ম্যাচের আগে শিষ্যদের প্রতি দলগত ঐক্যের যে ডাক দিয়েছিলেন নুরি সাহিন, মাঠে তার প্রতিফলনের মাধ্যমেই প্রথমার্ধে দাপুটে ফুটবল উপহার দিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কার্লো আনচেলত্তির মাস্টারমাইন্ডের কাছে মার খেয়ে যায় তার কৌশল। ফলে দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শোচনীয় পরাজয় বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গতবারের রানার-আপদের।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলতে নামে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে শুরুতে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে ডর্টমুন্ডকে ৫-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
এদিন দুই অর্ধে দুই দলের দাপট দেখে দর্শক। প্রথমার্ধে রিয়ালের মাঠে তাদের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়ে এবং কার্যকর রক্ষণাত্মক ফুটবলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের পর আক্রমণে এমন চাপ সৃষ্টি করে রিয়াল যে তা সইবার সামর্থ্য ছিল না ডর্টমুন্ডের রক্ষণভাগের। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ একটি গোল পাওয়ার পরই বালির বাঁধের মতো ভেসে যায় দলটির রক্ষণ দেওয়াল।
আরও পড়ুন: রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে যেখানে কেবল একটি শট গোলে রাখতে সক্ষম হয় রিয়াল মাদ্রিদ, দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে সেখানে আক্রমণই শানায় তারা ১৭টি, তার ৯টি শট ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, প্রথমার্ধে নেওয়া ৬টি শটের পাঁচটিই লক্ষ্যে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে ডর্টমুন্ড শটই নিতে পারে মাত্র দুটি; দুটিই অবশ্য লক্ষ্যে ছিল।
এদিন সাবধানি শুরুর পর ম্যাচের ৩০তম মিনিটে খেলা গড়াতেই ডর্টমুন্ডের অনবদ্য একটি দলীয় প্রচেষ্টা দেখে দর্শক। আর এতেই দারুণ একটি গোল পেয়ে ম্যাচে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
লম্বা লম্বা পাসে মাঠের এপাশ থেকে ওপাশে বল আদান-প্রদান করতে করতে রিয়ালের বক্সের সামনে উঠে আসে ডর্টমুন্ড। সেখান থেকে হঠাৎ বক্সের ভেতরে কিছুটা ডান দিকে বল ঠেলে দেন সেরিউ গিরাসি, তা ধরেই থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন ডনিয়েল মালেন।
এর পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডর্টমুন্ডের জেমি গিটেন্স। এবার তাকে অ্যাসিস্ট করেন মালেন।
রিয়ালের একটি আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণে উঠে ডান পাশ দিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন মালেন। এরপর বিপরীত দিকে ক্রস বাড়ান তিনি। তা দেখে পেছন থেকে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে পা প্রসারিত করে বল একপ্রকার ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন ২০ বছর বয়সী এই ইংলিশ উইঙ্গার। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, রিয়ালের দুজন ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে তিনি ভেতরে ঢুকে পড়লেও তাকে মার্কই করেননি তাদের কেউ।
এর ফলে, রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বকনিষ্ঠ ইংলিশ ফুটবলার বনে যান গিটেন্স। ২০ বছর ৭৫ দিন বয়সে তিনি এ রেকর্ড গড়েন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল লিডস ইউনাইটেডের অ্যালান স্মিথের দখলে। ২০০১ সালে ২০ বছর ১২৯ দিন বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল জড়ান তিনি। শুধু তা-ই নয়, প্রথম ডাচ ফুটবলার হিসেবে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে রিয়ালের বিপক্ষে একই ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করার কীর্তি গড়েন মালেন।