বৈদেশিক-সম্পর্ক
রোগীদের প্রথম দল সোমবার চীন যাচ্ছেন
উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম দল সোমবার চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। উন্নত চিকিৎসা সেবার দেওয়ার জন্য উভয় দেশের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রোগীরা দেশটিতে যাচ্ছেন।
প্রথম ব্যাচে ১১ জন রোগী থাকতে পারে জানিয়ে একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, তারা ১০ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এদিন দুপুর ১২টায় বিমানবন্দরের সিআইপি বহির্গমন টার্মিনালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন।
এ সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রোগী, চিকিৎসক ও ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীনের ইউনান প্রদেশের তিনটি শীর্ষ পর্যায়ের হাসপাতালকে বিশেষভাবে বাংলাদেশি রোগীদের গ্রহণের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
রাজধানীর চীনা দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'সব প্রচেষ্টা যদি সুষ্ঠুভাবে অব্যাহত থাকে, তবে চলতি বছরের মার্চের প্রথম দিকে বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম দল চীনে চিকিৎসা নিতে পারে।’
আরও পড়ুন: শিগগিরই চীন, থাইল্যান্ড ও জাপান সফরে যাবেন ড. ইউনূস
তিনি বলেন, উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা উন্নত করতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করা, চিকিৎসা প্রক্রিয়া স্পষ্ট করা এবং অনুবাদ দল গঠনসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিগুলো সম্পন্ন করছে।
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তার সাম্প্রতিক চীন সফরকালে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং চীনকে চীনকে অনুরোধ করেন যেন—বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সেবা চীনে সহজতর করা হয় এবং সহায়তাপ্রাপ্ত হাসপাতাল প্রকল্পগুলো যথাযথ বিবেচনা করে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও সর্বোচ্চ মানের সেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, 'চীন এসব প্রস্তাবকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।’
২৯৪ দিন আগে
শিগগিরই চীন, থাইল্যান্ড ও জাপান সফরে যাবেন ড. ইউনূস
বৈশ্বিক যোগাযোগ, সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দেশগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চলতি মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে চীন, থাইল্যান্ড ও জাপান সফর করবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ড. ইউনূস ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করতে পারেন। আশা করা হচ্ছে— ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে দুই দেশের নেতা ড. ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সুবিধাজনক সময়ে ড. ইউনূসকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান।
একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, 'আপাতত এই সফরের প্রস্তুতি চলছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ২৬ মার্চ ঢাকা ত্যাগ করতে পারেন।
সফর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য ড. ইউনূস চীনের হাইনান প্রদেশ থেকে বেইজিং যাবেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রধান উপদেষ্টা প্রথমে চীনের দক্ষিণাঞ্চলের হাইনান প্রদেশের বোয়াওতে ২৫ থেকে ২৮ মার্চ অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫-এ যোগ দেবেন।
ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার অনেক প্রধান, মন্ত্রী পর্যায়ের কর্মকর্তা, ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ এর উদ্যোক্তা এবং খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ ও স্কলাররা বার্ষিক সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছেন বিএফএ মহাসচিব ঝাং জুন।
ব্যাংককে ইউনূস-মোদির সম্ভাব্য বৈঠক
থাইল্যান্ড বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে ব্যাংককে এবং বাংলাদেশ ৪ এপ্রিল এর পরবর্তী চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে। শীর্ষ সম্মেলনের আগে ৩ এপ্রিল মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে।
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে প্রথমবারের মতো একান্ত বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপানের সঙ্গে আলোচনা
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার ইকুইনা আকিকো টোকিওতে ২৯ ও ৩০ মে অনুষ্ঠেয় নিক্কেই ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া ইভেন্টে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূসকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ জানান।
তিনি ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসকে মে মাসে অনুষ্ঠেয় ওসাকা এক্সপো ২০২৫-তে আমন্ত্রণ জানান।
কর্মকর্তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা নিক্কেই ৩০তম ফিউচার অব এশিয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ড. ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনে উভয় দেশই কাজ করছে।
২৯৪ দিন আগে
বাংলাদেশে ১/১১ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র ভুল করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
২০০৭-০৮ সালে ওয়ান-ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ভূমিকায় ত্রুটি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় সফররত সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন এফ ড্যানিলোভিচ। তিনি বলেছেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের এই সময়টায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ওপর যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। তবে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সমর্থনে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছে।
শনিবার (৮ মার্চ) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘ঢাকার এক নতুন ভোর: গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের গতিশীলতা নেভিগেট করা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ড্যানিলোভিচ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক, উন্নয়ন সংস্থা, নাগরিক সমাজের সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সম্প্রতি রাজধানীর বারিধারার গার্ডেন গ্যালারি কসমসে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতি নিয়ে এক আলোচনায় নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত মাইলাম ও কূটনীতিক ড্যানিলোভিচ। সেখানে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সমর্থন করতে আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বের ভূমিকা এবং নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর আলোকপাত করেন তারা।
আরও পড়ুন: সাবেক মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম মিলাম ও জন ডেনিলওয়িক্স এর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ: শাহরিয়ার
এদিন রাষ্ট্রদূত মাইলাম বাংলাদেশের গণতন্ত্র সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে সচেতন করার জন্য তার সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা একটি ছোট সংগঠন গঠন করি এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমেরিকান জনগণকে সচেতন করার জন্য কাজ করি। গত পাঁচ বছরে আমরা অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছি এবং এই উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
এই সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে আসতে পেরে আমি আনন্দিত, বিশেষ করে গত দশ বছরে ভিসার কারণে আমি বাংলাদেশ সফর করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করা ছিল আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমি যে তথ্য আমার সরকারের কাছে পৌঁছে দেব, তা সঠিকভাবে সংগ্রহ করাটা ছিল সবচেয়ে কঠিন অংশ। সেই সময় সরকার আমাকে তাদের পক্ষ নিতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল।’
গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরে জন এফ ড্যানিলোভিচ বলেন, ‘১৯৭১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতির ধারাবাহিকতা রয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো শাসক দলের জবাবদিহির অভাব। গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে হলে একটি শক্তিশালী সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক অপরিহার্য। স্বৈরাচারী শাসন কখনোই গণতন্ত্রের জন্য সহায়ক নয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে একটি তথ্যযুদ্ধের সম্মুখীন। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার মিডিয়াভিত্তিক বিভ্রান্তিমূলক তথ্য মোকাবিলায় কাজ করছে।’
‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল সম্পর্কে দেওয়া বিবৃতিও বিভ্রান্তিকর, যা মূলত কিছু ব্যক্তি দ্বারা প্রচারিত, যারা দুই দেশের সম্পর্ক অস্থিতিশীল করতে চায়।’
‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য নিছক মিথ্যা প্রচারণা, যা কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়াচ্ছে। সাবেক সরকার বিদেশি দেশগুলোর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, যাতে তারা নিজেদের দুর্নীতি ও অনিয়ম আড়াল করতে পারে।’
ড্যানিলোভিচ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে। স্বৈরাচারী শাসন কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের অনুকূলে নয়।’
এ সময় তিনি ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কিছু ভুলের কথা স্বীকার করেন। বলেন, ‘সে সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে সেই ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছে। যেমন: যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তাদের অর্থায়ন নীতি এবং চলমান সংস্কারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।’
‘নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে এবং গত ১৭ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করে সুশাসন সংস্কারের জন্য ব্যবহার করা উচিত।’
জিল্লুর রহমান সুশাসন উন্নয়নকে উৎসাহিত করে—এমন উদ্যোগগুলোর গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন এবং উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের আলোচনা বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরকে পরিচালিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে সমর্থন এবং একটি টেকসই ও জবাবদিহিমূলক শাসন কাঠামো নিশ্চিত করতে ধারাবাহিক সংলাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে ড্যানিলোভিচ বলেন, ‘প্রবাসী সম্প্রদায় প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারে।’
উভয় বক্তাই গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। ড্যানিলোভিচ বলেন, ‘মিডিয়ার প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। গণতান্ত্রিক আলোচনাকে শক্তিশালী করতে নাগরিক সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করা উচিত।’
অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থী, রাজনীতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এই দুই কূটনীতিক।
২৯৫ দিন আগে
তহবিল না পেলে রোহিঙ্গাদের রেশন অর্ধেকের বেশি কমাতে হবে: ডব্লিউএফপি
দ্রুত তহবিল পাওয়া না গেলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাসিক রেশনের পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমাতে হবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি—ডব্লিউএফপি। অর্থায়নের অভাবে দেশের ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর খাদ্য সহায়তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ডব্লিউএফপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরুরি নতুন তহবিল পাওয়া না গেলে (রোহিঙ্গাদের) মাসিক রেশন জনপ্রতি ১২.৫ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনতে হবে। আর এই সংকট এমন এক সময়ে আসছে, যখন শরণার্থীরা রমজান শেষে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গারা নির্ধারিত দোকানগুলো থেকে তাদের পছন্দের খাবার কেনার জন্য ভাউচার পান। তবে পূর্ণ রেশন চালিয়ে যেতে এপ্রিলেই জরুরিভাবে দেড় কোটি ডলার এবং এ বছরের শেষ নাগাদ মোট ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার প্রয়োজন।
বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকট। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। খাদ্য সহায়তা কমানো হলে তারা আরও গভীর সংকটে পড়বে এবং বেঁচে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিয়ানমারের সংঘাত থেকে বাঁচতে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, যার সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা ডব্লিউএফপির। পালিয়ে আসা এসব মানুষ নিরাপত্তার আশ্রয় খুঁজছে, যা ইতোমধ্যে চাপে থাকা সম্পদের ওপর আরও বড় চাপ সৃষ্টি করছে।
জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির এই সংস্থাটি এরইমধ্যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্ভাব্য রেশন কমানোর বিষয়ে যোগাযোগ শুরু করেছে। আর সেটি করা হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস চলাকালে।
স্ক্যালপেল্লি বলেন, ‘এখন আমাদের আগের চেয়ে আরও বেশি করে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার। এই পরিবারগুলোর আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তাই হলো তাদের বাঁচা আর হতাশার মধ্যে পার্থক্য। এই সংকট আরও বাড়তে না দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: ‘নিষেধাজ্ঞা’ সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের প্রতি সহায়তা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্পকে ড. ইউনূসের ধন্যবাদ
২০২৩ সালে তীব্র তহবিল সংকটের কারণে ডব্লিউএফপি প্রতি মাসে জনপ্রতি রেশন ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ৮ ডলারে নামিয়ে আনতে বাধ্য হয়। এর ফলে রোহিঙ্গাদের খাদ্যগ্রহণে ব্যাপক অবনতি ঘটে। এতে করে ২০১৭ সালের পর থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা সবচেয়ে খারাপ (১৫ শতাংশেরও বেশি) হয়ে যায়। পরে তহবিল পাওয়ার পর অবশ্য রেশন বাড়ানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু এই জনগোষ্ঠীর কোনো আইনগত অবস্থান নেই, ক্যাম্পের বাইরে তাদের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই এবং টেকসই জীবিকার সুযোগও নেই, তাই রেশন আরও কমানো হলে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
পরিবারগুলো বাঁচতে তখন বেপারোয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মতো বিশেষত নারীরা শোষণ, পাচার, পতিতাবৃত্তি ও সহিংসতার উচ্চতর ঝুঁকির মুখে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। শিশুরা স্কুল থেকে বের হয়ে শিশুশ্রমে বাধ্য হবে এবং মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে শরণার্থী জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও সাহায্যের ক্ষেত্রে তারাই প্রথম ঘাটতির সম্মুখীন হয়। তহবিলের ঘাটতি ও চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য অনেক সম্প্রদায়ের বেঁচে থাকা আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
২৯৬ দিন আগে
বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সুরক্ষায় জোর সাবেক দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের
স্বাধীনতার অধিকার, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের সুরক্ষায় জোর দিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই রাষ্ট্রদূত বলেছেন, অধিকারের সঙ্গে দায়িত্বের বিষয়টিও চলে আসে। একটি চমৎকার সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষায় আরও বেশি অবদান রাখার মধ্য দিয়ে আমরাও এই যাত্রার অংশ হতে চাই।
সম্প্রতি রাজধানীর বারিধারার গার্ডেন গ্যালারি কসমসে ‘মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা: জুলাই বিপ্লবের আগে-পরে’ শিরোনামের একটি সংলাপে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।
সাবেক এই দুই রাষ্ট্রদূত হলেন দক্ষিণ এশিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকা-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কূটনীতিক উইলিয়াম বি মাইলাম ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জন এফ ড্যানিলোভিচ।
ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা রাইট টু ফ্রিডমেরও প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম বি মাইলাম। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি।
আলোচনায় সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন কসমস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কসমস গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাসুদ জামিল খান। আরও বক্তব্য দেন ঢাকা কুরিয়ারের নির্বাহী সম্পাদক শায়ান এস খান এবং কসমস ফাউন্ডেশন ও বে অব বেঙ্গলের গবেষণা সহযোগী উমরান চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে’ উত্তরণে সফল হোক, চায় ইইউ
ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, “মুক্তচিন্তা ও স্বাধীনভাবে কথা বলার সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল দেড় দশকের লুণ্ঠনপরায়ণ রাজনীতি। তবে প্রবল বিক্ষোভের তোড়ে ভেসে গেছে তারা, যেটিকে ‘মনসুন বিপ্লব’ বলা হয়।”
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তাল সাগর আর অস্থির জলরাশির ভেতর দিয়ে খুবই সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যস্থাকে এমন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যা আমাদের জাতীয় লক্ষ্য ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে হবে।’
২৯৬ দিন আগে
সম্মানসূচক রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সম্মানসূচক রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত করেছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক। দেশটির জনগণের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট তাকে এই পদকে ভূষিত করেন।
সফর শেষে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সফরকালে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টসমূহ ও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাবাহিনী প্রধানকে অবহিত করা হয়। এসময় তিনি মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেন।
সফরকালে সেনাবাহিনী প্রধান স্পেশাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অব দ্য সেক্রেটারি জেনারেল ভ্যালেন্টাইন রুজাবিজা এবং ফোর্স কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হামফ্রি নয়নের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক আর্মড ফোর্সের প্রধান জেনারেল মামাদু জেফিরিনের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেন।
বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধান দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।
পরে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট এবং সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী মিশনের অধীনে বেসামরিক লোকদের সহায়তার অংশ হিসেবে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এ নির্মিত তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফস্টিন আরচাং টুডেরার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। সেনাপ্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের বাংগি এলাকায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের এই সফর সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য যে, সেনাবাহিনী প্রধান গত ৩ মার্চ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফরে যান।
২৯৭ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থান সংস্কার ও গণতন্ত্রের বড় সুযোগ এনেছে: উইলিয়াম বি মিলাম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মিলাম বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশে ব্যাপক সংস্কার ও সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বড় সুযোগ এনে দিয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রদূত জন ড্যানিলোউইজ বলেন, ভুয়া খবর ও মিথ্যা তথ্যের হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের ইতিবাচক বক্তব্য ও আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক মানবাধিকার গ্রুপ রাইট টু ফ্রিডমের প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী পরিচালক মিলাম ও ড্যানিলোউইজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাবেক দুই কূটনীতিক স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে কাজ এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে তাদের কাজ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস অলাভজনক এই গ্রুপের কাজ এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় দুই কূটনীতিকের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস কূটনীতিকদের বলেন, ছয়টি কমিশনের সুপারিশকৃত সংস্কার নিয়ে সংলাপ শেষ হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদে সই করবে।
'জুলাই সনদ আমাদের পথ দেখাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই সনদের সুপারিশের কিছু অংশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাস্তবায়ন করবে এবং বাকিগুলো রাজনৈতিক সরকার বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় তারা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের শরণার্থীদের সহায়তা হ্রাসের প্রভাব, বিগত সরকারের সময় চুরি যাওয়া কোটি কোটি ডলার উদ্ধার, প্রধান উপদেষ্টার সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা এবং আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়েও আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের আগে কম সংস্কারে সম্মত হয়—তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: শ্রম আইন সংস্কার করে বিশ্বমানের করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
২৯৭ দিন আগে
৫৬ বাংলাদেশি জেলেকে ছেড়ে দিল মিয়ানমার
কক্সবাজার টেকনাফ বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরার সময় ছয়টি ট্রলারসহ ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ৫৬ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ)সকালে তাদের ছেড়ে দেন। এসময় জেলেদের কাছে থাকা মাছ ও জাল রেখে দেন মিয়ানমার নৌ বাহিনী।
ধরে নিয়ে নিয়ে যাওয়া ছয়টি ট্রলারের মালিকরা হলো- টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকার মো. বশির আহমদ, মো. আমিন, নুরুল আমিন, আব্দুর রহিম, মো. শফিক। এদের মধ্যে মো. শফিকের মালিকাধীন দুটি ট্রলার রয়েছে।
এর আগে বুধবার (৫মার্চ) দুপুরে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে ধরে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।
তিনি জানান, মাছ শিকারে গিয়ে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক হাওয়া জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। তারা ইতোমধ্যে টেকনাফের উদ্দেশ্য রওনা করেছে।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে। তবে তাদের কাছে থাকা মাছ ও জাল রেখে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ৪ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসতে থাকা ১৩ জেলে উদ্ধার
২৯৭ দিন আগে
ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প সংক্রান্ত অভিযোগ সত্য নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুইজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৩ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প 'স্ট্রেংদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্পটি নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন— যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।
অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহবানের প্রেক্ষিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএআইডি সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করে। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরবর্তীতে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।
আরও পড়ুন: দালালের খপ্পরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াচ্ছেন বাংলাদেশিরা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল ৫ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএআইডি এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।
এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল-রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ দেওয়া। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরিপ কার্যক্রমও পরিচালনা করে।
উল্লেখ্য, ইউএসএআইডির প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করা হয়।
অনুসন্ধান থেকে দেখা যায় যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। তাই এটি বাংলাদেশের দুইজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয়। বস্তুত এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির (ডিওএজি-ডেভেলপমেন্ট অবজেক্টিভ অ্যাসিসট্যান্ট এগ্রিমেন্ট) মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষের কোনো কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ দিল্লিকে মনে করিয়ে দেবে ঢাকা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৩০০ দিন আগে
জার্মানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চান ড. ইউনূস, ডিসেম্বরে হতে পারে নির্বাচন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে জার্মানির সহায়তা কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সরকার চলতি বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন দিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশের জন্য আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। জাতীয় নির্বাচনকে সফল করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’
ড. ইউনূস বলেন, ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে জার্মানির সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক গড়তে চায় বাংলাদেশ।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জার্মান সরকারের কমিশনার জারাহ ব্রুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি, সংহতি প্রকাশ
জার্মানির জনগণ ও জার্মানির অর্থনীতির প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভারী শিল্পসহ অনেক ক্ষেত্রে জার্মানি বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ‘জার্মানির সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু আমরা জার্মানির সঙ্গে একটি ভিন্ন সম্পর্ক, বিশেষ সম্পর্ক রাখতে চাই।’
সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে জানতে বাংলাদেশ সফররত জারাহ ব্রুন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তার দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে।
জার্মানিতে সামাজিক ব্যবসা চালু করতে আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আপনার কাজের প্রতি আমার অনেক আশা রয়েছে।’
তারা অধ্যপক ইউনূসের শুরু করা ‘থ্রি জিরো’ আন্দোলন, সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত পদক্ষেপ এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
৩০৫ দিন আগে