বিএনপি
দেশের ওষুধ শিল্প রক্ষায় স্পষ্ট নীতি প্রয়োজন: ফখরুল
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ওষুধ (ফার্মাসিউটিক্যাল) শিল্প খাতের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও শিল্পবান্ধব নীতির মাধ্যমে শিল্পটি রক্ষা করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি সরকার বেশ কিছু অস্বচ্ছ ও একপাক্ষিক নীতি ও নির্দেশনা নিয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার নজির তৈরি করেছে, যা এই সম্ভাবনাময় শিল্পের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
ফখরুল উল্লেখ করেন, জরুরি ওষুধের তালিকা ও সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সদ্য গঠিত ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটির (ডিসিসি) টেকনিক্যাল সাব-কমিটিতে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে— নীতি প্রণয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাত উন্নয়নে স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
ফখরুল যোগ করেন, জাতীয় স্বার্থে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত হলো বিএপিআই এবং সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌথ সমাধান খুঁজে বের করা।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো কমিটি গঠন, সংশোধন বা বাস্তবায়ন সমর্থন করি না যা শিল্প উদ্যোক্তাদের বাদ দেয়। আসন্ন এলডিসি স্নাতকত্বকে সামনে রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে খাত রক্ষার জন্য।’
ফখরুল বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে নতুন কোনো ওষুধ নিবন্ধন করা হয়নি এবং দীর্ঘ সময় ধরে ওষুধের মূল্যও সমন্বয় করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘নতুন ওষুধ অনুমোদন না দেওয়ায় বাংলাদেশ ট্রিপস ওয়েভার (ছাড়) সুবিধা হারাতে বসেছে, কারণ ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তাই নতুন ওষুধের নিবন্ধন কোনো বিলম্ব ছাড়াই দ্রত অনুমোদন করা উচিত।’
পড়ুন: চোখের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল খাত এখন শুধু উৎপাদন শিল্প নয়, এটি দেশের কৌশলগত সম্পদ। এই খাতের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সময়োপযোগী ও দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, সরকার, বেসরকারি খাত, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের সমন্বয়ে এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিল্পবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সরকার এই খাতের স্থিতিশীলতা ও সুনাম বজায় রাখবে।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শিল্পটি প্রায় সব অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে এবং ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে তৈরি মানসম্মত ওষুধ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া সহ ১৬০টির বেশি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। খাতটি অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) উৎপাদনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করছে।
১৩৮ দিন আগে
চোখের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল
চোখের চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে থাই রাজধানী ব্যাংকের উদ্দেশে উড়াল দেন তিনি।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, ফখরুল তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমের সঙ্গে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বেলা সোয়া ১১টায় ব্যাংকক রওনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল
সায়রুল কবির জানান, ব্যাংককের রাটনিন আই হাসপাতাল থেকে ফলো-আপ চিকিৎসা নেবেন বিএনপি মহাসচিব। সেখানে তিনি ১৪ মে তার বাঁ চোখের রেটিনা সমস্যার জন্য সফল অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন।
সায়রুল বলেন, ফখরুল আগামী ১৯ আগস্ট দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
এর আগে, ১৩ মে বিএনপির মহাসচিব জরুরি ভিত্তিতে তার বাঁ চোখের রেটিনার অস্ত্রোপচারের জন্য ব্যাংকক গিয়েছিলেন।
১৩৮ দিন আগে
প্রতিশোধ থেকে বিরত থাকতে তরুণদের প্রতি আহ্বান তারেকের
তরুণ প্রজন্মকে সাহস ও সততার সঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে প্রসারিত করতে হলে প্রতিশোধ ও বিদ্বেষের পথ থেকে বিরত থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ আয়োজন করা হয়।
তরুণ সমাজের উদ্দেশে তারেক বলেন, ‘আপনারা যদি সাহস ও সততার সঙ্গে এগিয়ে যান, প্রতিশোধ ও দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকেন, তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সমৃদ্ধির সব দরজা খুলে যাবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সফলতা ও সমৃদ্ধির একমাত্র নির্ধারক দেশের জনগণ। জনগণ এখন প্রচলিত রাজনীতির একটি পরিবর্তন চাইছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতি নয়, বরং তার বাস্তবায়নই বিএনপির লক্ষ্য।
এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা বলে মন্তব্য করেন তিনি। তারেক জানান, বিএনপি খাতভিত্তিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং এগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পড়ুন: অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান তারেক রহমানের
তিনি তরুণদের প্রতি অনুরোধ জানান, বিএনপির জনবান্ধব পরিকল্পনা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে। যদি জনগণ বিএনপিকে সরকার করার সুযোগ দেয়, আমরা ধীরে ধীরে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।
দেশের সব নারী-পুরুষ, ছাত্র-তরুণ-যুব সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের কাছে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বাকুল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদল সভাপতি রকিবুল ইসলাম রাকিব, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, নাট্যকার ও মাবরুর রশিদ বান্নাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মো. তফসার উল্লাহ, সাংবাদিক মুক্তাদীর রশীদ রোমিও ও শরীফুল ইসলাম খান বক্তব্য দেন।
১৩৮ দিন আগে
অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান তারেক রহমানের
অদৃশ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেছেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ব্যাহত করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে, এগুলো প্রতিহত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের একযোগে অবস্থান নিতে হবে এবং জনমানুষের বিশ্বাস অটুট রাখতে হবে।’
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে নওগাঁ শহরের কনভেনশন সেন্টারে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ হচ্ছে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করা। জনগণের ভোটে বিএনপি সরকার গঠন করলেও সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে, সেগুলো মোকাবেলা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও সরকারের প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করে রেখে গেছে। দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে বিএনপির। তাই এই অবস্থা উত্তরণ করতে দলটি সক্ষম হবে।’
পড়ুন: প্রতীক নয়, ব্যক্তিকে ভোট দিত মানুষ: হাফিজউদ্দিন
তারেক বলেন, ‘স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পরে বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তখন বলেছিলাম, আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন হবে। এক বছর আগে আমি বলেছিলাম অদৃশ্য শক্তি নানা ষড়যন্ত্র করছে, আজ কি আমার কথার মানে বুঝতে পারছেন?’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন, বিএনপি পরিবারের সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে সফল হবো। বিএনপিতে মানুষ আস্থা রাখে কারণ আমরা দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করছি।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তারা নিজেদের স্বার্থে দেশ লুটপাট করেছে। বিএনপি ইতোমধ্যে ৩১ দফা দাবি জানিয়েছিল, যারা এখন সংস্কারের কথা বলছেন তারা আড়াই বছর আগে থেকেই এই দাবি তুলেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে গণতান্ত্রিক উপায়ে নেতা নির্বাচন করার।’
এর আগে দুপুরে নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে জেলা সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম।
১৩৯ দিন আগে
নাটোরে ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠান বয়কট করল বিএনপি
নাটোরে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর পরও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অনুষ্ঠান বয়কট করেছে দলটি।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে শহরের কানাইখালি মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানে প্রবেশের সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন জেলা বিএনপির নেতারা। ঘটনার পরপরই তারা অনুষ্ঠান বর্জন করে চলে যান।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পুলিশের ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় শীর্ষ নেতাদের প্রতি অসৌজন্যমূলক ও রূঢ় আচরণ করেছেন।
তিনি বলেন, `ফ্যাসিবাদের রাহু থেকে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা এখনও বের হতে পারেননি।‘
আসাদ ঘটনাটি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
জেলা প্রশাসকের আমন্ত্রণে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজের নেতৃত্বে সদস্য সচিবসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কানাইখালি মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান।
কিন্তু উদ্বোধনের সময় বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরও ডিবি পুলিশের ওসি তাদের প্রবেশে বাধা দেন এবং সেখান থেকে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ইফতেখায়ের আলম বলেন, “উপদেষ্টার নিরাপত্তার দায়িত্ব ডিবি পুলিশের ওপর ছিলো। তবে কাউকে অসম্মান করা সমীচীন নয়।” তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
১৪১ দিন আগে
গত ৫ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক পরিসরে পরিবর্তন দেখছেন মঈন খান
এক বছর আগের ৫ আগস্ট ও এবার ৫ আগস্টের রাজনৈতিক বিশ্লেষণে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তিত বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।
শনিবার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানব গবেষণা ও বিশ্লেষণ ফাউন্ডেশন (এইচইউআরএফ) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব: গণতন্ত্রের অগ্রগতি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ড. মঈন খান বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ১৯৭৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে টিকে রয়েছে।
মুঘল সাম্রাজ্যের উদাহরণ ও পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের প্রতি বৈষম্যের ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে, দেশে এখনও সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি, পাকিস্তানেও না।
শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে সতর্ক করে মঈন খান বলেন, আজকের শাসকরা আগামীকালের নিপীড়ক হয়ে উঠবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে দায়বদ্ধতা থাকতে হয় এবং জাতির সামাজিক ও রাজনৈতিক সত্য আবিষ্কারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পড়ুন: নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
গত এক বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং শাসন কাঠামো আবারও গভীর রাজনৈতিক বৈষম্যের ছাপ দেখিয়েছে— যা মুঘল ও পাকিস্তানের শাসনের মতোই ছিল এবং ২০২৪ সালে আবারও পুনরুত্থিত হয়েছে।
বিএনপির নেতা একদলীয় রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, যখন একটি দল সংসদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আসন দখল করে তখন শাসন ব্যবস্থায় সংকট সৃষ্টি হয়, যা অতীতে দেখা গেছে।
তিনি হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা আজ তাদের আত্মত্যাগের কারণে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি।’
মুক্ত, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ডাক দিয়ে ডা. মঈন খান বলেন, সব প্রধান রাজনৈতিক শক্তির অংশগ্রহণ ছাড়া সংসদে গণতন্ত্র কার্যকর করা সম্ভব নয়।
তিনি দাবি করেন, ১৯৭৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি বিএনপি নেতা, কর্মী ও গ্রামীণ ছাত্র রাজনৈতিক মামলার মোকাবিলা করেছে।
ঢাকা কলেজের অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ মূল বক্তৃতা দেন। এইচইউআরএফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসাইন আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং আহত জুলাই যোদ্ধা ফাহিম হোসেন জুলাই বিপ্লবের অভিজ্ঞতা জানান।
১৪১ দিন আগে
জাবিতে আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিতসহ অনুষদ ও হল কমিটি দিল ছাত্রদল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আহ্বায়ক কমিটির বর্ধিত করাসহ মোট ১৭টি হল এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নতুন কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।শুক্রবার (৮ আগষ্ট) বিকালে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭০ সদস্যবিশিষ্ট বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সংগঠনটির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুষদ ও হল কমিটিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।জাবি শাখা ছাত্রদলের বরাতে জানা যায়, নতুন বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে ৭৫ জন এবং সদস্য হিসাবে ২৯৫ জন জায়গা পেয়েছেন। এছাড়াও নতুন বর্ধিত কমিটি মোতাবেক ৬টি ছাত্রী হল হলো– নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল, প্রীতিলতা হল, ১৩ নম্বর ছাত্রী হল, ফজিলতুন্নেসা হল, রোকেয়া হল ও বীর প্রতীক তারামন বিবি হল। ১১টি ছাত্র হল হলো– আল-বেরুনী হল, শহীদ সালাম বরকত হল, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল, মাওলানা ভাসানী হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল, ১০ নম্বর ছাত্র হল, ২১ নম্বর ছাত্র হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও মীর মোশাররফ হোসেন হল। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের জন্যও দুই সদস্যবিশিষ্ট আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পড়ুন: সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে জাবি ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর এবং সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক নবগঠিত কমিটির নেতাদের দায়িত্ব পালনে সততা, শৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসব কমিটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল আরও শক্তিশালী ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জাবি শাখা ছাত্রদলের নেতারা আশা প্রকাশ করেন।উল্লেখ্য, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
১৪২ দিন আগে
প্রতীক নয়, ব্যক্তিকে ভোট দিত মানুষ: হাফিজউদ্দিন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিরোধিতা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতীক নয়, ব্যক্তিকে ভোট দিতে অভ্যস্ত।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘ভোটাররা এমন একজনকে নির্বাচিত করতে চায় যার উপর তারা বিশ্বাস করতে পারে... এমন একজন যিনি তাদের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াবেন। এমনি প্রেক্ষাপটে প্রতীক-কেন্দ্রিক পিআর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক।’
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দল বর্তমান সরকার এবং কমিশনের অধীনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত।
তিনি আশা করেন আসন্ন নির্বাচন হাসিনা আমলের ‘দুঃশাসন’র অবসান ঘটাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি উদাহরণ স্থাপন করা উচিত।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে হাফিজউদ্দিন নির্বাচন বিলম্বিত করতে দলটির বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা বিএনপির মিত্র ছিল। এখন নির্বাচনের আগে, তারা যে বিষয়গুলো উত্থাপন করছে— তা আশ্চর্যজনক।’
পড়ুন: সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত দাবি করেছে যে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেওয়া হয়নি। যারা ইতিহাস মনে রাখে—তারা জানে যে এই একই জামায়াত ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। পরে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল।’
হাফিজউদ্দিন অভিযোগ করেন, বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যেই ধরে নিয়েছে যে, তারা জাতীয় নির্বাচনে তাদের জামানত হারাবে, যে কারণে তারা পিআর ব্যবস্থাকে সমর্থন করছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আগের সরকারের পুলিশ বাহিনীতে বড় ধরনের সংস্কার করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের আমলে পুলিশ একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের পুলিশ বাহিনী দিয়ে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা কতটা বজায় রাখা যাবে—তা সন্দেহজনক।’
সাংবিধানিক সংস্কার সম্পর্কে হাফিজউদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকারের সংবিধান সংশোধন করার কোনো ম্যান্ডেট নেই, যদিও তারা একটি রূপরেখা দিতে পারে।
‘সংস্কারগুলো একটি নির্বাচিত সরকারকে করতে হবে,’ বলেন তিনি।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি যেকোনো নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে উল্লেখ করে হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘যদি কেউ বিশ্বাসযোগ্য ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে, আমরা তা মেনে নেব। তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।’
তবে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মহল এখনও নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে।
দেশের কল্যাণে কাজ করার প্রচেষ্টার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, উপদেষ্টার অনেক সহযোগী ক্ষমতার লোভে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন।
‘তারা নির্বাচনের পথে হাঁটার পরিবর্তে একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়,’ দাবি করেন হাফিজউদ্দিন।
১৪২ দিন আগে
সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশের প্রচলিত আইনে গণহত্যার দায়ে স্বৈরাচার হাসিনার বিচার সম্ভব। তাই সংস্কারের নামে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যাবে না। দেশের জনগণ ১৫ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন ভোট দেওয়ার জন্য। তাই জনগণের ভোট দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকালে রংপুরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ের প্রথম ধাপ পূরণ হলেও নির্বাচনের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। তাই নির্বাচন বিলম্ব না করে সঠিক সময়ে নির্বাচন দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন নিয়ে যে আশ্বাস দিয়েছেন, সেই আশ্বাসে আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই। তবে প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন দেওয়ার আশ্বাস বানচালের চেষ্টা করতে পারে। এজন্য আমাদের সবাইকে প্রধান উপদেষ্টাকে সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তারা নতুন বাংলাদেশ দেখার স্বপ্ন দেখেছিলেন। শহীদদের নতুন বাংলাদেশ দেখার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায় বিএনপি। সেই দায়িত্ব আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বিএনপিকে দেবে সেই বিশ্বাস রয়েছে।
এসময় তিনি শহীদ আবু সাঈদের সম-অধিকারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক. জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসহ অন্যান্য নেতারা।
পরে আলোচনা শেষে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় থেকে একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়। বিজয় শোভাযাত্রা নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ইউনিয়ন ও রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতা কর্মী এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
১৪৪ দিন আগে
বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে জনগণের সমর্থন চাইলেন তারেক
আগামী সাধারণ নির্বাচনের অনুষ্ঠানে রোডম্যাপ ঘোষণা করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার(৬ আগস্ট) নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে ভার্চুয়াল ভাষণে তারেক বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যেই জনগণের সামনে দলের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে তারা কীভাবে শাসন করবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এবং রাজনীতি করবে—তা তুলে ধরেছে।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সংস্কার প্রস্তাব করেছে। বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে জনসমর্থন কামনা করে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল (জাতীয়) নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি সময়সীমা ঘোষণা করেছে, যার লক্ষ্য ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের কাছে জবাবদিহিতাপূর্ণ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। সরকার জনগণের ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে। আমরা বাস্তবায়নের এই উদ্যোগগুলো স্বাগত জানাই।’
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে ভার্চুয়াল ভাষণে তারেক রহমান এই মন্তব্য করেন।
পড়ুন: নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণায় বিএনপির বিজয় হয়েছে: মঈন খান
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ, তারা বর্তমানে জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যাত্রায় এক গুরুত্বপূর্ণ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
ফ্যাসিবাদী শাসনের দমনমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তারেক বলেন, শুধুমাত্র ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এই মুহূর্তটিকে গণতন্ত্রপ্রেমী নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি দুর্দান্ত সুযোগ উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, যদি রাজনৈতিক সম্প্রীতি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে এই সুযোগ কাজে লাগানো যায়—তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভাই, বোন, সন্তান এবং আত্মীয়স্বজনের জীবনের বিনিময়ে কাউকে আর কখনও রক্তাক্ত ২০২৪ সালের মতো ঘটনা দেখতে হবে না। আমি ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, বলতে চাই যে, একজন নাগরিক হিসেবে আপনার নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার, আপনার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার, বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।’
ফ্যাসিবাদী শাসনামলে রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ জনগণ নির্বিশেষে কেউ নিরাপদ ছিল না এবং তাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল—এটি সবাইকে মনে রাখার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বলেন, ‘গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের জন্য পুরো দেশকে একটি বর্বর কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল—আয়নাঘর (একটি গোপন কারাগার)।’
পড়ুন: নির্বাচনের ঘোষণা গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে: বিএনপি মহাসচিব
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন ছাড়া, পুরুষ হোক বা নারী, সংখ্যালঘু হোক বা সংখ্যাগরিষ্ঠ—কেউই নিরাপদ থাকতে পারে না।
তারেক আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র ও সরকারে জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আমাদের কাজ হলো—রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকারগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ও অনুশীলন করা।’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য স্বাভাবিক। তবে আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়গুলো সমাধান করা উচিত। ‘আমরা, গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় সংসদে একে অপরের দিকে কখনও মুখ ফিরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। বরং, জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমাবেশে বক্তব্য দেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে দলের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশটি আয়োজন করে বিএনপি। পরে পাশের সড়কে একটি মিছিল বের করা হয়।
১৪৪ দিন আগে