতুর্থবার ইউরোপসেরার মুকুট পরাতে রাখেন বড় অবদান। একটি গোল ও চারটি অ্যাসিস্টে টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতার আগে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোল ও অ্যাসিস্টদাতার স্বীকৃতি অর্জন করেন তিনি।
এরপর চলতি বছরের ব্যালন দ’র অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েও নতুন ইতিহাস গড়েন লামিন। সেখানে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে বর্ষসেরা তরুণ ফুটবলারের পুরস্কার কোপা ট্রফি জেতেন তিনি। সব মিলিয়ে এই তরুণ এখন শুধু বার্সেলোনারই নন, বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পাচ্ছেন।
তবে লিওনেল মেসির সঙ্গে নিজের তুলনা শুনতে ভালো লাগলেও আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রোর পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব নয় বলে মত তার।
সম্প্রতি একটি স্প্যানিশ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লামিন বলেন, ‘আমাকে ফুটবল ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়, বিষয়টি মন্দ লাগে না। তবে মেসির পর্যায়ে পৌঁছানো অসম্ভব।’
আরও পড়ুন: লিওনেল মেসির পর্যায়ে পৌঁছানো অসম্ভব: ইয়ামাল
১৪০ দিন আগে
দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
বার্সেলোনা-ডর্টমুন্ড ম্যাচ মানেই যেন সুন্দর ফুটবল, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ পসরা ও গোলের উচ্ছ্বাসের সমন্বয়ে জমজমাট এক লড়াই। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। তবে উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিয়েও নিয়তি মেনে শেষ পর্যন্ত ব্যথার মালা গলায় পরতে হয়েছে কালো-হলুদ জার্সিধারীদেরই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনা ও ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হওয়া সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জিগনাল ইদুনা পার্কে স্বাগকিতদের ৩-২ গোলে হারিয়েছে কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচের নাটক, উত্তেজনা, উল্লাস- সবই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। তাই বলে প্রথমার্ধ যে ম্যাড়মেড়ে ছিল, মোটেও তা নয়।
এদিন ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই পরপর দুটি দারুণ সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে সুযোগগুলো মাঠে মারা যায়।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ম্যাচ এগিয়ে যাওয়ার মাঝে ত্রয়োদশ মিনিটে ফের আরেকটি সুযোগ তৈরি করে কাতালানরা। পাল্টা আক্রমণে উঠে বিপরীত পাশ ধরে অনেকটা ফাঁকায় এগোতে থাকা রাফিনিয়ার উদ্দেশে পায়ের পাতা দিয়ে বাঁকানো সিগনেচার পাস দেন লামিন ইয়ামাল। তবে সেবারও ফিনিংশের অভাবে সুযোগ হারায় দলটি।
চার মিনিট পর গোল করতে পারতেন মার্সেল জাবিৎসার, তবে সতীর্থের পাসে গতি থাকায় সুবিধা করতে পারেননি ডর্টমুন্ডের এই অস্ট্রিয়ান মিডফিল্ডার।
ম্যাচের শুরুতে বার্সাকে চেপে ধরার চেষ্টা করলেও সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। আর তটস্থ হয়ে তাদের স্পেস কমিয়ে দিতে এবং সুযোগ পেলেই ক্ষিপ্র গতিতে আক্রমণে ওঠার চেষ্টায় থাকে নুরি সাহিনের শিষ্যরা।
ভুগতে ভুগতে ৪০তম মিনিটের শুরুতে দারুণ একটি আক্রমণে উঠে গোল পেয়েই গিয়েছিল ডর্টমুন্ড, কিন্তু সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত ক্রসে মাথা লাগিয়েও ইনিয়াকি পেনিয়াকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন সেরহু গিরাসি।
প্রথমার্ধে বলের ওপর একক আধিপত্য ধরে রাখলেও আক্রমণে খানিকটা নিষ্প্রভ ছিল বার্সা। ফলে গোলের উদ্দেশ্যে ৮টি শট নিয়ে তার তিনটি লক্ষ্যে রেখেও কাজের কাজ করতে ব্যর্থ হয় তারা।
অপরদিকে, প্রায় পুরোটা সময়জুড়ে রক্ষণ সামলানো ডর্টমুন্ড মাঝেমধ্যে দুয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও বার্সার অফসাইড ফাঁদ কিংবা ডিফেন্ডারদের নৈপুণ্যে বারবারই হতাশ হয়। ফলে স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন না আনতে পেরেই বিরতিতে যায় দুদল।
১৪২ দিন আগে