পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পদ বাঁচাতে তিন উপদেষ্টাকে তিন দাবি পূরণের আল্টিমেটাম ডাকসুর
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ৩ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে স্বরাষ্ট্র, আইন ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠকে এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
ডাকসুর পক্ষ থেকে প্রথম দাবিতে বলা হয়, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষ হামলাকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী সব সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। একইসঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাসহ রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সব অর্গানকে (অঙ্গ সংস্থাকে) দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। যাদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানানো হয়। পাশাপাশি এই হামলাকে সমর্থন ও উসকানি দেওয়া ‘কালচারাল ফ্যাসিস্টদের’ সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এসব পদক্ষেপ দ্রুত দৃশ্যমান করার দাবি করে ডাকসু।
দ্বিতীয় দাবিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক চিরুনি অভিযান শুরুর আহ্বান জানানো হয়। নিষিদ্ধ সংগঠনের সব স্তরের নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে বলা হয়, এ বিষয়ে সরকারের অবহেলা আর মেনে নেওয়া হবে না।
তৃতীয় দাবিতে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানবতাবিরোধী অপরাধে দেওয়া রায় কার্যকরের দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে গণহত্যাকারী ও অভিযুক্তদের আশ্রয় দেওয়ার প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। অভিযুক্তদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যাবে না বলেও দাবি জানানো হয়।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু সেখানে অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন না হওয়ায় আজ (সোমবার) দুপুরে হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
২ দিন আগে
আসন্ন নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য অ্যাসিড টেস্ট: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বড় পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে পরাজিত ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রংপুর জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের সবকিছুর ভিত্তি আইনশৃঙ্খলা। শুরুতে সমস্যা থাকলেও এখন অবস্থা ভালো। পুলিশ গুছিয়ে উঠে নিজেরা সংহত হতে পেরেছে। সামনে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় টেস্ট (পরীক্ষা)। কেননা অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, সামনের নির্বাচন একটি আদর্শ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ ইতোমধ্যেই তাদের অবস্থান সুসংগঠিত করেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, আমাদের অ্যাসিড টেস্ট। নির্বাচনে পরাজিত ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে। আমরা চাই, ভালো একটা নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে চলে যেতে।’
তৌহিদ হোসেনের মতে, ‘দুটো সেক্টরে (খাতে) বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। বাইরের দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, কিন্তু আমরা পারছি না। আমরা চেষ্টা করছি। ডাক্তার, নার্সের সমস্যা নিরসনের অংশ হিসেবে (অন্তর্বর্তী সরকারের) এই স্বল্প সময়ে সাড়ে ৩ হাজার নার্স ও ৩ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই খাতে বাজেট বাড়ানো হয়েছে। আগামী বছর তা দেখা যাবে। আমরা কিছু প্রকল্প শুরু করেছি। আশা করছি, পরের সরকার তা ধরে রাখবে।’
প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রাথমিক শিক্ষার খুব ভয়ঙ্কর বাজে অবস্থা। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রাইমারি শিক্ষকদের অনেক বেশি বেতন দিই, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো কর্মস্পৃহা দেখতে পাই না।’
১১ দিন আগে
তারেক রহমানের ফেরার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকার এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পায়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান এখনো ট্রাভেল পাসের জন্য আবেদন করেননি। তিনি আবেদন করলেই সরকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দ্রুত ইস্যু করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ছেলের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হলেও সরকার কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা পায়নি বলে জানান তিনি।
তার কথায়, তারেক রহমানের পরিবার বা বিএনপির পক্ষ থেকেও তার দেশে ফেরার বিষয়ে এখনো সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে চাইলে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। দল বা পরিবার সিদ্ধান্ত নিলে তাকে বিদেশে পাঠাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার।
এর আগে, গেল রবিবারও (৩০ নভেম্বর) তিনি জানিয়েছিলেন, তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে সরকার এক দিনের মধ্যেই ‘ওয়ান-টাইম ট্রাভেল পাস’ প্রদান করতে সক্ষম। তার ভাষ্যে, ‘আজ জানালে কালই আমরা পাস দিতে পারব, আর পরশুদিনই তিনি দেশে ফেরার ফ্লাইটে উঠতে পারবেন।’
২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১৮ মাস কারাভোগ করেন তারেক রহমান। পরে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান এবং তার কয়েক দিন পরই (১১ সেপ্টেম্বর) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। এরপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সরকারের মতে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা পুরোপুরি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, আর এ বিষয়ে যে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পেলেই সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৫ দিন আগে
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারত থেকে পর্যবেক্ষক আসার অনুমতি বাংলাদেশ দেবে কি না, তা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, এটি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সহায়তা না চাইলে পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন বা আসার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি পর্যবেক্ষক মিশনকে আলাদাভাবে কোনো সহায়তা দেবে না।
মো. তৌহিদ হোসেন জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনের পরিচালনার কাঠামো নির্ধারণ করেছেন এবং এর বাস্তবায়ন সম্পূর্ণভাবে কমিশনের ওপর নির্ভর করছে।
মিয়ানমারে বাংলাদেশ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কেন পাঠাবো এটা হলো প্রথম প্রশ্ন। এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
২১ দিন আগে
রাজনীতির মৌলিক পরিবর্তনে তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তোলা জরুরি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করে তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে দুই দিনব্যাপী ‘বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় যেতে চাইবে এটা স্বাভাবিক, তবে দেশের ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্যও পদক্ষেপ নিতে হবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, রাজনীতি এখনও আমাদের প্রজন্মের নেতাদের হাতে, তবে আগামী ১০-১৫ বছরে তরুণরা অভিজ্ঞতা অর্জন করে মৌলিক পরিবর্তন আনবে।
তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, তরুণ প্রজন্ম এই সিস্টেমে মৌলিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে বলে আমি সম্পূর্ণ বিশ্বাসী।উপদেষ্টা আরও বলেন, তরুণরা চলার পথে ভুল করতে পারে, তবে সময় ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারা শক্তিশালী ও ন্যায়সঙ্গত রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলবে।
জ্ঞান ও দক্ষতার গুরুত্ব তুলে ধরে হোসেন বলেন, ‘আমাদের শিখতে হবে। সঠিক জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ থাকলে দেশে ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক রয়েছে।’
দেশের জনসংখ্যা বেশি এবং সম্পদ সীমিত হওয়ায় শিক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দেশের একটি ছোট অংশই মানসম্মত শিক্ষা পায়, আর গ্রামীণ এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্দশাগ্রস্ত। উচ্চশিক্ষার উন্নয়নেও পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপদেষ্টা জুলাই-আগস্ট আন্দোলন এবং পরিবর্তনের জন্য প্রাণ উৎসর্গকারীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশতাক এইচ খান এই সেশনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন।
আন্তর্জাতিক উচ্চতর ইসলামিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউট’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাজলি বিন মালিক, বেঙ্গল ডেল্টা কনফারেন্স ২০২৫-এর এডভাইজরি বোর্ড সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, নেপালের সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ড. দীপক জ্যাওয়ালি এবং ডেইলি স্টারেরর সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম এতে বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ফিরতে চাই না। আমি আশা করি, তরুণরা এই বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে সচেতন থাকবে।
তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় গণহত্যা, ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক এবং মার্কিন শুল্কনীতি নিয়েও কথা বলেন।
মালয়েশিয়ার সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী অধ্যাপক ড. মাজলি বিন মালিক বলেন, বাংলাদেশ গ্লোবাল সাউথের জন্য আশা জাগানিয়া একটি দেশ হতে পারে।
তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
ড. মাজলি শ্রমভিত্তিক অর্থনীতি থেকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশকে স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন এবং এই দেশের সামুদ্রিক অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়াও তিনি আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ আসিয়ানকে পাশে পাবে।
পড়ুন: আগামী সংসদ নির্বাচন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হবে: ইসি আনোয়ারুল
নেপালের সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ড. দীপক জ্যাওয়ালি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অভ্যুত্থান শুধু ব-দ্বীপের জন্য নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তিনি গণতন্ত্রের পাশাপাশি সুশাসনের গুরুত্বও তুলে ধরেন।
ডেল্টা অঞ্চলের ওপর যথেষ্ট একাডেমিক মনোযোগ নেই, তাই দায়রা-এর উদ্যোগ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ ভারদারাজান বলেন, বাংলাদেশ তার ভবিষ্যতের অর্থনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবছে। তবে দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো অর্থনৈতিক বৈষম্য।
মাহফুজ আনাম দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো রাজনীতিবিদরা গণতন্ত্রকে সংসদে প্রবেশের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে।
ড. মুশতাক খান অতীতের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট এবং পরে তাদের গণঅভূত্থান পরবর্তী আন্দোলন ও কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে দায়রা’র উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং বলেন, ‘রাজনীতি স্বচ্ছ হতে হবে। রাজনৈতিক দলের তহবিলের উৎস নিয়ে আমাদের পুনর্বিবেচনা করা দরকার।’
দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রধান প্রতিপাদ্য হলো ‘বাংলাদেশ অ্যাট ক্রস রোডস: রিথিংকিং পলিটিকস, ইকোনমিকস, জিওপলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি’
সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অধিবেশন শুরু হয়। জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেহরিন আমিন ভূঁইয়া সেশনটিতে সভাপতিত্ব করেন।
পরে দায়রা-এর পক্ষ থেকে জুলাই অভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের বিস্তৃত সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
দুদিনব্যাপী বেঙ্গল ডেলটা কনফারেন্সের আয়োজন করেছে ঢাকা ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স (দায়রা)। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গীয় বদ্বীপে জ্ঞানের উৎপাদন ও অগ্রগতি নিয়ে কাজ করে।
প্রতিষ্ঠানটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির গতিশীলতা বোঝাপড়ার চর্চায় কাজ করে যাচ্ছে।
১১০ দিন আগে
ঢাকা সবসময় দিল্লির সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চায়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে ভারতের মেডিকেল টিমের উপস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সর্বদা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় চেয়েছিলাম যে... প্রথম দিন থেকেই আমরা বলেছিলাম, আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক চাই। আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ঢাকায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কেউই কখনও বলেনি আমরা ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই না।’
বাংলাদেশে ভারতীয় মেডিকেল টিমের উপস্থিতি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উন্নত সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক সূচক হিসেবে দেখছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।
বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ভারত থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বুধবার রাতে ঢাকায় পৌঁছেছেন একটি চিকিৎসক দল।
এই বিশেষায়িত দলে রয়েছেন রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল এবং দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরা। পোড়া ও প্লাস্টিক সার্জারি চিকিৎসায় ভারতের শীর্ষস্থানে রয়েছে হাসপাতাল দুটি।
পড়ুন: দগ্ধদের চিকিৎসা সহায়তা দিতে ভারতীয় মেডিকেল টিম ঢাকায়
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা এই রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি নির্ধারিত হাসপাতালে তাদের কাজ শুরু করেছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা ও সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর তারা বাংলাদেশে আসেন।
তারা রোগীদের অবস্থা মূল্যায়ন করছেন এবং প্রয়োজনে ভারতে আরও চিকিৎসা এবং বিশেষায়িত সেবার জন্য সুপারিশ করছেন।
প্রাথমিক মূল্যায়ন এবং চিকিৎসার উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত মেডিকেল টিমও পাঠানো হতে পারে।
২১ জুলাই ঢাকায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন এবং সহযোগিতা ও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগে, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনায় আহতদের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় যেকোনো জরুরি চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা করার জন্য তথ্য জানাতে অনুরোধ করেছে।
মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা দেবেন।
মাইলস্টোন স্কুল বিমান দুর্ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ ও সম্ভাব্য সকল সহায়তা দেওয়ার বার্তার ধারাবাহিকতায় এই বার্তাটি পাঠানো হয়েছে।
গত সোমবার এক বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এবং সকল প্রকার সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
১৪৬ দিন আগে
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ভারতে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হানিসার প্রত্যর্পণের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
প্রত্যর্পণের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের প্রায় এক বছর পরেও হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের ব্যর্থতার জন্য কোনো অনুশোচনা আছে কিনা—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না কে কতটা অনুতপ্ত, তবে আমরা বিষয়টি এভাবেই দেখি- প্রয়োজনে, বিষয়টি (প্রত্যর্পণের অনুরোধ) অনুসরণ করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতে একটি কূটনৈতিক নোট (নোট ভার্বাল) পাঠিয়েছিল—যেটির সঙ্গে কিছু প্রাসঙ্গিক নথিও ছিল। এতে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: গুমের সঙ্গে সেনা সদস্যদের জড়িতের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা: সেনা সদর দপ্তর
তিস্তা চুক্তি ও ৩০ বছরের পুরনো গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে তৌহিদ হোসেন জোর দিয়ে বলেন, এই ধরণের বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
ঢাকা, বেইজিং এবং ইসলামাবাদের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠক সার্কের বিকল্প জোট হিসেবে করা হয়েছিল—গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদন সম্পর্কে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করে বলেন, এই ব্যাখ্যাটি সঠিক নয়।
তিনি বলেন, বৈঠকটি কখনই সার্কের বিকল্প জোট হিসেবে মনে করা হয়নি। এটি সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বৈঠক ছিল এবং এটি কোনোভাবেই কোনো জোট ছিল না বলেও জানান তিনি।
১৬৭ দিন আগে
ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তুরস্কের ইস্তানবুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা—ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৫১তম সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার বক্তব্যে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বেআইনি ও আগ্রাসী সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানান। এ আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং ইরানের সার্বভৌমত্বের মারাত্মক লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের এ ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার এবং বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করার হুমকি সৃষ্টি করেছে।’
তিনি অবিলম্বে এ ধরনের উস্কানি বন্ধের আহ্বান জানান এবং কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধার মাধ্যমে শান্তি নিশ্চিত করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার সময় ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র: টামি ব্রুস
অবিলম্বে ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে বন্ধেরও আহ্বান জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) ও আইসিসির মাধ্যমে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার দাবিতে ওআইসিকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার থাকতে হবে। আমাদের সংহতিকে অবশ্যই কৌশলগত এবং টেকসই পদক্ষেপে রূপান্তরিত করতে হবে।’
এ সময় রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টিও তার বক্তব্যে উঠে আসে। আইসিজেতে ওআইসির আইনি উদ্যোগ এবং ওআইসি টেন ইয়ার প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনে রোহিঙ্গা ইস্যুকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত লক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য ওআইসির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি আইসিজেতে চলমান আইনি কার্যক্রমে অর্থায়নে সহায়তা করতে তিনি আহ্বান জানান।
মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও ইসলামভীতি মোকাবিলায় আরও বিস্তৃত ও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য ওআইসিকে আহ্বান জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের উচিত ওআইসির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, জবাবদিহিতা এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করা।’
সম্মেলনের সাইডলাইনে মালয়েশিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি উটামা হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান, ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফুয়াদ হোসেন, উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদভ বাখতিয়র ওদিলোভিচ এবং পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন মো. তৌহিদ হোসেন।
১৭৮ দিন আগে
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়ন-ঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও ক্রমবর্ধমানভাবে নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তহবিল সংকটে শিক্ষার ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সোয়া ২ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
এ সময় তারুণ্যের গৌরব প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং সাম্প্রতিক জুলাই বিপ্লবসহ সব আন্দোলনে অন্যায় ও অসাম্যের বিরুদ্ধে সর্বদাই সোচ্চার ছিল বাংলাদেশের তরুণ সমাজ।
তিনি বলেন, তরুণরা যদি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে তারা সহজেই চরমপন্থার শিকার হতে পারে। এ ছাড়া দারিদ্র্য, বৈষম্য ও উন্নয়ন-ঘাটতি যদি দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকে, তাহলে একপর্যায়ে তা সহিংসতা ও অস্থিরতায় রূপ নিতে পারে।
বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের তিন শূন্য নীতির কথা উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল একটি ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে থাকবে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে উন্নয়ন ও শান্তি স্থাপন প্রচেষ্টাকে এক সূত্রে যুক্ত করতে হবে।
পাশাপাশি তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিসবিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের দাবি তারেক রহমানের
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য ‘সামাজিক ব্যবসায়’ ব্যবস্থার প্রাসঙ্গিকতার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রবর্তিত এই মডেল দারিদ্র্য বিমোচন ও সংঘাত প্রতিরোধে একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে।
বক্তৃতাকালে একটি সমৃদ্ধ, ন্যয়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
১৮০ দিন আগে
পুশ-ইন বন্ধে ভারতকে আবারও চিঠি দেবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
যথাযথ প্রক্রিয়া অনুরসরণ না করে বাংলাদেশে এখনো নাগরিকদের ঠেলে দেওয়ার (পুশ-ইন) ঘটনার বিষয়টি ভারতকে স্মরণ করিয়ে দিতে একটি সংক্ষিপ্ত চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বা আগামীকাল তাদের আরেকটি ‘সংক্ষিপ্ত’ (কূটনৈতিক নোট) চিঠি দেব।’
চিঠিটির ভাষা নরম হবে, না কি এটি প্রতিবাদপত্র হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি নির্ভর করে কে কীভাবে নেবেন তার ওপর।’
তিনি বলেন, পুশ-ইন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং বাংলাদেশ চেষ্টা করছে যাতে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার বাইরে কিছু না ঘটে।
তিনি জানান, বাংলাদেশকে একটি তালিকা দিয়েছে ভারত। যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ কিছু মানুষকে গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের অবস্থান হলো, প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে যাচাই করা হবে। শুধুমাত্র প্রমাণ সাপেক্ষে বাংলাদেশি নাগরিকদেরই গ্রহণ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দেখছি এখনো পুশ-ইন হচ্ছে। সশরীরে এটি ঠেকানো সম্ভব নয়।’
তিনি জানান, কনস্যুলার ইস্যুগুলোর জন্য একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বাংলাদেশ বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ভারত সম্প্রতি জানিয়েছে, প্রায় ২ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক দেশটিতে রয়েছে—যাদের পরিচয় যাচাইয়ের পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো দরকার।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে তাদের জাতীয়তা যাচাই করতে বলেছি। বর্তমানে ২ হাজার ৩৬০ জনের একটি তালিকা রয়েছে যাদের প্রত্যাবাসন প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশ-ইন
নয়া দিল্লিতে নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, এদের অনেকেই ইতোমধ্যে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। তাদের অনেক ক্ষেত্রে জাতীয়তা যাচাই করা বাকি রয়েছে। এটি ২০২০ সাল থেকে ঝুলে আছে। অর্থাৎ প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, এই যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। যাতে যাদের ফেরত পাঠানো দরকার, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো যায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘তারা(বাংলাদেশ) যেন দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করে।’
তিনি আরও বলেন, ভারতে যারা অবৈধভাবে অবস্থান করছেন—তারা বাংলাদেশি হোক বা অন্য কোনো দেশের নাগরিক হোক—তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সিলেট সীমান্তে একরাতে ১৫৩ জনকে পুশ-ইন করল বিএসএফ
১৯৭ দিন আগে