ডনিয়েল মালেন
রিয়াল-ডর্টমুন্ড: ধ্রুব লড়াইয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো
ম্যাচের আগে শিষ্যদের প্রতি দলগত ঐক্যের যে ডাক দিয়েছিলেন নুরি সাহিন, মাঠে তার প্রতিফলনের মাধ্যমেই প্রথমার্ধে দাপুটে ফুটবল উপহার দিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কার্লো আনচেলত্তির মাস্টারমাইন্ডের কাছে মার খেয়ে যায় তার কৌশল। ফলে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শোচনীয় পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গতবারের রানার-আপদের।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলতে নামে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে শুরুতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে ডর্টমুন্ডকে ৫-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
এদিন দুই অর্ধে দুই দলের দাপট দেখে দর্শক। প্রথমার্ধে রিয়ালের মাঠে তাদের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়ে এবং কার্যকর রক্ষণাত্মক ফুটবলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের পর আক্রমণে এমন চাপ সৃষ্টি করে রিয়াল যে তা সইবার সামর্থ্য ছিল না ডর্টমুন্ডের রক্ষণভাগের। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ একটি গোল পাওয়ার পরই বালির বাঁধের মতো ভেসে যায় দলটির রক্ষণ দেওয়াল।
আরও পড়ুন: রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে যেখানে কেবল একটি শট গোলে রাখতে সক্ষম হয় রিয়াল মাদ্রিদ, দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে সেখানে আক্রমণই শানায় তারা ১৭টি, তার ৯টি শট ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, প্রথমার্ধে নেওয়া ৬টি শটের পাঁচটিই লক্ষ্যে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে ডর্টমুন্ড শটই নিতে পারে মাত্র দুটি; দুটিই অবশ্য লক্ষ্যে ছিল।
এদিন সাবধানি শুরুর পর ম্যাচের ৩০তম মিনিটে খেলা গড়াতেই ডর্টমুন্ডের অনবদ্য একটি দলীয় প্রচেষ্টা দেখে দর্শক। আর এতেই দারুণ একটি গোল পেয়ে ম্যাচে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
লম্বা লম্বা পাসে মাঠের এপাশ থেকে ওপাশে বল আদান-প্রদান করতে করতে রিয়ালের বক্সের সামনে উঠে আসে ডর্টমুন্ড। সেখান থেকে হঠাৎ বক্সের ভেতরে কিছুটা ডান দিকে বল ঠেলে দেন সেরিউ গিরাসি, তা ধরেই থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন ডনিয়েল মালেন।
এর পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডর্টমুন্ডের জেমি গিটেন্স। এবার তাকে অ্যাসিস্ট করেন মালেন।
রিয়ালের একটি আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণে উঠে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন মালেন। এরপর বিপরীত দিকে ক্রস বাড়ান তিনি। তা দেখে পেছন থেকে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে পা প্রসারিত করে বল একপ্রকার ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন ২০ বছর বয়সী এই ইংলিশ উইঙ্গার। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, রিয়ালের দুজন ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে তিনি ভেতরে ঢুকে পড়লেও তাকে মার্কই করেননি তাদের কেউ।
এর ফলে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বকনিষ্ঠ ইংলিশ ফুটবলার বনে যান গিটেন্স। ২০ বছর ৭৫ দিন বয়সে তিনি এ রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল লিডস ইউনাইটেডের অ্যালান স্মিথের দখলে। ২০০১ সালে ২০ বছর ১২৯ দিন বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল জড়ান তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রথম ডাচ ফুটবলার হিসেবে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে রিয়ালের বিপক্ষে একই ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করার কীর্তি গড়েন মালেন।
২ মাস আগে
রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে যেভাবে চকিতে দুই গোল করে ম্যাচে এগিয়ে গিয়েছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, দ্বিতীয়ার্ধে তেমনভাবেই চমকে দিয়ে দুই গোল করে সমতায় ফেরে রিয়াল মাদ্রিদ। আর এরপর লস ব্লাঙ্কোসদের আক্রমণের তোড়ে কোথায় যেন ভেসে গেল জার্মান ক্লাবটি।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলতে নামে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে শুরুতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে ডর্টমুন্ডকে ৫-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
এদিন ম্যাচের দুই অর্ধে আধিপত্য বিস্তার করে দুই দল। ম্যাচের ৩০ ও ৩৪ মিনিটে দুটি গোল করে ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে নেন যথাক্রমে ডনিয়েল মালেন ও জেমি গিটেন্স।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই এমন আক্রমণ শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ যে তাদের আক্রমণের তোড়ে ডর্টমুন্ডের ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৬০ ও ৬২তম মিনিটে যথাক্রমে আন্টনিও রুয়েডিগার ও ভিনিসিউস জুনিয়রের হঠাৎ দুটি গোলে প্রতিপক্ষের মতোই চকিতে সমতায় ফেরে রিয়াল।
তবে এরপর ম্যাচের রাশ টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়ে ম্যাচ থেকেই কার্যত ছিটকে যায় সফরকারীরা। মাঝে ৮৩তম মিনিটে লুকাস ভাসকেসের গোলে প্রথমবার এগিয়ে যাওয়ার পর ৮৬তম ও যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে আরও দুটি গোল করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ভিনিসিউস।
আরও পড়ুন: রিয়ালকে হারাতে শুধু মনোবলই যথেষ্ট নয়: ডর্টমুন্ড কোচ
এই জয়ে তিন ম্যাচের দুটি জিতে টেবিলের নবম স্থানে উঠে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সেইসঙ্গে শীর্ষে থাকা ডর্টমুন্ডকে টেনে পঞ্চম স্থানে নামিয়ে এনেছে তারা। দুই দলের পয়েন্টই সমান (৬), তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় টেবিলের উপরের দিকে রয়েছে ডর্টমুন্ড।
দিনের অপর ম্যাচে ৪০তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতে প্রথম পয়েন্টের দেখা মিলেছে এসি মিলানের। এর আগে লিভারপুল ও লেভারকুজেনের কাছে হারে পাওলো ফনসেকার শিষ্যরা।
এছাড়া, রেডস্টার বেলগ্রেডকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে মোনাকো। এ ছাড়াও শাখতার দোনেৎস্ককে বিপক্ষে ১-০ গোলে আর্সেনাল, স্লোভান ব্রাতিস্লাভার বিপক্ষে ২-০ গোলে জিরোনা, স্ট্রাম গ্রাসের বিপক্ষে ২-০ গোলে স্পোর্তিং ও ইতালির ক্লাব বোলোনিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে অ্যাস্টন ভিলা।
আজকের ম্যাচ জিতে টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করেছে উনাই এমেরির দল।
তবে হোঁচট খেয়েছে ইউভেন্তুস ও পিএসজি। শেষের দিকে দশজনের দলের পরিণত হওয়া ইউভেন্তুস স্টুটগার্টের কাছে হেরেছে ১-০ গোলে। যোগ করা সময়ে গোল হজম করে ঘরের মাঠ থেকে পয়েন্ট খুইয়েছে তারা। আর পিএসভি আইন্ডহোভেনের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেছে লুইস এনরিকের পিএসজি।
২ মাস আগে
আক্রমণের পসরা সাজিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস
চমক জাগিয়ে বেলজিয়ামকে হটিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে শেষ ষোলোয় উঠলেও নেদারল্যান্ডসের আক্রমণের তোড়ে ভেসে গেল রোমানিয়া। অন্যদিকে, তৃতীয় হয়ে কোনোমতে শেষ ষোলোয় উঠলেও নকআউট পর্বে এসে নিজেদের মেলে ধরল ডাচরা। এর ফলে বড় জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রোনাল্ড কুমানের দল।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) মিউনিখের আলিয়ান্স আরেনায় সপ্তম ম্যাচে রোমানিয়াকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস।
ডাচদের হয়ে গোলের খাতা খোলেন লিভারপুলের স্ট্রাইকার কোডি গাকপো, পরের গোল দুটি করেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বদলি নামা ডনিয়েল মালেন।
এদিন গোলের জন্য মোট ২৩টি শট নিয়ে তার ৬টি লক্ষ্যে রাখতে পারে নেদারল্যান্ডস। অন্যদিকে, রোমানিয়ার ৫টি শটের মাত্র একটি ছিল লক্ষ্যে।
খেলায় ৬৫ শতাংশ সময় বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় ডাচরা। খেলার সর্বোপরি চিত্র এমন হলেও শুরুটা মোটেও একপেশে ছিল না।
প্রথম থেকেই ডাচদের সঙ্গে সমানে লড়াই করতে থাকে রোমানিয়া। নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলার ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম শটটি নেন পিএসজির তরুণ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার জাভি সিমোন্স। তবে দুই মিনিট পরই ডাচ রক্ষণের পরীক্ষা নেয় রোমানিয়া।
এরপর ম্যাচের চতুর্দশ মিনিটে পরপর দুবার আক্রমণে ওঠে রোমানিয়া। তবে গোলের খুব কাছাকাছি গিয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি তারা।
আরও পড়ুন: বেলিংহ্যামের শেষের নাটকের পর স্লোভাকিয়াকে কাঁদিয়ে শেষ আটে ইংল্যান্ড
এসময় সাবধানী ফুটবলে মনোযোগী হয় নেদারল্যান্ডস। ছোট ছোট পাসে বলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। এতে দ্রুত সফলও হয় তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০তম মিনিটে ফলাফলও পেয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।
সিমোন্সের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন গাকপো। এরপর একজন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কাছের পোস্ট দিয়ে নিচু শট শানান তিনি। আর এতেই বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেয়। ফলে প্রথমবার ম্যাচে এগিয়ে যায় ডাচরা।
চলতি আসরে গাকপোর এটি ছিল তৃতীয় গোল। জর্জিয়ার জর্জেস মিকাউতাদজে, জার্মানির জামাল মুসিয়ালা ও স্লোভাকিয়ার ইভান শারাঞ্জের সঙ্গে যৌথভাবে যা টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ।
৫ মাস আগে