ইউএস-ও-কানাডা
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল
তহবিল কাটছাঁটের পর এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার সুযোগও হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ মে) দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ক্রিস্টি নোম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে আর বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পারবে না দেশটির সবচেয়ে পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি বর্তমানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন, তাদের অবশ্যই স্থানান্তর করতে হবে, না হলে তারা দেশটিতে অবস্থানের আইনগত বৈধতা হারাবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও তীব্র হলো।
ক্রিস্টি নোম বলেন, “হাভার্ড এমন একটি ‘অসমর্থনযোগ্য ও সন্ত্রাসবাদী’ পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে ইহুদি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।”
এ ছাড়া, চীনের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গেও বিশ্ববিদ্যালয়টির যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নোমের দাবি, ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও আতিথেয়তা দিয়েছে হাভার্ড।
আরও পড়ুন: জামিনে মুক্তি পেলেন টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
এ বিষয়ে তিনি গত বছর ট্রাম্প-সমর্থিত ফক্স নিউজের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে দাবি করা হয়, ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের শিনজিয়াং প্রোডাকশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন করপোরেশনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে হাভার্ড। মার্কিন রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যরা একটি চিঠিতে এ বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।
ক্রিস্টি বলেন, ‘আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাই তারা আর বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না এবং বর্তমানে থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তর হতে হবে। নইলে তাদের আইনগত বৈধতা হারাবে।’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৭ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন, যা ওই সময় ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থীর ২৭ দশমিক ২ শতাংশ।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বেআইনি হিসেবে অভিহিত করেছে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। সরকারি এই সিদ্ধান্তের পর তারা শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়ারও চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক
এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, সরকারের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হার্ভার্ডের সদস্য ও দেশের জন্য গুরুতর ক্ষতির হুমকি তৈরি করেছে। একই সঙ্গে হার্ভার্ডের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমেরও ক্ষতি করছে।
এর আগে, হাভার্ডসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ইহুদি-বিদ্বেষের আখড়া’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে এ দাবিকে অস্বীকার করে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া গত বসন্তে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য না দিতে প্রকাশ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করায় দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
এর জেরেই জানুয়ারি মাসে হাভার্ডের ২৬৫ কোটি ডলারের তহবিল কমিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত সুবিধাও বাতিল করার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এদিকে ক্রিস্টি নোম বলেন, ‘গত বসন্তে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীদের ভিডিও বা অডিও রেকর্ডসহ সব ধরনের তথ্য যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে দেওয়া হয়, তাহলে তারা আবার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে পারবে।’
এ বিষয়ে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, ‘ইহুদি-বিদ্বেষ মোকাবিলায় গত দেড় বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং একটি বিস্তৃত কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।’ তবে আইনসম্মত ও মৌলিক নীতিমালার প্রশ্নে তারা এক চুলও নড়বে না বলে সতর্ক করে দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনের অভিযোগ, বিদেশি শিক্ষার্থীরা অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মে জড়িত। কিন্তু এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেননি।’
অন্যদিকে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগসূত্র সম্পর্কে হার্ভার্ডের একজন মুখপাত্র জানান, এ বিষয়ে তারা কংগ্রেসের রিপাবলিকানদের ওই চিঠির জবাব দেবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যখন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলেছে, সে সময় ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। এর জেরেই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে বেশিরভাগ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে নিজেদের ধারণার কথা জানিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমেরিকান শিক্ষা কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট টেড মিশেল। দেশটির প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘অবৈধ ও সংকীর্ণ মানসিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করবে এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আসার আগ্রহ হারাবেন।’
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইনি অবস্থান নিয়ে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাকে একটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ বিষয়টি আগে কেবল প্রশাসনিক ডেটাবেস হিসেবেই ছিল। এখন তা হয়ে উঠেছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ। অভিবাসন কর্মকর্তারা এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের বৈধতা বাতিল করেছে।
পরবর্তীতে এই প্রচেষ্টা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং এতে অনেক শিক্ষার্থীর বৈধতা পুনর্স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসন যেন আর এভাবে বৈধতা বাতিল করতে না পারে সেজন্য সারা দেশের জন্য একটি নিষেধাজ্ঞাও জারি করে আদালত।
২২০ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২১ মে) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরের (ক্যাপিটাল জুইশ মিউজিয়াম) কাছে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান ক্রিস্টি নোম। তিনি জানান, এ হামলার ঘটনা ঘটেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ওয়াশিংটন কার্যালয়ের একেবারে কাছাকাছি এলাকায়।
ঘটনার পর দেশটির মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান পামেলা স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও অন্যজন পুরুষ। তারা ক্যাপিটাল জুইশ মিউজিয়ামে একটি অনুষ্ঠান শেষে বের হচ্ছিলেন। সে সময় হামলাকারী চারজনের একটি দলের দিকে গুলি চালান।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম ইলিয়াস রদ্রিগেস (৩০), তিনি শিকাগোতে বসবাস করেন। হামলার আগে তাকে জাদুঘরের বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়। গুলির করার পর হামলাকারী জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
সে সময় রদ্রিগেস ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন বলেও জানান পামেলা। পাশাপাশি ওই স্থানে বর্তমানে আর কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলেও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
এ হামলার দুই প্রত্যক্ষদর্শী ইয়োনি কালিন ও কেটি কালিশার জানান, যখন গুলির শব্দ হয়, তখন তারা জাদুঘরের ভেতরে ছিলেন। এ সময় চোখেমুখে আতঙ্ক মাখা এক ব্যক্তি জাদুঘরের ভেতরে ঢোকেন।
কালিন বলেন, ‘উপস্থিতদের কয়েকজন তাকে (ইলিয়াস) সাহায্য করতে এগিয়ে যান এবং পানি পান করতেও দেন। আমরা ভেবেছিলাম যে তিনিও বোধহয় আততায়ীর গুলিতে ভয় পেয়েছেন; বুঝতেই পারিনি যে তিনিই হামলাকারী।
তিনি বলেন, “পুলিশ ভেতরে আসলে ওই ব্যক্তি একটি লাল কেফিয়াহ (বিশেষ ধরনের স্কার্ফ) বের করে বারবার ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।”
তিনি আরও বলেন, ‘গাজা ও ইসরায়েলের মানুষের পাশে কীভাবে দাঁড়াতে পারি, কীভাবে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা একসঙ্গে কাজ করে নির্দোষ মানুষদের সাহায্য করতে পারে, তা নিয়েই (জাদুঘরে) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অথচ এই অনুষ্ঠানেই সে ঠাণ্ডা মাথায় দুজনকে হত্যা করল!’
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেন, তিনি ওয়াশিংটনের বর্তমান অ্যাটর্নি ও সাবেক বিচারক জেনিন পিরোর সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি অফিস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক এক্সে পোস্টে বলেন, ‘এই বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধ হতে হবে, এখনই তা করতে হবে! ঘৃণা ও উগ্রবাদ যুক্তরাষ্ট্রে ঠাঁই পাবে না।’ এ সময় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান তিনি।
এদিকে, এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন। এক্স পোস্টে এই ঘটনাকে তিনি ‘একটি বর্বর ও ইহুদি-বিদ্বেষমূলক সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আামদের বিশ্বাস, এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। বিশ্বের যেখানেই হোক, ইসরায়েল তার নাগরিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সুরক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে থাকবে।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত
এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগ বলেন, ‘ওয়াশিংটনে যা ঘটেছে তাতে আমি ভীষণভাবে ব্যথিত। এটি ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের জঘন্য বহির্প্রকাশ, যা আমাদের দুই তরুণ কর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।’ এক্স পোস্টে নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
২২১ দিন আগে
সন্তানকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদ খলিলের হৃদয়বিদারক চিঠি
পৃথিবীতে এসেছে প্রথম সন্তান, কিন্তু সদ্যজাত সন্তানকে কোলে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। তাই বুকভরা যন্ত্রণা নিয়ে লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে নবজাতকের উদ্দেশ্যে একটি হৃদয়বিদারক চিঠি লিখেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে মাহমুদের চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
পুত্র দীনকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদ লিখেছেন, ‘আমি যখন ভাবি, তোমাকে প্রথমবার কোলে নিতে পারিনি, তোমার প্রথম কান্না শুনতে পারিনি, তোমার মুঠোবাঁধা হাত খুলে দিতে পারিনি, কিংবা তোমার প্রথম ডায়াপার বদলাতে পারিনি; আমার হৃদয় ব্যথিত হয়ে ওঠে।’
নিজের সন্তানের জন্মের সময় তার অনুপস্থিতিকে তিনি ফিলিস্তিনের বহু পিতার অভিজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে উল্লেখ করেছেন মাহমুদ।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
বেদনা জড়িত বাক্যে তিনি লেখেন, ‘বর্ণবাদী শাসন ও দূরবর্তী কারাগারে বন্দি হয়ে আমিও অন্যান্য ফিলিস্তিনি পিতাদের মতো তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি।’‘প্রতিদিন জন্ম নেওয়া যেসব শিশুর পাশে তাদের বাবারা থাকেন না— তারা স্বেচ্ছায় যান না কোথাও। যুদ্ধ, বোমা, কারাগার কিংবা দখলদারত্বের নির্মম যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তোমার মা ও আমি যে শোক অনুভব করছি, তা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর বহু প্রজন্ম ধরে ডুবে থাকা দুঃখের সাগরের একটি ক্ষুদ্র ফোঁটা মাত্র’, বলেন মাহমুদ।
নিজেকে একজন রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে বর্ণনা করে মাহমুদ চিঠিতে আরও লেখেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতি অটল সমর্থনের কারণেই তিনি আজ বন্দি।
সন্তানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একদিন হয়তো তুমি জানতে চাইবে কেন ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য মানুষকে শাস্তি পেতে হয়, কেন সত্য ও সহানুভূতি ক্ষমতার জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’‘এই প্রশ্নগুলো কঠিন, কিন্তু আমি আশা করি আমাদের গল্প তোমাকে এটা শেখাবে; এই পৃথিবীর প্রয়োজন আরও সাহস। এমন মানুষ প্রয়োজন যারা সুবিধা নয় বরং ন্যায়কে বেছে নেন।’
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: খলিল মাহমুদকে আটক: ট্রাম্প টাওয়ারে ইহুদিদের বিক্ষোভ
২৩১ দিন আগে
জামিনে মুক্তি পেলেন টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
গ্রেপ্তারের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর লুইজিয়ানার একটি অভিবাসী আটককেন্দ্র থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুমিয়াসা অজটুর্ক। এ সময় তার মুক্তির জন্য কাজ করেছেন কিংবা সমর্থন দিয়েছেন, এমন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় শুক্রবার (৯ মে) তাকে মুক্তির আদেশ দেন একটি ফেডারেল আদালত। ছাড়া পাওয়ার পরদিনই (শনিবার) বোস্টনে ফিরে এসেছেন রুমিয়াসা। ৩০ বছর বয়সী রুমিয়াসা তুরস্কের নাগরিক। তিনি টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের পিএইচডি গবেষক ছিলেন।
শনিবার (১০ মে) বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের রুমিয়াসা বলেন, ‘অত্যন্ত কঠিন একটি সময় অতিবাহিত করার পর লেখাপড়ায় ফিরে যেতে চাই।’
‘গত ৪৫ দিনে আমার স্বাধীনতা ও শিক্ষা দুটিই হারিয়েছি আমি। তবে যারা আমাকে সমর্থন, সহায়তা কিংবা এই খারাপ সময়ে খোঁজ নিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ’, বলেন তিনি।
এর আগে গত ২৫ মার্চ ম্যাসাচুসেটসের সামারভিলে নিজের বাসা থেকে বের হলে তাকে অনেকটা ‘অপহরণের’ কায়দায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তার ঘনিষ্ঠরা। অ্যাসোসিয়েটস প্রেসের (এপি) ভিডিওতে দেখা যায়, মুখঢাকা সাত ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন তিনি চিৎকার করছিলেন।
এরপর তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ভার্মন্টে নিয়ে যান ম্যাসাচুসেটসে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। পরে লুইজিয়ানার বাসিলের একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয় রুমিয়াসাকে। তার ভিসাও বাতিল করা হয়।
পরে তার আটকের বিরুদ্ধে মামলা করেন রুমিয়াসা। মামলাটি বর্তমানে ভার্মন্টের বার্লিংটনে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ উইলিয়াম সেশন্সের কাছে বিচারাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘অপহরণের’ কায়দায় তুর্কি শিক্ষার্থীকে তুলে নিল মার্কিন পুলিশ
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, গত বছর ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে আরেকজন লেখকের সঙ্গে মিলে একটি কলাম লিখেছিলেন তিনি। একারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে সাংবিধানিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতার ভয়াবহ লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেন রুমিয়াসা।
রুমিয়াসার এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দাবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তুরস্কের এই শিক্ষার্থী জানান, তিনি আদালতে তার মামলা চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি আমেরিকার ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় ওপর তার ভরসা রয়েছেন বলেও মত দেন তিনি।
এদিকে রুমিয়াসার জামিনের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট সিনেটর এড মার্কি। তিনি বলেন, ‘এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তোমাকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত রুমিয়াসা। তোমার লড়াই আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষকে গর্বিত করেছে।’
এর আগে জামিন শুনানিতে ভিডিওর মাধ্যমে উপস্থিত হয়ে নিজের হাঁপানির সমস্যা বাড়ার কথা এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও শিশুদের নিয়ে তার ডক্টরেট সম্পন্ন করার কথা জজকে বর্ণনা করেন তিনি।
পরে কোনো ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই তাকে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন জজ সেশন্স। তিনি বলেন, রুমিয়াসা সমাজের জন্য কোনো ঝুঁকি নন। তাছাড়া তার পলায়নের ঝুঁকিও নেই। তবে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) পরামর্শে মুক্তির শর্তাবলীতে যেকোনো পরিবর্তন আনতে পারেন জজ।
সেশন্স বলেন, একটি কলাম লেখা ছাড়া রুমিয়াসারর গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে অন্য কোনো প্রমাণ দেয়নি সরকার। এছাড়া তার অভিবাসনের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য ইমেইল পাঠানো হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
গত বছর ফিলিস্তিনি গণহত্যা স্বীকার করতে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করার আবেদন জানিয়েছিল টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে ক্যাম্পাস পত্রিকা ‘দ্য টাফটস ডেইলিতে’ কলাম লেখেন রুমিয়াসাসহ চার শিক্ষার্থী।
সূত্র: ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান
২৩২ দিন আগে
নতুন পোপ নির্বাচিত হলেন রবার্ট প্রভোস্ট
রোমান ক্যাথলিক গির্জার নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন আমেরিকান কার্ডিনাল রবার্ট প্রভোস্ট। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় ভ্যাটিকানের কনক্লেভে কার্ডিনালদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছেন তিনি।
নিজের ক্যারিয়ারে পেরুতে ধর্মপ্রচার করে বেড়িয়েছেন রবার্ট প্রভোস্ট। এছাড়া ভ্যাটিকানের প্রভাবশালী বিশপস অফিসেরও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্যাথলিক গির্জার দুই হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
৬৯ বছর বয়সী এই পোপ নতুন নাম নিয়েছেন লিও চতুর্দশ।
এরআগে ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের চিমন দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হওয়ায় সবাই জেনেছেন যে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন পোপকে স্বাগত জানাতে ভ্যাটিকান সিটিতে বিপুল মানুষের ভিড় জমেছে।আরও পড়ুন: আজই শোনা যেতে পারে নতুন পোপের নাম: গিওভান্নি বাতিস্তা
পোপ হওয়ার যোগ্য ১৩৩ কার্ডিনালকে নিয়ে গঠিত কলেজ অব কার্ডিনালস। কোনো ধরনের মনোযোগ নষ্ট হওয়া ছাড়াই যাতে প্রার্থনা ও ধ্যান করতে পারেন, পাশাপাশি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে কারণে ভ্যাটিকানের ভেতরে কার্ডিনালদের আলাদা করে রাখা হয়েছে।
নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। ভোট হওয়ার পর একটি বিশেষ স্টোভে ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অর্থা পোপ নির্বাচিত হননি। আর সাদা ধোঁয়া বের হলে বুঝতে হবে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল আছেন, যারা পোপ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
আধুনিক সময়ে প্রথম দিনেই পোপ নির্বাচিত হওয়ার নজির নেই। তবে দ্বিতীয় দিনে নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকে বেশি। ২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিস এবং ২০০৫ সালে পোপ বেনেডিক্ট দ্বিতীয় দিনেই নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নির্বাচনে এবার অংশ নিয়েছেন ৭০ দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এটি পোপ ফ্রান্সিসের অধীনে গির্জার বৈশ্বিক বিস্তারের ইঙ্গিত বহন করে।
২৩৪ দিন আগে
কানাডা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে গণভোটের প্রস্তাব আলবার্টার প্রধানমন্ত্রীর
পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষের সম্মতি পেলে কানাডা থেকে আলাদা হতে আগামী বছর একটি গণভোটের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির তেলসমৃদ্ধ প্রদেশ আলবার্টার প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল স্মিথ।
সোমবার (৫ মে) সরাসরি সম্প্রচার হওয়া এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘প্রদেশটি কানাডা থেকে বিছিন্ন হয়ে যাক, আমি ব্যক্তিগতভাবে তা চাচ্ছি না।’ এ সময়ে ঐক্যবদ্ধ কানাডার মধ্যে একটি শক্তিশালী ও সার্বভৌম আলবার্টা নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ড্যানিয়েল স্মিথ বলেন, ‘গত এক দশকে আমাদের প্রদেশের ওপর অটোয়া যেভাবে চেপে বসেছে, সেটা চলতে থাকবে কিনা; আলবার্টার জনগণ সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।’
আরও পড়ুন: কানাডার নির্বাচনে জয় পেল প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসার এক সপ্তাহ পর ড্যানিয়েল স্মিথের এমন ঘোষণা এসেছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতির ওপর ক্রমাগত শুল্কারোপের হুমকি দিয়ে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কানাডাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একান্নতম অঙ্গরাজ্য হিসেবে একীভূত করতে চাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে মার্ক কার্নির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
একটি প্রাদেশিক গণভোটের জন্য আবেদনকারীদের যেসব শর্ত পূরণ করতে হতো, সেই বাধা কমিয়ে আনতে একটি আইন প্রণয়ন করেছে আলবার্টার ক্ষমতাসীল দল ইউনাইটেড কনজারভেটিভ। তবে আইনটি এখনো পার্লামেন্টে পাস হয়নি।
আইনটি পাস হয়ে গেলে নাগরিকদের নেওয়া উদ্যোগে গণভোটের নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি গণভোটের জন্য ১০ শতাংশ ভোটারের সই লাগবে, আগে যেটা ছিল ২০ শতাংশ।
এছাড়া আবেদনে এক লাখ ৭৭ হাজার ভোটারের সইয়ের জন্য আগে যেখানে ৯০ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
আলবার্টার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো বিশেষ সুবিধা কিংবা সহায়তা চাচ্ছি না, বরং উন্নয়ন এগিয়ে নিতে আলাদা হতে চাচ্ছি, যাতে আমাদের বিপুল সম্পদ আমরা রফতানি করতে পারি।’
‘জনগণকে কীভাবে আমরা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সামাজিক সুবিধা দেব, আমরা সেটা বেছে নেওয়ার জন্য স্বাধীনতা চাই; এমনকি সেটা যদি অটোয়ার পরিকল্পনার তুলনায় ভিন্নভাবেও করা হয়,’ বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব নীতির কারণে আলবার্টার লোকজন ক্ষুব্ধ, সেগুলোর অবসানে একটি আলোচক টিম গঠন করবেন বলেও জানিয়েছেন ড্যানিয়েল স্মিথ। আলবার্টাবাসীর কষ্ট ও আইডিয়ার কথা শুনতে ধারাবাহিকভাবে একটি প্যানেল আলোচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এডমন্টনের ম্যাকইওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জন সরোসকি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ক্ষোভ থাকতে পারে। সেটা যে একেবারে বিচ্ছিন্নতার দিকে যাবে, তা আমি বলতে পারছি না। তাদের অভাব-অনুযোগ গুরুতর। কিন্তু বিচ্ছিন্নতার শঙ্কা একেবারে অসম্ভব।’
আরও পড়ুন: মরক্কো ছেড়ে কানাডায় যাওয়া রাষ্ট্রদূত হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার
এরআগে ১৯৮০ ও ১৯৯৫ সালে কানাডা থেকে আলাদা হয়ে যেতে গণভোটের আয়োজন করে ফরাসিভাষী প্রদেশ কুইবেক। কিন্তু দুবারই তারা ব্যর্থ হয়েছে।
এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘আমি মনে করি না, স্মিথ বিচ্ছিন্নতা চাচ্ছেন। যেহেতু আলবার্টার লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ আছে, সেই ভাবনা থেকে কানাডার কাছ থেকে কিছু সুবিধা আদায় করতে চাচ্ছেন তারা।’
২৩৬ দিন আগে
কুখ্যাত সেই কারাগারটি ফের চালু করার নির্দেশ ট্রাম্পের
ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে বন্ধ হওয়া একটি কুখ্যাত কারাগার নতুন করে চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর দুর্গম দ্বীপ আলকাট্রাজে ১৯৩৪ সালে এই কারাগারটি স্থাপন করা হয়েছিল। পরে ১৯৬৩ সালে সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এবার কারাগারটি কেবল চালু করাই না, এটিকে আরও বড় করে পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রবিবার (৪ মে) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘এক সময় আমেরিকার জনগণকে রক্ষায় দেশটির বিপজ্জনক অপরাধীদের আলকাট্রাজ কারাগারে আটকে রাখা হতো। সেই কারাগারটিই আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা হিংস্র ও সহিংস অপরাধীদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এমনকি কিছু কিছু অপরাধী বারবারই সহিংস কার্যকলাপ করে দেশটির ক্ষতি করে আসছেন। আমি বিচার বিভাগ, ফেডারেল ব্যুরো অব আমেরিকা (এফবিআই) ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সঙ্গে কারাগার ব্যুরোকে একীভূত করে আলকাট্রাজ কারাগারটি ফের চালু ও সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে আমেরিকার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস অপরাধীদের রাখা হবে।’
এ বিষয়ে ফ্লোরিডা থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারাগারটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এটি আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিসহ ১০ অভিবাসীকে গুয়ান্তানামো বে পাঠানোর সিদ্ধান্ত, মামলা
প্রসঙ্গত, সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত আলকাট্রাজ কারাগারটি ৬৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ প্রিজনসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ভঙ্গুর অবকাঠামো ও উচ্চব্যয়ের কারণে ১৯৬৩ সালে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বীপে অবস্থিত হওয়ার কারণে এটি পরিচালনার খরচ ছিল অন্য যেকোনও ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ।
এছাড়া দ্বীপের অবস্থান, তীব্র স্রোত এবং বরফ শীতল পানির কারণে আলকাট্রাজকে আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কারাগার থেকে কোনো বন্দির পালানোর রেকর্ডও নেই। এফবিআইয়ের তথ্যমতে, কারাগারটি চালু থাকাকালীন ৩৬ জন আসামি অন্তত ১৪ বার পালানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। সবাই কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন। এটি বর্তমানে সান ফ্রান্সিসকোর অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।
এদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছেন সাবেক হাউস স্পিকার ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা ন্যান্সি পেলোসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘ষাট বছরেরও বেশি সময় আগে আলকাট্রাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ট্রাম্পের প্রস্তাবটি যথোচিত নয়।’
শুরুতে আলকাট্রাজ একটি নৌ প্রতিরক্ষা দুর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০ শতকের প্রথম দিকে এটিকে একটি সামরিক কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে বিচার বিভাগের অধীনে নেওয়া হয় এই কারাগারটি। এরপর থেকে ফেডারেল বন্দিদের এ কারাগারে পাঠানো শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৩০ বছর জেল খাটার পর নির্দোষ প্রমাণিত
এখানে রাখা কয়েদিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার আল কাপোন, মিকি কোহেন এবং জর্জ মেশিন গান কেলি।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ১৯৬২ সালে বার্ট ল্যাঙ্কাস্টার অভিনিত ‘বার্ডম্যান অফ আলকাট্রাজ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও বিখ্যাত হয়েছিল কারাগারটি। এছাড়াও ১৯৯৬ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘দ্যা রকে’র শুটিংও হয় এই দ্বীপে। ওই মুভিতে বিখ্যাত অভিনেতা শন কনারি ও নিকোলাস কেজ অভিনয় করেন।
২৩৮ দিন আগে
শত বছরের পুরনো লাইব্রেরিতে ‘লক্ষণরেখা’ টানলেন ট্রাম্প
পৃথিবীর নানা দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্ব অতি পরিচিত দৃশ্য। দেশগুলো যখন ভাগাভাগি আর নিজ ভূখণ্ড বুঝে নিতে মরিয়া, সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ভিন্ন বার্তা দিত হ্যাসকেল ফ্রি লাইব্রেরি অ্যান্ড অপেরা হাউস। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্তে অবস্থিত এই লাইব্রেরিতে বসে যেকোনো সময় যেকোনো দেশে বসে বই পড়া যায়—এমনকি দেখা যায় থিয়েটারও।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এরই ধারাবাহিকতায় অনন্য এই লাইব্রেরিটিও হারাতে বসেছে গৌরব। এতদিন অবাধে লাইব্রেরির এক অংশ থেকে আরেক অংশ চলাফেরা করা গেলেও এবার কানাডার নাগরিকদের জন্য ‘লক্ষণরেখা’ টানলেন ট্রাম্প। শতবছরের পুরোনো হ্যাসকেল ফ্রি লাইব্রেরিতে কানাডার নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রীতি এক যৌথ বিবৃতিতে কিউবেক প্রদেশের সীমান্তবর্তী স্ট্যানস্টেড শহর কর্তৃপক্ষ ও হ্যাসকেল ফ্রি লাইব্রেরি অ্যান্ড অপেরা হাউস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভবনটিতে কানাডীয়দের প্রবেশ বন্ধের একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারমেন্টের ডার্বিলাইন গ্রাম ও কানাডার কুইবেকের স্ট্যানস্টেড শহরের সীমান্তে অবস্থিত এই হ্যাসকেল ফ্রি লাইব্রেরি অ্যান্ড অপেরা হাউস। ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্যের এই ভবনটি বিশ শতকের শুরুর দিকে তৈরি করা হয়েছিল। এই ভবনের রয়েছে দুটি পৃথক ঠিকানা। একটি কানাডার, অন্যটি যুক্তরাষ্ট্রের। তবে ঢোকার পথ কেবল যুক্তরাষ্ট্রে।
এতদিন অনানুষ্ঠানিক একটি চু্ক্তির মাধ্যমে পাসপোর্ট ছাড়াই লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতেন কানাডীয় নাগরিকরা। কানাডীয়রা হেঁটে সীমান্ত পার করে প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে ভবনটিতে প্রবেশ করতেন। দুই দেশের সীমান্তকে আলাদা করতে লাইব্রেরির ভিতর একটি রেখা টানা আছে। তবে স্বাধীনভাবেই এই লাইন পার করে এখানে বই পড়তেন অনেকে।
তবে গত মঙ্গলবার থেকে কেবল কার্ডধারী ও লাইব্রেরির কর্মীরাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। অন্যদের কানাডা অংশের বের হওয়ার জরুরি পথ ব্যবহার করতে হবে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে কানাডার সব নাগরিককেই কানাডার অংশ দিয়েই প্রবেশ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত দেশদুটির আন্তঃসীমান্ত সহায়তা ও সম্প্রীতি নষ্ট করবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সীমান্তবর্তী ডার্বি লাইন অঞ্চলটির বাসিন্দা আলিসন হওয়েল বলেন, ‘এই লাইব্রেরিটি তার কাছে কেবল বই দেওয়া নেওয়ার জায়গা নয়, শত বছর ধরে এখানে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন ঘটেছে। তবে আলিসনের মতো অনেকেরই আশঙ্কা, ট্রাম্পের নতুন নীতির কারণে এই সম্প্রীতি নষ্ট হতে চলেছে।’
আলিসন বলেছেন, ‘ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের সম্পর্কে গভীর বিভেদ সৃষ্টির পথ আরও সহজ করে তুলবে।’
ডারবি লাইন গ্রামে মাত্র ৭০০ মানুষ বসবাস করেন, অন্যদিকে স্ট্যানস্টেডে ৩ হাজার লোকের বাস। অন্যান্য দেশের সীমান্তগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার অর্থনীতি ও সংস্কৃতি পরস্পর সংযুক্ত। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের নানা নীতির ফলে এই সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পরই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার ইচ্ছে পোষণ করেন ট্রাম্প। পরে কানাডার পণ্যে অতিরিক্ত কর আরোপ করেন, জবাবে কানাডাও পাল্টা শুল্কারোপ করে।
এরপরেই সীমান্তে থাকা লাইব্রেরিতে কানাডীয়দের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল ট্রাম্প প্রশাসন, কঠোর করেছেন সীমান্ত সুরক্ষাও। এতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষেরা, যাদের জীবন প্রণালী নানাভাবে পরস্পরের সঙ্গে জড়িত।
ভারমাউন্টের নিউপোর্টের মেয়র রিক উফোর্ড চেজ বলেন, ‘আমাদের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের জন্য এই লাইব্রেরিটি একটি শক্তিশালী প্রতীক। রাজনৈকিতভাবে খাতা-কলমে সীমান্তের অস্তিত্ব থাকলেও এখানকার বাসিন্দাদের জন্য বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই।’
সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সংহতি প্রদর্শনের জন্যই দুই দেশের সীমান্তে এই লাইব্রেরিটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির ফলে সেই লক্ষ্য লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করছেন লাইব্রেরির পাশের দুই এলাকার বাসিন্দারা।
কুইবেকের বাসিন্দা বুদ্রো বলেন, ‘দুই দেশ, দুই সম্প্রদায়কে এক করার জায়গা এটি। এখানে আমরা সবাই বন্ধু, পরিবার। আমরা একসঙ্গে বাস করি এখানে।’
ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কারণে কানাডা অংশে নতুন একটি প্রবেশদ্বার নির্মাণে প্রায় ১ লাখ ডলার খরচ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটির কোনো প্রয়োজন ছিল না। বরাবরই যু্ক্তরাষ্ট্র ও কানাডা দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশদ্বারটিই সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা গেলে বেশ ভালো হতো।’
২৪১ দিন আগে
কানাডার নির্বাচনে জয় পেল প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি
কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে জয় পেয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি। কানাডার ব্রডকাস্টিং করপোরেশন এমনটিই জানিয়েছে। দেশটির অর্থনীতি ও সার্বভৌমত্বের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির কারণে সোমবারের (২৮ এপ্রিল) নির্বাচনের ফলাফলে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে।
চলতি বছরের শুরুতে দেশটিতে আবাসন খরচ বৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান অভিবাসনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের পর লিবারেলদের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু দেশটির সার্বভৌমত্ব ও অর্থনীতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুমকিতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নাগরিকরা। এর ফলে তাদের মাঝে এক ধরনের জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠে। এর ফলেই লিবারেলদের পতনমুখী অবস্থার অবসান হয়—যা দলটিকে চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করেছে।
নির্বাচনের আগে ভ্যাঙ্কুবারে প্রাণঘাতি গাড়ির ধাক্কায় হতাহতের পর নির্বাচনী প্রচারণা কয়েক ঘণ্টা স্থগিত রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সম্পৃক্ততাকে উড়িয়ে দিয়ে জড়িত স্থানীয় এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। আটক ব্যক্তি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে জানায় পুলিশ।
বেশ কিছুদিন ধরে কানাডা জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্কারোপের হুমকি ও উত্তর আমেরিকার গাড়ি নির্মাতাদের কারখানা কানাডা থেকে সরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা দেশটির অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এতে অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মোকাবিলায় কানাডা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিচ্ছে?
নির্বাচনের জরিপে দেখা যায় ৩৪৩টি আসনের মধ্যে কনজারভেটিভ পাটির চেয়ে বেশি আসনে জয় পাবে কার্নির লিবারেল পার্টি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে লিবারেলরা অন্তত ১৭২ আসন জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে—নাকি আইন পাসের জন্য অন্য কোনো ছোট রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করতে হবে।
কানাডায় যেভাবে নির্বাচন হয়
কানাডায় ভোটাররা সরাসরি তাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন না। ভোটাররা ৩৪৩টি নির্বাচনী জেলায় কেবল হাউস অফ কমন্সে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচন করেন।
হাউস অফ কমন্সে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, সেই দলের নেতা সরকর গঠন করবে এবং তিনিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
তবে যদি কোনো দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনে জয়লাভ করতে না পারেন, তাহলে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল বিরোধী অন্য দলের সমর্থন নিয়ে সংখ্যালঘু সরকার গঠন করবে। তবে বিরল ঘটনা হলো— দুই বা ততোধিক দল আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি করে জোট সরকার গঠন করতে পারে।
লিবারেল দলের কার্নি ও কনজারভেটি দলের পোইলিভর উভয়ই বলেছেন, নির্বাচিত হলে তারা কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয় পুনর্বিবেচনা করবেন—যাতে উভয় দেশের অর্থনীতির অনিশ্চয়তা কেটে যায়।
যুক্তরাজ্যের নাগরিন নন এমন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে কার্নির ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আগে তিনি কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা করেছেন।
আরও পড়ুন: কানাডাকে ‘সত্যিকার অর্থে’ ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প: ট্রুডো
কানাডার নাগরিকদের নিয়ে ট্রাম্পের উপহাস
নির্বাচনের দিন কানাডার নাগরিকদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উপহাস করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তিনি নিজেই ব্যালটে আছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিৎ কানাডাকে। যুক্তরাষ্ট্র ভুলবশত কানাডাকে ভর্তুকি দেয় বলেও দাবি করেন তিনি।
পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘কানাডা রাজ্য না হওয়াটার কোনো মানে নেই।’
নির্বাচনের দিন কানাডার রেকর্ড ৭৩ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
২৪৪ দিন আগে
সৌদিকে ১০ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র
সৌদি আরবকে ১০ হাজার কোটি ডলার বা তারও বেশি মূল্যের (১০০ বিলিয়ন ডলার) অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দেবে বলে প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফরকালে এ প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট অন্তত ছয়টি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে।
এর আগে, রিয়াদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত একটি চুক্তি সম্পাদনে ব্যর্থ হয় বাইডেন প্রশাসন। সেই চুক্তিটি বাস্তবায়নেই বিরাট অঙ্কের এই অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সুদূরপ্রসারী এক সমঝোতার অংশ হিসেবে ওই চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা চালিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। সে সময় চীন থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ এবং সৌদিতে চীনা বিনিয়োগ সীমিত করার শর্তে রিয়াদকে আরও উন্নত মার্কিন অস্ত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। তবে নতুন করে ট্রাম্পের উত্থাপিত প্রস্তাবেও এই বিষয়গুলো অর্ন্তভুক্ত থাকবে কিনা, সূত্রগুলো তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
তারা জানিয়েছে, এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস ও সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে সৌদির সঙ্গে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এ সুসম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি পারস্পরিক নিরাপত্তা সহায়তা নিশ্চিত করতে সৌদির প্রতিরক্ষা চাহিদা মেটাতে ওয়াশিংটন কাজ করে যাবে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই রিয়াদকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দেশটিকে আনুমানিক ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ২০১৮ সাল নাগাদ মাত্র ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহ প্রক্রিয়াধীন ছিল।
সে সময় সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদির সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রশ্ন ওঠে। পরে ২০২১ সালে বাইডেনের আমলেই খাসোগি হত্যার প্রতিবাদ ও ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে সৌদিকে যেকোনো ধরনের অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন কংগ্রেস।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, বড় ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক অস্ত্র চু্ক্তি সম্পাদনে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
অনেক ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে সৌদি আরব। ট্রাম্পের আসন্ন সৌদি সফরকালে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে অন্তত তিনটি সূত্র। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সৌদি আরবের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে বলে ধারণা সূত্রগুলোর।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
২৪৬ দিন আগে