আফ্রিকা
ডিআর কঙ্গোতে ভারী বৃষ্টিপাতে প্রাণহানি বেড়ে ৩৩
আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ডিআর কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) ভোরে দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তামন্ত্রী জ্যাকুয়েমেন শাবানি বলেছেন, শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত রাতভর প্রবল বর্ষণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে বেশকিছু মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর।
দুর্গতদের উদ্ধার ও সহায়তার জন্য সরকার সশস্ত্র বাহিনী, বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং কিনশাসা প্রাদেশিক সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে লোকজনকে সরিয়ে নিতে জরুরি উদ্ধারকারী দল মোতায়েনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বন্যায় শহরের বেশিরভাগ অবকাঠামো অচল হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে প্রধান সড়কগুলো। শহরজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বলিভিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে মৃত্যু বেড়ে ২৮
বন্যার কারণে নাজিলি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আসা-যাওয়ার রুটে মারাত্মক ব্যাঘাতের কথা জানিয়েছে দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয়। আটকে পড়া যাত্রীদের সহায়তার জন্য জরুরি ফেরি পরিষেবা মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলেও পূর্বাভাসে বলেছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের শহরটিতে আরও ধ্বংসের আশঙ্কা রয়েছে।
ডিআরসিতে বর্ষাকাল সাধারণত নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
২৬৬ দিন আগে
ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনকে ‘অপরাধ’ স্বীকৃতি দিচ্ছে আলজেরিয়া
ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আইন প্রণয়ন করতে চলেছে ফ্রান্সের এক সময়ের উপনিবেশ আলজেরিয়া।
স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ মার্চ) একটি খসড়া আইন প্রণয়নের লক্ষে দেশটির পার্লামেন্টে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। খসড়াটি চূড়ান্ত হলে সেটি সরকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।
এই পদক্ষেপ ফ্রান্স ও আলজেরিয়ার মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে, ঐতিহাসিক অপরাধের জন্য ফ্রান্সকে ক্ষমা চাইতে আলজিয়ার্স অনেকবার চাপ দিলেও তা গ্রাহ্য করেনি প্যারিস। ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই এবার ফরাসি শাসকদের নানা অপকর্মকে আনুষ্ঠানিকভাবে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চলেছে আলজিয়ার্স।
১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ১৩২ বছর ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল আলজেরিয়া। সে সময় ফরাসিরা আলজেরিয়ার মানুষের ওপর নানা অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছে বলে অভিযোগ ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত এই দেশটির।
এ বিষয়ে গত সপ্তাহে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টের এক বৈঠকে আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় ‘ফরাসিদের অত্যাচার আলজেরিয়ানদের স্মৃতিতে এখন অম্লান’ বলে অভিহিত করেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার ব্রাহিম বুঘালি।
১৩২ বছরের ফরাসি শাসনামলে আলজিরিয়ানরা যা কিছু সহ্য করেছে, সেই সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের স্মৃতির বিষয়। কেউ কেউ হয়তো এটিকে চাপ প্রয়োগের একটি হাতিয়ার হিসেবে দেখাতে চেষ্টা করতে পাারেন, কিন্তু বিষয়টি তা নয়।’
আরও পড়ুন: তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
এই আইন প্রণয়নকে দেশটির নাগরিকদের অসামান্য ত্যাগের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
আলজেরিয়ায় ফ্রান্সের (ঔপনিবেশিক) শাসকরা যেসব অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছিলেন, সেসব সত্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসাটা দেশটির ঐতিহাসিক ও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন ব্রাহিম।
আলজেরিয়ার আইনপ্রণেতাসহ ইহিতাস ও আইন বিশেষজ্ঞরা এই (আইন প্রণয়নের) উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছেন। এর আগে, ফ্রান্সকে ঔপনিবেশিক অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তুলেছিলেন তারা।
ঔপনিবেশিক শাসনামলে ফরাসিরা যেসব অপরাধ সংগঠিত করেছিল, সেসব নিয়ে একটি তালিকাও প্রণয়ন করেছেন তারা। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ১৮৪৫ সালে সংঘঠিত দাহারা গণহত্যা ও সাহারা মরুভূমিতে পরিচালিত পরমাণু পরীক্ষা।
আলজেরিয়ার ঐতিহাসিক তথ্যমতে, ১৮৪৫ সালে একটি গুহার মধ্যে অবস্থানরত কয়েক শ’ মানুষকে ধোঁয়া দিয়ে বের করে এনে হত্যা করেছিল ফরাসি সেনারা, যার মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিল।
ফরাসিদের আরেক ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে, আলজেরিয়ার সাহারা মরুভূমিতে অবস্থিত অংশে ১৯৬০ থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে ১৭টি পারমাণবিক পরীক্ষা। এতে স্থানীয় জলবায়ুতে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে এখনও অঞ্চলটির বাসিন্দারা ক্যান্সারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এমন আরও অনেক অপরাধের বর্ণনা রয়েছে তালিকায়।
সম্প্রতি যে আইনটি প্রণয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এমন একটি আইনের দাবি ১৯৮৪ সালের দিকেও করা হয়,কিন্তু বারবার পদক্ষেপ পেছানোর ফলে সেটি আর বাস্তব রূপ পায়নি।
এরপর ২০০১ সালেও এই রকম আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তবে তাও বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০৫ সালে ফরাসিদের প্রণীত একটি আইনকে কেন্দ্র করে নতুন করে এই দাবি জোরালো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভ, শিক্ষার্থীকে আত্মসমর্পণে মার্কিন পুলিশের চিঠি
ওই বছর নিজেদের শিক্ষাক্ষেত্রে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলকে ইতিবাচক হিসেবে পড়ানোর জন্য একটি আইন প্রণয়ন করে ফ্রান্স। এতে ক্ষুব্ধ হয় আলজেরিয়ার মানুষ। পাল্টা হিসেবে তারা আইনের মাধ্যমে ফরাসি শাসনকে অপরাধ হিসেবে আখ্যা দেওয়ার দাবি তোলেন।
এরপর ২০২১ সালে আলজেরিয়ার শতাধিক আইনপ্রণেতা দাবি তোলেন, ঔপনিবেশিক শাসনামলে সংগঠিত অপরাধের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত প্যারিসের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে যেতে পারবে না আলজিয়ার্স। এ লক্ষ্যে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করতে সরকাররের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
এদিকে, বিগত কয়েকমাস ধরে ঐতিহাসিক অভিযোগ, অভিবাসন নীতিতে মতবিরোধ, পশ্চিম সাহারা নিয়ে মরক্কোর সঙ্গে আলজেরিয়ার বিরোধে রাবাতকে ফ্রান্সের সমর্থন দেওয়ার মতো বিষয় নিয়ে আলজিয়ার্স-প্যারিস কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে।
দীর্ঘস্থায়ী এই কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রসঙ্গে শনিবার (২২ মার্চ) এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আব্দেলমাজিদ তেববুনে বলেন, দ্বিপাক্ষিক বিষয় সমাধানে ‘একমাত্র রেফারেন্স পয়েন্ট’ হিসেবে থাকবেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বা তার মনোনীত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেই সমস্যাগুলোর সমাধান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এছাড়া ফরাসি সরকারকে ঔপনিবেশিক অপরাধ স্বীকার করে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার জন্য অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে আসছে আলজেরিয়া। অতীতের তিক্ততা মিটিয়ে স্থিতিশীল ও গঠনমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য এ উদ্যোগ উভয় দেশের জন্যই অপরিহার্য বলে মনে করে দেশটির সরকার।
২৭৮ দিন আগে
ট্রাম্পের কাছে ‘অবাঞ্ছিত’ হলেও আফসোস নেই ইব্রাহিম রসুলের
ট্রাম্প প্রশাসন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও এই নিয়ে কোনো ‘আফসোস’ নেই বলে জানিয়েছেন সম্প্রতি বহিষ্কৃত যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুল। নিজ দেশে পৌঁছে এসব কথা বলেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ মার্চ) কাতার হয়ে প্রায় ৩২ ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে স্ত্রী রাশিদাকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন রসুল। বিমান বন্দরে প্রায় তিন শতাধিক সমর্থক তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও এতে তার কোনো আফসোস নেই, কারণ নিজ দেশের জনগণের ভালোবাসায় তিনি সিক্ত। এর আগে গত ১৫ মার্চ ‘জাতি বিদ্বেষী’আখ্যা দিয়ে ইব্রাহিম রসুলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আমেরিকা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন ইব্রাহিম রসুল। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনার কিছু নেই, এখন থেকে তাকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।” বিদেশি কোনো নাগরিককে স্বাগতিক দেশ অবাঞ্জিত ঘোষণা করলে কূটনৈতিক পরিভাষায় তাকে পারসোনা নন গ্রাটা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ও প্রিটোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এরই মধ্যে রসুলকে বহিষ্কারের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বহিষ্কারের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে দেশটির থিংক ট্যাংক মাপুঙ্গুবওয়ে ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক রিফ্লেকশন আয়োজিত এক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে ট্রাম্পের সমলোচনা করে রসুল বলেন, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে, দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
এ কারণেই ওয়াশিংটন তাকে বহিষ্কার করেছে বলে অভিমত দিয়েছেন অনেকে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে কোনো আফসোস নেই উল্লেখ করে বিমানবন্দরে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অপমান করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন তাকে পারসোনা নন গ্রাটা ঘোষণা করলেও নিজ দেশের মানুষের ভালোবাসায় সেটি সম্মানে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষের এমন ভিড় ও তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলে উবুন্টু (আফ্রিকান শব্দ উবুন্তু মানে হলো মানবতা বা অন্যের প্রতি মানবিকতা) অনুভব হয়।’ মানুষের প্রতি ভালোবাসা বোঝাতে এবং একে অপরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝাতে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তাই উবুন্টুর মানে দাঁড়ায় ‘আমি আছি কারণ আমরা আছি।’
সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে রসুল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া পারসোনা নন গ্রাটার অপমান আমি সম্মান হিসেবে গ্রহণ করছি। এই বহিষ্কারাদেশ প্রমাণ করে আমরা ঠিক কাজটিই করেছি।’
এ সময় আফ্রিকার কূটনীতি এ বিষয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রচলিত নীতির পাশাপাশি উবুন্টুর মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উবুন্টু কূটনীতি স্বাগতিক দেশকে তোষামোদ করায় বিশ্বাস করে না, বরং যেকোনো বিষয়ে ওই দেশকে সঠিক পথ দেখাতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকার কূটনীতি ব্যর্থ হয়েছে কিনা; সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহিম রসুল বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন আমাকে বহিষ্কার করেছে, এর মানে আমার বক্তব্য তাদের সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছেছে।’
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন তার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হলেও তিনি তার সমাজের মূল্যবোধ রক্ষা করেছেন বলে অভিমত দেন তিনি। এতে উবুন্টু কূটনীতি কাজ করেছে বলেও তার ধারণা প্রকাশ করেন রসুল।
শিগগিরই তার জায়গায় যোগ্য কাউকে নিয়োগ দেবেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আফ্রিকার মূল্যবোধ বিসর্জন না দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করবেন, এমন কাউকে প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব দেবেন বলে অভিমত দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে রসুল তাদের প্রেসিডেন্টকে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৭৯ দিন আগে
মিসরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭
মিসরে দুটি পিকআপ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও চারজন। শুক্রবার (২১ মার্চ) দেশটির আচওয়ান প্রদেশে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম।
রাষ্ট্রীয় পত্রিকা আহরাম জানিয়েছে, দেশটির আচওয়ান প্রদেশের ওয়াদি আল আলাকি সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
আচওয়ান প্রদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন পরিচালক বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানিয়েছে, অতিরিক্ত গতির কারণে গাড়ি দুটির সংঘর্ষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত
সূত্রটি বলছে, দুটি গাড়িতে মিসরীয় ও সুদানের নাগরিকদের বহন করছিল। কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত করছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর হাজার হাজার হতাহতের ঘটনা ঘটে মিসরে। এর বেশিরভাগই ঘটে অতিরিক্ত গতির কারণে। এছাড়া রয়েছে ট্রাফিক আইন না মানা ও সড়কের দুর্বল অবকাঠামো।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে মিসর বিগত কয়েক বছরে নতুন নতুন সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, পুরোনো সেতু মেরামত করেছে।
২৮২ দিন আগে
এসিড বর্জ্যে জাম্বিয়ার বৃহত্তম নদীটি এখন প্রাণহীন
চীনা-মালিকানাধীন খনি থেকে এসিড ছড়িয়ে পড়ে দূষিত হয়েছে জাম্বিয়ার সবচেয়ে বড় নদীটি। এতে লাখ লাখ মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশবিদরা।
নদীর ভাটিতে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূষণ শনাক্ত করা হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশটির উত্তরাঞ্চলের তামার খনি থেকে এসিডিক বর্জ্যের একটি টেইলিং ড্যাম (বাঁধ) ভেঙে গেলে এই দূষণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে। খনিজ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বর্জ্য রাখার জন্য এই টেইলিং ড্যাম ব্যবহার করা হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটির ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, ঘনীভূত এসিড, দ্রবীভূত কঠিন বস্তু ও ভারী ধাতবের অন্তত পাঁচ কোটি লিটার বর্জ্য কাফু নদীর স্রোতে মিশে গেছে। জাম্বিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এই নদীটি।
দেশটির কপারবেল্ট প্রদেশের পরিবেশকর্মী চিলিকওয়া মুম্বা বলেন, ‘এটি একটি পরিবেশগত দুর্যোগ যা ভয়াবহ বিপর্যয় নিয়ে আসবে।’
দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে তামার খনি উত্তোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে চীন। বিশ্বের শীর্ষ ১০ তামা উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে জাম্বিয়া একটি। স্মার্টফোন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তামা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
বিশেষজ্ঞদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হাকাইন্দি হিচিলেমা বলেন, ‘এটি এমন একটি সংকট, যা কাফু নদীর আশপাশের লাখ লাখ মানুষ ও বন্যপ্রাণীর জন্য হুমকি তৈরি করছে।’
দেশটির ভেতর দিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটারজুড়ে প্রবাহিত এই নদী। বর্তমানে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির পরিধি নির্ণয়ে তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
২৮৮ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম রসুলকে আর ‘স্বাগত জানানো হবে না’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এমন এক সময় এই সিদ্ধান্ত এসেছে, যখন আফ্রিকান দেশগুলোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মার্কো রুবিও বলেন, ‘ইব্রাহিম রসুল একজন ‘জাতি-বিদ্বেষী’ রাজনীতিবিদ, যিনি আমেরিকা ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘৃণা করেন। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনার কিছু নেই, এখন থেকে তাকে পারসোনা নন গ্রাটা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’-খবর এপি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের
এরমধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে তার ভূমিকার ইতি ঘটেছে। গেল ১৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে নিজের পরিচয়পত্র দেন ইব্রাহিম রসুল। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন তিনি।
এরআগে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই রাজনীতিবিদ।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা করতে দেখা গেছে ট্রাম্প ও তার মিত্র ইলন মাস্ককে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায়ই বেড়ে উঠেছেন ইলন মাস্ক। তাদের দাবি, দেশটিতে নতুন ভূমি আইনে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক। কখনো-কখনো নিম্ন পদ-মর্যাদার কূটনীতিকদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়।আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই বহিষ্কারের ঘটনা দুঃখজনক।’ এতে এ ঘটনায় প্রচলিত কূটনৈতিক রীতিনীতি অনুসরণ করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক গড়তে দক্ষিণ আফ্রিকা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
শৈশবে কেপ টাউনের একটি গ্রাম থেকে ইব্রাহিম রসুলের পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেখানকার শ্বেতাঙ্গরা। পরবর্তীতে তিনি বর্ণবাদবিরোধী প্রচারে নামেন। দেশটির বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা তাকে ‘বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। ম্যান্ডেলার আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন ইব্রাহিম রসুল।
শুক্রবার জোহানেসবার্গের একটি ইনস্টিটিউটের ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে ইব্রাহিম রসুল বলেন, ‘ক্ষমতার বিরুদ্ধে, দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার ওপর শ্রেষ্ঠত্ববাদী হামলা—আমরা এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি হিসেবে দেখি, এমএজিএ আন্দোলন, দ্য মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন আন্দোলন—কেবল শ্রেষ্ঠত্বাবাদী প্রবৃত্তি থেকেই আসছে না, সুস্পষ্ট উপাত্ত বলে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক জনমিতিক পরিবর্তনের কথা, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ নির্বাচকমণ্ডলীর সংখ্যা ৪৮ শতাংশ হতে যাচ্ছে।’
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ও প্রিটোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। গেল ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় মার্কিন সহায়তা বন্ধ করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শ্বেতাঙ্গদের কাছ থেকে ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে।’
সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো কৃষক নিরাপত্তার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পালিয়ে আসতে চান, তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানানো হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’
২৮৯ দিন আগে
মালিতে স্বর্ণের খনি ধসে নিহত ৪৮
মালির পশ্চিমাঞ্চলে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি স্বর্ণের খনিতে ধসের ঘটনায় কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কায়েস অঞ্চলের কেনিবা জেলার দাবিয়া কমিউনের একটি গ্রাম বিলালকোটোতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, খনিতে একদল নারী স্বর্ণের খোঁজার কাজ করার সময় তাদের ওপর কারিগরদের একটি ক্যাটারপিলার মেশিন পড়েছিল।
কর্মকর্তা এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন, ‘৪৮ জন নারী ঘটনাস্থলেই মারা যান।’ আরও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় অবৈধ স্বর্ণের খনিতে ভূমিধসে নিহত ১১, নিখোঁজ ১৯
সিনহুয়াকে কর্তকর্তারা বলেন, কোনো কোনো সূত্র প্রায় ৫০ জনের মৃত্যুর খবর দিচ্ছে। তবে আপাতত মৃতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করা কঠিন, এমনকি প্রাথমিকভাবেও। কারণ, বেশ কিছু ব্যক্তি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত। এ কারণে যেকোনো মুহূর্তে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে।
চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি দেশটির কৌলিকোরো অঞ্চলের কাঙ্গাবা জেলার ডাঙ্গা এলাকায় একটি স্বর্ণের খনিতে ধসের ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার স্বর্ণের খনিতে ভূমিধস: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩
৩১৬ দিন আগে
উগান্ডায় ইবোলা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু
উগান্ডায় ইবোলা ভাইরাস শনাক্তের পরে রোগীদের পরীক্ষামূলক টিকা দিতে শুরু করেছে দেশটি। উগান্ডায় ভাইরাসটির সুদান প্রজাতির বিস্তারে ১ জনের মৃত্যু ও দুইজন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে এক প্রতিবেদনে বলেছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
প্রথম পর্যায়ে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী কাম্পালাতে একজন নার্সের মৃত্যু ও পরিবারের আরও দুজন সদস্য আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হয়।
ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের উৎস জানতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, ইবোলা সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের যেকোনো তরল কিংবা মলমূত্রের সংস্পর্শে অন্যরা সংক্রমিত হতে পারেন। ভাইরাসটির উপসর্গ হিসেবে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দেখা দিতে পারে জ্বর। হতে পারে বমি, ডায়রিয়া, শরীর ব্যথা। এছাড়াও কিছুক্ষেত্রে শরীরের অভ্যন্তরে ও বাইরে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
কাম্পালার বিশাল ও ভ্রাম্যমাণ ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে সংক্রমণ মোকাবিলা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, ভাইরাসে প্রাণ হারানো সেই নার্স একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি আক্রান্ত হওয়ার আগে দেশের পূর্বঞ্চলের এমবেলাতে গিয়েছিলেন। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আগে তিনি কবিরাজের চিকিৎসাও নিয়েছিলেন।
তিনি আনুমানিক ২৩৫ জন মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন বলে ধারণা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উগান্ডা একটি ঘনবসতিপূর্ন দেশ হওয়ায় ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে হিমশিম খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্তজার্তিক এইডস ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভের দেওয়া ২০০০ টিকা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক মাতশিদিসো মোয়েতি ইবোলা ভাইরাসের প্রতিরোধমূলক টিকা পরীক্ষাকে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার গুরুত্বকেও তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন:দেশে প্রথমবারের মতো ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ট্রাম্প প্রশাসন সরে আসার পর এবং বিদেশি সহায়তা বন্ধের পর ইবোলায় এটিই প্রথম আক্রান্তের ঘটনা। উগান্ডায় ইতোপূর্বে ইবোলার বেশ কয়েকটি ধরণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০০০ সালে দেশটিতে ইবোলায় শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ভাইরাসটির বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভাইরাসটি একটি ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বর হিসেবে মানব শরীরে দেখা দেয়।
২০১৮ থেকে ২০২০ সালে পূর্ব কঙ্গোর জায়ার প্রজাতির ভাইরাসটি প্রতিরোধে কার্যকর হয়েছিল আরভিএসএফ-জেইবিওভি ভ্যাকসিন। এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তির প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল। উগান্ডায় ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে পূর্ব আফ্রিকায় ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বরের প্রাদুর্ভাবের ধারাবাহিকতা বৃদ্ধি করেছে। গত মাসে তানজানিয়ায় মারবার্গ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করে। এর আগে দেশে মারবার্গ প্রাদুর্ভাব শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয় রুয়ান্ডা।
ছড়িয়ে পড়া ইবোলা ভাইরাসটি ঠিক কিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তা নিশ্চিত করতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন সংক্রমিত কোনো পশুর কাঁচা মাংস খাওয়ার কারণে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন প্রথম সংক্রমিত ব্যক্তি।
ইবোলা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে। দক্ষিণ সুদান ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ইবোলা নদীর তীরে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল ভাইরাসটি। ইবোলা নদীর নামানুসারে ভাইরাসটির নামকরণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:কোভিড ল্যাবসৃষ্ট ভাইরাস: আস্থা কম সিআইএ’র সিদ্ধান্তে
৩২৮ দিন আগে
ভূমধ্যসাগরে নৌদুর্ঘটনা: ২৩ বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর লাশ দাফন
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌদুর্ঘটনার শিকার ২৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তাদের অবয়ব দেখে বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হয়েছে। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় এমন তথ্য দিয়েছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাসার।
তিনি বলেন, ২৫ জানুয়ারি রাতে লিবিয়া উপকূল থেকে একটি নৌকা ৫৬ জন যাত্রী নিয়ে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেয়। খুব সম্ভবত এদিন রাতেই নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পরে ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উপকূলে মরদেহ ভেসে আসতে থাকে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ২৮ জানুয়ারি সাতজন, ২৯ জানুয়ারি ১১ জন, ৩০ জানুয়ারি ৩ জন ও ৩১ জানুয়ারি ২ জন—মোট ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলো আজদাদিয়া এলাকায় সমাহিত করা হয়েছে।
‘লাশগুলো পচে গিয়েছিল। এগুলো রাখার কোনো উপায় ছিল না। লাশ উদ্ধার ও দাফনের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তারা রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের লোকজন। তারা জানিয়েছেন, অববয়ব দেখে তাদের মনে হয়েছে, লাশগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের। লাশগুলোর সঙ্গে কোনো ডকুমেন্ট ছিল না,’ বলেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এছাড়াও মুমুর্ষু অবস্থায় আরও দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে সম্ভবত সেনাবাহিনী বা পুলিশের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ পাইনি। বাকি যারা এখনো নিখোঁজ, তাদেরও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
৩২৯ দিন আগে
সুদানে হাসপাতালে হামলায় নিহত ৭০
সুদানের দারফুর অঞ্চলের অবরুদ্ধ শহর এল ফাশেরে চালু থাকা একমাত্র হাসপাতালে নৃশংস হামলায় প্রায় ৭০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি সৌদি টিচিং ম্যাটারনাল হাসপাতালে হামলার ঘটনাকে ‘আতঙ্কজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
পোস্টে টেড্রোস বলেন, হাসপাতালটি রোগীতে পূর্ণ থাকা অবস্থায় হামলাটি চালানো হয়েছে। এতে ১৯ জন আহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আল মালহার নামে আরও একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলার কথাও জানিয়েছেন টেড্রোস।
আরও পড়ুন: সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় ৩ দিনে নিহত ৪২
স্থানীয় কর্মকর্তারা এই বর্বরোচিত হামলার জন্য সুদানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত থাকা আধাসামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করেছেন।
২০২৪ সালের মে মাস থেকে এল ফাশের অবরোধসহ সংঘাতের সময় অসংখ্য নৃশংস ঘটনার জন্য আরএসএফকে দায়ী করা হয়।
চলমান সংঘাতের কারণে শহরটির প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিকরা বাস্তুচ্যুত। তারা মাসের পর মাস সহিংসতা ও বঞ্চনা সহ্য করে চলেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই সংঘাতের ফলে ২৮ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে। লাখ লাখ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া জাতিগত আফ্রিকান গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ডাব্লুএইচও এবং অন্যান্য বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলো স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে সুদানে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: সুদানে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ৪৫ জন নিহত
৩৩৭ দিন আগে