সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ সেবা কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন পুলিশ প্রধান আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।
সাইবার বিশ্বে নারীদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ পেলে এবং সেবা প্রত্যাশীদের পরামর্শ এবং আইনি পরামর্শ এবং সহায়তা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, সদ্য চালু হওয়া শাখা সাইবার জগতের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে কাজ করবে এবং দেশের নারীদের সাইবার জগতে সুরক্ষিত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘সাইবার ক্রাইম একটি বৈশ্বিক সমস্যা। সাধারণত দেশে ১৬ থেকে ২৪ বছরের নারীরা এ অপরাধে সবচেয়ে বেশি শিকার হয়।’
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রযুক্তির দিক থেকে দেশটি এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে প্রায় ১১ কোটি মানুষ এখন সেলফোন ব্যবহার করেন এবং আরও সাত কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির সহজলভ্যতা দেশকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করেছে। সাইবার জগতের ৬৮ শতাংশ নারী সাইবার অপরাধের শিকার হন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখতে আমাদের এ উদ্যোগ।’
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘যেসব নারীরা সাইবার বুলিং, আইডি হ্যাক, স্পর্শকাতর তথ্য-ছবি-ভিডিও প্রকাশ, সাইবার স্পেসে যৌন হয়রানি ইত্যাদি অপরাধের শিকার হচ্ছেন, তারা এখানে অভিযোগ জানাতে পারবেন। সম্পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে ভিকটিমের তথ্য গোপন রেখে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে।’
‘নারীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল হয়রানি, হয়রানির এক নতুন রূপ। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের অন্য দেশে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে’, বলেন আইজিপি।
এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ৮৩ শতাংশ নারী সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। অনেকে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং গুগলের ভুয়া আইডি খোলেন এবং প্রচার প্রচারণার জন্য ভুয়া অনলাইন পোর্টাল এবং ব্লগ খুলে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ও মানুষকে হয়রানি করছে।’
আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, সাইবার অপরাধ কমানোর লক্ষে বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, পর্নোগ্রাফি কন্ট্রোল অ্যাক্ট, আইসিটি অ্যাক্ট ও টেলি-কম্যুনিকেশন অ্যাক্ট রয়েছে। এসব আইনে এ পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৯৯টি মামলা হয়েছে যার অধিকাংশ ঘটনার শিকার নারী।
‘নতুন এই ইউনিটের বিশেষত্ব হলো এখানে যারা সেবা দেবেন, তদন্ত করবেন, তারা সবাই পুলিশের নারী সদস্য। যার ফলে ভিকটিমরা নির্দ্বিধায় তাদের সমস্যাগুলো বলতে পারবেন,’ বলেন তিনি।
আইজিপি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা চাইলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ৯৯৯ ফোন করে যে কোনো ধরনের ব্যয় ছাড়া পুলিশের নতুর করে চালু করা এ শাখা থেকে সেবা নিতে পারবেন।
অভিযোগ জানাবেন যেখানে: নারীর নিরাপত্তায় বাংলাদেশ পুলিশের নতুন এ সেবা দেয়ার জন্য একটি হটলাইন নাম্বার (০১৩২০-০০০৮৮৮) চালু করা হয়েছে।
এছাড়াও ই-মেইল ([email protected]) ও ফেসবুক পেইজে (URL: https://m.facebook.com/PCSW.PHQ/) চালু করা হয়েছে। যেখাসে ভুক্তভোগী নারীরা তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন।