বৈষম্যবিরোধী
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আহনাফের শেষ মুহূর্ত স্মরণ করলেন মা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংস সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান বিএএফ শাহীন কলেজের ছাত্র ১৭ বছর বয়সী শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ। গত ৪ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
আহনাফের মা জারতাজ পারভীন সাফাক জানান, সেদিন আনুমানিক বিকাল ৫টায় আহনাফ গুলিবিদ্ধ হয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনের শুরু থেকেই আহনাফ ছাত্রদের সঙ্গে বের হত। কখনো নিষেধ মানেনি। এর আগেও টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছে সে। তারপরও সে আন্দোলনে যাওয়া বন্ধ করেনি।
আরও পড়ুন: চার দফা দাবিতে 'প্রতিরোধ সপ্তাহ' ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
জারতাজ বলেন, ‘গত ৪ আগস্ট ঘুম থেকে উঠেই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সে। আমি আহনাফকে বলি আজকে তুমি কোনোভাবেই বের হতে পারবে না। কালকে লং মার্চে আমার সঙ্গে যেও। কিন্তু সে বলে আমি যাবোই। আমি যেতে চাইলে সাথে না নিয়েই দুপুরের পর চলে যায়।’
আহনাফের মা বলেন, গিটার বাজানো এবং ফুটবল খেলা ছিল ওর শখ। সেদিনও বাসায় ফিরে কাজিনের বাসায় গিয়ে গানের আড্ডা দেওয়ার কথা ছিল। আমি একটু পর পর ফোন দিয়ে খোঁজ নিই। আমার ছেলে রিসিভ করে বলে আমি ৬০ ফিট সড়কে আছি। নিরাপদে আছি। এর ৩০ মিনিট পর ফোন দিলে বলে আমি মিরপুর-১০ নাম্বারে। তখন বললাম, তুমি বলেছিলে যাবা না। একটু পর কারফিউ। তখনো সে বলেছিল আমি নিরাপদে আছি।
তিনি বলেন, এরপর ৫টার আগে আমি কল দিই। আর কেউ ফোন রিসিভ করে না। চিন্তা বাড়তে থাকে আমার। কারণ ও তো প্রথম রিং বাজলেই আমার ফোন রিসিভ করে। ওর বন্ধুদের ফোন দিলে বলে, আন্টি আমরা তো চলে এসেছি। তখন আমি আর আহনাফের বাবা মিরপুর-১০ এর দিকে যাই।
আহনাফের মা বলেন, এর মধ্যে ফেসবুকে একটা ছবি কেউ শেয়ার করেছিল। আহনাফের বন্ধু সেটা আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়। সেটা দেখে নিজের ছেলের লাশ চিনতে পেরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। ওকে প্রথমে মিরপুরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে জানানো হয় তারা সব লাশ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আমরা সেখানে মর্গে আহনাফের লাশ পাই।
আহনাফের খালা নাজিয়া আহমেদ বলেন, আহনাফ বলতো আমার নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আমার নামে পুরো বিশ্ব তোমাদের চিনবে। এখন ওর নামেই আমাদের কাছে সবাই আসে। ওর স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা এসে দোয়া করেছেন। কলেজে আমাদের সম্মানিত করা হয়েছে। আমাদের একটাই অনুরোধ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে ছয়জন সমন্বয়ক আছেন, তারা যেন এসে আহনাফের মায়ের সঙ্গে একবার কথা বলে যায়। একবার তাকে দেখে যায়।
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে সরকার: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
২ মাস আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে সরকার: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসকল ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন সরকারি হাসপাতালে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসহ যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সরকার।
শনিবার (১৭ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
এতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি কর্মপন্থা নির্ধারণে রবিবার(১৮ আগস্ট) বৈঠকে বসবে।
আরও পড়ুন: চার দফা দাবিতে 'প্রতিরোধ সপ্তাহ' ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
বিজ্ঞপ্তিতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা বিল গ্রহণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রয়োজনে এ সকল বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্র-জনতার সকল বিল সরকার বহন করবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
আরও পড়ুন: মানুষের জন্য কল্যাণকর প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
৩ মাস আগে
প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেন শিক্ষার্থীরা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের নেতারা।
প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'এ বিষয়ে অনেকে প্রশ্ন করছেন, বিশেষ করে সাংবাদিক বন্ধুরা। আমরা এই খুনি সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপে বসতে রাজি নই; আর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।’
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে শহীদ মিনারে রিকশাচালকদের ভিড়
আসিফ তার পোস্টে বলেন, ‘তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমাদের দাবি খুব স্পষ্ট; তাদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনগণের সিদ্ধান্তই আমাদের সিদ্ধান্ত। বুলেট ও সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো সংলাপ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলমান পরিস্থিতি সমাধানে শিক্ষার্থীদের সংলাপের জন্য গণভবনের দরজা সব সময় খোলা।
তিনি বলেন, 'গণভবনের দরজা খোলা, যখনই আন্দোলনকারীরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে চায়, আমি তাদের সঙ্গে বসতে প্রস্তুত।’
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে 'অসহযোগ আন্দোলনের' জরুরি নির্দেশনা
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ-আ. লীগ কর্মীর সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
৩ মাস আগে
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে 'অসহযোগ আন্দোলনের' জরুরি নির্দেশনা
'অসহযোগ আন্দোলন' সফল করার লক্ষ্যে জনগণকে বেশ কিছু জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলন।
নির্দেশনায় সারাদেশে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে ব্যাপক পদক্ষেপের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে এসব নির্দেশনা দেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো অবরোধ
মূল নির্দেশাবলীর মধ্যে রয়েছে:
১. কোনো ট্যাক্স পেমেন্ট নয়: নাগরিকদের সব ধরনের ট্যাক্স বা লেভি পেমেন্ট আটকে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়।
২. বিল পরিশোধ স্থগিত: বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ, গ্যাস বা পানির বিল পরিশোধ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৩. প্রতিষ্ঠান বন্ধ: অফিস-আদালত ও কলকারখানাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে কর্মচারীদের কাজে যোগ না দিয়ে মাস শেষে বেতন আদায়ে উৎসাহিত করা হয়েছে।
৪. শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত রাখা: সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
৫. রেমিট্যান্স সীমাবদ্ধতা: ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স না পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
৬. সরকারি অনুষ্ঠান বর্জন: নাগরিকদের সমস্ত সরকারি সভা, সেমিনার ও ইভেন্ট বর্জনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
৭. বন্দর শ্রমিকদের ধর্মঘট: বন্দর শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বা কোনো পণ্য খালাস না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ-আ. লীগ কর্মীর সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬
৮. কারখানা বন্ধ: পোশাক কারখানাসহ কোনো কারখানা চালু থাকবে না। শ্রমিকদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।
৯. গণপরিবহন স্থগিত: গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা যেন কর্মস্থলে না যায়।
১০. সীমিত সময় ব্যাংক চালু: জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি রবিবার ব্যাংক খোলা থাকবে।
১১. পুলিশ কর্তব্যের সীমাবদ্ধতা: পুলিশ অফিসারদের প্রোটোকল, দাঙ্গা বা প্রতিবাদের দায়িত্ব থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়, কেবলমাত্র রুটিন স্টেশনের কাজ সম্পাদন করতে বলা হয়েছে।
১২. অফশোর লেনদেন নিষিদ্ধ: মানি লন্ডারিং রোধে অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে।
১৩. সামরিক বিধিনিষেধ: বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যতীত সেনাবাহিনী সেনানিবাসের বাইরে দায়িত্ব পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করবে।
১৪. আমলাতান্ত্রিক অনুপস্থিতি: আমলাদের সচিবালয়ে উপস্থিত না হতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক বা উপজেলা কর্মকর্তাদের অফিসের বাইরে থাকতে বলা হয়েছে।
১৫. বিলাসবহুল পণ্যের দোকান বন্ধ: বিলাসবহুল পণ্য, শো-রুম, মল, হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে।
হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহন পরিষেবা, অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, ফায়ার সার্ভিস, মিডিয়া, প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট পরিষেবা এবং জরুরি ত্রাণ সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো অব্যাহত থাকবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকানগুলো বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানাতে শহীদ মিনারে রিকশাচালকদের ভিড়
৩ মাস আগে