ড. বদিউল আলম মজুমদার
ফ্যাসিস্টদের সংসদে অন্তর্ভুক্ত না করার সুপারিশ করা হয়েছে: ড. বদিউল
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনকে দুর্বৃত্তমুক্ত করতে হবে। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট ফিরে এসে আবার যেন সংসদে আসন নিতে না পারে।
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। ওই দুর্বৃত্তরা, যারা মানুষ খুন করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে, বিভিন্নভাবে যারা নিপীড়ন নির্যাতন করেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তারা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত না হতে পারে। রাজনীতিতে তারা যেন কোনো ভূমিকা রাখতে না পারে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার কোটবাড়ীতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) ময়নামতি মিলনায়তনের এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা বাঁচাও মঞ্চ আয়োজিত ড্রিম মেগাসিটি কুমিল্লা ও এএইচকে স্যাটেলাইট সিটি বিষয়ে মূল্যায়ন ও অনুমোদন বিষয়ক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন অগ্রহণযোগ্য হবে না: ড. বদিউল আলম
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত তিনটি নির্বাচন, বিশেষ করে ২০১৮ সালে যে কলঙ্কজনক নির্বাচন হয়েছে, বিশেষ কমিশন গঠন করে সে নির্বাচনে যারা যুক্ত ছিল ও জালিয়াতি করেছে, তদন্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেউই দায়বদ্ধতার ঊর্ধ্বে নয়, তাই আমরা সুপারিশ করেছি নির্বাচন কমিশনকে একটি সংসদীয় বিশেষ কমিটির কাছে দায়বদ্ধ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন যদি কোনো অন্যায় করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন দেবে সংসদীয় কমিটি।
তিনি বলেন, নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার ব্যাপারে আমরা অনেকগুলো সুপারিশ দিয়েছি, যাতে কুৎসিত লোকগুলো ওই সুন্দর ইমারতে (সংসদ) প্রবেশ করতে না পারে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নির্দলীয় করার সুপারিশ করেছি আমরা। স্থানীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী করার কথাও বলেছি। বাজেটের ৩০ শতাংশ স্থানীয় সরকারকে দেওয়ার প্রস্তাবনা করেছি। কারণ, স্থানীয় সরকার মানুষের দোরগোড়ায় কাজ করে। রাষ্ট্রপতিকে নির্দলীয় করার সুপারিশ করেছি এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনটা যেন আরও বড় পরিসরে হয়, সেই প্রস্তাবও করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ থাকবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে।
সেমিনারে কার্যপত্র উপস্থাপন করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী।
আরও পড়ুন: সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নিরপেক্ষ ইসির পক্ষেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ড. বদিউল
আরও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, বার্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. আবদুল করিম, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। কারিগরি মতামত প্রদান করেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী আবু সায়েম মজুমদার, জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী নাজমুস সাদাত, কুমিল্লা বাঁচাও মঞ্চের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোতালেব হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
১০৭ দিন আগে
নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের শাস্তির পরিকল্পনা সংস্কার কমিশনের
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের (ইআরসি) প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যেসব অনিয়ম হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা গত তিনটি নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট অপরাধ পর্যালোচনা করছি, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।’
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ থাকবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য নির্ধারণে বিইআরসির ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের
মতবিনিময়ের ফলাফল সম্পর্কে ড. মজুমদার বলেন, সাংবাদিকরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, সংসদের সংরক্ষিত আসনের পালাক্রমে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা, সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বিদ্যমান ৫০টি আসনের পরিবর্তে ১০০-তে উন্নীত করা, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করাসহ বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা সাংবাদিকদের বলেন, কেন তারা এত খারাপ ও ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন করেছেন এবং কারা নির্দেশ দিয়েছে তা জানতে তিনি সংস্কার কমিশনকে বিগত তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়মের জন্য দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশ করতে সংস্কার কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আগের তিন সিইসি হলেন-কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, নির্বাচনে অর্থের ব্যবহার বন্ধে নির্বাচনি প্রচারের ব্যয় রাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে।
সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং জাতীয় পরিচয়পত্রভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছি।
বিকেলে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে আরেকটি মতবিনিময় সভায় বসে সংস্কার কমিশন।
আরও পড়ুন: সারাদেশে একদরে গ্যাস বিক্রি হবে: বিইআরসির চেয়ারম্যান
১৬৪ দিন আগে