লেভানডোভস্কি
মৌসুম শেষ কামাভিঙ্গার, ফাইনালে আলাবাকে নিয়ে সংশয়ে রিয়াল
গেতাফের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকলেও কোপা দেল রের ফাইনালের আগে দুঃসংবাদ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার। এছাড়া ফাইনালে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবাও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে আরদা গুলেরের গোলে গেতাফেকে ১-০ ব্যবধানে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। আলাবা শুরুর একাদশে থেকে ম্যাচ শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামেন কামাভিঙ্গা। তবে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয় অস্বস্তি নিয়ে।
ম্যাচশেষে আনচেলত্তি জানান, কামাভিঙ্গা ও আলাবা পেশিতে টান পেয়েছেন। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের পাওয়ার আশা করছেন না তিনি।
কোচের সেই আশঙ্কা সত্যি করে আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, কামাভিঙ্গার বাঁ পায়ের অ্যাডাক্টর টেন্ডন সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই মিডফিল্ডারকে।
এর ফলে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে এই ফরাসি মিডফিল্ডারের। এমনকি আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপও খেলতে পারবেন না তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কোপের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক আরানচা রদ্রিগেস জানিয়েছেন, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে কামাভিঙ্গাকে। আগস্টের মাঝামাঝি লা লিগার পরবর্তী মৌসুম শুরুর হওয়ার সময় দলে ফিরবেন এই মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
কামাভিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে হারালেও আলাবাকে নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আনচেলত্তি, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে।
আরানচা জানিয়েছেন, আলাবার চোট ততটা গুরুতর নয়। আগামীকাল (শুক্রবার) তিনি যদি খুব বেশি অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে দলের সঙ্গে সেভিলে যেতে পারেন।
সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচের আগে কামাভিঙ্গার ছিটকে যাওয়া ও আলাবাকে নিয়ে সংশয় থাকায় রিয়ালের লেফট ব্যাক পজিশনে এখন একমাত্র নাম ফ্রান গার্সিয়া। তবে চলতি মৌসুমে তার পারফরম্যান্স খুব বেশি আশা জাগানিয়া নয়। ফলে ১৭ বছর বয়সেই ফুটবল বিশ্বের আলো কেড়ে নেওয়া লামিন ইয়ামালকে আটকাতে কী কৌশল অবলম্বন করবেন আনচেলত্তি, তার ওপর দলের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফাইনাল ম্যাচে দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না। এদের মধ্যে দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাও চোট পেয়ে বেশ আগেই এই মৌসুমের জন্য দলের বাইরে চলে গেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন কামাভিঙ্গা। তাছাড়া দাভিদ আলাবা ও ফেরলঁ মঁদির খেলা নিয়েও রয়েছে সংশয়। পাশাপাশি চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপ্পে শনিবারের ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনা যে খুব ভালো অবস্থায় আছে, তা নয়। চোটের কারণে কাতালান দলটিও আছে বিপদে।
আরও পড়ুন: কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
লেগানেসের বিপক্ষে চলতি মাসের ১২ তারিখের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান দলটির নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। এরপর সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন চলতি মৌসুমে বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কিও। শুধু কোপার ফাইনালই নয়, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেও তাকে না পাওয়া শঙ্কায় আছেন হান্সি ফ্লিক।
এছাড়া, পেশির চোটে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে দলটির মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদোর। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন অনুশীলনে ফিরলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন তারা। মাঠে ফিরতে তাদের আরও কিছুটা দেরি আছে।
তাছাড়া বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ম্যাচ খেলার ধকল থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বেশি বিশ্রামের সুযোগ মিলবে রিয়াল মাদ্রিদের। সব মিলিয়ে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ছাড়াই কোপার ফাইনালে শনিবার রাতে মাঠে নামতে হচ্ছে দুই দলকে। ফলে দুই কোচের কৌশল ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে উঠতে চলেছে এবারের কোপা দেল রে।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
১০ দিন আগে
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
আর্থিক সংকটের কারণে স্কোয়াডের ব্যাপ্তি বাড়াতে না পারার ফল এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বার্সেলোনা। মৌসুমের শেষে এসে যখন সম্ভাব্য সবগুলো শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা দলটির জন্য জোরালো হচ্ছে, ঠিক তখনই টানা ম্যাচ খেলে চলায় একের পর এক দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা চোট পেয়ে ছিটকে যাচ্ছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে ঘরের মাঠে অসাধারণ এক প্রত্যাবর্তনে সেল্তা ভিগোর কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেয় হান্সি ফ্লিকের দল।
দুই বছর পর লা লিগা শিরোপা ঘরে তুলতে শুধু এই ম্যাচটি নয়, লিগের অবশিষ্ট ম্যাচগুলোতেও জয়ের বিকল্প নেই কাতালানদের। তাছাড়া আগামী শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে তারা। এরপর ১ ও ৭ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সেরি-আ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান। ১১ মে-ই আবার লিগে রিয়ালকে ঘরের মাঠে আতিথ্য দেবে বার্সেলোনা। সব মিলিয়ে মহা গুরুত্বপূর্ণ কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করছে দলটির সামনে।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
মৌসুমজুড়ে যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে এই পর্যায়ে এসেছে হান্সি ফ্লিকের দল, তাতে বার্সা সমর্থক থেকে শুরু করে ফুটবল সমালোচক—সবার কাছেই এ মৌসুমের সম্ভাব্য সব শিরোপার অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার কাতালান জায়ান্টরা।
তবে নতুন ফরমেটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং সব প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত টিকে থাকায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার ফুসরত পাচ্ছেন না দলটির খেলোয়াড়রা, যার প্রভাব পড়ছে তাদের শরীরে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই তা প্রকাশিত হয়ে এখন বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলটির জন্য।
সেল্তা ম্যাচে পায়ের পেশিতে টান লাগায় ৭৮তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কি। এরপর আজ (রবিবার) তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ভক্তদের দুঃসংবাদ শুনিয়েছে বার্সেলোনা। ক্লাবের বিবৃতিতে তার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই চোটের ফলে অন্তত তিন সপ্তাহ তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে বলে একাধিক স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তা সত্যি হলে কোপা দেল রের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে পাবেন না ফ্লিক। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগে তার খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
গত সপ্তাহে লিগ ম্যাচে চোটে পড়েন দলটির লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। তিনিও হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন।
বালদের অনুপস্থিতিতে বার্সার রক্ষণ খানিকটা দুর্বল হয়ে গেছে। মাঠের খেলায় তা স্পষ্টতই চোখে পড়ে। এদিকে, দলটির সব শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাকে সব শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় পরিণত করেছে লেভানডোভস্কির অনুপস্থিতি।
১৪ দিন আগে
আতলেতিকো-বার্সেলোনা: অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো
চলতি মৌসুমে ইউরোপের বদলে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে অন্যতম দুটি নাম আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এক দল বিপুল অর্থ খরচ করে সাজিয়েছে দুর্দান্ত এক দল, অন্যটি টাকার অভাবে একাডেমির কিশোর ফুটবলারদের তুলে দিয়েছে নতুন এক কোচের হাতে।
আতলেতিকোর অর্থ আর হান্সি ফ্লিকের জাদুকরি ছোঁয়ায় দুই দলেই এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। চলতি মৌসুমে এই দুই দলের আগের দুই ম্যাচেও মিলেছিল ধ্রুপদী লড়াইয়ের দেখা। তবে তৃতীয়বারের দেখায় যা হলো তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য।
দুপক্ষই ম্যাচে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিয়েছে। চলুন দেখে নেই উত্তেজনাকর এই ম্যাচটি শুরু হয়ে কীভাবে শেষ হলো।
এদিন মাঠে নেমেই দুর্লভ এক রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ, এরপর বার্সেলোনা এবং পরে আবারও লস রোহিব্লাঙ্কোসদের জার্সি গায়ে চাপানো ফরাসি ফরোয়ার্ড আন্তোয়ান গ্রিজমান। লা লিগায় ৫২০তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। আর এতে করে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড় বনে গেছেন সোনালি চুলের এই ফুটবল তারকা।
এই কীর্তি আছে মাত্র আর একজনের। আর্জেন্টিনা থেকে শৈশবে স্পেনে পাড়ি জমিয়ে সে দেশটিকেই নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলা লিওনেল মেসির। তবে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও আর এক ম্যাচ মাঠে নামলে মেসিকে ছাড়িয়ে যাবেন গ্রিজমান।
সেইসঙ্গে চলতি মৌসুম তো বটেই আরও কয়েক বছর সিমিওনের অধীনে খেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না এই আতলেতিকো কিংবদন্তির। সেক্ষেত্রে মেসিকে ছাড়িয়ে বহুদূর এগিয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরাসি তারকা।
৪৮ দিন আগে
আরও একটি প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শীর্ষে ফিরল বার্সেলোনা
অসাধারণ পারফর্ম করেও ভাগ্যের ফেরে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে দুর্দান্ত আতলেতিকো যখন জয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে, তার মাঝেই প্রায় অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করে বার্সেলোনাকে পথ দেখালেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। আর সেই পথে এগিয়ে গিয়েই দিয়েগো সিমিওনের রক্ষণাত্মক ফুটবল ভেঙেচুরে একাকার করে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নিল বার্সেলোনা।
রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোয় রবিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
ম্যাচের ৪৫ ও ৭০তম মিনিটে আতলেতিকোকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন হুলিয়ান আলভারেস ও আলেকজান্ডার সোরলথ। এর পরপরই আরও জ্বলে ওঠে বার্সেলোনা। ৭২তম মিনিটে সেই আক্রমণের সুর বেঁধে দেন লেভানডোভস্কি। এরপর ৭৮তম মিনিটে ফেররান তোরেস দলকে সমতায় ফেরানোর পর যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বার্সাকে প্রথমবার এগিয়ে নেন লামিন ইয়ামাল। শেষ মুহূর্তে ফেররানের আরও এক গোলে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা।
এই জয়ে ২৭ ম্যাচে ১৯ জয় ও তিন ড্রয়ে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠল কাতালান দলটি। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্টও ৬০, তবে মুখোমুখি লড়াই ও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে যেতে হয়েছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের।
অন্যদিকে, লিগে টানা দুই ম্যাচ হেরে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে আতলেতিকো মাদ্রিদের। রিয়ালের সমান ২৮ ম্যাচে দলটির সংগ্রহ ৫৬ পয়েন্ট। তবে ওসাসুনার বিপক্ষে নিজেদের বাকি থাকা ম্যাচটি জিতে দলটির সঙ্গে ব্যবধান ৭ পয়েন্ট এবং রিয়ালের সঙ্গে ৩ পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে বার্সেলোনার।
আরও পড়ুন: প্রথমে গোল পেয়েও হেরে সুযোগ হাতছাড়া করল আতলেতিকো
লিগের মাঝামাঝি সময় থেকে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদকে সমানে টক্কর দিয়ে এলেও মাত্র ১০ ম্যাচ বাকি থাকতে পরপর দুই ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলো দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। এছাড়া সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারল দলটি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর দুই লেগে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে প্রতিযোগিতাটি থেকে ছিটকে গেছে তারা।
এখন কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এই বার্সেলোনাকেই তাদের মাঠে ৪-৪ গোলে রুখে দিয়ে প্রতিযোগিতাটিতে এখনও নিজেদের ধরে রেখেছে আতলেতিকো। আর লা লিগায় নিভু নিভু করে জ্বলছে তাদের শিরোপাস্বপ্ন।
অপরদিকে, নতুন বছরে বার্সেলোনার অপরাজেয় যাত্রা অব্যাহত রইল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ ম্যাচে (১৫ জয়, ৩ ড্র)। এছাড়া চলতি মৌসুমে ঘরের মাঠে লিগের প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হারের পর কোপা দেল রের সেমিফাইনালে ৪ গোল করেও ড্র করতে হয় ফ্লিকের শিষ্যদের; দুই ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকার পর আতলেতিকোর মাঠে এসে অবশেষে দলটির বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল তারা।
শুধু তা-ই নয়, বার্সেলোনার দায়িত্ব নেওয়ার পর সিমিওনের দলের বিপক্ষে হান্সি ফ্লিকেরও প্রথম জয় এটি।
শনিবার রাতে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ভিয়ারিয়ালকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আরও পড়ুন: ২৭ সেকেন্ডের গোলে ম্যাচ জিতেও টাইব্রেকারে আতলেতিকোর হার, কোয়ার্টারে রিয়াল
আতলেতিকো-বার্সা ম্যাচের মধ্যে দিয়ে দুই সপ্তাহের আন্তর্জাতিক বিরতিতে গেল লা লিগা। আগামী ৩০ মার্চ আরেক কাতালান দল জিরোনার বিপক্ষে লা লিগার ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরবে বার্সেলোনা। তার এক দিন আগে আরও এক কাতালান ক্লাব এস্পানিওলের মুখোমুখি হবে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
এরপর আগামী ২ এপ্রিল একই ভেন্যুতে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে মাঠে নামবে এই দুই দল।
৪৯ দিন আগে
রেফারিং নিয়ে ফের বিতর্ক, তবে জিতে দুই মাদ্রিদকে টপকে শীর্ষে বার্সেলোনা
রেফারিদের আলোচনার কেন্দ্রে রেখে একটি সপ্তাহ শেষ করল লা লিগা। প্রথমে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে বিতর্কিত লাল কার্ড দেওয়া ও রিয়ালের জয়বঞ্চিত থাকা, এরপর আতলেতিকো মাদ্রিদ ম্যাচে শুরুতেই লাল কার্ড দেওয়ায় দশজন নিয়ে খেলে তাদের কোনোমতে হার এড়ানোর মতো ঘটনার পর রায়ো ভায়েকানোর একটি গোল অফসাইডে বাতিল করে বার্সেলোনার ড্রয়ের সম্ভাবনাকে জয়ে পরিণত করার মধ্য দিয়ে শেষ হলো সপ্তাহ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে হেরেছে রায়ো ভায়েকানো।
পেনাল্টি থেকে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করে এদিন বার্সাকে জিতিয়েছেন রবের্ট লেভানডোভস্কি।
এই জয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ তিন স্থান ওলট-পালট হয়ে গেছে।
লিগের ২৪তম রাউন্ডে মাদ্রিদের দুই দল ড্র করে দুই পয়েন্ট করে হারানোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিন নম্বর থেকে ফের পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায় উঠে গেছে বার্সেলোনা।
আরও পড়ুন: ওসাসুনায় ড্র, শীর্ষস্থান থেকে তিনে নেমে যাওয়ার শঙ্কায় রিয়াল মাদ্রিদ
২৪ ম্যাচে ১৬ জয় ও ৩ ড্রয়ে দলটির পয়েন্ট ৫১। সমান ম্যাচে ১৫ জয় ও ৬ ড্রয়ে সমান পয়েন্ট নিয়েও বার্সার চেয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় শীর্ষস্থান থেকে দুইয়ে নেমে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর ১৪ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে দুই থেকে তিনে অবনমন হয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদের।
এতে করে লিগের শীর্ষ তিন দলের পয়েন্ট ব্যবধান ৩ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১-এ। ফলে মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে এসে জমে গেছে শিরোপার লড়াই।
এদিন একটির বেশি গোল করতে না পারলেও ম্যাচে পরিষ্কার ফেবারিট ছিল কাতালানরাই। ম্যাচজুড়ে ৬০ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে গোলের উদ্দেশে মোট ১৪টি শট নিয়ে তার পাঁচটি লক্ষ্যে রাখে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। অপরদিকে, রায়োর আটটি শটের চারটি লক্ষ্যে ছিল।
৭৬ দিন আগে
কাঙ্ক্ষিত জয় পেতে ঘাম ছুটল বার্সেলোনার
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ হারায় ব্যবধান কমাতে নিজেদের ম্যাচটি জেতার প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। তবে কাঙ্ক্ষিত সেই জয় পেতে রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে লামিন-রাফিনিয়া-লেভানডোভস্কিদের।
রবিবার কাতালুনিয়ার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে দেপোর্তিভো আলাভেসের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি।
এদিন মাঠে নেমেই ফুটবলের পাশাপাশি শারীরিক সামর্থ্য দিয়ে বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের অস্বস্তিতে রাখে আলাভেসের ফুটবলাররা। পুরোটা সময় সেই চ্যালেঞ্জ ধরে রাখে তারা। ফলে বল পায়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই পাস দেওয়া তো দূরের কথা, পজেশন ধরে রাখাই মুশকিল হয়ে পড়ে কাতালান জায়ান্টদের। সেইসঙ্গে বল কেড়ে নিয়ে বার্সার রক্ষণে ত্রাস ছড়ানো তো ছিলই। ফলে গোলের সুযোগ তৈরি করতে হিমশিম খেতে হয় ফ্লিকের শিষ্যদের।
আলাভেসের চ্যালেঞ্জ সামলে ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই প্রথমবার গোলের সুযোগ তৈরি করে বার্সেলোনা। সতীর্থের কাছ থেকে আসা পাস ধরে ড্রিবলিং করতে করতে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থেকে বাঁ দিকে কিছুটা ফাঁকায় থাকা রাফিনিয়াকে পাস দেন লামিন। বল ধরে বক্সে ঢোকার মুখে জোরালো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করার চেষ্টা করেন রাফিনিয়া, তবে বল সামান্যের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
আরও পড়ুন: এস্পানিওলে ধরাশায়ী রিয়াল মাদ্রিদ
পঞ্চদশ মিনিটে উড়ন্ত পাসে হেড করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সা মিডফিল্ডার গাভি ও আলাভেস উইঙ্গার তমাস কোনেচনিকে। এর দুই মিনিট পর কাতালানদের বিপদে ফেলেই দিয়েছিল আলাভেস। তবে শটটি পোস্টের ধারেকাছেও রাখতে পারেনি তারা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ শেষে ৪২তম মিনিটে আরও একবার আশা জাগানিয়া শট নেন পেদ্রি। তবে সেই শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আলাভেস গোলরক্ষক হেসুস ওউয়োনো।
গোলশূন্য প্রথমার্ধ শেষে বিরতির পর কন্ট্রোলিং মিডফিল্ড থেকে মার্ক কাসাদোকে উঠিয়ে অভিজ্ঞ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এবং হলুদ কার্ড পাওয়া ডিফেন্ডার রোনালদ আরাউহোকে উঠিয়ে এরিক গার্সিয়াকে নামিয়ে দেন ফ্লিক। ফ্রেঙ্কির দক্ষতা ও সতীর্থদের সঙ্গে অসাধারণ সমন্বয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ভোল পাল্টে ফেলে বার্সেলোনা।
৯১ দিন আগে
নাটকীয় বেনফিকা-বার্সা ম্যাচে হলো যেসব রেকর্ড
ফুটবলপাড়ায় গতরাতের পাগলাটে ম্যাচের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। বার্সেলোনা সমর্থকদের অনেকে এখনও স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছেন। এর মাঝে চলুন দেখে নেই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওই ম্যাচটি কতগুলো রেকর্ডে নাম তুলল।
বেনফিকাকে ৫-৪ গোলে হারানোর রাতে জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। এর মাধ্যমে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮টি। এর ফলে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বসেছেন তিনি। ৯ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারই সতীর্থ রবের্ট লেভানডোভস্কি। তিনিও ম্যাচটিতে পেয়েছেন জোড়া গোলের দেখা।
গোল করায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও গোলে অবদান রাখার তালিকায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। আট গোলের পাশাপাশি তিনটি অ্যাসিস্টের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে মোট ১১ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।
রাফিনিয়ার প্রথম গোলটি ছিল ডি-বক্সের বাইরে থেকে হেডারে করা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় গোল। সেটিও দেখা গেল এক যুগ পর। সবশেষ ২০০৩ সালে আয়াক্সের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করেন ক্লাব ব্রুজের নরওয়ে স্ট্রাইকার রুনে লাঙ্গে।
আরও পড়ুন: ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
গতরাতে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল আদায় করে নতুন উচ্চতায় উঠেছেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে পেনাল্টি থেকে গোল করায় লিওনেল মেসিকে (১৮) ছাড়িয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই পোলিশ। স্পট কিক থেকে গোল করার রেকর্ডে ১৯ গোল নিয়ে রোনালদোর সঙ্গে এখন যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন লেভা। সামনের ম্যাচগুলোতে পেনাল্টি গোলে রূপান্তর করতে পারলেই সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।
ইউরোপীয় এই প্রতিযোগিতার নাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার পর থেকে মাত্র পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েও ম্যাচ হেরেছেন ভাঙ্গেলিস পাভলিদিস।
২০০৩ সালে সর্বপ্রথম এমন দুর্ভাগ্যজনক কীর্তি গড়েন ব্রাজিল কিংকদন্তি রোনালদো নাজারিও। সে বছর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করেও রিয়াল মাদ্রিদকে ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ হন তিনি; ৪-৩ গোলে ম্যাচটিতে জয় পায় ইউনাইটেড। এরপর ২০১০ সালে সান সিরোতে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেও টটেনহ্যামকে জেতাতে পারেননি গ্যারেথ বেল; ওই ম্যচটিও ৪-৩ গোলে শেষ হয়। ২০২০ সালে তুরস্কের মিডফিল্ডার ইরফান কাভেচি ইস্তানবুল বাসাকসেহিরের জার্সিতে হ্যাটট্রিক করেন, তবুও লাইপসিগের কাছে ৪-৩ গোলে হারে তার দল। পরের বছর কপাল পোড়ে ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কুর। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেও লাইপসিগ ম্যাচটি হারে ৬-৩ ব্যবধানে। এ মৌসুমে সেইসব অভাগাদের দলে নাম লেখালেন পাভলিদিস।
ম্যাচ হারলেও গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক (৩০ মিনিট) করেছেন এই গ্রিক ফরোয়ার্ড। এই তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছেন লেভানডোভস্কি। ২০২২ সালে রেডবুল জালৎসবুর্গের বিপক্ষে ৭-১ গোলে বায়ার্নের জয়ের ম্যাচে মাত্র ২৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন এই স্ট্রাইকার। এছাড়া ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের হয়ে ২৪ মিনিটে নরওয়ের ক্লাব রোজেনবর্গের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মার্কো সিমোনে।
আরও পড়ুন: ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
চার গোল হজম করেও ইউরোপের এই এলিট লিগের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে গতরাতে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে বার্সেলোনা। এর আগে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে টটেনহ্যামকে একই স্কোরলাইনে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে আর্সেনাল।
তবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচ জিতল বার্সেলোনা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে (অন্তত ১০ ম্যাচ) এখন সবার উপরে হান্সি ফ্লিক। বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনা মিলিয়ে ২৪ ম্যাচ খেলেছে তার দল, যার ২১টিই জিতেছেন তিনি; এছাড়া ড্র করেছেন একটি ও হেরেছেন মাত্র দুটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত ৮৮ শতাংশ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এই জার্মান কোচের।
১০২ দিন আগে
ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
খ্যাতিমান কোনো নাট্যকার বা সিনেমার গল্পলেখককেও যেন হারিয়ে দিল বেনফিকা-বার্সেলোনা ম্যাচ। একের পর এক দৃশ্যপট পরিবর্তন, বারবার ভাগ্যদেবীর রসিকতা, ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর জানুয়ারির শীতে বৃষ্টির হানা, ব্যবধান কমিয়ে ফের ২ গোলে পিছিয়ে পড়া এবং একেবারে শেষ মুহূর্তে হারতে গিয়েও অকল্পনীয়ভাবে জিতে যাওয়া— বিশ্বের দুর্দান্ত সব থ্রিলার গল্পের চেয়ে কোনো অংশেই কম কিছু ছিল না। এসবের জেরে পুরোটা সময় আনন্দে টইটম্বুর থেকে ম্যাচশেষে গোমড়া মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেনফিকার সমর্থকদের। ‘অবিচার করা হয়েছে’ ভেবে রাতের ঘুম তাদের হবে কি না, বলা মুশকিল।
পর্তুগালের দা লুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
এর ফলে সাত ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেবিলের চূড়ায় থাকা লিভারপুলের সঙ্গে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ভানগেলিস পাভলিদিসের প্রথমার্ধের হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোল, সব মিলিয়ে চার গোল করে বেনফিকা। অপরদিকে, দুই অর্ধে পেনাল্টি থেকে দুই গোল করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি এবং এরিক গার্সিয়ার একটি ও রাফিনিয়ার জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।
এদিন খেলা শুরুর পরপরই বেনফিকার দুর্দান্ত একটি আক্রমণে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে ক্রস দেন আলভারো কারেরাস। অসাধারণ ভলিতে প্রথম স্পর্শেই তা থেকে সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন পাভলিদিস।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
গোল খাওয়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে বার্সেলোনা, অপরদিকে বেনফিকাও সফরকারীদের ছেড়ে কথা বলার মনোভাব দেখায় না। ফলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনার পারদ চড়ে খেলায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে সমতায় ফেরে কাতালান জায়ান্টরা। বেনফিকার বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢোকার পর আলেহান্দ্রো বালদের শট প্রতিহত করতে গিয়ে তার পায়ে পাড়া দিয়ে বসেন দলটির পর্তুগিজ ডিফেন্ডার তমাস আরাউহো।
শুরুতে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা আবেদন করেনি, রেফারিও গুরুত্ব দেনটি বিষয়টিতে। তবে কিছুক্ষণ পর ভিএআর বক্স থেকে রেফারিকে রিভিউ দেখার কথা জানানো হয়। এরপর টাচলাইন মনিটর থেকে রিভিউ দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, আর নিখুঁত স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান লেভানডোভস্কি।
১০৩ দিন আগে
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
হাজারো সংকটের মাঝেও কীভাবে লক্ষ্যে অটল থেকে, মাথা ঠান্ডা রেখে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, তা-ই যেন দেখিয়ে চলেছেন হান্সি ফ্লিক। একের পর এক খেলোয়াড়ের চোট এবং ক্লাবের আর্থিক সংকটে নতুন খেলোয়াড় না পেয়ে একাডেমি লা মাসিয়া থেকে যুবাদের মূল দলে এনে জোড়াতালি দিয়ে শিষ্যদের মাঠে নামিয়ে চলেছেন এই জার্মান কোচ। অথচ এমনই তার দলের পারফরম্যান্স যা কোটি বার্সাভক্তকে ভুলিয়ে দেয়— দলটি ঠিক কতটা সংকটের মধ্যে সময় পার করছে। আর তেমনই এক স্মরণীয় ম্যাচ তিনি উপহার দিলেন রবিবার রাতেও।
সবশেষ কয়েক ম্যাচ উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আসার মাঝে দানি অলমো ও পাউ ভিক্তরের নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা, রোনালদ আরাউহোর দল ছাড়ার গুঞ্জন— সব মিলিয়ে ঝটিকাসংকুল সময়ের মাঝে কে ভেবেছিল, এই বার্সেলোনা সম্প্রতি ছন্দে ফিরতে শুরু করা রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করবে? তাও আবার শেষের অন্তত ৪০ মিনিট দশজন নিয়ে খেলে? অথচ মাঠের খেলায় সেটিই বাস্তবতা হয়ে ধরা দিল। আর হাজারো সমস্যার মাঝে লাল-নীল জার্সির মায়ায় পড়া বিশ্বব্যাপী কোটি কুলেরের হৃদয় বিগলিত করা একটি রাত উপহার দিল দলটি।
পড়তে পড়তে অনেকেরই হয়তো চোখ ভরে উঠবে, কিন্তু মরুর বুকে যে বিজয়গাঁথা বার্সেলোনা রচনা করল, তা কি এসব উপমার তুলনায় কম কিছু?
১১১ দিন আগে
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
আর্থিক সংকটে পড়ে খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে না পারা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের স্বীকার হলেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফের জ্বলে উঠল বার্সেলোনা। আর তাতে ম্যাচের শেষের ৩০ মিনিটের বেশি সময় একজন খেলোয়ড় কম নিয়ে খেলেও চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের জেদ্দায় সুপার কাপের ফাইনালে শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদকে ৫ গোল দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। অবশ্য জয়ের পথে দুটি গোল হজমও করতে হয়েছে তাদের।
এই হারে সুপার কাপ জয়ের হিসাবে বার্সেলোনাকে এ বছর আর ছোঁয়ার প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘ হলো রিয়াল মাদ্রিদের (১৩)। অপরদিকে, জিতে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল (১৫) ব্লাউগ্রানা খ্যাত দলটি।
এদিন ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তারপর কোথায় যেন হারিয়ে যায় দলটির সমন্বয়, সেইসঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের রক্ষণভাগও। আর দলীয় প্রচেষ্টা, সতীর্থদের দারুণ বোঝাপড়া আর নির্ভুল ফিনিশিংয়ে একের পর এক গোল করতে থাকে কাতালান জায়ান্টরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ২২তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান লামিন ইয়ামাল। এরপর ৩৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লেভানডোভস্কির গোলে প্রথমবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। তারপর ৩৯ ও ৪৮তম মিনিটে রাফিনিয়ার জোড়া গোল ও প্রথমার্ধের যোগ করা দশম মিনিটে আলেহান্দ্রো বালদের গোলে ব্যাবধান ৫-১ করে ফেলে তারা।
আরও পড়ুন: হেরে বার্সেলোনার রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন ধূলিসাৎ রিয়ালের
দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পর ৬০তম মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করেন রদ্রিগো। এরপর বার্সেলোনা রক্ষণে মনোযোগ দিলে আর গোল করা হয়ে ওঠে না কোনো দলেরই। ফলে ৫-২ গোলে শেষ হয় ম্যাচ।
এর ফলে সুপার কাপ জয়ের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুবারের দেখায় দুবারই বড় ব্যবধানে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাল বার্সেলোনা। গত ২৭ অক্টোবর লা লিগায় সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে অনুষ্ঠিত প্রথম এল ক্লাসিকো ৪-০ গোলে হেরেছিল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর বার্সেলোনাকে প্রথম শিরোপা জেতালেন হান্সি ফ্লিক। সেইসঙ্গে দুটি এল ক্লাসিকোতে ডাগআউটে থেকে দুটিই জিতলেন এই জার্মান কোচ।
বার্সেলোনার পরবর্তী ম্যাচ আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি)। কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ওই ম্যাচে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে মাঠে নামবে কাতালানরা। একদিন পর সেল্তা ভিগোকে আতিথ্য দেবে রিয়াল মাদ্রিদ।
১১২ দিন আগে