মঙ্গলবার সকালে সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৮১ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জেলা ও উপজেলা শহরের সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। বানভাসি মানুষের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। উঁচু রাস্তা, বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। নৌকার অভাবে অনেকে নিরাপদ স্থানে যেতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: আবারও বাড়ছে যমুনার পানি, বন্যার আশঙ্কা সিরাজগঞ্জে
এদিকে, ধরলা নদীর পানির প্রবল চাপে সদর উপজেলার সারডোবে একটি বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, বাঁধটি ভেঙে পানি প্রবল বেগে ধেয়ে আসে। একে একে ঘরবাড়ি, গাছপালা বিধ্বস্ত হতে থাকে। হাঁস, মুরগি, আসবাবপত্র, ধান-চালসহ অনেক মালামাল ভেসে যায়। বাঁধটি ভাঙার ফলে কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা, ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙামোড়, বড়ভিটা ও নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশি ইউনিয়নের মোট ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হাজার হাজার মানুষ তাদের গবাদি পশু নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন। মানুষজনকে সরিয়ে নেয়ার জন্য নৌকাও পাওয়া যাচ্ছে না। বাঁধের এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ফুলবাড়ী উপজেলা ও কুড়িগ্রাম জেলা সদরে যাতায়াত করত। এখন যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষজন।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম জানান, পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারের জন্য সেখানে দুটি নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, বাঁধটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত হয়েছে। তবে বিকল্প বাঁধটি রক্ষার জন্য বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছিল। কিন্তু পানির প্রবল চাপে শেষ পর্যন্ত বাঁধটি ভেঙে যায়।
জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। ৪০০ মেট্রিক টন চাল, ১১ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।