ব্যবসা-বাণিজ্য
৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের ঋণ অনুমোদন বিবেচনা করতে পারে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ড আগামী ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার এক প্রেস বিবৃতিতে আইএমএফের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আন্তোয়েনেট এম. সায়েহ এ কথা জানিয়েছেন। আন্তোয়েনেট এম. সায়েহ ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে পাঁচদিনের সফরে রবিবার বাংলাদেশে এসেছেন।
তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
আন্তোয়েনেট বলেন, ‘গত দশকে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। যা দারিদ্র্য নিরসনে ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং জীবনমানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিগুলো মুদ্রাস্ফীতিকে স্থিতিশীল রাখতে, ঋণ থেকে জিডিপি অনুপাত কম এবং বাহ্যিক বাফারগুলোকে পর্যাপ্ত রাখতে সাহায্য করেছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি আগামী মাসের মধ্যে আসবে: মুখপাত্র
সারা বিশ্বের দেশগুলোর মতোই বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক ধাক্কাগুলোর প্রভাব মোকাবিলা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই ধাক্কাগুলোর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আমি এই কঠিন সময়ে দুর্বলদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপর তাদের ফোকাসসহ এসব সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেয়া বিস্তৃত পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।’
কর্তৃপক্ষের স্বদেশি সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশ ও আইএমএফ সম্প্রতি বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা, বর্ধিত তহবিল সুবিধা এবং আইএমএফ এর নতুন স্থিতিস্থাপকতা ও টেকসই সুবিধা (আরএসএফ) এর অধীনে একটি স্টাফ-লেভেল চুক্তিতে পৌঁছেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের আলোচনায় আমরা কর রাজস্ব বাড়ানো এবং আরও দক্ষ আর্থিক খাত গড়ে তোলার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জসহ এই প্রোগ্রামের মূল উপাদানগুলোর ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছি।
আরও পড়ুন: ’মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে বাংলাদেশকে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার দরকার নেই: এফবিসিসিআই
বেসরকারি বিনিয়োগ এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের সুবিধার্থে পদক্ষেপের সঙ্গে এইসব ক্ষেত্রে সংস্কার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও স্থিতিস্থাপক করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করার শর্ত তৈরি করতে সাহায্য করবে।
এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেছি। যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তুলতে আইএমএফ এর ঋণ দরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
বিসিআই সভাপতি হিসেবে আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পুননির্বাচিত
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এর সভাপতি হিসেবে ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য ইভিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) পুননির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্ত্তী এবং ইউনুছ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ যথাক্রমে সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
নবনির্বাচিত পরিচালকরা হলেন- আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ), প্রীতি চক্রবর্ত্তী, মোহাম্মদ ইউনুছ, শহিদুল ইসলাম নিরু, ডা. দেলোয়ার হোসেন রাজা, রঞ্জন চৌধুরী, মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, মো. জিয়া হায়দার মিঠু, মো. মহব্বত উল্লাহ, শাহ আলম লিটু, মো. মিজানুর রহমান, নাজমুল আনোয়ার, এম এ রাজ্জাক খান, মো. ইশাকুল হোসেন মিষ্টি,আবুল কালাম ভূঁইয়া, মো. সেলিম জাহান, এস.এম. শাহ আলম মুকুল, যশোদা জীবন দেব নাথ, মো. শহিদ আলম, কে.এম. রিফাতুজ্জামান, রুসলান নাসির, মো. খায়ের মিয়া, সোহানা রউফ চৌধুরী, ও মো. মাফুজুর রহমান।
শনিবার নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এসময় বিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
নবনির্বাচিত সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, নবনির্বাচিত কমিটি সিএমএসইর উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মো. কোহিনুর ইসলাম, সদস্য-নির্বাচন বোর্ড; হাফেজ হারুন-অর-রশিদ, সদস্য-নির্বাচন আপিল বোড; প্রীতি চক্রবর্ত্তী, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, শহীদুল ইসলাম নিরু, সাবেক সহ-সভাপতি-বিসিআই।
গণশুনানি: খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
রবিবার সকাল ১০টায় নগরীর বিয়াম মিলনায়তনে শুরু হওয়া গণশুনানিতে মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ করা হয়।
কমিটি প্রতি ইউনিট (প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টা) ৭ টাকা ১৩ পয়সা থেকে প্রতি ইউনিট এক টাকা ১০ পয়সা বাড়িয়ে গড় খুচরা মূল্য আট টাকা ২৩ পয়সা নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছে।
তবে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন বিইআরসি আইন ২০১০-এর সর্বশেষ সংশোধনী অনুসারে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ছয়টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা- বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো), নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলএস (নেসকো) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডব্লিউজেডপিডিসিএল) গত বছরের ২৩ নভেম্বর বিইআরসি-এর সিদ্ধান্তের পরে ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকরীভাবে বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়ানোর পরে তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব জমা দেয়।
একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ট্রান্সমিশন সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)ও হুইলিং চার্জ বাড়ানোর জন্য একটি পৃথক প্রস্তাব দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আদানির ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মার্চে জাতীয় গ্রিডে আসবে: নসরুল হামিদ
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিপিডিবি প্রথমে ২৩ নভেম্বর খুচরা পর্যায়ে শুল্ক ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য তাদের প্রস্তাব দেয় এবং পরবর্তীতে অন্যান্য সমস্ত বিতরণ সংস্থাগুলোও প্রায় অভিন্ন প্রস্তাবের জন্য তাদের নিজ নিজ প্রস্তাব দেয়।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সহ সমস্ত ভোক্তা অধিকার গ্রুপ গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিতরণ এবং ট্রান্সমিশন সংস্থাগুলির প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
ক্যাবের সহ-সভাপতি এএসএম শামসুল আলম বলেন, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ জনস্বার্থ পরিপন্থী।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও সিস্টেম লস কমানোর পরিবর্তে সরকার শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে সহজ সমাধানের চেষ্টা করছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুতের শুল্ক আরও বাড়ানো হলে এটি ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। যা জনদুর্ভোগকে তীব্র করবে এবং সাধারণ মানুষ এর চূড়ান্ত শিকার হবে; কারণ তাদেরই শেষ পর্যন্ত মূল্য দিতে হবে।’
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিদ্যুৎ খাতের প্রধান সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুতের একক ক্রেতা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) আর্থিক ক্ষতি ১৮ হাজার ৯৪ কোটি টাকা বাড়তে পারে।
বিপিডিবি এর নিজস্ব সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, আর্থিক ক্ষতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৯ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৮ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করবে, যা প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র জানায়, বেশি দামে বিদ্যুৎ ক্রয় ও কম দামে বিক্রি, পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপিডিবির রাজস্ব ঘাটতি আরও বেড়েছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন যে বাল্ক ট্যারিফের সাম্প্রতিক ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি বিপিডিবিকে মাত্র পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোকসান কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে একটি বিশাল রাজস্ব ঘাটতি একটি বড় বোঝা হয়ে থাকবে।
অন্যদিকে, বাল্ক বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলোকে তাদের নিজস্ব রাজস্ব ঘাটতি মেটানোর জন্য বিইআরসিতে তাদের খুচরা শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দেয়ার জন্য চাপ দেয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণশুনানি চলছিল। রবিবার শুনানি শেষ করা সম্ভব না হলে সোমবার দ্বিতীয় দিনের জন্য শুনানি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে বলে বিইআরসি থেকে একটি তফসিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু
আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু
টাকা অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য তথ্যচিত্রের আনুষ্ঠানিকতা সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) অনাবাসিক বিনিয়োগকারীদের টাকা অ্যাকাউন্ট (এনআইটিএ) খোলার জন্য তথ্যচিত্রের আনুষ্ঠানিকতা সহজ করেছে।
ফরেন এক্সচেঞ্জ ইনভেস্টমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (এফইআইডি) রবিবার এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এবং নির্দেশটি অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশের সমস্ত অনুমোদিত ডিলারদের (এডি) কাছে পাঠিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এনআইটিএ খোলার জন্য নথির বিভিন্ন সেট ব্যবহার করছে, যা আবেদনকারীদের মধ্যে অস্পষ্টতা তৈরি করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, এনআরবি-র নামে এনআইটিএ খোলার ক্ষেত্রে অভিন্নতা আনতে আবেদনকারীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট নথি এবং তথ্য নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় অনুমোদিত ডিলারদের।
ডকুমেন্টেশন সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এনআইটিএ খোলার জন্য নথি নির্দিষ্ট করেছে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, নথিগুলোর জন্য আবেদনকারীর বৈধ পাসপোর্টের কপি, আবেদনকারীর ছবি, আবেদনকারীর ঠিকানার প্রমাণ, আবেদনকারীর আয়ের নির্ভরযোগ্য উৎস, মনোনীত ব্যক্তিবা নমিনির পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কপি ও নমিনির ছবি প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: এনবিএফআই ৮ বছরের আগে গাড়ি পরিবর্তন করতে পারবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক
অনাবাসী বিদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের নামে এনআইটিএ খোলার জন্য, অনুমোদিত ডিলারদের বিদ্যমান নিয়ম ও প্রবিধানগুলো মেনে চলার জন্য দেশে এবং বিদেশে তাদের শাখাগুলোতে সমন্বিত নথির সেট ঠিক করতে এবং বিতরণ করতে বলা হয়।
ব্যাংকগুলোকে সমস্ত এডি শাখা এবং সেন্ট্রাল প্রসেসিং সেন্টারগুলোকে (সিপিসি) নির্দেশাবলীর সতর্কতা মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে৷
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনগুলোকে ফরেন এক্সচেঞ্জ লেনদেন ২০১৮-এর নির্দেশিকা ও অর্থ পাচার এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর আগে জারি করা নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: চাল, গম আমদানি: ব্যাংকগুলোকে ন্যূনতম এলসি মার্জিন রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রমজানের পণ্য আমদানি এলসির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে সরকার
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এক লাখ মেট্রিক টন (এমটি) চাল আমদানি করবে সরকার।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক দু’টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে গম, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করবে সরকার
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া একটি প্রস্তাবনায়, খাদ্য অধিদপ্তর এম/এস বগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ভারত থেকে ২১০ দশমিক ৩৫ কোটি টাকার ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানি করবে।
সরবরাহকারীকে উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছিল এবং প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম পড়বে ৩৯৩ দশমিক ১৯ মার্কিন ডলার। একই ধরনের চালের আগের দাম ছিল ৪৪৩ দশমিক ০৫ মার্কিন ডলার।
একই মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রস্তাবের অধীনে, খাদ্য অধিদপ্তর সিঙ্গাপুর থেকে ২১৩ দশমিক ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল এম/এস এগ্রোক্রোপ ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড এর মাধ্যমে আমদানি করবে।
উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সরবরাহকারী নির্বাচন করা হয়েছে এবং প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম হবে ৩৯৭ দশমিক ০৩ ডলার। এর আগে একই ধরনের চালের আমদানি খরচ হয়েছিল প্রতি মেট্রিক টনে ৩৯৩ দশমিক ১৯ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: আরও ২০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিতে চিঠি
মিয়ানমার থেকে ২ লাখ মেট্রিকটন চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
খাদ্যপণ্য আমদানিতে ভারতের কাছে বার্ষিক কোটা সুবিধার অনুরোধ: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে এ সকল পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে অনুরোধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা ২২-২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বে দু'দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অবস্থায় ভারতের কাছে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সভায় আমাদের পক্ষ থেকে এসব পণ্যের আমদানির জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের কোটার কথা তুলে ধরা হয়।
তবে ভারত বলেছে, যে পরিমাণ পণ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশ সেই পরিমাণ পণ্য ভারত থেকে আমদানি করে না।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক
তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাটজাত সামগ্রীর ওপর ২০১৭ সাল থেকে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আর বহাল না রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি দাবি ছিল দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা, সেটি নিয়ে কথা হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একটি বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছিলেন ভারত থেকে উচ্চ ফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানি করার বিষয়ে।
এর কারণ আমাদের দেশের রাবার খুব বেশি ভালো হয় না।
এছাড়া কারেন্সির বিষয়ে কথা হয়েছে, দুই দেশের বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসাবে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারিনি, কারণ এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে।
আমরা বলেছি আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। এটা পারব কিনা সেই হিসাবের ব্যাপারও আছে।
এছাড়াও বর্ডার হাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সবগুলো আলোচনা নিয়েই আমরা সন্তুষ্ট।
টিপু মুনশি বলেন, পণ্য ইম্পোর্টে যে কোটার কথা বলেছি সেখানে পরিমাণ উল্লেখ করেছিলাম। তারা বলেছে, পরিমাণ তো আমরা (বাংলাদেশ) আন্দাজ করে বলেছি, সেক্ষেত্রে সঠিক কতো পরিমাণ পণ্য প্রয়োজন হবে সেটি নির্ধারণ করতে বলেছে।
আমরা একটু বেশি করেই চেয়েছিলাম।
তারা বলেছে, অতীতের ৭-৮ বছরের রেকর্ড বলে না তোমাদের (বাংলাদেশ) এতো দরকার। বাংলাদেশের জন্য রাখার পর যদি না নেয় তাহলে সেগুলো নষ্ট হবে। সেজন্য দুইপক্ষ আলোচনা করে ঠিক করতে বলেছে।
ব্যবসায়ীদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা প্রদানে ভারতের আপত্তি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে এক থেকে দেড় মাস একটু অপেক্ষা করতে হবে। করোনার পর মেডিকেল ভিসার জন্য প্রচুর চাপ পড়েছে। সেটা দিতেই তাদের সমস্যা হচ্ছে। তারা বলছে, জানুয়ারির শেষ দিকে তাদের প্রেসার কমে আসবে। তখন তারা রেগুলার ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসা, মাল্টিপল ভিসা, ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যবস্থা করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছিলাম একটা সিইও ফোরাম করার বিষয়ে। আমাদের দেশের ১০টি বড় প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং তাদের দেশের ১০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সিইও নিয়ে এটি করা যেতে পারে। যেমন আমাদের দেশে প্রাণ, এফবিসিসিআই এর মতো প্রতিষ্ঠান আছে, সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। তারা (ভারত) বলছে, তাদের নামগুলো সিলেক্ট করতে একটু দেরি হচ্ছে, তারপরও তারা আশাবাদী এই দশটি নাম দিলে দুই দেশের ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের সিইওদের নিয়ে ফোরাম গঠিত হবে।
বিভিন্ন বাণিজ্যিক ইস্যুতে তারা আলোচনা করবেন। সরকারকে তারা আলোচনা করে কোন পরামর্শ থাকলে দেবেন।
সভায় প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-ভারত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশীপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে নেগোসিয়েশন শুরুর বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বিভিন্ন দ্বি-পক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরাম পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদান, বিভিন্ন প্রকার শুল্ক/অশুল্ক বাধা অপসারণের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজীকরণ, ভারতের পক্ষ থেকে করোনার কারণে বন্ধ থাকা বর্ডার হাটসমূহ পুনরায় চালু করার বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে শিগগিরই সেগুলো চালুর কার্যক্রম ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের বৃহৎ ব্যবসায়িক অংশীদার বাংলাদেশ: বাণিজ্যমন্ত্রী
ঘরে ঘরে শিক্ষিত সন্তান থাকলে মানুষের অভাব থাকবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের কিস্তির ৫০% পরিশোধ করলে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে না: বিবি
শ্রেণিবদ্ধ ঋণের পরিমাণ কমাতে এই বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মেয়াদী ঋণের (শিল্প ঋণ) কিস্তির অর্ধেক বিলম্বিত পরিশোধের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।শ্রেণীবদ্ধ ঋণ হল ব্যাংক ঋণ যা খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বড় ঋণগ্রহীতাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সুবিধা দিয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) রবিবার ‘ঋণ শ্রেণীবিভাগ’ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং দেশীয় মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের আয় কমে গেলেও বিবি’র জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে ক্ষুদ্র ও ব্যক্তিগত ঋণগ্রহীতাদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।তবে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যদি এই বছরের শেষ প্রান্তিকের ডিসেম্বরের মধ্যে ঋণের কিস্তির অর্ধেক (৫০ শতাংশ) পরিশোধ করা হয়, তবে ঋণগুলিকে ‘শ্রেণিবদ্ধ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে না। এর আগে, ‘শ্রেণিকৃত’ ঘোষণা এড়াতে ঋণের কিস্তির ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হতো। ‘দীর্ঘদিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে, এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব শিল্প খাতে উৎপাদন খরচ বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ, ঋণগ্রহীতাদের প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছে,’ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।এ কারণে এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল রাখতে এবং ঋণগ্রহীতাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পরিশোধে শিথিলতা দিয়েছে।প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদী ঋণের বকেয়া কিস্তির কিস্তি বা অপরিশোধিত অংশ বিদ্যমান ঋণের পূর্বনির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে সমান কিস্তিতে (মাসিক এবং ত্রৈমাসিক) প্রদেয় হবে।যাইহোক, ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে, অবশিষ্ট মেয়াদ বিবেচনায় নিয়ে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী কিস্তি পুনঃনির্ধারণ এবং সংগ্রহ করা যেতে পারে এবং এক বছর মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া এ সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা।বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের অবস্থা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৬ লাখ কোটি টাকা।দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ চলতি বছরের জুনের শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
চাঁদপুরে ৩৯টি লবণ মিলই বন্ধ, বেকার হাজারো দিনমজুর
চাঁদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র পুরানবাজার সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই কর্মাশিয়াল হাব হিসেবে খ্যাত। এর পাশেই নৌ, সড়ক ও রেলপথ থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার লাভ করেছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা এখানে লেনদেন হয়। এখান থেকে পাইকারি দরে লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে জেলার খুচরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।
এক সময়ে লবণ শিল্প ও লবণ ব্যবসা ছিল জমজমাট। সারাদিনই গম-গম আওয়াজ হতো এসব মিল কারখানায়। প্রতিদিন শত শত দিনমজুর জীবিকা করতো এসব মিলে কাজ করে। এখানে নদীর পাড়ে পাড়ে ৪০টি লবণ মিলে প্রতিদিন টনে টনে লবন উৎপাদন হতো আর প্যাকেটজাত করে পাঠানো হতো জেলা ও জেলার বাইরে শরিয়তপুর, ডামুডা, সুরেশ্বর, মতলব, গজারিয়া, ষাটনলসহ দূর দুরান্তের বিভিন্ন বাজারে নৌপথ ও সড়কের যানবাহনে।
কিন্তু কালের চক্রে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন রাজধানীসহ বড় নগরীতে বড় বড় শিল্প কারখানায় আরও উন্নত প্যাকে উন্নতমানের রিফাইন্ড লবণ জেলা উপজেলার হাট-বাজারে ও দোকানের দ্বারপ্রান্তে নিজস্ব যানবাহনে পৌঁছে দেয়ায় পুরানবাজারের এ লবণ ব্যবসায় নেমেছে ব্যাপক ধস। একে একে বন্ধ হয়ে গেছে সব মিল ও লবণ ব্যবসা। এটা গত এক দশকের দৃশ্য–জানান ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে তারল্য সংকট নেই, বলছে বিএবি
বেকার হয়ে গেছে হাজারো দিন মজুর। প্রতিটি মিলে কাজ করতো একশ’ বা তার কিছু বেশি দিনমজুর। এখন এসব মিলগুলো পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। পুরানবাজারে ঘুরে ঘুরে দেখলাম এসব লবণ মিলগুলি এখন বন্ধ, তালা মারা, যেনো ভুতড়ে গলি।
মেঘনা-ডাকাতিয়ার মোহনায় নদীর পাড়ে পুরানবাজারে জনতা সল্ট মিলের স্বত্বাধিকারী একে আজাদ ইউএনবিকে জানান- জেলার প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র পুরানবাজারে শুধু তার মিলটিই কোন রকমে টিকে আছে। পুরানবাজারে ৪০টি লবণ মিল ছিল। ব্যবসা ছিল জমজমাট। এখন ৩৯টি লবণ মিলই বন্ধ।
তিনি বলেন, ‘কমপিটিশন মার্কেটে, অনেক কষ্ট হচ্ছে টিকে থাকতে। শতাধিক দিনমজুর এখানে কাজ করছেন। দুই ধরনের লবণ এখানে উৎপাদন হয়। আমাদের জন্য আয়োডিনযুক্ত লবণ আর গো-খাদ্যের জন্য সাধারণ লবণ।
দিনমজুর হারুনর রশীদ, বাবুল মিয়া, বশির গাজীসহ অনেকেই জানান, আগে শত শত দিনমজুর ৩৯টি মিলে কাজ করতো। কত ব্যস্ত ছিল লবণ মিল এলাকাগুলো! র্দীঘনি:শ্বাস ফেলে এক লবণ শ্রমিক বললেন, ‘কোথায় গেলো সেই দিনগুলো! বেকার সব দিনমজুররা এখানে সেখানে কাজ করছে। কেউ কেউ না ফেরার দেশেও চলে গেছে।
কথা হলো প্রবীণ লবণ ব্যবসায়ী ও পুরানবাজারে অবস্থিত চাঁদপুর চেম্বার অব কর্মার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি আলহাজ্ব জাহাংগীর আখন্দ সেলিমের (৭৫) সঙ্গে। একান্ত আলাপনে তিনি বলেন, পুরানবাজার নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা হওয়ার কারণে, কাঁচামালের তীব্র সংকট, ব্যাংক লোন না দেয়া /না পাওয়া ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চেষ্টা থাকা সত্বেও ব্যবসায়ীরা লবণ ব্যবসায় এগুতে পারেনি। তাছাড়া, কাংখিত লাভও হচ্ছিল না। উর্পযুপরি লস/ লোকসান হচ্ছিল। হতাশ ও নিরাশ হয়ে লবণ ব্যবসায়ীরা একে একে তাদের লবণের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে থাকেন। ফলে গত ৮/১০ বছরে লবণ শিল্প ও কারখানাগুলিতে তালা ঝুলছে। বেকার হয়ে গেছে হাজারো দিনমজুর। এরা আর সুদিন দেখবে বলে মনে হচ্ছে না। এসব লবণ মিল এখন পরিত্যক্ত বা গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার কবে লবণ শিল্প সমৃদ্ধ হবে বা আদৌ লবণ মিলগুলো আবার চালু হবে কি না-তা কেউ জানে না। এমনকি তাঁর নিজের লবণ মিলও বন্ধ ও পরিত্যক্ত।
আরও পড়ুন: ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার
আরও ২০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিতে চিঠি
মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারীরা সরাসরি আনতে পারবে রেমিটেন্স: বাংলাদেশ ব্যাংক
রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএসএফ) প্রদানকারীদের অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্স আনার অনুমতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অনুমোদিত ডিলাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়াই বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসের সঙ্গে বন্দোবস্ত করতে পারবে।
অনুমোদিত ডিলারদের বাংলাদেশ দূতাবাস বা সংশ্লিষ্ট দেশের হাই কমিশন থেকে সুপারিশপত্র বা সনদপত্র ছাড়াই বন্দোবস্ত করার অনুমতি থাকছে।
আরও পড়ুন: মোবাইলে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন
প্রজ্ঞাপনের বলা হয়েছে, এমএফএস প্রদানকারীদের জন্য আরও বেশি সহজ করতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পরিষেবা প্রদানকারী, ব্যাংক, ডিজিটাল ওয়ালেট, কার্ড স্কিম ও বিদেশে আর্থিক পরিষেবা সমন্বয়কারীদের সঙ্গে মিলিতভাবে রেমিটেন্স উপার্জনকারীদের অর্থ দেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়া হবে।
এই প্রেক্ষাপটে, এমএফএস প্রদানকারীদের অবশ্যই তাদের অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার জন্য বিদেশি পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট সিস্টেমের (পিএসপি) সঙ্গে স্থায়ী ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং সমতুল্য অর্থ মজুরি উপার্জনকারীদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
পরবর্তীকালে, বিদেশি পিএসপিগুলো মনোনীত ডিলারের নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট প্রদান করবে (একটি অ্যাকাউন্ট যা একটি ব্যাংক অন্য ব্যাংকে
বৈদেশিক মুদ্রায় ধারণ করে)। টাকায় মজুরি পাওয়ার পর উপার্জনকারীরা সমস্ত লেনদেন করতে বিদেশ থেকে এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
যারা মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদান করতে চায় তাদেরকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওপরে বর্ণিত ফ্রেমওয়ার্ক বা অনুরূপ সুবিধাজনক পদ্ধতি অনুসারে প্রস্তাবিত ব্যবস্থার বিবরণসহ বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আবেদন করতে হবে।
উদ্যোগটি ছোট পরিসরে পর্যালোচনার প্রাথমিকভাবে অনুমতি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ২০১১ সালে এমএফএস চালু করে। তখন থেকেই পরিষেবাটি নিয়ে দেশে যথেষ্ট গুঞ্জন হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি এমএফএস অপারেটর ১৮ কোটিরও বেশি অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে পরিষেবা প্রদান করছে, যারা প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আদানপ্রদান করছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য আছে ১.৬৯ লাখ কোটি টাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক
জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
ব্যাংকে তারল্য সংকট নেই, বলছে বিএবি
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এক বিবৃতিতে বলেছে, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট নেই।
সোমবার দেয়া ওেই বিবৃতিতে বিএবি আরও বলেছে যে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। কিন্তু এটা সত্য না; এতে আরও বলা হয়, ব্যাংকগুলোতে তারল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
আরও পড়ুন: হালাল অ্যাক্রেডিটেশন স্কিম চালু করবে বিএবি
বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক দশমিক ৭০ লাখ কোটি টাকার তারল্য অবশিষ্ট রয়েছে।যা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। বৈঠকে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর বিএবি এ বিবৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২৬ লাখ কম্বল দিল বিএবি