বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, সুপেয় পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছেন গাজাবাসী
খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির অনুর্বর এলাকায় খাবার পানি পরিশোধনে একটি বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনিদের অনাহারে মারতে ইসরায়েল এই নীতি গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
স্থানীয় সময় রবিবার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে গাজায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়াতে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
২০ লাখের বেশি বাসিন্দার গাজা উপত্যকায় গেল সপ্তাহে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রথম দিকেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিলবণীকরণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রমজানে উপত্যকাটির বাসিন্দারা নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। গত ১ মার্চ প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও বাড়াতে হামাসকে চাপ দিচ্ছে ইসরায়েল।
এদিকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি করে নিতে চাচ্ছে তারা। কিন্তু হামাস চাচ্ছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে, যেটা আরও কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাও প্রত্যাহার চাচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটি।
হামাসের কাছে বর্তমানে ২৪ জীবিত জিম্মি ও ৩৫টি ইসরায়েলি মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলোচনা এগিয়ে নিতে সোমবার একটি প্রতিনিধি দল কাতারে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
রবিবার হুঁশিয়ারি করে হামাস জানিয়েছে, খাদ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হলে জিম্মিদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। বিপরীতে সব ধরনের পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।
পনেরো মাসের যুদ্ধে গাজা ও সেখানকার সব অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের জন্য হাসপাতালসহ বেশিরভাগ স্থাপনায় বর্তমানে জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু সর্বশেষ তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ক্ষুধায় মারার নীতি। এরমধ্য দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক সব নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।’
ফিলিস্তিনিদের চলাচলের স্বাধীনতা সুরক্ষায় কাজ করা ইসরায়েলি সংস্থা গিসা জানিয়েছে, ‘ওই বিলবণীকরণ কেন্দ্র থেকে দৈনিক গড়ে ১৮ হাজার ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা হতো। জেনারেটর ব্যবহার করে দুই হাজার ৫০০ ঘনমিটার পানি পরিশোধন করা সম্ভব, যা একটি অলিম্পিক সুইমিংপুলের সমপরিমাণ।’
৪ দিন আগে
আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের সব চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
বিদ্যুৎ ক্রয় নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা চুক্তির শর্ত সংশোধন করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নতুন চুক্তি করার প্রস্তাবে রাজি না হলে তা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার এম এ কাইয়ুম জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিট আবেদনটির ওপর আগামী রবিবার শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল চেয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি।
নোটিশে অবিলম্বে অন্যায্য একতরফা চুক্তি পুনর্বিবেচনা অথবা পুরোটাই বাতিল চাওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে আদানিকে এই ঘটনায় চুক্তি পুনর্বিবেচনার কার্যক্রম শুরু না করলে হাইকোর্টে রিট করবেন বলেও জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশের জবাব দিতে পিডিবির চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৩ তিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়। নোটিশের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনায় আদানির সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হয়। ওই সময় দেশে আমদানি করা কয়লানির্ভর কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়নি। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পর্যালোচনা কমিটির সভায় ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত ও নথি কমিটিকে সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র।
১২১ দিন আগে
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা ড. ইউনূসের
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে গম ও সার সরবরাহকারী হিসেবে রাশিয়ার ভূমিকার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বুধবার (৯ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতের সময় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রূপপুর প্রকল্পের বকেয়া-সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান করবে এবং বাংলাদেশে আরও রাশিয়ান বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। 'আমরা একসঙ্গে কাজ করব।'
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অবস্থান জানে না সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠক চলাকালীন, ম্যান্টিটস্কি রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার তিন বছরেরও বেশি মেয়াদে তার ঘটনাবহুল সময়ের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন।
তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, যা আগামী বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছেন।
বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গ্যাজপ্রমের বাংলাদেশে অনুসন্ধান কার্যক্রম, রাশিয়ার গম ও সার রপ্তানি এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ পরিশোধ নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
এ সময় সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. আবুল হাসান মৃধা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
১৫৬ দিন আগে
বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া পরিশোধে ৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড দেবে সরকার
বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার নতুন বন্ড ইস্যু করতে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছে সরকারি কিছু সূত্র।
বর্তমানে এই পদক্ষেপটি বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, 'আমরা পাঁচ হাজার কোটি টাকার নতুন বন্ড ইস্যু করার জন্য আমাদের দিক থেকে প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে।’
চলতি সপ্তাহের মধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিপিডিবির এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, আগের মতো এবারও সরকারি-বেসরকারি খাতের ২৫-২৭টি ব্যাংক বন্ড ইস্যু প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে।
স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের (আইপিপি) ওপর থেকে আর্থিক চাপ কমানো এবং দেশের বিদ্যুৎ খাতকে স্থিতিশীল করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তাদের মতে, বিপিডিবি এই পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিভাগকে বিষয়টি নিয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করতে পরামর্শ দিয়েছে।
বিপিডিবির আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) হিসেবে পরিচিত বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা বিপিডিবির কাছ থেকে কত টাকা পাবে আমরা হিসাব করছি।’
আরও পড়ুন: ঝুলে আছে ১০টি গ্রিড সংযুক্ত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বিপিডিবির দরপত্র আহ্বান
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিপিডিবির মোট অপরিশোধিত বিলের পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে বেসরকারি উৎপাদনকারীদের পাওনা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
বাকি অর্থের মধ্যে গ্যাস বিল ১৭ হাজার কোটি টাকা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা ১০ হাজার কোটি টাকা।
আদানি গ্রুপসহ ভারতের সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা পাবে।
এর আগে বিদ্যুৎ খাতকে স্থিতিশীল করতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ২০ হাজার ৬২০ কোটি টাকা পেয়েছিল। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া দায় পরিশোধের লক্ষ্যে এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ছিল সিটি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
বিদ্যুৎ খাতের আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ২৫ জানুয়ারি একটি চুক্তি সই হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চুক্তি অনুযায়ী সরকার সিটি ব্যাংককে ১৯ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা এবং পূবালী ব্যাংককে ৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার বন্ড ইস্যু করে।
ভর্তুকি তহবিল বিতরণে সরকারের অক্ষমতার কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তাদের আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে যার ফলে কেউ কেউ দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত রেপো রেট অনুযায়ী ৮ শতাংশ কুপন হারে বিশেষ বন্ড ইস্যু চালু করা হয়। ভবিষ্যতে রেপো রেটে যে কোনো পরিবর্তন হলে সে অনুযায়ী বন্ডের সুদের হার সমন্বয় করবে।
বন্ডের মেয়াদ শেষে সরকার সুদসহ ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ করে বন্ডগুলো পুনরুদ্ধার করবে। সাধারণত বন্ডগুলো ১৫-২০ বছর মেয়াদি হলেও বিদ্যুৎ খাতের জরুরি চাহিদা মেটাতে এই বিশেষ বন্ডগুলোর সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর।
সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, কনফিডেন্স পাওয়ার, বারাকা, কুশিয়ারা, ডরিন ও অ্যাক্রন পাওয়ারসহ বিদ্যুৎ খাতের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো এই উদ্যোগের সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম।
অর্থ বিভাগ ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়াসহ অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে চুক্তির পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ করেছে।
চুক্তির গুরুত্ব নিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা আশাবাদী।
ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এসব বন্ড পেতে পারে, একই সঙ্গে সরকারও আর্থিক দিক দিয়ে কঠিন সময় মোকাবিলা করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের কাছে বিপিডিবির বকেয়া পরিশোধে নতুন বন্ড ইস্যুর কথা ভাবছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
১৫৭ দিন আগে
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করা হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, তার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করা হবে এবং সেসব বোর্ড থেকে সচিবদের অপসারণ করা হবে।
বুধবার পেট্রোবাংলা মিলনায়তনে পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশের (জিএসবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের সচিব যদি কোনো কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হন, তাহলে তা মন্ত্রণালয়ের স্বার্থের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ এবং এটি অনৈতিক।’
কোম্পানিগুলোর পর্ষদে ছাত্রপ্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব মামলা আইনগত বিষয় এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
তবে প্রয়োজনে সাবেক বিচারপতিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে বিদ্যমান চুক্তির শর্তগুলো পর্যালোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান ফাওজুল কবির খান।
যেকোনো ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, 'শাসনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের প্রত্যাশা বুঝতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, তারা যদি 'রাজপথের ভাষা' বুঝতে ব্যর্থ হয় তবে তাদের কী হবে তা বিবেচনা করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের বুঝতে হবে মানুষ কেন রাস্তায় নেমেছিল, কেন তারা রক্ত দিয়েছিল।’
বর্তমান সরকারের ভাবনার দর্শন অনুধাবন করে সে অনুযায়ী কাজ করতে সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ফাওজুল কবির অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন এবং নিয়মিত প্রতিবেদন দিতে বলেন।
বৈঠকে আরও ছিলেন- জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসানসহ বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
১৯৭ দিন আগে
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা বাতিল
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানি ছাড়াই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর নির্বাহী ক্ষমতা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেটে বলা হয়েছে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিইআরসি আইন ২০০৩ এর ৩৪ক ধারা বিলুপ্ত হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গণশুনানি ছাড়াই নির্বাহী ক্ষমতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারকে দিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ৩৪ (ক) ধারা প্রবর্তন করেছিল।
গণশুনানি ছাড়া সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এই সংশোধনী আনা হয়েছে।
সর্বশেষ এই সংশোধনীর পর সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বা গ্যাসের দাম বাড়াতে চাইলে তাকে বিইআরসিতে প্রস্তাব দাখিল করতে হবে এবং এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিইআরসি গণশুনানি করে ৯০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
১৯৯ দিন আগে
বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে করণীয়
বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বিপদের মাত্রাকে আরও ভয়াবহ রূপ দিতে পারে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগস্থলগুলো। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে স্বাভাবিকভাবেই এসব বিষয় দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। আর এই অসতর্কতাই বুমেরাং হয়ে পড়ে ধ্বংযজ্ঞের সময়ে। উপরন্তু, পানি বিদ্যুৎ পরিবহনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হওয়ায় বন্যার সময়ে রীতিমতো মৃত্যুদূতে পরিণত হয় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো। সেইসঙ্গে আশঙ্কা তৈরি হয় গ্যাসের লাইনগুলো ভেঙে যাওয়ার। নিদেনপক্ষে অল্প চিড় ধরলেও এই লোহার পাইপগুলো থেকে ঘটতে পারে ভয়ানক বিস্ফোরণ। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে হলে যথা সম্ভব তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। চলুন, বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপগুলো জেনে নেওয়া যাক।
বন্যার সময় গ্যাস ও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয়
.
অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা
বন্যা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুতের প্রধান সংযোগগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বিদ্যুতের ক্যাবল বা তার পানির সংস্পর্শে এসে শর্ট সার্কিট হতে পারে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বন্যায় পানির চাপে গ্যাস পাইপ ভেঙে গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমতাবস্থায় শুধু একটি স্পার্ক-ই যথেষ্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য। এই বিপদ থেকে বাঁচতে অবিলম্বে সব গ্যাস ভাল্ব ও পাওয়ার সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।
যারা এই সুইচ বা ভাল্বের সঙ্গে অপরিচিত তাদের জন্য উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এসব উৎস থেকে অতি দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে সরে পড়া। এ সময় সঙ্গে কোনো বিদ্যুৎ বা তাপ পরিবাহী কোনো বস্তু রাখা যাবে না। সম্ভব হলে সহায়তার জন্য পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ বা উত্তপ্ত বস্তু থেকে দূরে থাকা
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ এবং উত্তপ্ত বস্তুর সান্নিধ্য এড়িয়ে চলতে হবে। পাওয়া অফ করার পরেও অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে কিছু চার্জ জমা থাকে। সাধারণ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও পানির সংস্পর্শে সেগুলো হুমকির কারণ হতে পারে।
তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন অবস্থায় অধিকাংশ যন্ত্রাংশেরই উত্তাপ কমে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। এই সময়েও ঘটতে পারে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। তাই সর্বাত্মকভাবে এসব সরঞ্জাম থেকে যত দূরে যাওয়া যায় ততই ভালো।
উচ্চ স্থলভাগে অবস্থান নেওয়া
কোমর থেকে গলা পর্যন্ত জলাবদ্ধ এলাকাগুলোতে উঁচু শুকনো জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। এরপরেও নিমজ্জিত বা ভাসমান না থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থলভাগ খোঁজার চেষ্টা চালানো উচিত। কেননা স্থির পানি যত জায়গা জুড়ে বিস্তৃত থাকে বিদ্যুতের সংস্পর্শে তার পুরোটাই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত জলাবদ্ধ জায়গায় পানির নিচে কোথায় কোনো বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত বস্তু আছে কি না তা বোঝা মুশকিল।
আরও পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
এছাড়াও একটু উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলে বানের পানিতে ভেসে যাওয়া অথবা পানির নিচে ধারালো বা শক্ত কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থেকে বাঁচা যায়। তাই পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় হওয়ার পরেও মনকে যথা সম্ভব শান্ত রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিজের আশেপাশটা ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে।
গ্যাস লিক খুঁজে বের করে দ্রুত মেরামত করা
বন্যার সময় তীব্র বেগে প্রবহমান পানির চাপে কিংবা ভারী কোনো জড় বস্তু ভেসে এসে গ্যাস পাইপগুলোতে লেগে চিড় ধরাতে পারে। প্রচণ্ড প্রতিকূল অবস্থায় পুরো পাইপ ভেঙে বা উপড়েও যেতে পারে। এমতাবস্থায় চিড়যুক্ত পাইপগুলো খুঁজে বের করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ পাওয়া গেলেও তার সদ্ব্যবহার করা উচিত।
অতঃপর খুঁজে পাওয়ার পর ত্রুটিপূর্ণ পাইপগুলো অবিলম্বে মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে সাহায্য নিতে হবে পেশাদারদের। কেননা এর উপর নির্ভর করছে আশেপাশের অনেকগুলো মানুষের জীবন। উন্মুক্ত গ্যাসে সৃষ্ট বিস্ফোরণ ছড়িয়ে যেতে পারে বিশাল জায়গা জুড়ে।
আরো পড়ুন: বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
ব্যাটারি-চালিত টর্চলাইট ব্যবহার করা
বন্যাকালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে দিনের আলো পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে রাতের মতো দিনেও পথ চলতে প্রয়োজন হয় কৃত্রিম আলোর। এই প্রয়োজন পূরণে মোমবাতি বা হারিকেন ব্যবহার করা যাবে না। কারণ অজানা কোনো জায়গায় গ্যাস লিকের ফলে মারাত্মক ঝুঁকির তৈরি হতে পারে। এখানে উৎকৃষ্ট বিকল্প হচ্ছে ব্যাটারি-চালিত টর্চ বা ফ্ল্যাশলাইট, যেগুলোতে আগুন বা চল বিদ্যুৎ সংযোগ কোনোটারই দরকার হয় না।
পরিশিষ্ট
তাৎক্ষণিকভাবে এসব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ বন্যার সময় বিদ্যুৎ বা গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগগুলো বন্ধ করা গেলে শর্ট সার্কিট ও গ্যাস লিকের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত থাকা যায়। বৈদ্যুতিক উপাদান থেকে দূরে থাকা এবং প্লাবিত অবস্থা থেকে যথেষ্ট উঁচু স্থলভাগে অবস্থান নিয়েও ঝুঁকির মাত্রা কমানো যায়। গ্যাস লিকগুলো সম্ভব হলে শিগগিরই খুঁজে বের করে বন্ধ করা উচিত। অন্যথায়, এমন স্থান থেকে দূরে থাকা এবং আকস্মিক বিস্ফোরণ এড়াতে মোমবাতির পরিবর্তে ব্যাটারি-চালিত ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
২০১ দিন আগে
ফেনীতে বন্যা: বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
ভারী বৃষ্টি ও উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ফেনীর সাড়ে তিন লাখ মানুষ।
জেলার সদর উপজেলা,পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া বন্যার কারণে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় ডুবছে একের এক জনপদ। সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা, ফেনী-চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত: এফএফডব্লিউসি
জানা গেছে, বন্যার পানিতে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত থেকেই জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সব এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পরশুরামের স্থানীয় সাংবাদিক মহি উদ্দিন বলেন, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি সব ডুবে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে ঠিকভাবে উদ্ধার কাজও করতে পারছেন না। তারমধ্যে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখের বেশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক ছিল।
ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভবন গুলোর নিচ তলায় পানি ঢুকে মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাই পানি নামা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকবে। বন্যার পানি কমার আগে সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কত মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছেন এই হিসাব তিনি দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: বন্যার কবলে ৮ জেলা, বিস্তৃত হতে পারে আরও
২০৫ দিন আগে
বিল বকেয়া থাকায় চমেক-রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
বিল বকেয়া থাকায় চট্টগ্রামে সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি)।
এতে দুর্ভোগে পড়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির সংশ্লিষ্টরা। এদিকে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে পিডিবির বকেয়া বিল বাবদ পাওনা রয়েছে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
জানা গেছে, এক কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে এবার সাড়ে ৩ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য আড়ৎদারদের
এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় কলেজের প্রশাসনিক ভবন, দুটি হোস্টেল, ভেনম রিসার্চ সেন্টার, ফরেনসিক ভবন, লাইব্রেরি বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, আমাদের কিছু বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল, যার কারণে বিদ্যুৎ অফিস লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের চিঠি দিচ্ছি যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়েও আমরা চিঠি দিয়েছি। আমাদের মূল বকেয়া বিল ৭১ লাখ টাকা। বিভিন্ন চার্জ মিলে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, তাদেরকে কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবুও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু একাডেমিক ভবনের বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। ছাত্রাবাসে বিদ্যুৎ আছে। চমেক কর্তৃপক্ষ এখনও যোগাযোগ করেনি
এদিকে বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় এক মাস পর আবারও বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল অফিসের।
সোমবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেল পূর্বাঞ্চলের সিআরবি অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ দক্ষিণাঞ্চল। ২ কোটি ১২ লাখ টাকা বকেয়া থাকায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল অফিসের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এর আগে গত মাসের (মে) ১৯ তারিখেও রেল পূর্বাঞ্চলের সিআরবি ও পাহাড়তলী অফিসের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয় পিডিবি।
পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে বিল পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হলে ওইদিন বিকালে বিদ্যুতের লাইনে পুনঃসংযোগ দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়নে বোর্ডের (পিডিবি) জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আকবর হোসেন বলেন, ২ কোটি ১২ লাখ টাকা বিল বকেয়া থাকায় রেলওয়ের সিআরবি অফিসের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আগুনে পুড়ে ছাই ১৮টি বাড়ি-ঘর, ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি
চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচসহ সব সবজির দাম বাড়তি
২৬৩ দিন আগে
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ চালু
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়েছে।
আর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহকদের কাছে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) হালনাগাদ তথ্যের বরাত দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ এই তথ্য জানায়।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ২ কোটি ৯৩ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুতের সংযোগ পুনরায় চালু করেছে, যা মোট ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের ৯৭ শতাংশ।
গত রবিবার ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার পর বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৩ কোটি ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন
বিতরণ সংস্থাটির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ২২ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি, যা মোট বিআরইবি গ্রাহকের ৩ শতাংশ।
তবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) আশা করছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তারা ৯৯ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সক্ষম হবে। আর ১ শতাংশ গ্রাহকের সরবরাহ বাকি থাকবে, যা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেওয়া প্রয়োজন হবে।
একই সময়ে ওজোপাডিকো তার সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওজোপাডিকোর মোট ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ৪ লাখ ৫৩ হাজার, যারা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছিলেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইন মেরামতে বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রায় ২১ হাজার জনবল কাজ করছে। একইভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করেছিলে ওজোপাডিকো।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: বিআরইবির ৯৩,ওয়েস্ট জোন পাওয়ারের ৮৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
২৮৮ দিন আগে