কৃষকরা বলেছেন, তারা স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিভিন্ন সময় অভিযোগ দিয়ে আসলেও তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
তারা জানান, অবৈধ মাছের ঘেরের পাশ দিয়ে খাল খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তারা কয়েকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করেছেন।
‘বিল কচুয়া’ যশোরে বাঁকড়ার বৃহত্তম জলাশয়। বিলের আশপাশে হাজিরবাগ, বাঁকড়া ও শংকরপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা মাছ ধরার ওপর নির্ভর করে।
স্থানীয়রা জানান, ‘বিল কচুয়া’ দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধ। বেত্রাবতি নদীর সাথে সংযোগ খাল ও কলারোয়া উপজেলার পাটুলিয়া কাজির হাট সড়কের কালভার্ট নির্মাণের পর বিলের পানি কপোতাক্ষ ও বেত্রাবতি নদীর সাথে সংযোগ স্থাপন হয়ে বিলের জমি আবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আমন ফসল না হলেও অঞ্চলটি বোরো মৌসুমে শতভাগ ধান উৎপাদনের আওতায় আসে।
কয়েকটি অংশে বিলের বুকচিরে সড়ক নির্মাণ হলেও সংযোগ খালে যাতে পানি যেতে পারে তার জন্য ব্যয়বহুল কালভার্ট তৈরি করা হয়।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, বিগত ৬-৭ বছর একটি প্রভাবশালী মহল নিজ জমির সাথে খাস জমি দখল করে অপরিকল্পিত ঘের নির্মাণ করে দখলে নেয়। ঘের কাটার সময় কৃষকরা বলা সত্ত্বেও পাশ দিয়ে সংযোগ খালে পানি যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা রাখেনি।
‘বিল কোচুয়া’তে অপরিকল্পিতভাবে ঘের নির্মাণের কারণে বর্তমান কয়েক মৌসুম অনাবাদী হয়ে গেছে কৃষকের জমি।
বিষ্টপুর, খাতবাড়িয়া, হরিদ্রাপোটা এবং বাকরা গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, জলাবদ্ধতার কারণে ৭৫০ একর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে না।
গত বছর, কৃষকদের চাপে প্রভাবশালী ঘেরের মালিকরা একটি খাল খননের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যাতে বেত্রবতি সংযোগকারী খাল থেকে পানি প্রবাহিত হতে পারে। সময়সীমা পার হলেও তার ব্যবস্থা কিছুই করেননি মালিকরা।
খাতবাড়িয়া, বিস্তোপুর এবং হরিদ্রাপোটা গ্রামের কৃষকরা এখন ‘বিল কচুয়া’ জলাবদ্ধতায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন।
১৯ জানুয়ারি বাঁকড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ‘বিল কচুয়ার’ আশপাশের গ্রামের কয়েকশ কৃষক স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি অবহিত করেন।
কৃষকরা ইউএনবির প্রতিনিধিকে বলেছেন, সংসদ সদস্যের আশ্বাসের পরেও কিছুই হচ্ছে না।
ইতোমধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছেন।
বাঁকড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক শেখ শাহিনুর কবির, হাজিরবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু এবং বাকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নীছার আলী- ঘের মালিকদের পানি বের করে দেয়ার আহ্বান জানান।
কিন্তু কৃষকরা এই পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন কারণ তারা বেত্রাবতি বিলের পাশে সংযোগকারী খাল খননের দাবি জানিয়েছেন।