আইনশৃঙ্খলা
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর মত আইন মন্ত্রণালয়ের
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুইটি শর্তেই (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে) মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আবেদনে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মতামত দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হচ্ছে। এ নিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ নির্বাহী আদেশে আটবারের মতো বাড়ানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন ৩ চিকিৎসক
বুধবার (২০ মার্চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার ভাইয়ের যে আবেদন ছিল ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মতে তার সাজা স্থগিত রেখে দুইটি শর্তে যে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, সেটা সাতবার বাড়ানো হয়েছে। বুধবার একই শর্তে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তির আদেশ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হচ্ছে। আমি এ মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এখনই ফাইল পাঠিয়ে দিচ্ছি।’
বেগম জিয়ার পরিবারের আবেদনে ছিল তার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে দুইদিন আগেও আপনাদের বলেছি। যেহেতু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় যে আবেদন ছিল সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন সেই আবেদনের ওপরে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই, শুধু মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া। ঠিক সেই কারণে আমি মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলে সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠাচ্ছি।’
মানবিক কারণে তাকে বিদেশে পাঠানো যাবে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, যাই করতে হবে আইনের মাধ্যমে করতে হবে। যে আইনে তাকে বের করা হয়েছে, সেই আইনে এ (বিদেশে পাঠানো) সুযোগ নেই।’
গত ৬ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হবে
এমপি সালাম মুর্শেদীর বাড়ি ৩ মাসের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩ মাসের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে সালাম মুর্শেদীকে বাড়ি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন।
আদালত রায়ে বলেছেন, দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িতে বসবাস করছেন সেটি সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি।
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক।
আব্দুস সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, জনস্বার্থের মামলায় বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার রায় বিরল। এর আগে কখনও উচ্চ আদালত এরকম রায় দেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এর আগে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গুলশানের এই বাড়ি সালাম মোর্শদীর দখলের রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে রিট করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিট আবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন। রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ২০২২ সালের ৪ জুলাই আবারও চিঠি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: হলমার্ক কেলেঙ্কারি: এমডি তানভীর ও তার স্ত্রীসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দিয়ে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেন। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। আর বাড়িসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। পরে পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরে গত ৩ মার্চ এ সংক্রান্ত রুলের ওপর শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রক্টর দ্বীন ইসলাম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে একদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এক দিনের রিমান্ড শেষে কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার মৃত্যু: আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিএমপি
সোমবার অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের দুইদিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে রবিবার (১৭ মার্চ) বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে থেকে তাদেরকে গ্রহণ করে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল।
শুক্রবার (১৫) মার্চ রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা।
আরও পড়ুন: অবন্তিকার আত্মহত্যা: বিচারের দাবিতে জবি আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
অবন্তিকার আত্মহত্যা: রিমান্ডে জবি’র সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী
হলমার্ক কেলেঙ্কারি: এমডি তানভীর ও তার স্ত্রীসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও গ্রুপের চেয়ারম্যান তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরিসহ ৮ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: আদালতের হাজতখানায় কেক কেটে ছাত্রদল নেতার জন্মদিন পালন, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ জন হলেন-
তানভীর মাহমুদ, তানভীর মাহমুদের স্ত্রী জেসমিন ইসলাম, হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক, আবদুল মতিন ও তসলিম হাসান।
কারাদণ্ড পাওয়া বাকি ৮ জন হলেন-
সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার, সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অফিসের জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সফিজউদ্দিন এবং এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান।
এই আটজনের মধ্যে জামাল উদ্দিনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকিদের ১৭ বছর করে কারাদ দিয়েছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীরসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল।
আরও পড়ুন: আদালত ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা আসামির
তবে সেদিন দুদকের পক্ষ থেকে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে থেকে নিয়ে আরও দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।
এরপর ওই দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণ, আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় প্রচারের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন।
জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার, প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় জালিয়াতির মাধ্যমে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল শাখা থেকে হলমার্ক মোট ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এর মধ্যে স্বীকৃত বিলের বিপরীতে দায় (ফান্ডেড) অর্থ হচ্ছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা।
এ ঘটনায় ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রমনা থানায় মামলা করে দুদক।
আরও পড়ুন: নাটোরে আদালত চত্বরে যুবককে কুপিয়ে জখম, আসামিদের ৩ দিনের রিমান্ড
তদন্ত শেষে পরের বছর ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর ১১টি মামলায় হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ, তার ভায়রা তুষার আহমেদসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়।
পরে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ও ২৭ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এই ১১টি মামলা বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলি করা হয়। মঙ্গলবার একটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি মামলা বিচারাধীন।
ঢাকায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে মূলহোতাসহ ৩৫ জন গ্রেপ্তার
গ্যাং সহিংসতার বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি কুখ্যাত কিশোর গ্যাংয়ের পেছনের দুই মূলহোতাসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
১১ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত মোহাম্মদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া, তেজগাঁওসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
আজ র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-মিডিয়া) শিহাব করিমের এক বিবৃতিতে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো. আকাশ, মো. ফরিদ ও মো. ইমাম হোসেন, পাশাপাশি মো. আরিফ ওরফে রাসেল মিয়া এবং মো. মোশাররফের মতো ব্যক্তিরা রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭৫ সদস্য গ্রেপ্তার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) আওতাধীন এলাকায় ব্যাপক ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির খবর পাওয়ার পর এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ‘এফডিসি মুন্না’ ও ‘কিং জামাল’ গ্রুপের নেতাদের মধ্যে ইসমাইল ওরফে এফডিসি মুন্না ও মো. জামাল হোসেনসহ ‘কিং মোশাররফ’ ও ‘আপনা ভাই’ গ্রুপের প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসব চক্রের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রও জব্দ করেছে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অতীতের অপরাধের স্বীকারোক্তি এবং ভবিষ্যতে সহিংসতার পরিকল্পনার সন্ধান পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন গাড়ির হেলপার ও ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামালের ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা ইত্যাদি পেশার আড়ালে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতেন বলে জানা যায়। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত মামলা রয়েছে এবং এ সকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে র্যাব এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাদের রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরে অস্ত্রসহ ‘কিশোর গ্যাং’য়ের ৯ সদস্য আটক
ফেনীতে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য
অবন্তিকার মৃত্যু: আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ডিএমপি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে কুমিল্লায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা।
রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ মহিদ উদ্দিন।
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আম্মান ও দ্বীন ইসলামের আংশিক সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’
দুজনকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে মহিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘তাদের সম্পৃক্ততার গভীরতা তদন্তের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আমাদের যা করার কথা ছিল আমরা করেছি, এখন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা তদন্ত করবে।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফেসবুকে সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে এর আগে গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা।
আত্মহত্যার আগে এক ফেসবুক পোস্টে অবন্তিকা বলেছিলেন, তার আত্মহত্যার জন্য তার সহপাঠী রায়হান আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম দায়ী।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। ’
তিনি আরও লেখেন, ‘এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার।’
শুক্রবার রাতে আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে জবি ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রতিবাদের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী প্রক্টরকে অব্যাহতি দেয় এবং ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।
এছাড়া আইন অনুষদের ডিন মাসুম বিল্লাহকে আহ্বায়ক ও আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত শনিবার ছয় দফা দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মানিকগঞ্জে স্বর্ণ পাচার চক্রের ৫ জনের যাবজ্জীবন
মানিকগঞ্জে স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন
এ মামলায় ১৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মধুরনাথ সরকার ও আইনজীবী নজরুল ইসলাম বাদশা।
আসামিরা হলেন- ইয়াহিয়া আমিন, শেখ আমিনুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান রনি, শেখ জাহিদুল ইসলাম ও মো. জহিরুল ইসলাম তারেক। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা, যশোর মুন্সীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর রাতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ থানাধীন তরা এলাকায বেনাপোলগামী একটি বাস আটক করে।
এ সময় তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে আটক করা হয়। তাদের পাঁচজনেরই দেহ তল্লাশি করে ২২৭টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। যার ওজন প্রায় ৪৪ কেজি।
এ ব্যাপারে সদর থানায় ৫ অক্টোবর সুবেধার মোকসেদ আলম বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা: ৩৫ বছর পর ২ জনের যাবজ্জীবন
খুলনায় ২ শিশুকে ধর্ষণ মামলায় ১ জনের যাবজ্জীবন
পাখি উদ্ধারের সময় মৃত্যু: উদ্ধারকারী আতিফকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে রুল
প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনো কোনো ‘অ্যানিমেল রেসকিউ’ প্রতিষ্ঠান প্রাণী উদ্ধারের কাজ করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে টিয়া পাখি উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ‘রবিনহুড-দ্য অ্যানিমেল রেসকিউয়ার’ এর স্বেচ্ছাসেবক আতিফ ইসলামকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
নিহত আতিফের মা তানজিনা রহমান টুম্পার করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (১৩ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও মো. আতাবুল্লাহ’র সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
রিটকারীর আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বিপন্ন প্রজাতির মদনটাক পাখি উদ্ধার
ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে বিদ্যুতের তারে আটকা পড়া টিয়া পাখি উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ‘রবিনহুড দ্য অ্যানিমেল রেসকিউ সোসাইটি’র সদস্য আতিফ চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ ডিসেম্বর মারা যান।
আতিফকে দগ্ধ অবস্থায় প্রথমে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে তিনি মারা যান। আগের দিন ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেরাণীগঞ্জের হাসনাবাদ ইনসাফ বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর রবিনহুড দ্য অ্যানিমেল রেসকিউ সোসাইটির প্রধান আফজাল খান গণমাধ্যমকে জানান, তাদের অফিস খিলগাঁওয়ে। তারা বিপদে পড়া পশুপাখি উদ্ধারে কাজ করেন। তারা মুঠোফোনে খবর পান যে হাসনাবাদ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ঘুড়ির সুতায় একটি টিয়া পাখি আটকে আছে। এরপর তাদের ৫-৬ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে যায় পাখিটি উদ্ধারে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে একটি ৩ তলা বাড়ির ছাদে ওঠেন উদ্ধারকারীরা। আতিফ তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে পাখিটি উদ্ধার করতে যায়। তবে লাঠিটি বিদ্যুতের তারে লাগার সঙ্গে সঙ্গে আগুন জলে ওঠে। এতে ৩ জন বিদ্যুতায়িত হন। দ্রুত তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
অন্যদিকে আতিফের বাবা মো. নাজমুল হোসেন সেদিন গণমাধ্যমকে জানান, তাদের বাসা লালবাগে। ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন আতিফ। পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি এ কাজে যুক্ত ছিলেন আতিফ। এ ঘটনায় আতিফের মা বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় বিপন্ন ’গ্রিন উইং’ ম্যাকাও পাখি উদ্ধার
সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা: ৩৫ বছর পর ২ জনের যাবজ্জীবন
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় ৩৪ বছর আগে দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে সগিরা মোর্শেদ সালাম (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার(১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাভোগ করতে হবে।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা।
মামলায় অন্য তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পিছিয়েছে সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদ ওরফে শাহীন এবং ও মন্টু মন্ডল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
রায় ঘোষণার সময় সব আসামি উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত।
তবে ওই দিন রায় পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ১৩ মার্চ ধার্য করেন আদালত।
১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকালে সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় রমনা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার স্বামী সালাম চৌধুরী।
মামলাটি ২৫ জন তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে গড়ে একজন করে আসামি গ্রেপ্তার করেন।
১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টু নামে একজনকে আসামি করে অভিযোগ পত্র দাখিল করে পুলিশ। এরপর মামলাটি উচ্চ আদালতে স্থগিত করা হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালে মামলাটি তদন্তের ভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন পিবিআই ঢাকা মেট্রোপলিটনের (দক্ষিণ) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
গত ১২ ডিসেম্বর মামলার পাঁচ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন: সগিরা মোর্শেদ হত্যা: ভাসুরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ধারা জামিন অযোগ্য করার সুপারিশ হাইকোর্টের
মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরিফ, নবী রাসূলসহ সকল ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মীয় অবতারদের বিষয়ে কটূক্তি ও অবমাননায় সর্বোচ্চ শাস্তি এবং জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে আইন প্রণয়নে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) মহানবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য নিয়ে কুষ্টিয়ার একজনের জামিন আবেদনের বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মতামত দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি বলেন, ধর্মীয় অবমাননার বিষয়ে আদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এ বিষয়ে দণ্ডের কোনো বিধান নেই, তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনসহ অজামিনযোগ্য আইন প্রণয়নের জন্য মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত পর্যবেক্ষণে ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইনে কুরআন শরিফ, নবী রাসূলসহ সব ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে এই আইনের ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করতে মত দিয়েছেন আদালত।
আদালত বলেছেন, পূর্ববর্তী আইনে জামিন অযোগ্য ধারা ছিল। বর্তমান আইনে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়ে কটূক্তি করলে জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
আমিন উদ্দিন মানিক জানান, কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলার সেলিম খান ‘হযরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ফেসবুক লিঙ্কে কুরুচিপূর্ণ কমেন্ট করেন। এ মামলায় তার জামিন প্রশ্নে রুল শুনানিতে ২৫ লাখ টাকা ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ও ফেসবুকে ‘লু*ই*চ্ছা’ পোস্টকারী নাফিসা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণে পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকায় সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে অভিযুক্ত করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে ধারা জামিনযোগ্য হওয়ায় রুল নিষ্পত্তি করেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এ কুরআন শরীফ, নবী রাসূলসহ সকল ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে কটূক্তি করলে এই আইনের এই ধারায় জামিন অযোগ্যসহ সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করার জন্য মতামত দিয়েছেন। হাইকোর্ট অপরাধটির বিষয়ে বলেছেন, এটি একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ ছিল এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপরাধ ছিল। কোরআন শরীফ ও হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে বিজ্ঞানী নিউটন, আইনস্টাইনসহ কেউই কখনও প্রশ্ন তোলেননি। এ সময় বিচারক পবিত্র কোরআন শরিফের ৪২ নম্বর সূরা আশশুরার কয়েকটি আয়াতের বিষয়ে অবতারণা করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাহাব উদ্দিন আহমেদ টিপু ও মো. মজিবুর রহমান মুজিব। আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
মামলার এজাহারের তথ্য মতে, গত বছরের ২ নভেম্বর রিলেশনশিপ একটি ফেসবুকে লিঙ্কে নাফিসা চৌধুরী লিখেন ‘লু*ই*চ্ছা’ সর্বপ্রথম কার কার নাম মনে পরে। অতপর এজাহার নামীয় আসামি মো. সেলিম খান ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনূভুতিতে আঘাত করে পোস্ট করেন।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়ার হানিফ শাহ বাদী হয়ে গত ৪ নভেম্বর বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক শেখ লুৎফর রহমান গত ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগ পত্র প্রদান করেন। গত ১৩ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া অবকাশকালীন দায়রা জজ রুহুল আমীন আসামির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করলে আসামি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট গত ৮ জানুয়ারি আসামির জামিন কেন প্রদান করা হবে না সেই মর্মে রুল দিয়েছিলেন। গতকাল সেই রুল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করায় রোজায় খোলা থাকবে স্কুল