ব্যালন দ’র
ব্যালন দ’র: মেয়েদের ফুটবলে বার্সেলোনার জয়জয়কার
আর্থিক সংকটের কারণে পুরুষ দলটি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ভুগলেও বার্সেলোনার নারী দলটি যেন হাওয়ায় ভেসে চলেছে। ক্লাবটিকে দুহাত ভরে সাফল্য এনে দিচ্ছে বার্সার মেয়েরা। ব্যালন দ’র অনুষ্ঠানেও তাই একের পর এক স্বীকৃতি পেল তারা।
টানা দ্বিতীয় ব্যালন দ’র বনমাতির
মেয়েদের ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার ব্যালন দ’র জিতেছেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি। গত মৌসুমেও তার হাতেই উঠেছিল ফুটবলের ‘অস্কার’ খ্যাত এই পুরস্কারটি।
আরও পড়ুন: রদ্রির হাতেই উঠল ব্যালন দ’র
গত ১৮ মাসে বিশ্বকাপ ও দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পর বার্সেলোনার কোনো ফুটবলারই যে এবারও ব্যালন দ’র জিততে চলেছেন, তা অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। তবে শেষ হাসিটা ফুটেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টুর্নামেন্ট সেরা বনমাতির মুখেই।
সোমবার দিবাগত রাতে প্রখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী নাটালি পোর্টম্যানের কাছ থেকে ব্যালন দ’র ট্রফিটি গ্রহণ করেন বনমাতি।
২ সপ্তাহ আগে
রদ্রির হাতেই উঠল ব্যালন দ’র
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রিগো এর্নান্দেসের (রদ্রি) হাতেই উঠল এবারের ব্যালন দ’র। শুরু থেকে ফুটবলের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত এই পুরস্কারটি রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউসের হাতে উঠছে বলে জোর গুঞ্জন থাকলেও অবশেষে রদ্রিই জিতেছেন এটি।
সোমবার দিবাগত রাতে প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলেতে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ব্যালন দ’র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিজয়ী ঘোষণার পর ক্রাচে ভর দিয়ে পুরস্কার নিতে মঞ্চে ওঠেন এসিএলের চোট পাওয়া রদ্রি। এরপর ব্যালন দ’রের ইতিহাসের ৫০তম খেলোয়াড় হিসেবে তার হাতে ‘ফুটবলের অস্কার’ খ্যাত এই পুরস্কার তুলে দেন লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট, এসি মিলান কিংবদন্তি ও ১৯৯৫ ব্যালন দ’রজয়ী জর্জ উইয়াহ।
এর ফলে ৬৪ বছর পর ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত এ পুরস্কারটি জিতলেন স্পেনের কোনো পুরুষ ফুটবলার। সবশেষ ১৯৬০ সালে এটি জিতেছিলেন বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলানের সাবেক মিডফিল্ডার লুইস সুয়ারেস। এতদিন স্পেনে জন্ম নেওয়া একমাত্র ব্যালন দ’র জয়ী ছিলেন তিনিই। এবার তার পাশে বসলেন আরেক মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: ব্যালন দ’র: কে কোন পুরস্কার জিতলেন
পুরস্কার নেওয়ার পর অনভূতি জানাতে গিয়ে রদ্রি বলেন, ‘এটি শুধু আমার একার জয় নয়, গোটা স্প্যানিশ ফুটবলের বিজয়। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এতদিন (স্পেনের) যেসব খেলোয়াড় এই পুরস্কারটি থেকে বঞ্চিত ছিলেন- (আন্দ্রেস) ইনিয়েস্তা, শাভি (এর্নান্দেস), ইকের (ক্যাসিয়াস) ও বুসি (সের্হিও বুসকেটস), এই পুরস্কার আমাদের সবার।’
এ সময় বার্সেলোনার উদীয়মান ফুটবলার লামিন ইয়ামালের প্রতিভার প্রশংসা ঝরে রদ্রির কণ্ঠে।
তিনি বলেন, ‘লামিন খুব তাড়াতাড়িই এটি জিততে চলেছে। এতে আমার কোনো সংশয় নেই। কঠোর পরিশ্রম করতে থাক, (ব্যালন দ’র নিতে) একদিন তুমিও এখানে (মঞ্চে) দাঁড়াবে।’
২ সপ্তাহ আগে
ব্যালন দ’র: ফেভারিটদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ
২০০৩ সালের পর এবারই প্রথম বিশ্ব ফুটবলের সেরা ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন দ’রের জন্য মনোনীত ৩০ ফুটবলারার সংক্ষিপ্ত তালিকায় নেই লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর কেউ। ফলে ফুটবলের নতুন যুগের শুরুতে কে বা কারা হবেন পোস্টার বয়, এ বছরের ব্যালন দ’র জেতার মাধ্যমেই তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আগামী ২৮ অক্টোবর প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ক্রীড়া সাংবাদিকদের ভোটে এই পুরস্কার বিজয়ী নির্বাচিত হয়ে থাকে।
রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন লিগ জেতার পর ব্যালন দ’র জয়ের পর সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ক্লাবটির ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র ও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার জুড বেলিংহ্যাম। তবে ইউরোতে ইংল্যান্ড টেনেটুনে ফাইনালে উঠে স্পেনের কাছে হারের পর বেলিংহ্যামের নাম পরবর্তীতে ফিকে হয়ে গেছে।
এছাড়া ঘরোয়া লিগে অসাধারণ পারফর্ম করেছেন আরও বেশ কয়েকজন। কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর্লিং হালান্ড, হ্যারি কেইনের মতো তারকারা রয়েছেন এই কাতারে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে তাদের কেউই নজর কাড়তে না পারায় পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকলেও ব্যালন দ’রের লড়াই তারা বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়বেন বলেই মনে হয়।
আরও পড়ুন: ২১ বছর পর ব্যালন দ’র লড়াইয়ে নেই মেসি-রোনালদো
এদের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপ্পের নাম আসে সবার আগে। পিএসজিতে থাকাকালে গত মৌসুমে ৫২ গোল ও ২১টি অ্যাসিস্ট করেছেন চলতি মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়া এই স্ট্রাইকার। জিতেছেন লিগ-১, ফেঞ্চ কাপ ও ফরাসি সুপার কাপ। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন লিগের সেমিফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে পিএসজির বিদায় নেওয়ার পর ইউরোতেও সেমিফাইনালে হারে এমবাপ্পের ফ্রান্স। এছাড়া নাকে আঘাত লেগে অসুস্থ থাকায় ইউরোয় তার পারফরম্যান্সও ছিল সাদামাটা।
বায়ার্ন মিউনিখের হ্যারি কেইনও গত মৌসুমে করেছেন ৫২ গোল, সেই সঙ্গে ১৪টি অ্যাসিস্ট রয়েছে তার নামের পাশে। কিন্তু গাদা গাদা গোল করেও বায়ার্নকে বুন্দেসলিগা জেতাতে পারেননি এই স্ট্রাইকার। শুধু বুন্দেসলিগা কেন, ঘরোয়া-চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিলিয়ে গত মৌসুমে জার্মান জায়ান্টদের কোনো ট্রফিই জেতাতে পারেননি কেইন। এরপর টুর্নামেন্টজুড়ে বিবর্ণ ফুটবল খেলে ইউরোর ফাইনালে উঠলেও সেখানে স্পেনের কাছে হেরে হতাশ হতে হয় ইংল্যান্ড অধিনায়ককে।
তাদের মতো আরও একজন ম্যানচেস্টার সিটির নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। ৪৫ গোল, ৬ অ্যাসিস্টের মাধ্যমে গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপ ও উয়েফা সুপার কাপ জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন তিনি। এছাড়া ইউরো বাছাইপর্বই উৎরাতে ব্যর্থ হয়েছে হালান্ডের নরওয়ে। ফলে প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুট জিতলেও জাতীয় দলের জার্সিতে প্রাপ্তির খাতায় কিছুই না থাকায় ব্যালন দ’র প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়বেন তিনি।
সার্বিক দিক বিবেচনা করলে এবারের ব্যালন দ’র জয়ের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র, ক্লাবটির স্প্যানিশ অধিনায়ক দানি কারভাহাল, ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ অধিনায়ক রদ্রি এবং ইন্টার মিলানের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেস।
ভিনিসিউস জুনিয়র
গত মৌসুমে লা লিগা, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় এবারের ব্যালন দ’র জয়ের দৌঁড়ে ভিনিসিউসকে অনেকেই এগিয়ে রাখছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দলের ২-০ ব্যবধানের জয়ে একটি গোল ছিল তার। পাশাপাশি মোট ৬ গোল করে টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন তিনি।
আরও পড়ুন: ব্যালন দ’র: ভিনিসিউস, বেলিংহ্যামকে ফেভারিট মনে করেন না কারভাহাল
২০২৩-২৪ মৌসুমে লা লিগায় ভিনিসিউসের গোলসংখ্যা ১৫টি। এছাড়া স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। সব মিলিয়ে গত মৌসুমে ২৬ গোল ও ১২টি অ্যাস্টি করেছেন এই উইঙ্গার।
তবে ক্লাবের হয়ে আলো ছড়ালেও জাতীয় দলের জার্সিতে মোটেও ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি ভিনিসিউস। সর্বশেষ কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় ভিনির ব্রাজিলকে।
দানি কারভাহাল
সেদিক থেকে হিসাব করলে ব্যালন দ’রের দৌড়ে এগিয়ে থাকার কথা ভিনিসিউসেরই ক্লাব সতীর্থ দানি কারভাহালের। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ভিনির সমপরিমাণ ট্রফি জেতার পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কারভাহাল। ফুটবলের পাশাপাশি রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন ৩২ বছর বয়সী এই উইংব্যাক।
ডিফেন্ডার হয়েও গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে সব মিলিয়ে ৪১ ম্যাচে ৭টি গোল ও ৮টি অ্যাসিস্ট রয়েছে তার নামের পাশে।
লাউতারো মার্তিনেস
দলীয় ও ব্যক্তিগত অর্জনের হিসাব ধরলে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবেন লাউতারো মার্তিনেস। ইতালির ঘরোয়া ফুটবলে সেরি-আ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার ইন্টার মিলান। লিগে ৩৩ ম্যাচ খেলে ২৪ গোল ও ৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন এই আর্জেন্টাইন। সেরি-আয় গত মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি লিগের গোল্ডেন বুটও (সর্বোচ্চ গোলদাতা) জিতেছেন তিনি। এ ছাড়াও ইন্টারের হয়ে গত মৌসুমে ইতালিয়ান সুপার কাপ জিতেছেন মার্তিনেস।
এরপর জাতীয় দলের জার্সিতে আর্জেন্টিনার টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকা জয়ে তার ছিল বড় ভূমিকা। ফাইনালে ২৭ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের একমাত্র গোলেই চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে জেতেন কোপা আমেরিকার গোল্ডেন বুটও।
সব মিলিয়ে গত মৌসুমে ৫৮ ম্যাচে ৩৫ গোল ও আটটি অ্যাসিস্ট করেছেন এই আর্জেন্টাইন।
রদ্রি
এবারের ব্যালন দ’রের লড়াইয়ে সমানে টক্কর দেবেন রদ্রিও। গত মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে গেলেও মাঠের খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী ভিনিসিউসের দলের বিপক্ষে দারুণ পারফর্ম করেন এই কন্ট্রোলিং মিডফিল্ডার। ওপেন প্লেতে ড্র করে শেষে টাইব্রেকারে রিয়ালের কাছে হারে সিটি।
আরও পড়ুন: রদ্রির ব্যালন দ’র নিশ্চিত হয়ে গেছে
এরপর স্পেনের জার্সিতে ইউরো আসরজুড়ে আলো ছড়ান ২৮ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ইউরোর সাত ম্যাচের সাতটিই জিতে স্পেনকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করতে মূলত নাবিকের ভূমিকা পালন করেন রদ্রি।
প্রতিটি ম্যাচের রাশ তার হাতে দিয়েছিলেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে, আর নিখুঁতভাবে ম্যাচের গতি কমানো-বাড়ানো, চুলচেরা সব পাস, বল দখলে দলকে নেতৃত্ব দেওয়াসহ প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণগুলো মাঝমাঠেই নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে স্পেনকে রেকর্ড চতুর্থবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়ন করতে মাঝমাঠে সতীর্থ ও প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের ওপর ছড়ি ঘোরান তিনি। তাই এবারের ব্যালন দ’রের ভোটে তাকে নির্বাচিত না করতে সাংবাদিকদের যে ঘাম ছুটবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত।
সর্বোপরি, পরিপূর্ণ একটি মৌসুম কাটাতে পারেননি ফেভারিটদের কেউই। কেউ ক্লাব ফুটবলে নজর কাড়লেও কেউ কেড়েছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে। আবার ঘরোয়া টুর্নামেন্টে কেউ দাপট দেখালেও অন্যজন দেখিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। কেউ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ঘরোয়া ফুটবল মাতালেও জাতীয় দলের জার্সিতে তার অর্জন নেই বললেই চলে, যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে না পারলেও ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে অন্যজন ছিলেন অসাধারণ। ফলে শিরোপা জয়ের পাশাপাশি মাঠের খেলায় কে কতটা ভূমিকা রাখতে পেরেছেন, তা বিবেচনায় নিয়েই এ বছরের সেরা ফুটবলার নির্বাচন করতে হবে ভোটারদের। আর এক্ষেত্রে ফেভারিট যে কারও হাতে ব্যালন দ’র উঠলেই অবাক না হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকবে।
২ মাস আগে
২১ বছর পর ব্যালন দ’র লড়াইয়ে নেই মেসি-রোনালদো
অনেক জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবার রাতে ঘোষণা করা হয়েছে ব্যালন দ’রে মনোনয়ন পাওয়া ফুটবলারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা। ৩০ জনের এই তালিকায় ২০০৩ সালের পর এবারই প্রথম দেখা যায়নি ইন্টার মায়ামির আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি এবং আল নাসরের পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে।
গত ১৬ বছরের মধ্যে ১৩ বারই বিশ্ব ফুটবলের সেরা এই ব্যক্তিগত পুরস্কার ভাগাভাগি করেছেন বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের দুই গ্রেট। ২০২৩ সালে সর্বশেষ ব্যালন দ’র জেতেন মেসি। সেটি ছিল কোনো ফুটবলারের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ব্যালন দ’র জয়। তবে আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর গত বছর থেকেই ব্যালন দ’রের সংক্ষিপ্ত তালিকায় নেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার এই পুরস্কার জেতা রোনালদো।
২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই দুজনের আধিপত্যে ব্যালন দ’র স্পর্শ করতে পারেননি আর কোনো ফুটবলার। পরের বছর এটি জেতেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়াট মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ। এরপর ২০১৯ সালে ষষ্ঠবারের মতো মেসির হাতে ওঠে পুরস্কারটি। এর ফলে তিনি রোনালদোকে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ ব্যালন দ’র জয়ের চূড়ায় ওঠেন।
আরও পড়ুন: রদ্রির ব্যালন দ’র নিশ্চিত হয়ে গেছে
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালে পুরস্কারটি স্থগিত করে ফেঞ্চ ফুটবল। সেবার দুর্দান্ত পারফর্ম করে ব্যালন দ’র জয়ের দৌড়ে সবার চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন তৎকালীন বায়ার্ন মিউনিখ ও বর্তমান বার্সেলোনা স্ট্রাইকার রবের্ট লেভানডোভস্কি। তবে পরের বছর আবারও জিতে রোনালদোর সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়ান মেসি। তারপর ২০২২ সালে তৎকালীন রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা জেতেন পুরস্কারটি। এরপর ২০২২ বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকা জেতার পর ২০২৩ সালে অষ্টমবারের মতো ব্যালন দ’র জিতে অনন্য উচ্চতায় ওঠেন মেসি।
গত মৌসুমে আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকা জিতলেও ক্লাব ফুটবলে খুব বেশি অর্জন ছিল না লিওনেল মেসির। অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে সৌদি প্রো লিগে ৩১ ম্যাচে ৩৫ গোল এবং সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৫ ম্যাচে ৪৪ গোল করেন রোনালদো। কিন্তু গত জুন-জুলাইয়ে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ইউরোয় পর্তুগালের পাঁচ ম্যাচে একবারও জালের দেখা পাননি ৩৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। কোয়ার্টার-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় বিদায় নিতে হয় ২০১৬ আসরের চ্যাম্পিয়নদের।
এবারের ব্যালন দ’র জেতার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফরোার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র, ক্লাবটির স্প্যানিশ অধিনায়ক দানি কারভাহাল, ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ অধিনায়ক রদ্রি এবং ইন্টার মিলানের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেস।
আরও পড়ুন: ব্যালন দ’র: ভিনিসিউস, বেলিংহ্যামকে ফেভারিট মনে করেন না কারভাহাল
ব্যালন দ’রের জন্য মনোনীত ৩০ জন: জুড বেলিংহ্যাম (রিয়াল মাদ্রিদ), রুবেন দিয়াস (ম্যানচেস্টার সিটি), ফিল ফোডেন (ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো ভালভার্দে (রিয়াল মাদ্রিদ), এমিলিয়ানো মার্তিনেস (অ্যাস্টন ভিলা), আর্লিং হালান্ড (ম্যানচেস্টার সিটি), নিকো উইলিয়ামস (আথলেতিক বিলবাও), গ্রানিট জাকা (বায়ের লেভারকুজেন), আর্তেম দবভিক (জিরোনা/রোমা), টনি ক্রুস (রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (রিয়াল মাদ্রিদ), দানি অলমো (লাইপসিগ/বার্সেলোনা), ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস (বায়ের লেভারকুজেন), মার্টিন ওডেগোর্ড (আর্সেনাল), মাটস হুমেলস (বরুশিয়া ডর্টমুন্ড), রদ্রি (ম্যানচেস্টার সিটি), হ্যারি কেইন (বায়ার্ন মিউনিখ), ডেকলান রাইস (আর্সেনাল), ভিতিনিয়া (পিএসজি), কোল পালমার (ম্যানচেস্টার সিটি/চেলসি), দানি কারভাহাল (রিয়াল মাদ্রিদ), লামিন ইয়ামাল (বার্সেলোনা), বুকায়ো সাকা (আর্সেনাল), হাকান চালানোলু (ইন্টার মিলান), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল), কিলিয়ান এমবাপ্পে (পিএসজি/রিয়াল মাদ্রিদ), লাউতারো মার্তিনেস (ইন্টার মিলান), আদেমোলা লুকমান (আতালান্তা), আন্টোনিও রুয়েডিগার (রিয়াল মাদ্রিদ) ও আলেক্স গ্রিমালদো (বায়ের লেভারকুজেন)।
২ মাস আগে
ব্যালন দ’র: ভিনিসিউস, বেলিংহ্যামকে ফেভারিট মনে করেন না কারভাহাল
লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতায় দলটির দুই তারকা খেলোয়াড় ভিনিসিউস জুনিয়র ও জুড বেলিংহ্যামকে এ বছরের ব্যালন দ’র পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন অনেকেই। তবে রিয়াল মাদ্রিদের দানি কারভাহালই তার সতীর্থদের এ বছর এই পুরস্কারের জন্য ফেভারিট মনে করেন না।
ব্যালন দ’রের জন্য তিন ফেভারিটের মধ্যে ভিনি, বেলিংহ্যামকে দেখছেন না ৩২ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদের এই স্প্যানিশ ফুলব্যাক। তবে তার পছন্দের সেরা পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে তারা আছেন বলে জানিয়েছে স্পেনের ফুটবল সাময়িকী ফুতবল এস্পানিয়া।
যদিও ব্যালন দ’রে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই কারভাহালের। তবে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, নিজেদের সেরাদের কাতারে রাখতে গত মৌসুমে তারা (ভিনি, বেলিংহ্যাম) যথেষ্ট কাজ করেছে। তবে (ব্যালন দ’রে ভোট দিতে পারলে) আমার পাঁচ পয়েন্টের তিন পয়েন্টই আমি দেব রদ্রিকে। আর এক পয়েন্ট দেব হোসেলুকে।
আরও পড়ুন: শাস্তি পেতে পারেন বেলিংহ্যাম
উল্লেখ্য, জমজ বোনকে বিয়ে করায় হোসেলু কারভাহালের ভায়রা। তবে এসবের ওপরে তিনি ফুটবলকে স্থান দেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, ক্লাবের হয়ে আলো ছড়ালেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মোটেও ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি ভিনিসিউস জুনিয়র। চলমান কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে উরগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
তবে, বেলিংহ্যাম উঠেছেন ইউরোর ফাইনালে। গ্রুপ পর্বের খুব বেশি আশার সঞ্চার করতে না পারলেও কোনোমতে নকআউট পেরিয়ে, সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে বেলিংহ্যামদের ইংল্যান্ড।
অপরদিকে, গত মৌসুমেও প্রিমিয়ার লিগ জিতে টানা চার মৌসুম ধরে লিগ শিরোপা ধরে রেখেছে পেপ গার্দিওয়লার ম্যানচেস্টার সিটি। রদ্রি দলটির অধিনায়ক। এছাড়া চলমান ইউরো জয়ের দৌড়ের বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
আজ রাত একটায় রেকর্ড চতুর্থবারের মতো ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে রদ্রি-কারভাহালের স্পেন।
আরও পড়ুন: বিরল কীর্তিতে রোনালদোর পাশে বসলেন ইয়ামাল
৪ মাস আগে