পানি উন্নয়ন বোর্ড
টানা বৃষ্টিতে চুয়াডাঙ্গায় জলাবদ্ধতা
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে চুয়াডাঙ্গা শহরের বেশ কয়েকটি নিচু এলাকায় ও সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ৪৮ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে টানা বৃষ্টির ফলে মাথাভাঙ্গা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। নিচু এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতা বাড়তে পারে।
এই জলাবদ্ধতার কারণে চুয়াডাঙ্গার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা এরইমধ্যে বেশ দুর্ভোগে আছেন। শহরের খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন রিকশা ও ইজিবাইক চালকরা। বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় যাত্রী কমে যাওয়ায় তাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতির আশায় অপেক্ষা করছেন স্থানীয়রা।
চুয়াডাঙ্গা শহরের শান্তিপাড়ার বাসিন্দা মন্টু মিয়া বলেন, ‘গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাড়ি থেকে পাড়ার মোড় হয়ে মূল শহরে যাওয়ার রাস্তাটি সম্পূর্ণ ডুবে গেছে। বাচ্চাদের স্কুলে নেওয়ার জন্য ভিন্ন রাস্তা ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে দূরত্ব বাড়ছে। প্রতি বছর বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।’
একই এলাকার স্কুল শিক্ষক উজ্জল বলেন, ‘প্রতিদিনের কাজকর্ম করতে পারছি না। বৃষ্টির পানি ঘরের সামনে জমে আছে, বের হওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। মেয়েরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। কেউ পড়তে আসতে পারছে না। প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক হান্নান মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে রাস্তায় মানুষ কমে গেছে। ১০-১১ দিন ধরে বৃষ্টির কারণে তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। যা আয় করছি, তাতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
ইজিবাইক চালক সাগর হোসেন বলেন, ‘ভাড়া এমনিতেই কম, তার ওপর যাত্রীও কম। সারা দিন ইজিবাইক চালিয়ে যা পাই, তাতে তেল কেনার টাকাই ওঠে না। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার কীভাবে চালাব, বুঝতে পারছি না।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় মোট ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবার থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এসময় আকাশে মেঘ থাকলেও সূর্যের দেখা পাওয়া যাবে।’
চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে মাথাভাঙ্গা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে, তবে এ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কোনো আশঙ্কা নেই। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। শহরের কিছু নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সমস্যা তৈরি হয়েছে, যা আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুততম সময়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, মাথাভাঙ্গা নদীর হাটবোয়ালিয়া পয়েন্টে মঙ্গলবার পানির উচ্চতা ২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এখন পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সাধারণত পদ্মা নদীর পানি বাড়লে মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি বেড়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত পদ্মা নদীর পানি মাথাভাঙ্গা নদীতে আসেনি। পদ্মা নদীর পানি মাথাভাঙ্গায় আসলে পানির উচ্চতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২ মাস আগে
কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার উপরে বইছে ১৬ নদীর পানি
কুড়িগ্রামে তিস্তা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলাসহ ১৬ নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ধরলার পানি তালুকশিমুল বাড়ি পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে থাকলেও এখনও বিপৎসীমার সামান্য নিচে রয়েছে। তবে পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে এসব নদ-নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি বাড়ার কারণে নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচা সড়ক। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সদরের ঘোগাদহ ইউনিয়নের চর রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, কয়েকদিন থেকে পানি বাড়তে থাকায় নদী ভাঙছে। আমার বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পথে থাকায় অন্য স্থানে সরিয়ে নিচ্ছি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, আরও ২-৩ দিন নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
যেসব এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে সেখানে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
৪ মাস আগে
সিরাজগঞ্জে যমুনায় তীব্র ভাঙনে বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ ভাঙ্গনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরী গ্রামের নদীপাড়ের প্রায় দুইশ’ মিটার যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
হঠাৎ করে এ নদী ভাঙনে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখ থেকে অনেক ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রবিবার সকাল থেকে আকস্মিক ভাবে ভাঙন শুরু হয় এবং সোমবার সকাল পর্যন্ত সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরী গ্রামে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে প্রায় দুইশ’ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, যমুনার পানি দ্রুত কমতে থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ ভাঙন রোধে সেখানে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। একারণে বর্তমানে ভাঙন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়রায় নদীভাঙন: ১১ বছরে বাড়ি ছেড়েছে ১৬ হাজার পরিবার
তিনি আরও বলেন, গত বছর পাচঁঠাকুরী গ্রামের সিমলা স্পারের পাশে পাঁচঠাকুরীর অনেক অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় সেখানে অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছিল। স্থায়ী মেরামতের জন্য ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলেও কাজ এখনো শুরু করা হয়নি। এ অবস্থায় সেখানে আবারও ভাঙন দেখা দেয় এবং ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে নদীতীর রক্ষা বাঁধের ওপরে নির্মিত রানীগ্রাম-রতনকান্দি আঞ্চলিক সড়ক। এছাড়া যমুনা তীরবর্তী অনেক স্থানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এনায়েতপুরে ভাঙন রোধে কাজ চলছে।
এদিকে পাঁচঠাকুরী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই বলেন, একাধিকবার যমুনার ভাঙনে সর্বশান্ত হয়েছি। গত দুই দিনের ভাঙনেও ৫/৬টি বাড়ি, বসতভিটা ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
একটি প্রভাবশালী মহল যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় এ তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
এ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন পালন করা হলেও এখনো অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।
তারা আক্ষেপ করে আরও বলেন, এ বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে এলাকার অনেকেই এখন কোটিপতি হয়েছেন আর ভাঙনে এলাকার অনেকেই সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে। তবে অজ্ঞাত কারণেই এ বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীতে পানি কমতে থাকায় এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নদীর তলদেশে ঘূণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে যাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে এবং এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: নদীভাঙন: সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরে সহস্রাধিক পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
কয়রায় বেড়িবাঁধে ভাঙন, আতঙ্কে এলাকাবাসী
২ বছর আগে
ধরলার তীব্র ভাঙন মুখে ৫ শতাধিক পরিবার
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন অব্যাহত আছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরক মন্ডল এলাকায় ধরলার তীব্র ভাঙনে ১০টি ঘর, আধা কিলোমিটার সড়কসহ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় চার শতাধিক পরিবার।
অন্যদিকে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকায় ধরলার ওপারে সাতটি ঘর ও ফসলি জমি ধরলায় বিলীন হয়েছে। সেখানে হুমকির মুখে আছে শতাধিক পরিবার।
চর গোরক মন্ডল এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দুই হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে পেড়েছে।
দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না করলে চর গোরক মন্ডল গ্রামটি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। ভাঙন রোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
চর গোরক মন্ডল এলাকার আজিজুল ইসলাম ও মাইদুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এই এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়। গত আড়াই থেক তিন মাসে প্রায় ৩০টি পরিবারসহ ভুট্টা, আখসহ বিভিন্ন ফসলি জমি, গাছপালার বাগান ও বাঁশঝাড় নদীতে বিলীন হয়েছে। গত এক সপ্তাহে ধরলার তীব্র ভাঙনে আট থেকে ১০টি ঘরসহ একমাত্র সড়কটির বড় অংশ নদীতে চলে গেল। তারা দ্রুত ভাঙনরোধে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙন মুখে তিন শতাধিক পরিবার
২ বছর আগে
পাইকগাছায় ফের নদী ভাঙন
কপোতাক্ষ নদের পাইকগাছার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফের ভয়াবহ নদী ভাঙন শুরু হয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলীর মালোপাড়া, কপিলমুনির আগড়ঘাটা, রামনাথপুর, সোনাতনকাটি, মাহমুদকাটি, গোলাবাটি, কাশিমনগরসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকশ হেক্টর জমির ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তা, কবরস্থান, ফসলি জমির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
জেলে পল্লীর বহু পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পেশাবদল করে অন্যত্র বসবাস করছে। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে কাশিমনগর হাট-বাজার, গোলাবাটি আশ্রয়ণ প্রকল্প, মাহমুদকাটি ও রামনাথপুর এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় সেখানকার ভূমি ধ্বসে বিলীন হতে পারে নদী গর্ভে।
এদিকে কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙনের খবরে উপজেলা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যসহকারী মো. আবু তাহের গাজী মাহমুদ কাটি, গোলাবাটি ও কাশিমনগর বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জরুরি ভিত্তিতে রিংবাঁধের জন্য মাহমুদকাটির ৩৭৫ মিটার, গোলাবাটির ৩০০ ও কাশিমনগর বাজারসহ জেলেপল্লীর ২০০ মিটার এলাকা চিহ্নিত করেন। এসময় ভাঙনরোধে বিষয়টি পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলেও জানান।
স্থানীয়রা জানান, কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙনে উপজেলার রাড়ুলী জেলে পল্লী, আগড়ঘাটা, রামনাথপুরসহ আশপাশের কয়েকশ হেক্টর এলাকায় বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর সর্বশেষ কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙন ও তীব্র স্রোতের মুখে মাহমুদকাটি, গোলাবাটি, কাশিমনগর জেলেপাড়াসহ স্থানীয় কাশিমনগর বাজার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভয়াবহ ভাঙনের কবলে যেকোনো সময় এলাকাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় অনেকের নির্ঘুম রাত কাটছে বলেও জানান ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
জানা গেছে, গত প্রায় ৩ যুগ ধরে কপোতাক্ষের এসব এলাকায় কখনও করাল গ্রাস আবার কখনও নাব্যতা হ্রাস বিদ্যমান। নাব্যতা হ্রাসের কবলে কপোতাক্ষ নিশ্চিহ্ন হতে থকলে আন্দোলনের মুখে সরকার কপোতাক্ষ খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে ফের স্রোতস্বিনী করে তোলা হয়। তবে কোথাও কোথাও পরিকল্পনাহীনতায় বাঁক (মোড়) সরলীকরণ না হওয়ায় বর্তমানে তার বিপরীত পাশে ভয়াবহ ভাঙন ও বাঁক এলাকায় ব্যাপকহারে পলি ভরাট শুরু হয়েছে।
কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মো. কওছার আলী জোয়ার্দ্দার বলেন, ইতোপূর্বে তারা স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা ও স্বেচ্ছাশ্রমে আগড়ঘাটা এলাকায় ভাঙনরোধে বেশ কিছু করলেও তা ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত নয়। বিষয়টি তারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, ইতোমধ্যে কপোতাক্ষের পাইকগাছা উপজেলার ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে বাঁধ বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদী ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামের মানুষ
২ বছর আগে
মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপরে, ভোলায় ৮ গ্রাম প্লাবিত
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে আবারও উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সকাল বিকাল দুই বেলা ভাসছে ওই এলাকার মানুষ। গত চারদিন ধরে জোয়ারের পানিতে ১৯ ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের অতি জোয়ারের পানিতে তাদের ইউনিয়নের ৩ নং সামপুর, দাইয়া, মেদুয়া, কন্দকপুর, ৪নং ওয়ার্ড, চর মনোশা একাংশ ও মধ্য সামপুর গ্রাম সকাল ও বিকালে দুই বেলা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। বাঁধের ভিতরে ও বাইয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। মানুষের দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, বহু মানুষের আমন ধানের জালা খেত নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু মারা যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাজাপুর ইউনিয়নে রনি মাতাব্বরের ছয়টি, করিমের আটটি, বাহাউদ্দিননে তিনটি, রেজাউলের দুটি ছাগাল মারা গেছে। এছাড়াও বহু ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মাঝের চর, মদপুরসহ চরাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, ভোলায় মেঘনার পানি শনিবার বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। তবে বেড়ি বাঁধ ভেঙে বা উপচে কোথাও পানি প্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ: ভোলার ১০ গ্রাম প্লাবিত
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: বিপাকে ভোলার লক্ষাধিক জেলে
২ বছর আগে
ফের বাড়ছে যমুনার পানি, আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এ সংবাদে নদী পাড়ের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত ১৭ জুন, শুক্রবার বিকাল ৬ টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এরপর পানি বেড়ে গত ২১ জুন বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বেড়ে সারিয়াকান্দি উপজেলার ৮৪টি গ্রামে প্রবেশ করে। আবারও শনিবার দুপুর ১২ টায় সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে পানি বাড়তে শুরু করায় আবারও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। গত কয়েকদিন আগে তারা বাড়ি-ঘরের যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেঁড়িবাধে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পানি নেমে যাওয়ায় তারা আবার জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে ফিরে ছিলেন। পানি বৃদ্ধির খবরে তারা আবারও দুশ্চিস্তায় পড়েছেন। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আবারও ঘরের জিনিসপত্র এবং গবাদিপশু নিয়ে উঁচু কোথাও যেতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনা নদীতে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রথম দফায় পানি নেমে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আরও পড়ুন: বন্যা: সিলেটে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমেছে, বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল
২ বছর আগে
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র-ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। হু-হু করে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার এবং ধরলায় সেতু পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেতে পারে। বন্যায় এখন পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। বন্যা কবলিতদের মাঝে শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বানভাসিদের মধ্যে পানিবাহিত চর্ম, ডায়রিয়া, জ্বর দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তবে বন্যা কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার ২৮৪টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলের ২৭ হাজার ১৯৭টি পরিবারের ১ লাখ ৮ হাজার ৭৮৮ জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার রাজিবপুর-৭টি, রৌমারী-৪৪টি চিলমারী-২৬টি, উলিপুর-২০টি, কুড়িগ্রাম সদর-১১টি, নাগেশ্বরী এবং রাজারহাটে একটি করে মোট ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জেলার ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি মাদরাসা এবং একটি কলেজে সাময়িক পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
খামারবাড়ীর উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, বন্যায় ১৩ হাজার ৭১১ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিসার কালিপদ রায় জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বশেষ এক হাজার ১৬৩ জন চাষির এক হাজার ২৫৭টি পুকুর/দীঘি/খামার ভেসে গিয়ে ১৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
২ বছর আগে
বিপদসীমার ২৮ সেমি ওপরে তিস্তার পানি
টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুর ১২টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেমি) বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিন্টার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার ভোর থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচে থাকলেও সকাল ৯টার পর থেকেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবার বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা, ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়া তিস্তা পাড়ের মানুষ বড় বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। ভারতে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তাই ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমে যাবে বলে দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখা। পলি ও বালু জমে তিস্তা ভরাট হওয়ায় সামান্য পানির প্রবাহ লোকালয়ে ঢুকে বন্যার সৃষ্টি করে। তবে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানির প্রবাহ রাত থেকে বাড়তে থাকে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি কমে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শনিবার তা বিতরণ শেষ হয়েছে। বন্যা কবলিত যেসব এলাকা আছে সেগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: যমুনায় পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
২ বছর আগে
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, হাজারো মানুষ পানিবন্দি
টানা ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে। জেলার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমায় অবস্থান করছে। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
সোমবার দুপুর দুইটা পর্যন্ত সুরমা নদীর নবীনগর পয়েন্টে ৭ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর মাত্র ১০ সেন্টিমিটার পানি বাড়লেই বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঢলের পানিতে ভেসে গেছে হাওরের উঁচু এলাকার বোরো ফসল। পানিতে বাদামসহ নষ্ট হয়েছে মৌসুমী সবজি। জেলার সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহীম, সদরগড়, সৈয়দপুর এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার তিন ইউনিয়নের বরকতনগর, শরীপপুর গোজাইড়া, মহব্বাতপুর মামদপুর, মারফতি গ্রামসহ অনন্ত ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সড়ক ও ঘড়বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ঢলের পানিতে তাহিরপুর ও সদর উপজেলার উচ্চ এলাকার ২০ হেক্টর বোরো জমি তলিয়ে গেছে। ঢলের পানি নেমে যাওয়ার আশায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা যাচ্ছে না বলে মুটোফোনে জানিয়েছেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম। যদিও হাওর পাড়ের ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন ঢলের পানিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হতে পারে। অজানা কারণে কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির তথ্য গোপন করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
টানা বৃষ্টিপাতে রোদের দেখা না পাওয়ায় মারাইকৃত ধান নিয়ে বিপাকে রয়েছেন নন হাওর এলাকার কৃষকরা। ভেজা ধান শুকাতে না পারায় ধানে চারা গজানোর কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাজারো কৃষক। সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর গ্রামের বাসিন্দা উজ্জল মিয়া জানান, ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। পানির কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেক ঘরে পানি উঠেছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মুন্না মিয়া জানান, ঢলের পানি দোয়ারাবাজার উপজেলার কাংলা, নাইন্দা, গোজাউরা, সিংরাই হাওরের স্কীমের ধান তলিয়েগেছে। পাহাড়ের সীমান্তবর্তী অন্তত ১০ টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি রয়েছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ঢলের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনও পুরোপুরি নিরুপণ হয়নি। আমরা পরিস্থিতি অভজার্ব করছি। পানি নেমে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলা ১০ হেক্টর ও সদর উপজেলার ১০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অসময়ের বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় নতুন প্রকল্প আসছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে