করোনার কারণে মুক্ত দিবস উপলক্ষে এবার সীমিত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তখনকার সময়ের ৫ নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মোতালেব সুনামগঞ্জ সীমান্তের যোগীরগাওঁ, ক্যাপ্টেন যাদব শহরতলির আমবাড়ী বাজার এলাকা ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ গৌরারং এলাকা হয়ে মুক্তিপাগল সেনাদের নিয়ে জীবনবাজি রেখে ভোরে একযোগে শহরে প্রবেশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানের মুখে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।
এর আগে ২৭ নভেম্বর পাকসেনারা চারদিক দিয়ে আটঘাট বেঁধে আক্রমণ চালানোর কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিন এখানে আটকা পড়েন।
পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় আহসানমারায় তালেবসহ তিনজনকে একরশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়। ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত হওয়ায় সকলে আনন্দ উল্লাস করলেও তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু সহযোদ্ধাদের কাঁদায়।
৬ ডিসেম্বরের স্মৃতিচারণ করে মুক্তিযুদ্ধ চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের আহ্বায়ক বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, ছাত্রনেতা তালেব উদ্দিন ভালো স্লোগান দিতে পারতেন, তার জয় বাংলা স্লোগান উজ্জীবিত করতো সকলকে। তিনি সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাকে দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আটক করে পাক হায়েনা ও রাজাকাররা শহরের গলি দিয়ে ঘুরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তালেব উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের টর্চারশেলে এনে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জ ছেড়ে পালানোর সময় নির্মমভাবে তালেব উদ্দিনকে হত্যা করে পালায় পাকসেনারা।
জেলা প্রশাসক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক মো. আব্দুল আহাদ জানান, এবার করোনার কারণে জমায়েত করে বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতা না করে সামাজিক দূরত্ব মেনে সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস পালন হবে।