নগরবাসী
কবে চালু হবে ঢাকা মেট্রোরেল, এ নিয়ে ভাবনায় নগরবাসী, কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞরা
সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হওয়া সহিংসতায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন। এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এদিকে মেট্রোরেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকাবাসীর জীবনে ফিরে এসেছে পুরনো সেই যানজটের ভোগান্তি।
মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএন সিদ্দিক বলেন, ‘মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণটা অনেক বেশি। তবে কত টাকা ক্ষতি হয়েছে, এটি নিরূপণ করা যায়নি। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।’
এছাড়া হামলায় মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ এবং কবে নাগাদ এটি আবার চালু করা যায়, তা নির্ধারণে ২২ জুলাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিএমটিসিএল।
মেট্রোরেল লাইন-৬-এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে এ কমিটি গঠন করা হয়। সদস্যসচিব করা হয় ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতেখার হোসেনকে। কমিটিকে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় সড়কে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। বেড়েছে যানজটও। রাজধানীবাসীকে ফিরতে হয়েছে আগের সেই ভোগান্তি আর দুর্ভোগের জীবনে। গন্তব্যে পৌঁছাতে এখন উত্তরা ও মিরপুরবাসীকে এখন দুই ঘণ্টার বেশি সময় হাতে নিয়ে বের হতে হচ্ছে।
নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহারকারী বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় ইউএনবির এই প্রতিবেদকের। তারা বলছেন, মেট্রোরেল চালুর পর থেকে এই স্বস্তির যাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। পুরনো অভ্যাসে ফিরতে কেউই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। তার সঙ্গে অর্থ ও সময় দুইই বেশি লাগছে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল ও স্টেশনগুলো সংস্কার করে দ্রুতই চালু করার দাবি জানান তারা।
কবে নাগাদ মেট্রোরেল চালু করা যাবে জানতে চাইলে ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘কবে নাগাদ চালু করতে পারব, তা এখনই বলতে পারছি না। ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন চালু করতে অনেক সময় লাগবে। তবে বাকি স্টেশনগুলো যাতে দ্রুত চালু করা যায় সে বিষয়টি দেখছি আমরা।’
এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মেট্রো স্টেশনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে মেট্রোরেলের কারিগরি ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হতে সময় লাগতে পারে অন্তত আরও ১/২মাস। সেটিও নির্ভর করছে জাপানের কারিগরি কমিটির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রেলস্টেশনগুলো পরিদর্শনের ওপর। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সবকিছু সংস্কার করে ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো. জাকারিয়া বলেন, ‘ কীভাবে সংস্কার কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া যায়, তার একটা রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা যার যার অংশে পরামর্শক, ঠিকাদার ও ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে তালিকা তৈরি করবে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতে আরও সময় লাগবে।’
কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা স্টেশনের সব পরিকাঠামো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বোঝা যাবে বলে জানান তদন্ত কমিটির প্রধান।
যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং ডিএমটিসিএলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি পুনরায় চালু করতে এক বছরের বেশি সময় লাগতে পারে।
অন্যদিকে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকার বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করলে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব।
ডিএমটিসিএল থেকে জানা যায়, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন মেরামতে এক বছর বা তার থেকে বেশি সময় লেগে যাবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক যন্ত্রপাতিই মেরামতযোগ্য অবস্থায় নেই। এগুলো নতুন করে আমদানি করতে হবে। যন্ত্রগুলো অর্ডার দেওয়া হলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করবে। তারপর বাংলাদেশে এনে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘মেট্রোরেলের টিকিট কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে বানানো। কমলাপুরে নতুন একটা স্টেশন হবে। সেখানে যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। নিশ্চয়ই যে কোম্পানি মেট্রোরেলের যন্ত্রপাতি তৈরি করেছে, তাদের কাছে সব নকশা করা আছে। সরকার বা প্রকল্প কর্তৃপক্ষ চাইলে সহজেই যন্ত্রপাতিগুলো দেশে এনে স্টেশন দুটির মেরামতকাজ শুরু করতে পারে। আমার মনে হয়, ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামতে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ কম।’
সরকার দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করলে ছয় মাসের বেশি লাগার কথা না বলে মনে করছেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক।
ডিএমটিসিএল থেকে জানা যায়, দুর্বৃত্তদের হামলায় মিরপুর-১০ স্টেশনের সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রায় শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজীপাড়া স্টেশনে বিভিন্ন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলায় দুটি স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোয় প্রবেশ ও বহির্গমন গেট, অগ্নিরোধক দরজা-জানালা, বিভিন্ন ধরনের সাইনেজ, এসএস ফেন্সিং, বিশেষ ধরনের কাঁচের দরজা ও জানালা, স্টেশনের আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নিনির্বাপক ও শনাক্তকরণ সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চলন্ত সিঁড়ি, বিশেষ ধরনের সুইচ।
এক মাসের মধ্যে আংশিক (মিরপুরের ক্ষতিগ্রস্ত দুটি স্টেশন ছাড়া) মেট্রোরেল চলাচল শুরু করা যাবে কিনা জানতে চাইলে মেট্রোরেলের কোম্পানি সচিব মো. আব্দুর রউফ বলেন, জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আমরা এক মাসের মধ্যে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
৩ মাস আগে
সিলেটে লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ নগরবাসী
রোদ ও ভ্যাপসা গরমের মধ্যে সিলেটে লোডশেডিংয়ে ক্ষুব্ধ উঠেছে নগরীর বাসিন্দারা।
একদিকে তীব্র গরম অন্যদিক রমজান মাস। বিদ্যুৎ চলে গেলে সারা রাত নির্ঘুম কাটাতে হচ্ছে হচ্ছে বলে জানান নগরবাসী।
লোডশেডিংয়ের কারণে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। আর লোডশেডিংয়ের কারণে সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহও বিঘ্নিত হচ্ছে।
আর কয়দিন পর ঈদ। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরাও নিজদের মার্কেট, শপিংমল ও দোকানপাটে করেছেন আলোকসজ্জা। কিন্তু দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময় লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটর দিয়ে চলছে তাদের ব্যবসা। এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
আরও পড়ুন: তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জের জনজীবন
ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং চলছে। এমনকি সেহরি ও ইফতারের সময়ও বিদ্যুৎ থাকে না। মোমবাতি, মোবাইল চার্জার জ্বালিয়ে ইফতার ও সেহেরি করতে হচ্ছে।
গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা মো. জাকির বলেন, আমরা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা সব থেকে বেশি ভুক্তভোগী। সামনে আসছে গরমের দিন, তাই লোডশেডিংও আরও বাড়বে। দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে সিলেটে কলকারখানা তুলনামূলক অনেক কম তবুও আমরা বিদ্যুতের ভেলকিবাজি থেকে মুক্তি পাচ্ছি না।
সিলেট নগরীর লালা দিঘীরপাড়ের গৃহবধূ আইরিন সুলতানা নিপা বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠার আগেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এরমধ্যে গরমে ভোগান্তি। এই কয়দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে বাসায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ইফতার ও সেহরির আগে বিদ্যুৎ চলে যায়। এমন সময়ও যে বিদ্যুৎ চলে যাবে তা ভাবতেই অনেক খারাপ লাগে।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ঝড়ের পর সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সেটি মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর লোডশেডিং মেনে নেওয়া যায় না। এক বছর পর পর ব্যবসায়ীরা একটি ঈদ পান। আর এতে লোডশেডিং হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগের পাশাপাশি লোকসানেও পড়ছেন। এই অবস্থায় ক্রেতা ও বিক্রেতারাও স্বস্তিতে নেই।
জানা যায়, সিলেট অঞ্চলে বর্তমানে চাহিদা রয়েছে ১৪০-১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সেখানে ঘাটতি রয়েছে ৪০-৬০ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম পাওয়ার কারণে এত বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। এছাড়াও অর্থনৈতিক মন্দভাবের কারণে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন কম হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহে গত তিন দিনের মধ্যে মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪১ মেগাওয়াট। আর সরবরাহ করা হয়েছে ৫৬ মেগাওয়াট।
পরদিন বুধবার (৩ মার্চ) চাহিদার পরিমাণ ছিল ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট। সেখানে পাওয়া যায় মাত্র ৬৬ মেগাওয়াট।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সিলেটে বিকাল পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩৫ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৯ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৬৬ মেগাওয়াট।
এ ব্যাপারে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো. জারজিসুর রহমান রনি বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত আমাদের চাহিদা ছিল ১৩৫ মেগাওয়াট। তার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৬৯ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৬৬ মেগাওয়াট। আমরা যতটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছি তা সব বিতরণ বিভাগকে সমানভাবে ভাগ করে দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লাইন বা অন্য কোনো সমস্যা নেই। ডলার ও কয়লা সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়ছে লোডশেডিং-তাপপ্রবাহ
কনকনে শীতেও তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যেই চলছে লোডশেডিং
৬ মাস আগে
নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সিলেটের সুরমা নদীর খনন কাজ শুরু
সিলেট নগরবাসীকে বন্যামুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সুরমা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীতে খনন কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, প্রথম দফায় সিলেটে সুরমা নদীতে ১৮ কিলোমিটার খনন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সুরমা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
শীত মৌসুমে সুরমা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়, আর বর্ষায় দেখা যায় ভয়াবহ রূপ। গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর তীর উপচে পানি ঢুকে সিলেট শহরে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় শহর। পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম ছড়া-খালগুলো দিয়ে উল্টো শহরে প্রবেশ করে সুরমার পানি। গত বছর দুই দফা বন্যায় নাকাল হতে হয়েছে সিলেট নগরবাসীকে। অবশেষে নগরবাসীকে এ সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সুরমা খননের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পাউবো সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মে ও জুন মাসে সিলেট নগরীতে ভয়াবহ বন্যা হয়। ওই সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সুরমা নদী খনন, শহররক্ষা বাঁধ এবং নদী ও ছড়া-খালের উৎসমুখে স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি তোলা হয়।
ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ নদী খননে জোর দেন। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা নদী খননে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
বোর্ড সূত্র জানায়, এর আগে কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত সুরমা নদী খননের জন্য একটি ডিপিপি জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি। গেল বছর বন্যার পর কুশিঘাট থেকে ছাতকের লামাকাজি সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার খননে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া নদী খনন করছে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ জানান, প্রথম দফার খনন শেষ হওয়ার পর কুশিঘাট থেকে লামাকাজি সেতু পর্যন্ত খনন হলে সুরমার নাব্যতা বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে পানি প্রবাহ। এতে বর্ষায় সিলেট মহানগরে বন্যার আশঙ্কা কমবে। এছাড়া আগামী জুন মাসের মধ্যেই খনন সম্পন্ন হওয়ার কথা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম জানান, লামাকাজি পর্যন্ত কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ১৫ ফুট খননের ডিজাইনসহ কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সুরমা নদী থেকে ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
১ বছর আগে
নগরবাসীর জন্য নববর্ষের উপহার সাতটি পার্ক ও মাঠ: মেয়র আতিক
‘নগরবাসীর জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নববর্ষের উপহার হিসেবে সাতটি পার্ক ও মাঠ উন্মুক্ত করে দেয়া হলো। এগুলো আপনাদেরই পার্ক। আপনাদেরই এই পার্ক ও মাঠগুলোকে দেখে রাখতে হবে। মাঠগুলোকে আপনারা সন্তানের মতো ভালোবাসবেন এটা আমার অনুরোধ।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন উন্নয়ন ও সবুজায়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উন্নয়নকৃত সাতটি পার্ক ও মাঠের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
শনিবার সকালে রাজধানীর শ্যামলীর শ্যামলী পার্কে উন্নয়নকৃত ‘সাতটি পার্ক ও মাঠ এর শুভ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষসহ সকলের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই এই পার্ক ও মাঠগুলোর নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। মাঠে রয়েছে শিশুদের ও বড়দের আলাদা খেলার জায়গা, নারীদের বসার সুব্যবস্থা, বসে খেলা উপভোগ করার জন্য রয়েছে গ্যালারি। আমরা এলাকবাসীর সাথে কথা বলে তাদের চাহিদার ভিত্তিতেই এই পার্ক ও মাঠের নকশা প্রণয়ন করেছি।’
আরও পড়ুন: যানজট নিরসনে জোড়-বিজোড় নম্বরের ভিত্তিতে গাড়ি চলবে: মেয়র আতিক
২ বছর আগে
ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে নগরবাসী এবং সিটি করপোরেশনকে যৌথভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুনঃ ডেঙ্গু: একদিনে ৪৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
মন্ত্রী বলেন, এডিসসহ অন্যান্য মশা থেকে মুক্ত থাকতে হলে সিটি করপোরেশন যেমন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে তেমনি নগরবাসীকেও তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। শতভাগ সফলতার জন্য উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আবশ্যক।
শনিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশক নিধনে চিরুনি অভিযানের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুনঃ নতুন ৩৬ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে
তিনি বলেন, ‘নাগরিকরা যদি তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন না করে, সিটি করপোরেশন একক প্রচেষ্টায় সকল সমস্যার সমাধান করে নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে পারবে না। আমরা নিজেরাই যদি অসচেতন হয়ে মশার প্রজননে সহায়তা করি তাহলে সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে কী করে সম্ভব মশামুক্ত নগর উপহার দেয়া। তাই সবাই মিলে একত্রে কাজ না করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।‘
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ যদি নিজের বাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, এয়ার কন্ডিশন বিশেষ করে নির্মাণাধীন বা পরিত্যক্ত ভবনের বেসমেন্ট, ছাদে পানি জমিয়ে না রাখে অথবা রাখলেও তিনদিন পরপর পরিষ্কার বা জমা পানিতে অল্প পরিমাণ কেরোসিন দেয় তাহলে এডিস মশা প্রজননের সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু নির্মাণাধীন ভবনে অনেকেই তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করেন না।‘
আরও পড়ুনঃ একদিনে ৩৯ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি
তিনি বলেন, উভয় সিটি করপোরেশনে দশ জন করে ম্যজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যেখানে জমে থাকা পানি পাবে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে। সরকারি-বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠানই ডেঙ্গু প্রজননে ভূমিকা রাখবে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাউন্সিলর নেতৃত্বে এলকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, এনজিও কর্মীকে নিয়ে কমিটি করে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে দশটি সাব জোনে ভাগ করে একত্রে কাজ করায় গত বছর সাফল্য এসেছে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মেয়র-কাউন্সিলরা যখন আন্তরিকতার সাথে কাজ করবে তখন স্বাভাবিকভাবেই কমিউনিটি এবং নগরবাসী স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করবে। সবক্ষেত্রে জনসম্পৃক্ততা করতে পারলে কোনো চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ মনে হবে না।
ঢাকার উভয় মেয়র শহরবাসীকে মশামুক্ত রাখতে আন্তরিকভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে সিটি করপোরেশনকে পর্যাপ্ত লোকবল, কীটনাশক, ফগিং মেশিন, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য মেজিস্ট্রেট দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু উত্তর সিটি করপোরেশন নয়, দক্ষিণ সিট করপোরেশনেও অভিযান শুরু হয়েছে। রাজধানীতে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু রোগী কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সে কারণে জোরালোভাবে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। শুধু রাজধানী নয় সকল সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ প্রত্যন্ত গ্রামকে অর্ন্তভূক্ত করে ইন্টিগ্রেটর ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট-গাইডলাইন অনুযায়ী কার্যক্রম চালানোর আহবান জানান তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার মত অবস্থায় আসেনি। এডিস মশা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অল্প সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু মারাত্মক রূপ নিলে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই আজকে আমি, মেয়র, কাউন্সিলর, গণ্যমান্য ব্যাক্তিরাসহ মাঠে নেমে অভিযান শুরু করেছি।
ওয়াসা থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে খাল হস্তান্তর করার পর দীর্ঘ সময় ধরে জলাবদ্ধ ও দখল থেকে মুক্তির মাধ্যমে সুফল লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে তিনি খাল-জলাশয়, ড্রেন, কালভার্ট পরিষ্কার করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এ সময় যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
৩ বছর আগে
করোনাভাইরাস: ঢাকায় অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অফিস, শপিংমল, দোকান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অধিকাংশ নগরবাসী বাসায় অবস্থান করায় রাজধানীতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
৪ বছর আগে
আপনারা ঘরে থাকুন, বাজার যাবে আপনার ঘরে: পুলিশ
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময় নগরবাসীকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করার আহ্বান জানাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। কোনো কারণেই বাসা থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গৃহবন্দী নগরবাসীকে খাদ্য, চিকিৎসাসহ জরুরি সেবা দানের ব্যবস্থাও চালু করেছে পুলিশ।
৪ বছর আগে
ঢাকার বায়ুদূষণ কমছে না, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসীরা
মারাত্মক বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় রবিবার সকালেও সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে (শীর্ষে) উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এর প্রভাবে জনবহুল এ নগরীর বাসিন্দারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
৪ বছর আগে