বৃহস্পতিবার রাতে মামলা দায়েরের পরপরই ছাত্রলীগকর্মী শুভ দাসকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার রাতে শহরের স্টিমারঘাট থেকে প্যালেস্টাইন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষক মামুন কবিরকে অপহরণ করে কলবাড়ি এলাকায় নিয়ে মারধর করা হয়। পরে পুলিশ ও আহতের স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এদিকে শিক্ষককে মারধর ও চাঁদা দাবির বিষয়ে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে কাওছার হোসেন সালমানকে কেন বহিষ্কার করা হবে না, জানতে চেয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। তিনদিনের মধ্যে সশরীরে হাজির হয়ে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আল-আমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
আহত শিক্ষক মামুন কবির জানান, তিনি নলছিটির প্যালেস্টাইন টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কাওছার হোসেন সালমানের নেতৃত্বে ৪-৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী মঙ্গলবার রাতে তাকে স্টিমারঘাট এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা মোবাইল ফোনে শিক্ষকের আপত্তিকর ছবি আছে, যা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অপহরণকারীরা। চাঁদার টাকা না দিলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন। ছাত্রলীগ নেতারা জোর করে একটি স্ট্যাম্পে সই নিতে চাইলে, তিনি তা দেননি। পরে তার বোনের কাছে ফোন করে টাকা নিয়ে আসতে বলেন ওই শিক্ষক। বোন ও ভগ্নিপতি পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসলে ছাত্রলীগ নেতারা তাকে ফেলে চলে যায়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে মিমাংসা করার জন্য ওই শিক্ষককে চাপ দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক মামুন কবির বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে শহরের হরিসভা এলাকার বাসা থেকে মামলার দুই নম্বর আসামি শুভ দাসকে গ্রেপ্তার করে।
মামলায় আসামিরা হলেন- পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কাওছার হোসেন সালমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর হোসেন, ছাত্রলীগকর্মী শুভ দাস ও মো. রবীন প্যাদা।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, মামলা দায়েরের পরপরই আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেপ্তারের আগে এ ব্যাপারে ছাত্রলীগকর্মী শুভ দাস বলেন, ‘শিক্ষককে মারধর করা হয়নি, তিনি ছাত্রদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন বলে প্রমান আছে। এ ঘটনা তার কাছে জানতে চেয়েছি। এর বাইরে কিছুই হয়নি। অন্য অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।’