বিএনপি
বিএনপির দলীয় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্তে বৈঠক শুরু
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা পর্যালোচনা ও চূড়ান্ত করতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছে বিএনপি। বৈঠকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকটি শুরু হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক শেষে বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বিএনপির জেলা ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন।
নেতারা জানিয়েছেন, বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হলো আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দল ও জোটের একক প্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা।
এমন এক সময়ে এই বৈঠকের ঘোষণা এসেছে, যখন এর একদিন আগে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান ঘোষণা দেন যে শিগগিরই দলীয় প্রার্থীদের নাম পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। দল যাকে যে আসনে মনোনীত করবে, তাকে বিজয়ী করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনাদের চারপাশে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গুপ্ত স্বৈরাচার কিন্তু ওত পেতে রয়েছে। সুতরাং নিজেদের মধ্যে রেষারেষি, বিবাদ, বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া ঠিক হবে না যাতে প্রতিপক্ষ আপনাদের মধ্যকার বিরোধের সুযোগ নিতে পারে।’
দলীয় সূত্র জানায়, তারেক রহমান গত দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন বিভাগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি সব মনোনীত প্রার্থীকে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সূত্র আরও জানায়, প্রথম ধাপের মনোনয়ন তালিকায় প্রায় ২০০টি আসনের প্রার্থী থাকতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সম্প্রতি জানান, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই প্রায় দুই শত আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি মনোনীত ও অমনোনীত সব প্রার্থীকে দলীয়ভাবে অনুমোদিত প্রার্থীর পাশে থেকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
৫৬ দিন আগে
তৃণমূল ও মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ জোরদারে বিএনপির ৭ কমিটি
মূলধারার মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করতে সাতটি টিম গঠন করেছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে নতুনভাবে একজন তত্ত্বাবধায়ক ও সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে দলটি, যা ইতোমধ্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সাত টিম ও টিম প্রধানের নাম উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন এই সমন্বিত কার্যক্রমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ ছাড়া মুখপাত্র (স্পোকসপারসন) করা হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিনকে। আর প্রেস দেখাশোনা করবেন সাংবাদিক সালেহ শিবলী।
টেলিভিশন ও রেডিও সমন্বয় করবেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসাইন আলমগীর পাভেল।
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের যে নেটওয়ার্ক, তার নেতৃত্ব দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধান করবেন দলটির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপোলো। কনটেন্ট জেনারেশন তত্ত্বাবধান করবেন ড. সাইমুম পারভেজ এবং রিসার্চ ও মনিটরিংয়ের বিষয়টি দেখবেন জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা রেহান আসাদ।
৫৭ দিন আগে
জুলাই সনদে সই না করা অংশের দায় নেবে না বিএনপি: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই সনদে তার দল যে অংশে সই করেছে, শুধু তারই দায়ই নেবেন তারা। পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া কোনো অংশের দায় নেবে না দলটি।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের অবস্থান একদম পরিষ্কার। জুলাই সনদে আমরা যে অংশে সই করেছি, তার দায়দায়িত্ব আমরা নেব। কিন্তু যেটা আমরা সই করিনি, সেটার দায় আমরা নেব না।’
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে’ তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বৃষ্টির মধ্যে সংসদ ভবনের সামনে আমরা সনদে সই করার সময় বলেছিলাম, যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে, সেগুলো সই হবে। যেসব বিষয়ে একমত হবে না, সেগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। এখন দেখা যাচ্ছে, সেই নোট অব ডিসেন্টের কোনো উল্লেখই নেই। আমাদের বক্তব্যগুলো বেমালুম বাদ দেওয়া হয়েছে, বরং নতুন কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে—এটা জনগণের সঙ্গে নিঃসন্দেহে প্রতারণামূলক কাজ।”
তিনি বলেন, ‘একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা একটা প্রেস কনফারেন্স করে বলেছি…আমরা রাস্তায় নামিনি, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কোনো প্রতিবাদ করিনি, আমরা প্রধান উপদেষ্টার বাড়ি ঘেরাও করিনি বা নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করিনি।’
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল, তারা একটা জোট বানিয়ে আবার সেটা করছে… বিভিন্নভাবে আপনার এই সরকারকে তারা বাধ্য করতে চায় যে, তাদের কথাটাই শুনতে হবে। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার—আমরা যেটা সই করেছি, সেটা অবশ্যই আমাদের আমরা সেটার দায় দায়িত্ব গ্রহণ করব। কিন্তু যেটা আমরা সই করিনি, সেটার দায় দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করব না। আমরা চাই, এই বিষয়গুলো একটু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হোক।
“অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল একাত্তরকে ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু সেটি করার সুযোগ নেই। কারণ, একাত্তরেই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা মুক্তিযুদ্ধকে ‘গোলমাল’ বলেছিলেন। জাতি সেটা ভোলেনি।”
অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠারও সাহস পেত না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের ৩১ দফায় সব সংস্কার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরাই সংস্কারের পক্ষে। পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নেবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হবে কি না। পিআর না হলে নির্বাচন হবে না— এ কথা বলে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।’
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যেটা প্রস্তাব করেছেন (প্রধান উপদেষ্টা) ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, তখনই নির্বাচন হতে হবে।’
গণভোটের বিষয়ে এই রাজনীতিক বলেন, ‘গণভোটের কথা বলেছে, আমরা রাজি হয়েছি। গণভোটের প্রয়োজন ছিল না, তারপরও রাজি হয়েছি। আমরা বলেছি যে, নির্বাচনের দিনই গণভোট করতে হবে। কারণ, আলাদাভাবে গণভোট করতে হলে থেকে আরও খরচ বেড়ে যাবে; প্রায় হাজার কোটি টাকার উপরে সেই খরচ হবে।
‘নির্বাচনে দুটো ব্যালট থাকবে, একটি ব্যালট গণভোটের, আরেকটি ব্যালট নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচনের। এখন তারা বলছেন, গণভোট আগে হবে, তারপরে নির্বাচন। এই নির্বাচন পেছানোর কথা আপনারাই বলছেন।’
ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভারতে বসে শেখ হাসিনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। একবারের জন্যও তিনি তার কর্মকাণ্ডের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। আজ তিনি অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দিন। বাংলাদেশের আইনে যে বিচারের মুখোমুখি তাকে হতে হবে, সেই বিচারের মুখোমুখি করার ব্যবস্থা করুন। সবসময় বাংলাদেশের বিরোধিতা করবেন না, বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নজমুল হক নান্নু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, নির্বাহী কমিটির মিজানুর রহমান প্রমুখ।
৫৭ দিন আগে
নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ এখন আর নেই: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার ‘কোনো সুযোগ নেই’ মন্তব্য করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করতে সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জেএসডির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেছে। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্যতা আশা করেছিলাম, তারা তা রাখেনি। তাই বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তী সরকারের।’
তিনি বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই ঘোষণার সঙ্গে একমত হয়ে আমরা নির্বাচন চাই।’
‘সেই নির্বাচনকে আজকে বানচাল করার জন্য, সেই নির্বাচনকে বিলম্বিত করবার জন্য একটা মহল উঠে পড়ে লেগেছে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণভোট নির্বাচনের আগে করার কোনো সুযোগ এখন আর নাই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে সে কথা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এক দিনে গণভোট আয়োজনের বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি বলেন, সেখানে দুটি কারণে ভোট হবে, একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। ‘সুতরাং এই বিষয়ে কোনো দ্বিমত কারো থাকবে বলে আমি অন্তত মনে করি না।’
গণভোটের দাবিতে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা এ নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করবো, জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। এক সময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজ জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতিকে ক্ষমা করে না।’
ফখরুলের অভিযোগ, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে।
তার ভাষায়, ‘আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) যে কমিশন তৈরি করেছেন, সেই কমিশন ঐকমত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। সংস্কার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেই। অর্থাৎ আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মূল বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, এটাই নিয়ম।’
‘যখন আমরা নির্বাচনে যাব, তখন ম্যানিফেস্টোতে এই বিষয়গুলো থাকবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা সেসব বিষয় সামনে আনব, পার্লামেন্টে পাস করে দেশের পরিবর্তন ঘটাবো। আর যদি ভোট না দেয়, তাহলে সেটি বাদ পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, (১৭ অক্টোবর) সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে সই করলাম। কিন্তু যখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেল অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে আমরা যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি।’
‘কিন্তু সেই আস্থা, বিশ্বাসের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, যেটা আমরা তাদের কাছ থেকে আশা করিনি।’
বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের দল হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে বহুদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার পুনর্প্রতিষ্ঠা করেন এবং সব বন্ধ পত্রিকা ও প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করেন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ আবারও রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে সংসদীয় শাসনে ফিরে আসে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়, যার অধীনে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ‘তাই যারা বলে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসময় সংস্কারের পক্ষে— এর প্রমাণ দলটির ‘ভিশন ২০৩০’ ও ৩১ দফা সংস্কার এজেন্ডায় রয়েছে। ‘আমরা সংস্কারে বিশ্বাস করি, সংস্কারের জন্য কাজ করি, এবং তা বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এ ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট– আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।’
৫৮ দিন আগে
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ একপেশে, জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ একপেশে এবং তা জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য তারা গণভোটে সম্মতি দিয়েছিলেন। তবে ঐকমত্য কমিশন যেখানে মতপার্থক্য বা ভিন্নমত ছিল তা উপেক্ষা করেছে এবং এমন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে যা দীর্ঘ আলোচনায় কখনোই আলোচনা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ একপেশে এবং জবরদস্তিমূলকভাবে জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটাই প্রতীয়মান হয় যে দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলসমূহের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনা ছিল অর্থহীন, অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক এবং জাতির সাথে প্রতারণা।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অযৌক্তিক, অবিবেচনাপ্রসূত বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
সীমিত সময়, বিপুল ব্যয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ব্যাপক সম্পৃক্ততার কথা বিবেচনা করে গণভোট ও নির্বাচন একই দিনে আয়োজন করাই অধিকতর যৌক্তিক হবে বলেও মত দেন বিএনপি মহাসচিব।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'জুলাই সনদ নিয়ে আপত্তি থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো শঙ্কা নেই। আমরা আশা করি আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় অনেক ছাড় দিলেও দেশের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে দায়বদ্ধ বিএনপি। জাতিকে বিভক্ত করার যেকোনো পদক্ষেপ অনৈক্য সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় জীবনে অকল্যাণ ডেকে আনবে। আমরা চাই ঐক্য, প্রতারণা নয়।
সংস্কার বিএনপির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে বহু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। আমরা সবসময়ই সংস্কারের পক্ষে। শহীদ জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, খালেদা জিয়ার ভিশন–২০৩০ এবং তারেক রহমানের ৩১ দফা—সবই প্রমাণ করে বিএনপি গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্তরিক।
৫৯ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়েছে, এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে ওই সুপারিশ সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বিচার-সংস্কার-নির্বাচন, অন্তর্বর্তী আমলে বাংলাদেশ' শীর্ষক এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘গতকাল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি ছিল সনদে, তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।’
মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, ‘আমরা মনে করি, সমস্ত সংকটগুলোর মূলে হচ্ছে একটা সত্যিকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টেই সমস্ত সমস্যাগুলো সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে এবং সেভাবেই দেশ চলবে ।’
প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, সত্যিকার অর্থে যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার সম্পন্ন করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন। জনগণ সেই নির্বাচনের ফল মেনে নেবে। কিন্তু যদি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়, তার দায়ভার প্রধান উপদেষ্টাকেই বহন করতে হবে।
এ সময় সরকার দ্রুত কমিশনের সুপারিশ সংশোধন করবে এবং সব পক্ষের সহমত অনুযায়ী বিভিন্ন সমস্যার উপর পার্থক্য যথাযথভাবে রেকর্ড করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জনগণের সংসদ তৈরি হলে যে সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে, তা সেখানে বাস্তবায়ন হবে।
বিএনপি সংস্কার চায় না—এমন প্রচারণাকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্যদিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর একদলীয় শাসনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল বিএনপি। অথচ কনসাসলি একটা প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে যে বিএনপি সংস্কারবিরোধী—এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
৬১ দিন আগে
জোটবদ্ধ নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতীক ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন-সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও’র আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি।
আরপিও অধ্যাদেশের সংশোধনীর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
উপদেষ্টার কাছে চিঠি পৌঁছে দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন-সংক্রান্ত যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও আছে, কয়েকদিন আগে এর ২০ ধারাতে একটি সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। সেটা হচ্ছে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি জোটভুক্ত হয়ে অন্যান্য দলের সঙ্গে নির্বাচন করে, সেক্ষেত্রে সেই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তার নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে বাধ্য হবে।’
‘আগে নিয়ম ছিল— যারা জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করবে, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীকে নির্বাচন করতে পারত। সেই আইনটার খসড়া যখন আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল যে এ বিষয়ে মতামত আছে কিনা। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন: না ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন তারা বাতিল করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এই বিধানটির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি। যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন।’
‘বিষয়টি আলোচনা করে যাতে একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে। এ বিষয়ে তিনি আমাকে মোটামুটি আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু যখন অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাস হলো তখন দেখলাম বিষয়টি বিবেচিত হয়নি।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তারপরে এ বিষয়ে তার (আইন উপদেষ্টা) সঙ্গে আবার কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের যে উদ্বেগ, আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যাতে বহাল থাকে সে জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এই বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের, বহুমতের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদটা সমৃদ্ধ হয়, সমগ্র জাতির পক্ষে কথা বলা যায়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন।’
‘আমরা মনে করি, যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতার আগে যে বিধান ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।’
আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপরে কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ বিষয়ে হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক হয়নি।’
৬১ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: খসরু
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের সুপারিশকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বা আগে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এটার (আগে গণভোট) সঙ্গে বিএনপি একমত নয়। আমরা পরিষ্কারভাবে এটা বলে দিয়েছি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে পুরো আলোচনায় বিএনপির অবস্থান ছিল যে গণভোট আর নির্বাচন একই দিনে হবে, দুইটা আলাদা ব্যালটের মাধ্যমে। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।’
‘নতুন করে এই বিষয়কে সামনে আনার কোনো সুযোগ নাই। সেটা যেই বলুক, যারাই প্রতিবেদন দিক, সেটা তাদের সমস্যা। এটা বিএনপির সমস্যা না। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। এই বিষয়ে (আগে গণভোট) বিএনপি ঐকমত্য পোষণ করে না, সেহেতু সেদিকে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই।’
আমীর খসরু বলেন, ‘এই ব্যাপারে আর আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের দিন দুইটা ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট ও নির্বাচন হবে… এটাই বিএনপির অবস্থান। এই অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি, আগামী দিনেরও এর পরিবর্তন হবে না।’
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের প্রসঙ্গে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘কারা কী সুপারিশ করেছে, জানি না। যারা সুপারিশ করেছে তারা নির্বাচন করবে না, ভোট করবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো। সুপারিশ অনেকে অনেক কিছু করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা বিষয় বুঝতে হবে, প্রত্যেক জিনিস ঐকমত্যে সমাধান হতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে কে কী বলছে, কে কী সুপারিশ করছে—এটা তাদের ব্যাপার। ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
৬১ দিন আগে
স্বায়ত্তশাসন নয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনতা দিতে হবে: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আর্থিক খাতে সংস্কার করা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। শুধু স্বায়ত্তশাসন যথেষ্ট নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। এ ছাড়া বিনিয়োগ বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সংস্কার করা হবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ইকোনমিক রিফর্ম সামিট-২০২৫-এ অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে। এই বিভাগ তৈরি করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে। এর উদ্দেশ্য ছিল এমডি নিয়োগ ও পর্ষদে পছন্দের লোক বসিয়ে লুটপাট করা। বিএনপি আগের বার ক্ষমতায় এসে এটি তুলে দিয়েছিল, কিন্তু শেখ হাসিনা এটি আবার ফিরিয়ে এনেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার এটি বিলুপ্ত করবে।’
তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই ভাগ করা হয়েছে। এতে কোনো কাজ হবে না। কারণ, এক ভাগ থাকতেও আমলারা পরিচালনা করতেন, দুই ভাগ হওয়ার পরও আমলারা পরিচালনা করছেন। ফলে এনবিআর ভাগ হওয়ার পরও কোনো বাড়তি সুফল পাওয়া যাবে না।
কারণ হিসেবে এই রাজনীতিক বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই ভাগ করা হয়েছে। এতে কোনো কাজ হবে না। কারণ, এক ভাগ থাকতেও আমলারা পরিচালনা করতেন, দুই ভাগ হওয়ার পরও আমলারা পরিচালনা করছেন। ফলে এনবিআর ভাগ হওয়ার পরও কোনো বাড়তি সুফল পাওয়া যাবে না।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পথে প্রধান বাধা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা— এমন মন্তব্য করে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার কিছু নেই। যদি তাদের দায়িত্ব কমিয়ে দেওয়া যায়, যদি কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিয়ন্ত্রিত হবে। আমরা বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে চাই। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এ কাজটি করবে। এজন্য বেসরকারি খাতকে প্রস্তুত হতে হবে।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম তামিম বলেন, দেশে তীব্র জ্বালানি সংকট চলছে। গত ১৫ বছরে স্থানীয় জ্বালানি উৎসে কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বরং প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় করা হয়েছে, যেখানে দুর্নীতির সুযোগ সবচেয়ে বেশি ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, বিদায়ী সরকারের প্রবৃদ্ধি মডেল দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বাড়িয়েছে। তথাকথিত ‘অর্থনৈতিক অলৌকিকতা’র আড়ালে থাকা বাস্তব সংকট এখন প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং আরও অনেক পরিবার দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে পড়ছে।
তিতুমীর সতর্ক করে বলেন, আরও ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে; ১৫ লাখ তরুণ বেকার, এবং প্রতি তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকের একজনের কোনো চাকরি নেই।
তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ এখন এক ‘ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে’ দাঁড়িয়ে আছে, যা সত্যিকারের অগ্রগতির জন্য নতুন অর্থনৈতিক মডেল দাবি করছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে পিছিয়ে আছে। দেশে জাতীয় বিনিয়োগনীতি নেই। ফলে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য ও পরিকল্পনা নেই। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে একটি পদ্ধতিগত বিনিয়োগ উন্নয়ন কৌশল থাকা উচিত—জাতীয় বাণিজ্য, রপ্তানি ও আমদানি নীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে এটি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য মনজুর হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র নকিবুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, হিসাববিদ স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কাউন্টারপার্টের নির্বাহী সম্পাদক জ্যোতি রহমান, চালডালের সিইও ওয়াসিম আলিম প্রমুখ।
৬২ দিন আগে
ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে নিয়ে জোট করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠন করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানান, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোটের কথা ভাবছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের বৈঠক হচ্ছে। দল ও নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিতেই হাইকমান্ডের এই বৈঠক করছে বিএনপি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ আসনে একাধিক প্রার্থী আগ্রহী হওয়ায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপ করা হচ্ছে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় বিবেচনা নয়, বরং যোগ্য ও জনবান্ধব প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে চায় বিএনপি। আর ঐক্য বজায় রাখতে কেউ যেন বিভেদের পথে না যায় সেই বার্তাও দিতে চায় দলটি।
এ সময় আগামীর বাংলাদেশ তারুণ্যনির্ভর হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তরুণ-যুবকদের রাজনৈতিক ভাবনাকে ধারণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে বিএনপি।
বিএনপির এই নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, এ দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর দেশ হবে। যুবকদের কর্মসংস্থাননির্ভর বাংলাদেশ হবে। যুবকদের চিন্তা-চেতনা, মেধা ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে। এ স্বপ্ন জুলাই অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদরা দেখেছিলেন। সুতরাং তরুণ-যুবকদেরকে, তাদের রাজনৈতিক ভাবনা ও চিন্তা-চেতনা আত্মস্থ করেই এ জাতি এগিয়ে যাবে।
৬২ দিন আগে