বিএনপি
বিএনপি কোনো অবস্থাতেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়: এ জেড এম জাহিদ হোসেন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি কোনো অবস্থাতেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়। যারা আজ পিআরের কথা বলছেন, তারা জনগণের কাছে গিয়ে দেখতে পারেন জনগণ কি চায়। কোনো অবস্থাতেই দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি পদ্ধতিকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুর স্মরণ সভায় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, যারা নতুন নতুন কথা বলে নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে প্রলম্বিত করার বাহানা খুঁজছেন, তারা খুঁজতেই পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বিগত ৫৪ বছর ধরে সরাসরি ভোট দেওয়ার অভ্যস্ত। বাংলাদেশের সংবিধানে রয়েছে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করার বিধান। এতেই জনগণ বিশ্বাস করে।
তিনি আরও বলেন, পিআরের কথা যারা বলছেন, তারা চাইলে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে তা উল্লেখ করতে পারেন। দেশের জনগণ যদি তাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, তখন তারা পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে পারেন। তবে বিগত ৬০ বছরের ইতিহাসে তাদের কতজন প্রতিনিধি সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল ছিলেন, তা জনগণ ভালোভাবে জানে। বিএনপি মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে চলমান পদ্ধতিতে নির্বাচন করা উচিত।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাই নির্বাচনের আগে জননেতা তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে ডা. জাহিদ বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। জনগণের আস্থাভাজন হাজার হাজার প্রার্থী রয়েছে। দলের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পার্লামেন্টারি বোর্ড যথাসময়ে দলীয় মনোনয়ন দেবেন। নির্বাচন কমিশন যখন নির্বাচনী সময়সূচি ঘোষণা করবে, তার আগে বা পরে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী মহল প্রার্থী ঘোষণা করবে। জনগণের আগামী বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যাদের প্রয়োজন মনে হবে, তাদের নাম যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে তার ঘোষণা দিয়েছেন। পরে নির্বাচন কমিশনও রোড ম্যাপ প্রকাশ করেছেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
এনসিপির প্রতীক নিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল বলেন, অন্যরা প্রতীকের জন্য দাবি জানাতে পারে। তবে জনগণ ইতিমধ্যে প্রথাগত প্রতীক নিয়ে ভোট দিয়েছে, তাই নতুন প্রতীকের প্রতি আপত্তি শোভনীয় নয়।
রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। একটি আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতা রাখে এমন ১০–১২ জনও প্রার্থী থাকতে পারে। দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামুসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
৭৯ দিন আগে
একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে: সালাহউদ্দিন
একটি বিশ্ব মোড়ল ও দুটি আঞ্চলিক শক্তি দেশে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যে বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত তা হচ্ছে, পৃথিবীতে তিনটি শক্তি আমাদের এখানে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। দুটি আঞ্চলিক শক্তি, পরাশক্তিও বটে তারা এবং একটি বিশ্ব মোড়ল। সবাই এখানে একটা হেজিমনি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। প্রত্যেকের ইন্টারেস্ট আলাদা আলাদা। কিন্তু আমাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তিনটির দ্বারা একইভাবে।’
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘মত প্রকাশ থেকে মৃত্যু: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিবাদের বিস্তার ও প্রতিরোধ' শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।’
আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাসিত জীবনে এই একটি ঘটনায় এত বেশি ব্যতীত হয়েছিলাম, চিন্তা করেছিলাম বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্ররা, যারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, জনগণের পক্ষে, দেশের পক্ষে কথা বলে, তাদের সংখ্যা তো নেহায়েত কম নয়!’
‘সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম, এভাবে বাংলাদেশে হয়তো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলা যেত কোনো না কোনোভাবে। হয়তো তাকে জেলে যেতে হতো, নির্যাতিত হতে হতো, গুম হতে হতো। কিন্তু ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে জীবন দিতে হতো, এটা আমরা তখন বুঝেছি। সেই কারণে আবরারকে হত্যা করা হয়েছে, যাতে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলতে পারে। উচ্চকণ্ঠ না হতে পারে।’
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংগ্রাম একইসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। বলেন, ‘আমরা ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানের সিঁড়ি নির্মাণ করেছি আবরারের মতো শহীদদের রক্ত দিয়ে। ৪২২ জনের বেশি ছাত্র, যুব, বিএনপি নেতাকর্মীর রক্ত এই সিঁড়ির ভিত্তি। এই সংগ্রাম শুধু কোনো দলীয় নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন।’
‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতিতে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ— এই নীতি আমরা এ জন্যই ঘোষণা করেছি যে এই তিনটা শব্দের মধ্যে সারা বাংলাদেশ জীবিত থাকবে। সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ নিহিত থাকবে। এই তিনটা শব্দের মধ্যেই আমরা উজ্জীবিত হবো স্বাধীনতার মূল মন্ত্রে। যদি আমরা এ নীতিতে একমত হই, তাহলে জাতি আর পথভ্রষ্ট হবে না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে হলে ছাত্রসমাজকে মেধা, তাত্ত্বিক জ্ঞান ও দেশপ্রেমে সমৃদ্ধ হতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ছাত্র সংগঠনগুলো মেধাবীদের নেতৃত্বে আসুক। যারা কলম দিয়ে, চিন্তা দিয়ে, প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। যদি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম ও তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেয়া যায়, তাহলে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ়ভিত্তি গড়ে তুলবে।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতার স্বার্থে অসংখ্য মানুষকে রক্ত দিতে হয়েছে, কিন্তু ভবিষ্যতে যেন আর রক্ত দিতে না হয়, সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
‘আমরা চাই না মুক্তির মন্দিরে নতুন প্রাণ বলিদান হোক। কিন্তু যদি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা বিপন্ন হয়, তাহলে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। তবে সেই পরিস্থিতি যেন আর না আসে, সেজন্যই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
৮২ দিন আগে
ভারত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে বিরাগভাজন হলে বিএনপির কিছু করার নেই: তারেক রহমান
ভারত যদি স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে দেশের মানুষের বিরাগভাজন হয় তাহলে বিএনপির কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সাক্ষাৎকারে অংশ নেন। দুই পর্বের এই সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় ও শেষ পর্বটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।
বিবিসি বাংলার তরফে প্রশ্ন ছিল, পাঁচই আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এবং আপনিও জানেন যে, শেখ হাসিনা দিল্লিতে গেছেন এবং সেখানে আছেন। ভারতের সঙ্গে একটা সম্পর্কের শীতলতা দেখা গেছে, গত এক বছর ধরে। যেমন ধরুন সেটি যাওয়া আসার ক্ষেত্রে ব্যবসার ক্ষেত্রে নানা রকম, সেই ক্ষেত্রে কি কোনো পরিবর্তন আপনার সরকারে আসলে হবে বা পরিবর্তনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন, এমন কোন চিন্তা কি আপনাদের আছে?
জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন তারা যদি স্বৈরাচারকে সেখানে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের বিরাগভাজন হয়, সেখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। এটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাদের সঙ্গে শীতল থাকবে। সো, আমাকে আমার দেশের মানুষের সঙ্গেই থাকতে হবে।’
বিগত সরকারের সময় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিল, সেটা নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। তো ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আপনাদের নীতি কী হবে?— এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক জানান, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভারতসহ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে।
তার ভাষ্যে, ‘সবার আগে বাংলাদেশ। এখানে তো আপনি পার্টিকুলার (সুনির্দিষ্ট) একটি দেশের কথা বলেছেন। এখানে ওই দেশ বা অন্য দেশ তো বিষয় না। বিষয় তো হচ্ছে, ভাই, বাংলাদেশ আমার কাছে আমার স্বার্থ; আমি আগে আমার দেশের মানুষের স্বার্থ দেখব, আমার দেশের স্বার্থ দেখব। ওটাকে আমি রেখে, আপহোল্ড করে, যা যা করতে পারব, আমি তা-ই করব।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অবশ্যই আমি আমার পানির হিস্যা চাই। অবশ্যই আমি দেখতে চাইনা না যে, আরেক ফেলানী ঝুলে আছে। অবশ্যই আমরা এটা মেনে নেব না।’
বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে তার কাছে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের স্বার্থের প্রসঙ্গে আপনি বলছেন যে, পানির হিস্যা চাওয়া এবং সীমান্ত হত্যার বিষয়টি নিয়ে আপনারা সোচ্চার থাকবেন?
এই প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘না না, আমি উদাহরণ দিয়ে বললাম। দুটো উদাহরণ দিয়ে বুঝালাম আপনাকে যে, আমাদের স্ট্যান্ডটা কী হবে। আমরা আমাদের পানির হিস্যা চাই। অর্থাৎ আমার দেশের হিস্যা, মানুষের হিস্যা আমি চাই, হিসাব আমি চাই। আমার যেটা ন্যায্য সেটা আমি চাই। অবশ্যই ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমি বুঝাতে চেয়েছি যে, আমার মানুষের ওপরে আঘাত আসলে অবশ্যই সেই আঘাতকে এভাবে আমি মেনে নেব না।’
৮৩ দিন আগে
ভেদাভেদ ভুলে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে তারেক রহমানের আহ্বান
রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে সবাইকে দেশের স্বার্থে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সংঘাতের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের কল্যাণে প্রতিযোগিতা করে, দেশের মানুষের দৈনন্দিন সংকট সমাধান এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ইতিবাচক রাজনীতিতে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৬ অক্টোবর) পিরোজপুরের প্রবীণ বিএনপিকর্মী মোতালেব আকনের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘বহু আন্দোলন হয়েছে দেশে, বহু সংগ্রাম হয়েছে, বহু মানুষ শহীদ হয়েছে। অনেক হয়েছে। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা জায়গায় আসি। মতভেদ-ভেদাভেদ কমিয়ে নিয়ে আসি। আমরা কথা বলি।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন আদর্শ থাকতেই পারে, সেটাই থাকাটা স্বাভাবিক। আমরা বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, এখানে বিভিন্ন রকম মত থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। পৃথিবীতে সব গণতান্ত্রিক দেশেই এটা আছে। কিন্তু আসুন, আমরা সেই ঝগড়া-ফ্যাসাদ থেকে কিছুটা হলেও সরে আসি।’
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অনেক আন্দোলন হয়েছে। এবার আসুন, দেশের মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলো একটু একটু করে কমিয়ে আনি। আসুন, আমরা প্রতিযোগিতা করি, সেই পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করি। শুধু পরিকল্পনা নয়, দেশের মানুষ যাদের সুযোগ দেবে তারা যেন সেই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে। এই হোক আমাদের আগামীদিনের রাজনীতি।’
যোগ্যতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এমন পরিকল্পনা নিচ্ছি যাতে দেশের প্রতিটি তরুণ-তরুণী নিজে উপার্জন করতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে এবং মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে।
রাজনৈতিক হামলায় আহত হয়ে বর্তমানে হুইলচেয়ারে থাকা মোতালেব আকনের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এমন হতে হবে, যেখানে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে একজন মানুষকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে না হয়, কেউ যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজ মোতালেব সাহেব তার সন্তানকে দেখালেন, এ রকম সন্তানের সংখ্যা বাংলাদেশে আরো লক্ষ-কোটি আছে। আমরা বলেছি, আগামী দিনে আমরা মেধার ভিত্তিতে দেশ ও জাতিকে গড়ে তোলার কথা বলেছি। স্বাভাবিকভাবেই মেধা যেখানে থাকবে, প্রতিযোগিতাও সেখানে থাকবে। আজকের তরুণ আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে। মেধা একেকজনের একেক রকম হয়। সবাইকে এক জায়গায় আমরা দিতে পারব না।’
‘মেধার রেসে (দৌড়ে) যে এগিয়ে থাকবে, সে-ই সেখানে যাবে। কিন্তু যারা যেতে পারবে না তাদের জন্যও আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে দেশের লক্ষ-কোটি তরুণ যারা আছে, নারী-পুরুষ, প্রত্যেকে যাতে বেঁচে থাকার যুদ্ধে টিকে থাকতে পারে সেই ভাবে আমরা পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করছি। যাতে মোতালেব সাহেবের সন্তানরা ভবিষ্যতে নিজে সৎপথে উপার্জনের ব্যবস্থা করে নিতে পারে।’
এ সময় তারেক রহমান মোতালেব আকনের সুস্থতা কামনা করেন এবং জনগণের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। আমাদের মূল শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। কাজেই বাংলাদেশের জনগণই আমাদের অনুপ্রেরণা। এ দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে যতবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তারা ততবারই বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। কাজেই এটাই প্রমাণ করে বাংলাদেশের মানুষই বিএনপির আস্থার প্রতীক।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। লক্ষ-কোটি কৃষক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তার পরও তারা হাল ছেড়ে দেন না। তারা মাঠে থেকে কৃষিকাজ করছেন বলেই বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষ খেয়ে বেঁচে আছে। এই কৃষকদের পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায় সেই পরিকল্পনা করছি। বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে থাকা লক্ষ-কোটি মা-বোনদের কিভাবে আরেকটু স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা যায়, তাদের কিভাবে অর্থনৈতিকভাবে, শিক্ষার আলোকে গড়ে তোলা যায় সেই পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করছি।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পিরোজপুর জেলা বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রবীণ নেতা মোতালেব আকন তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছিলেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে তার এই দীর্ঘদিনের ইচ্ছার কথা উঠে এলে বিষয়টি তারেক রহমানের নজরে আসে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারেক রহমান ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনকে নির্দেশ দেন মোতালেব আকনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। এরপরই শুরু হয় ভার্চুয়াল সাক্ষাতের প্রস্তুতি। এরপর আজ (সোমবার) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রবীণ এ নেতা মোতালেব আকনের সঙ্গে যুক্ত হন তারেক রহমান।
৮৩ দিন আগে
কেউ যেন ব্যক্তিগত স্বার্থে বিএনপিকে ব্যবহার করতে না পারে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার, দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলার ও কাউকে ব্যক্তিগত স্বার্থে দলকে ব্যবহার করতে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। সকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আজকের এই সম্মেলন থেকে আমরা কি দুটি অঙ্গীকার করতে পারি? প্রথমত— যেকোনো মূল্যে আমরা দলের সিদ্ধান্তের পেছনে ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং দ্বিতীয়ত— নেতাকর্মীদের কেউ যেন ব্যক্তির স্বার্থে বিএনপিকে ব্যবহার করতে না পারে। আসুন আমরা একসঙ্গে এই দুটি শপথ নিই।’
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যদি দলের ঐক্য অটুট রাখা যায়, তবে জনগণের রায় ধানের শীষের পক্ষেই যাবে।
বিএনপির শক্তি জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে নিহিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের পাশে থাকা এবং জনগণকে দলের পাশে রাখা জরুরি। ‘সবকিছুর ওপরে বিএনপির কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষ, মানুষ আর মানুষ—বাংলাদেশের মানুষ।’
বাংলাদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, মানুষ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছে এবং সেই আন্দোলন অবশেষে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন পতনের পর এ সরকার কিছু সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবগুলোর ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই প্রস্তাব আড়াই বছর আগেই দেশের মানুষের সামনে বিএনপি উপস্থাপন করেছে।
বিএনপি নেতার দাবি, বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করেছে। মতামতের কোনো কোনো বিষয়ে হয়তো মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, মানুষের নিরাপত্তা ও মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের প্রশ্নে কারও সঙ্গে কোনো দ্বিমত নেই।
এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: জামায়াতকে সালাহউদ্দিন
তিনি বলেন, জনগণের অভিমত ও ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা দেশের উন্নয়ন ও জাতীয় কল্যাণ নিশ্চিত করবে।
তারেক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। বিএনপির ৩১ দফা এজেন্ডা সফল করতে ও জনগণের রায় পেতে হলে সারাদেশে দলের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আপনাদের অনেকের মনে আছে, স্বৈরাচার পালিয়ে যাবার কয়েক দিন পরে আমি একটি কথা বলেছিলাম যে স্বৈরাচার তো বিদায় হয়ে গেছে, পালিয়ে গেছে, অদৃশ্য শক্তি কিন্তু ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আজকে থেকে প্রায় এক বছর আগের কথা কিন্তু ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
তিনি আবারও নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান, যাতে কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলের নাম ব্যবহার করতে না পারে বা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বড় দলে ভিন্নমত থাকতে পারে, তবে একবার নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারণী পর্যায় সিদ্ধান্ত নিলে প্রতিটি সদস্যের কর্তব্য হলো সেই সিদ্ধান্তের সমর্থনে কাজ করা।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আপনারা কি কারও ব্যক্তিগত কর্মী, নাকি আপনারা ধানের শীষের কর্মী, বলেন তো আমাকে। আপনারা জাতীয়তাবাদী শক্তির কর্মী, জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষ থেকে যখন একটি সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হচ্ছে যেকোনো মূল্যে তা বাস্তবায়ন করা।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঐক্য অপরিহার্য। যেমন একটি পরিবারে সবাই প্রবীণদের সিদ্ধান্ত মেনে চলে, তেমনি দলের সদস্যদেরও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
৯৯ দিন আগে
এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: জামায়াতকে সালাহউদ্দিন
জামায়াতে ইসলামী যদি সরকারি দল হওয়ার বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে নানা টাল-বাহানায় নির্বাচন কেন বাধাগ্রস্ত করছে— দলটির নেতাদের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অপর্ণ আলোক সংঘের আয়োজনে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপ-মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জামায়াত এখন জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে, অথচ একই সময়ে তারা এমন এক দলের সঙ্গে রাস্তায় আন্দোলন করছে, যে দল ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কালকে কয়েকটা সমাবেশ হয়েছে সারাদেশে, বিভিন্ন বিভাগ পর্যায়ে। পত্রিকায় আজ হেডলাইন দেখলাম, কোথাও বলছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে।’
জামায়াত নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ভাইসাব আপনারা কি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ তাদের বিরোধী দল করবে? ‘আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী যে, সরকারি দল হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কী, সেটা তো আমরা জানি।’
আরও পড়ুন: বিএনপিকে তরুণদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে: তারেক রহমান
তিনি জামায়াতের কাছে প্রশ্ন তোলেন, ‘কাদেরকে নিয়ে আপনারা আন্দোলন করছেন এখন যুগপৎ সঙ্গী হিসেবে, সেটা জনগণ দেখছে। তাদের মধ্যে একটি দল আছে, আমি নাম নিলে তো আবার অসুবিধা।’
দলটির নাম নিলেও ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি যুগপৎ এর সঙ্গী হলে নিষ্পাপ হয়, তাহলে বাকি ২৮ টা দল যারা ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়েছিল তারা কি মহাপাপী?
এই নীতি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তা ছাড়া শুধু ২০২৪ সালের নির্বাচন অংশ না নিলেও আগের সব নির্বাচনে ‘হাত পাখা’ আওয়ামী লীগের সঙ্গী ছিল বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
তবে মতপার্থক্য থাকলেও আলোচনার টেবিলেই নিষ্পত্তি চান বলে জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা। ইসলামী আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মতপার্থক্য গণতন্ত্রের অংশ এবং যেকোনো দল তাদের দাবি আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে রাস্তায় নামতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলছিলাম, যে বিষয়গুলো এখনো আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি হওয়ার অপেক্ষায়, সেজন্য অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার জন্য কি আপনারা রাস্তায় গেলেন? সেই চাপকে আবার বাতাস শূন্য করার জন্য আমাদেরকেও তো যেতে হবে হবে রাস্তায়।’
তিনি বলেন, আমরা কি সেটা চাই? আমরা চাই আলোচনার টেবিলেই এসব বিষয় সমাধান হোক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে চর্চার মাধ্যমে এটিকে শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
তিনি বলেন, জাতীয় ইস্যুতে, দেশের স্বার্থে ইস্যুতে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের ইস্যুতে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চায় আমাদের মধ্যে বিতর্ক হবে, মতভিন্নতা হবে, বহুমত পোষণ করব কিন্তু সেটার নিষ্পত্তি হবে আলোচনার টেবিলে।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পিআর যদি চাইতেই হয় সেটা তো ডিসাইড (নির্ধারণ) করবে জনগণ। আমরা কে কয়টা রাস্তায় মিছিল করলাম, বিভাগীয় পর্যায়ে কে কয়টা সভা করলাম, হাজার দুই-তিনেক লোক নিয়ে মিছিল করলাম তাতে কি পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল?’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী ইশতেহারে আপনাদের দাবিগুলো উল্লেখ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ যদি আপনাদের পক্ষে রায় দেয়, ইশতেহারের পক্ষে রায় দেয়, আপনারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন। এটিই তো গণতান্ত্রিক রীতি।’
৯৯ দিন আগে
বিএনপিকে তরুণদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে: তারেক রহমান
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের বিশেষত তরুণ প্রজন্মের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে। এটি দলটির একটি বড় দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব বলেন।
তারেক রহমান লিখেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা।
পোস্টে তিনি আরও বলেন, আজকের ও আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ছুটে যাচ্ছে তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে; গ্রাম থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও মজবুত করছে। এই সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
বিএনপি নেতা জানান, নানা অভিযোগে এখন পর্যন্ত দলের সাত হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের মতো অভিযোগে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বহুমুখী অপপ্রচারের মাঝেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, তবে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এগুলো ছিল অপরিহার্য। শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সেটিই আমাদের শক্তি। নিজেদের সদস্যদের দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই আবারও প্রমাণ হলো যে, বিএনপি সততার ব্যাপারে আন্তরিক, এবং আমরা ক্ষমতাসীনদের কাছে যেসব মানদণ্ড দাবি করি, নিজেদেরও ঠিক সেই একই মানদণ্ডে দাঁড় করাই।
তারেক রহমান বলেন, এইভাবেই আমরা জনগণের আস্থা পুনর্গঠন করতে চাই — বিশেষত তরুণদের, যারা রাজনীতিকে কেবলমাত্র ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখতে চায় না; বরং দেখতে চায় সবার অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা একটি মহৎ ক্ষেত্র হিসেবে।
বিএনপি সবসময় যুগের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের আধুনিক করেছে এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ও যোগাযোগকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বিএনপি নেতা আরও জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতিসহ ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে তাদের নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।
তার ভাষ্যে, নারীর অংশগ্রহণ, তরুণ নেতৃত্ব ও পেশাজীবীদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি গড়ে তুলতে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে দেশ এগিয়ে যায় এবং রাজনীতি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে। বিএনপিকে তারা এমন একটি দল হিসেবে পরিচিত করতে চান—যা সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হবে; বিভাজন কিংবা সুবিধাভোগের প্রতীক নয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বানচালের ‘অশুভ শক্তি’র চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আলাদা, তাই আমাদের পদক্ষেপগুলোকেও হতে হবে নতুনভাবে চিন্তা-নির্ভর। তবে আমরা ইতিহাসকে অস্বীকার করি না; বরং তার ভিত্তিতেই এগিয়ে যেতে চাই।
তারেক রহমান স্মরণ করিয়ে দেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন; জনগণের ক্ষমতায়নকে রাজনীতির কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করে গিয়েছেন। আজ আমরা তাদের সেই আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছি নতুন যুগে; যেখানে সততা, তরুণ নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হবে রাষ্ট্রগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
তিনি বলেন, আমরা জানি, তরুণরা চায় বাস্তব সুযোগ, তারা ফাঁকা বুলি চায় না। জনগণ চায় স্থিতিশীলতা, তারা বিশৃঙ্খলা চায় না। আর বিশ্ব চায়, বাংলাদেশ হোক একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সম্মানিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই প্রত্যাশাগুলো পূরণে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তারেক রহমান নেতাকর্মীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও জনগণের সেবায় নিবেদিত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি যেমন আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও তেমনি আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ হবে আরও উজ্জ্বল। আমরা একসঙ্গে প্রমাণ করবো যে, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং গণআকাঙ্খিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।
১০১ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
আগামী ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধরে সরাসরি জনসংযোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলটি ব্যাপকভাবে ভোটারদের আস্থা পুনঃস্থাপন, প্রতিপক্ষের প্রচারণা মোকাবিলা ও নির্বাচনী মাঠে শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিতের প্রচেষ্টায় ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈঠকে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “আমাদের ‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে নারী ও যুবসমাজকে সক্রিয় করা এবং গত কয়েক বছরে দলের কিছু নেতার কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষয়প্রাপ্ত আস্থা পুনঃস্থাপন করা।”
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সমর্থকদের নির্বাচনমুখী করার জন্য বিএনপি ১৫০টিরও বেশি আসনে প্রার্থীদের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের পরিচয় করানোর পরিকল্পনা করেছে বলে জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সম্প্রতি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ—ডাকসু, জাকসু নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবি এবং ইসলামি দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচির কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দলের নীতিনির্ধারকদের দেশব্যাপী সরাসরি গণসংযোগ ও প্রচারণা জোরদার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’
তার মতে, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের কিছু ভুল বুঝতে পেরেছে, বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনের পর। আমাদের প্রচারণার উদ্দেশ্য হলো সেই ত্রুটিগুলো জনগণের কাছে স্বীকার করে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।’
‘ফলে নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীরা জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন যে সরকারি ক্ষমতা না থাকলেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে নিজেদের গুরুত্ব ও সততা প্রমাণ করেছে বিএনপি।’
‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, ভারত ও অন্যান্য সংবেদনশীল ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান নিয়ে ছড়ানো নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবিলা করা হবে বলে জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, বৈঠকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলগুলোর ঘোষিত কর্মসূচিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। এগুলোকে রাজনৈতিক দরকষাকষির অংশ হিসেবে দেখছি। তবে এর বাইরে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাব।
এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
ওই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রচারণায় শুধু পুরুষ নেতা-কর্মীরাই নন, নারী নেতা-কর্মীরাও সরাসরি অংশ নেবে। আমরা মানুষকে বোঝাব, কেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।’
দলটির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য জানিয়েছেন, বিএনপি অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যাতে প্রতিটি আসনে একজন প্রার্থী নিশ্চিত থাকে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই স্থানীয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং এড়িয়ে দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধাতির নির্বাচনের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তবে বিএনপি মুখোমুখি রাজনীতি এড়িয়ে জনসংযোগে মনোযোগ দিচ্ছে। দল জনগণের কাছে তাদের অবস্থান ও নির্বাচনের ভিশন ব্যাখ্যা করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাবে।’
জনগণের মধ্যে বিএনপিকে নিয়ে ভুল ধারণা দূর করতে এবং কেন কিছু সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে এই কর্মসূচি সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনও বলেছেন, ‘আমরা জনগণের কাছে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাব। আমাদের লক্ষ্য জনগণের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান শেয়ার করা, সরাসরি অন্য দলের কর্মসূচি মোকাবিলা করা নয়।’
তবে এই প্রচারণা কখন শুরু হবে তা রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, জামায়াত ও অন্যান্য দল তাদের দাবিসহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো সরকারের দায়িত্ব। কোনো দল যেকোনো কিছুর দাবি করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারকেই প্রতিক্রিয়া দিতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান
তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না। ইতিহাসে দেখা গেছে, ছাত্রনেতারা ক্যাম্পাসে সফল হলেও সংসদ নির্বাচনে তার প্রভাব দেখা যায়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে যাবে বা রাজপথে আন্দোলন করবে, এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা কোনো দলকে শত্রু মনে করি না। নির্বাচনকালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, তবে আমরা সব দলকে রাজনৈতিক বন্ধু ও সঙ্গী মনে করি। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতি করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, জামায়াত ও কিছু ইসলামি দল তাদের দাবিসহ রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি তাদের বার্তা, বক্তব্য ও মতামত জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে, এবং জনগণ তা বিচার করবে।এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘জনসংযোগের বিভিন্ন মাধ্যম, যেমন: মিছিল, র্যালি, জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচি সফল করা হবে। বিএনপির অবস্থান কী, জনগণের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং জনসমর্থন অর্জন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
১০৩ দিন আগে
এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
বাংলাদেশের ২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণকে মাইলফলক আখ্যা দিলেও এর সঙ্গে আসা ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘উত্তরণ কেবল একটি মাইলফলক নয়, বরং এটি এমন ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে যা আমাদের সততার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে। এগুলো সরাসরি আমাদের অর্থনীতি ও জনগণকে প্রভাবিত করবে।’
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া অগ্রসর না হলে দেশের অর্থনীতি ও জনগণ সরাসরি চাপের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি কয়েকটি সম্ভাব্য সমস্যা উল্লেখ করেছেন।
তার মতে, বাণিজ্য সুবিধা হারালে পোশাক খাতের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে যাবে। একই সঙ্গে স্বল্পসুদে ঋণ ও সাহায্যের প্রবাহ কমে যাবে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ঋণের চাপে থাকা অর্থনীতিকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিশেষ সুবিধা, যেমন ভর্তুকি বা ওষুধের পেটেন্ট সংক্রান্ত ছাড় আর থাকবে না। এতে প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়তে পারে এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্ষয় হলে একটি ক্ষেত্রের ওপর রপ্তানি নির্ভরতা আমাদের দুর্বল করে তুলতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কিছু প্রস্তাব করেছেন তারেক রহমান।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, পোশাকের বাইরে আমাদের রপ্তানিভিত্তিকে আইসিটি, ওষুধ ও অন্যান্য মূল্য সংযোজন শিল্পে বৈচিত্র্য আনতে হবে, ঋণের ফাঁদ এড়াতে উন্নত আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করতে হবে, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য উৎপাদনশীলতা, বাণিজ্য সরবরাহ এবং আধুনিক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য বাণিজ্য সুবিধা এবং সবুজ অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শ্রমিক, কৃষক ও তরুণদের ঝুঁকির মুখে ফেলে রাখা যাবে না। এলডিসি থেকে উত্তরণের সুফল ভোগ করতে হলে নাগরিকদের জন্য বাস্তব অগ্রগতি ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
১০৩ দিন আগে
শেখ হাসিনার গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে: শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের টাকা লুটপাট করে, মানুষ হত্যা করে ভারতে পালিয়ে থাকা যাবে না। পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে, বিচার করা হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান দুদু বলেন, ‘শেখ পরিবার ব্রান্ডেড খুনি, ব্রান্ডেড লুটেরা, ব্রান্ডেড চোর। তার দল আওয়ামী লীগ। শেখ মুজিব খুনি ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টিকারী।’
তিনি বলেন, ‘এত টাকা লুট করে, গণহত্যা করে কোথায় পালাবেন মা (শেখ হাসিনা) আপনাকে গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে।’
পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান নির্বাচন নিয়ে দুদু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ খোঁচাখোঁচি করছে। পিআর ফি-আর কী যেন বলছে। কারণ নির্বাচন দিলেই তো বিএনপির জয়। প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আগামী নির্বাচন সহজ হবে না। ষড়যন্ত্র চলছে। তাই তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিএনপি হবে আগামী দিনের চালক এবং আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান।
১১১ দিন আগে