বোমা হামলা
ইরানে কাসেম সোলাইমানির স্মরণসভায় বোমা হামলায় নিহত ১০৩
২০২০ সালে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৪১ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যেই বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটল। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই বিস্ফোরণকে 'সন্ত্রাসী' হামলা বলে অভিহিত করেছেন।তবে কারা এ হামলার পেছনে রয়েছেন সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলেননি। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
দেশটির জরুরি বিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারস্তকে উদ্ধৃত করে হতাহতের এ সংখ্যা প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিপ্লবী গার্ডের কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার চতুর্থ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ হামলা চালানো হয়। যিনি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় মারা যান। রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ৮২০ কিলোমিটার (৫১০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে কেরমানে তার সমাধিস্থলের কাছে বিস্ফোরণটি ঘটে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন আহত হয়েছ।
একটি ফুটেজে দেখা গেছে, প্রথম বিস্ফোরণের প্রায় ১৫ মিনিট পর দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে। সাধারণত জরুরি অবস্থার সেবাদানকারী কর্মীদের লক্ষ্য করে এবং হতাহতের সংখ্যা বাড়াতেই দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।
রাষ্ট্রীয় টিভি ফুটেজে লোকজনকে চিৎকার করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল পেলেন ইরানের সমাজকর্মী নার্গেস মোহাম্মদি
কেরমানের ডেপুটি গভর্নর রহমান জালালি এই হামলাকে 'সন্ত্রাসী' আখ্যায়িত করেছেন।
ইরানের একাধিক শত্রু রয়েছে যারা এই হামলার পেছনে থাকতে পারে। এরমধ্যে নির্বাসিত গোষ্ঠী, জঙ্গি সংগঠন ও রাষ্ট্রীয় ভূমিকা রয়েছে। ইরান হামাসের পাশাপাশি লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছে।
সোলাইমানি ছিলেন ইরানের আঞ্চলিক সামরিক কার্যক্রমের স্থপতি এবং ইরানের ধর্মতন্ত্রের সমর্থকদের মধ্যে জাতীয় আইকন হিসেবে প্রশংসিত হন। তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সরকারকে সুরক্ষিত রাখতেও সহায়তা করেছিলেন। ২০১১ সালের আরব বসন্তের পর তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে এটি আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হয়েছিল যা আজও চলছে।
২০২০ সালে তার শেষকৃত্যের সময় পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হন।
আরও পড়ুন: ব্রিকস জোটে যোগ দিতে যাচ্ছে ইরান, সৌদি আরব ও মিশরসহ ৬ দেশ
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলা, ৯ সেনা নিহত
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ৯জন সেনাসদস্য নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে।
সামরিক ও তিনজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, দেশে জঙ্গি সহিংসতা ক্রমে বাড়ছে এটা তার লক্ষণ।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় পাঁচ সেনা আহত হয়েছে।
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, আহতদের সংখ্যা ২০।
কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দাবি করেনি।
তবে পাকিস্তানি তালেবানদের সন্দেহ করা হচ্ছে।
কারণ তারা ২০২২ সাল থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বারবার হামলা করছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, আফগানিস্তানে তালেবান শাসন শুরুর পর থেকে এ অঞ্চল বিদ্রোহীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে পিকআপে বাসের ধাক্কা, আগুন ধরে নিহত ২০
এমনকি তারা প্রকাশ্যে আফগানিস্তানে বসবাস করছে।
বান্নু উত্তর ওয়াজিরিস্তানের প্রাক্তন জঙ্গি ঘাঁটির কাছে অবস্থিত। কয়েক বছর আগ পর্যন্ত যেটি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল।
কয়েক বছর আগে দেশটির সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, এই অঞ্চলের সব জঙ্গিঘাটি নির্মূল করা হয়েছে।
তবে বর্তমানে ফের উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান নামে পরিচিত স্থানীয় তালেবানরা এই এলাকায় ফের সংগঠিত হচ্ছে।
পাকিস্তানি তালেবান একটি পৃথক গোষ্ঠী হলেও আফগান তালেবানদের সহযোগী।
২০২১ সালে মার্কিন ও ন্যাটোবাহিনী তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের পর আফগান তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১০ পুলিশ নিহত
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পুলিশভ্যানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। সোমবার বেলুচিস্তান প্রদেশের সিবিআই জেলার একটি সেতুতে এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
তবে, তাৎক্ষণিক এ হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
তবে এর আগেও একাধিকবার বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং স্থানীয় জঙ্গিদের এই ধরনের হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
স্থানীয় পুলিশ প্রধান মাহমুদ নোটেনজাই বলেছেন, হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হতাহতদের এসআইবিআই প্রাদেশিক কোয়েট্টা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলার নিন্দা করেছেন।
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের সর্বোত্তম চিকিৎসা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
শাহবাজ এই হামলাকে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার জন্য শত্রুদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এছাড়াও তিনি সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আব্দুল কুদ্দুস বিজেঞ্জোও এ হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেন, যেসব সন্ত্রাসী এই ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছে তারা পাকিস্তানের শত্রু।
তিনি আরও বলেছেন, তারা দেশের পুলিশের সংকল্পকে টলাতে পারবে না।
দীর্ঘদিন ধরে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইসলামাবাদের কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে বিদ্রোহ করছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৮
পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২০, আহত ৯৬
অমর একুশে বইমেলায় বোমা হামলার হুমকি আনসার আল-ইসলামের
অমর একুশে বইমেলায় বোমা হামলার হুমকি দিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নুরুল হুদাকে চিঠি দিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম।
এ ঘটনায় বাংলা একাডেমির নুরুল হুদা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাকযোগে বাংলা একাডেমির কার্যালয়ে চিঠিটি পাঠানো হয়। পরে বাংলা একাডেমির নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সেটি থানায় নিয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘রাজধানীর দুটি হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে বলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল-ইসলাম। এসব কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে অমর একুশে বইমেলায় বোমা হামলা চালানো হবে বলে জানিয়েছে তারা।’
আরও পড়ুন: জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসারের নায়েবে আমির গ্রেপ্তার: সিটিটিসি
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জিডি করেছে। আমরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি।’
নুরুল হুদা বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরেছেন। কিন্তু সে সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। আমরা শাহবাগ থানায় জিডি করেছি।’
অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডাকযোগে চিঠিটি পাঠানো হয়। আমরা চিঠিটি থানায় পাঠিয়েছি। তারা (পুলিশ) বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’
আরও পড়ুন: পেপার স্প্রে দিয়ে জঙ্গি ছিনতাই: নাটোর আদালতে বিপুল নিরাপত্তায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আরিফ
পাকিস্তানে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ২০, আহত ৯৬
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের একটি মসজিদের ভিতরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ৯৬ জন মুসল্লি আহত হয়েছেন। সোমবার স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পেশোয়ারের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা সাদ্দিক খান বলেছেন, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে অতীতে একই ধরনের আত্মঘাতী হামলায় পাকিস্তানি তালেবানদের দায়ী করা হয়েছে।
আশেপাশের পুলিশ অফিসের অনেক পুলিশসহ প্রায় ১৫০ জন মুসল্লি মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন, এসময় হামলাকারী তার আত্মঘাতী জ্যাকেটের বিস্ফোরণ ঘটায়।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাফর খান জানান, বিস্ফোরণের প্রভাবে মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে এবং এতে অনেকে আহত হয়।
একজন বেঁচে যাওয়া ৩৮ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার মীনা গুল জানান, বোমাটি বিস্ফোরণের সময় তিনি মসজিদের ভেতরে ছিলেন।
গুল আরও বলেন, কীভাবে তিনি অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গেছেন তা তিনি জানেন না। বোমা বিস্ফোরণের পর তিনি শুধু চিৎকার ও চেঁচামেচি শুনতে পান।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা মসজিদের মাঠ থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলার এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মুসল্লিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বোমা হামলায় যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, আহত ১৫
খান বলেন, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এক বিবৃতিতে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি হামলার পিছনে যারা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এক টুইটার পোস্টে বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং এটিকে ‘সন্ত্রাসী আত্মঘাতী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা নিহতদের পরিবারের সঙ্গে থাকবে।’
ইমরান আরও বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উন্নতি করা এবং আমাদের পুলিশ বাহিনীকে যথাযথভাবে প্রস্তূত করা অপরিহার্য।’
পেশোয়ার হল আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী এবং এখানে প্রায়ই জঙ্গি হামলা ঘটে।
পাকিস্তানি তালেবান গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামে পরিচিত। তারা পৃথক গোষ্ঠী হলেও আফগান তালেবানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আফগানিস্তানে ২০ বছর যুদ্ধের পর মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখল করে তালেবান।
টিটিপি পাকিস্তানে ইসলামী আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য, সরকারি হেফাজতে থাকা তাদের সদস্যদের মুক্তি এবং দেশটির সাবেক উপজাতীয় অঞ্চলে পাকিস্তানি সামরিক উপস্থিতি হ্রাস করার জন্য গত ১৫ বছর ধরে বিদ্রোহ চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩ চীনা নাগরিক নিহত
কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
আফগানিস্তানের রাজধানীর কাবুলের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় শুক্রবার একটি শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৯ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন।
তালেবান নিযুক্ত কাবুল পুলিশের মুখপাত্র খালিদ জাদরান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কাবুলের দাশত-ই বার্চি এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটে। এই এলাকায় বেশিরভাগই আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের জনবসতি।
জাদরান জানান, হতাহতদের মধ্যে ছাত্র এবং ছাত্রী উভয়ই রয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতিমূলক পড়াশোনা করছিল। কেন্দ্রটি উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র নামে পরিচিত এবং এটি ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত ও অধ্যয়ন করতে সহায়তা করে।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে সহিংসতার মধ্যে এই আত্মঘাতী বোমা হামলাটি ছিল সর্বশেষতম। তাৎক্ষণিকভাবে কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান দখল করার পর দাশত-ই বার্চি এলাকার জনগোষ্ঠী তালেবানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেট গ্রুপ এবং অন্যদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে মসজিদের কাছে বিস্ফোরণে নিহত ৪
কাবুলে রুশ দূতাবাসে বিস্ফোরণ, দূতাবাসের ২ কর্মীসহ নিহত ৩
কাবুলে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে নিহত ১০
পরমাণু চুক্তি আলোচনায় ‘লিখিত প্রতিক্রিয়া’ পেশ ইরানের
গাড়ি বোমা হামলায় ‘পুতিনের মস্তিষ্ক’ খ্যাত দুগিনের মেয়ের মৃত্যু
মস্কো শহরের উপকণ্ঠে এক গাড়ি বোমা হামলায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘মস্তিষ্ক’ খ্যাত আলেক্সান্দার দুগিনের মেয়ে দারিয়া দুগিনার (২৯) মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির তদন্ত কমিটির মস্কো শাখা জানিয়েছে, শনিবার রাতে দারিয়া যে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন সেটিতে বোমা থাকায় বিস্ফোরণটি ঘটেছে।
আলেক্সান্দার দুগিন ‘রাশিয়ান ওয়ার্ল্ড’ এর একজন বিশিষ্ট প্রবক্তা এবং ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের অন্যতম সমর্থক।
দুগিনাও তার বাবার মতে বিশ্বাসী ছিলেন এবং দেশটির জাতীয়তাবাদী টিভি চ্যানেল জারগ্রাদে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
রবিবার জারগ্রাদ চ্যানেলে দুগিনা সম্পর্কে বলা হয়, ‘দাশা (দারিয়া দুগিনা) তার বাবার মতো ছিলেন। তিনি সবসময় পশ্চিমাদের সঙ্গে লড়াইয়ের পক্ষে ছিলেন।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের খারকিভ থেকে ‘পুতিনের সমর্থক’ আটক
তার বাবার সঙ্গে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর সেখান থেকে ফেরার পথে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
কয়েকটি রুশ গণমাধ্যম প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানায়, ‘দুগিনা যে গাড়িতে ছিলেন সেটি তার বাবার। ফেরার ঠিক আগে তিনি (তার বাবা) অন্য একটি গাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।
তবে ইউক্রেনের রাশিয়া সমর্থিত দোনেৎস্কের পিপলস রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ডেনিস পুশিলিন এটিকে ‘ইউক্রেন সরকার সমর্থিত সন্ত্রাসীদের’ কাজ বলে দাবি করেন।
তিনি আরও দাবি করেন, তারা মূলত আলেক্সান্দার দুগিনকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন: পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব
রাশিয়ার লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ চালানোর অঙ্গীকার পুতিনের
সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর
২০০৫ সালে সারা দেশে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ১৭ তম বার্ষিকী আজ বুধবার। এ হামলায় দুজন নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল।
দিনটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক দল দেশ থেকে চরমপন্থা নির্মূল করার জন্য নতুন করে আহ্বান জানিয়ে ওই হামলায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
২০০৫ সালের এই দিনে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) দেশের ৬৩টি জেলার ৪৩৪টি স্থানে প্রায় ৫০০টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বোমা হামলার ঘটনায় সারাদেশে বিভিন্ন থানায় ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, গত ১৭ বছরে ৯৪টি মামলার বিচার ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩৩৪ জনকে বিভিন্ন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে এবং ৫৫টি মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
আরও জানা যায়, সিরিজ বিস্ফোরণে ২৭ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা হয়। এদের মধ্যে আটজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
এই বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে জেএমবি জাতির সামনে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশের অপচেষ্টা করে। কিন্তু ২০০৭ সালে জেএমবির শীর্ষ ছয় নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যাপক বাধার মুখে পড়ে।
২০০৭ সালের ৩০ মার্চ ঝালকাঠি জেলার দুই বিচারককে হত্যার দায়ে সংগঠনটির ছয় নেতা- শায়খ আবদুর রহমান, তার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই, সামরিক কমান্ডার আতাউর রহমান সানি, আব্দুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ ও সালাহউদ্দিনকে ফাঁসি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় জেএমবির ২ সদস্যের ২০ বছরের কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে গ্রেনেড উদ্ধার মামলায় জেএমবি সদস্যের সাড়ে ৫ বছর কারাদণ্ড
রমনার বটমূলে বোমা হামলা: নারায়ণগঞ্জে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
২০০১ সালের রমনা বটমূল গণহত্যা মামলাসহ দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামিকে বুধবার নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার র্যাব এ তথ্য জানিয়েছে।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার মুফতি আব্দুল হাই হরকাত-উল-জিহাদ-আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) প্রতিষ্ঠাতা আমির।
র্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া উইং) ইমরান খান জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকা থেকে আব্দুল হাইকে গ্রেপ্তার করেছে।
র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ইমরান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় যে আদালত ১৩টি ফৌজদারি মামলায় তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
তিনি ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিও ছিলেন। ওই মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আব্দুল হাই গ্রেনেড হামলা মামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী এসএম কিবরিয়া হত্যা মামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলার আসামি ছিলেন তিনি।
তিনি কুমিল্লা জেলার সাতটি মামলায় ওয়ান্টেড ছিলেন।
আব্দুল হাই ২০০৬ সাল থেকে পলাতক। কুমিল্লা জেলায় তার শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নেন।
তার শ্বশুর গৌরীপুর বাজারে ডিলারশিপের মাধ্যমে ভোজ্যতেল ও কেরোসিন তেলের ব্যবসা করতেন এবং আব্দুল হাই তাকে সহযোগিতা করতেন।
আরও পড়ুন: রমনার বটমূলে বোমা হামলা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
ইমরান বলেন, ২০০৯ সালে তিনি কুমিল্লা ছেড়ে নারায়ণগঞ্জে একটি বাসা ভাড়া নেন যেখান থেকে র্যাব তাকে আটক করে।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ২০০১ সালের রমনা বটমূল গণহত্যা মামলার আরেক পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমান ওরফে আবদুল করিম ওরফে শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার একটি আদালত ২০০১ সালের রমনা বটমূলে বোমা হামলার জন্য আট জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফুর রহমান সরকারি উচ্চবিদ্যালয় সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে পুলিশ ৭৬ কেজি ওজনের একটি ভারী বোমা খুঁজে পায়। ২২ জুলাই যেখানে একটি সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তৃতা করার কথা ছিল।
এরপর ২০০০ সালের ২৩ জুলাই কোটালীপাড়া হেলিপ্যাডের কাছে থেকে সেনাবাহিনীর একটি বোমা বিশেষজ্ঞ স্কোয়াড ৪০ কেজি ওজনের আরেকটি বোমাও উদ্ধার করেছিল।
২০০১ সালে রাজধানীর রমনা বটমূল এলাকায় বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সময় এক বোমা বিস্ফোরণে দশ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রমনা বটমূলে হামলা: ডেথ রেফারেন্সের শুনানি কার্যতালিকা থেকে বাদ
রমনায় শাহ সিমেন্টের ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত
ইউক্রেনীয় স্কুলে রাশিয়ার বোমা হামলায় বহু নিহতের আশঙ্কা
ইউক্রেনের একটি স্কুলে রাশিয়ার বোমা হামলায় বহু ইউক্রেনীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
স্কুলটিতে প্রায় ৯০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সের্হি হাইদাই বলেছেন, বিলোহোরিভকা গ্রামের স্কুলে শনিবারের বোমা হামলার পর আগুন ধরে যায়। জরুরি কর্মীরা দুটি লাশ খুঁজে পেয়েছেন এবং ৩০ জনকে উদ্ধার করেছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ইস্পাত কারখানা থেকে আরও ৫০ নাগরিক সরিয়ে নেয়া হলো
টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপে তিনি লেখেন, ‘সম্ভবত, ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ৬০ জনের সবাই এখন মৃত।’
এছাড়া নিকটবর্তী শহর প্রিভিলিয়ায় রাশিয়ার গোলার আঘাতে ১১ ও ১৪ বছর বয়সী দুজন ছেলে নিহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
লুহানস্ক প্রদেশটি ডনবাস নামে পরিচিত পূর্বাঞ্চলীয় শিল্পের কেন্দ্রস্থল তৈরি করা দুটি এলাকার মধ্যে একটি। ইউক্রেনের রাজধানী দখল করতে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে রাশিয়া তার আক্রমণ ডনবাসে কেন্দ্রীভূত করেছে। এই এলাকায় মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ২০১৪ সাল থেকে লড়াই করছে এবং কিছু অঞ্চল দখলও করেছে।
আরও পড়ুন: মারিউপোলে ইস্পাত কারখানায় অবরুদ্ধ সেনাদের আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি